তোমার হলো শুরু, আমার হয়নি সারাঃ ১
কন্যা আমার বড় হচ্ছে, যদিও বয়স বেশি না, মাত্র ২ বছর ৮ মাস। কিন্তু বড় তো হচ্ছে। কথা বলা শিখে গেছে, অনুকরনতো শিখেছিলো আগেই। ফলাফল, আমাদের কথা-কাজকারবার অনুকরন করে তার সাথে নিজের ভান্ডারে থাকা শব্দগুলো এড করে নতুন নতুন কথা বলে।
কথাগুলো শুনতে ভালো লাগ্লেও তা মাঝে মাঝে অত্যাচারের পর্যায়ে চলে যায়। কারন তার সামনে ঘটা প্রতিটা বিষয় নিয়ে তার প্রশ্ন থাকবেই।
“কোথায় যাও?”
“কেন যাও?”
“কি করবা?”
“ওটা ওখানে রাখছো কেন?”
“ওটা ধরো কেন?’
“তুমি বাইরে যাবা?”
“আমি কি খাবো?”
……………………………………………।। প্রশ্নের সংখ্যা আর বৈচিত্র্যতা দিন দিন বাড়ছে। কৈফিয়ত দিতে দিতে শ্যাষ……………
এখন অর্ডার করাও শিখেছে, সাথে ধমক। “এটা রাখবা না, ওটা ধরবা না”……।।
চাইল্ডকেয়ারে যাবার কারনে আবার ইংরেজীও শিখছে, ফলাফল, ইংরেজিতেও ধমক শুনতে হয়।
সেদিন মেয়েকে নিয়ে ঘরে বসে আছি, মেয়ের মা বাইরে। মেয়ে বাসার দরজার কাছে গিয়ে আমাকে বলে, “আমি বাইরে টেনিস খেলতে গেলাম, হু!”। আমি ঠেকানোর জন্য বল্লাম, এখন যাওয়ার দরকার নেই, এই কাজটা করে যাও। এবং তার উত্তর, “না, পিজ (প্লিজ), আমি যাই……”। খেয়াল করে দেখলাম, অবিকল সে আমার মতই বলছে। খেলতে যেতে চাইলে মেয়ের মা এমন ভাবে বাধা দেবে, আর আমি এই পিছলিয়ে বেরিয়ে যাবো। মেয়ে পুরোটাই শিখে ফেলেছে।
তবে আনন্দের ঘটনাই ঘটে বেশি। পাকনা পাকনা কথা বলে যখন বিশেষ করে। ইদানিং আমাকে বিভিন্ন জিনিস কিনে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। “তোমাকে আমি গাড়ি কিনে দেবো, বল কিনে দেবো…ঠিক আছে…” মেয়ের মুখে এইসব শুনতে যে কি ভালো লাগে………।। তবে বড় হচ্ছে বলে কিছু বুঝিয়ে বলে সেটা বোঝেও, এটাও আনন্দের…।
মেয়ের মা আমাদের ছোট্ট কম্যুনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গায়, মেয়ে প্র্যাক্টিশের সময় চুপচাপ শোনে, আর ডাটা আপ্লোড করে। তার কোন একসময় তার মরজি মত গুনগুন করে গাওয়া শুরু করে। এখন পযন্ত সে শিখেছে, “সুর্যোদয়ে তুমি সু্র্যাস্তে তুমি”, “প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ……… মলম (মরন) বাংলাদেশ”, “যাবি যদি উড়ে দূরে নীল অযানাতে”, “মানে না মন, ভোলে না ব্যাথা”, “কে বাশি বাজায় রে” আর রবীন্দ্র সংগীত “আমি কেবলি স্বপনো, করেছি বপনো……”…।।সাথে তার চাইল্ডকেয়ারে শেখা রাইমস বা আমাদের শেখানো বাংলা রাইমস গুলো তো আছেই। গাড়ির পেছনে তার সীটে বসে গুনগুন চলছে, বা বাসায় নিজে নিযে খেলছে আর গুনগুন করছে……।। এই বয়সে তো সুর পাকড়াও করা কঠিন, তবুও একেবারে খারাপ চালাচ্ছে না সে…।। সুর বুঝা যায়…।। তবে বিভিন্ন শব্দ নিজের মত করে উচ্চারন করে, সেটা একটা মজার জিনিস………। যেমন, মরন কে মলম, গহীন কে গকিন…।।
মেয়েকে রাতে ঘুম পাড়াতে নিয়ে গেলে আবদার আসে গল্প বলো, তার প্রিয় কয়েক্টা বই আছে, সেগুলো বগলদাবা করে নিয়ে আসবে, সেগুলো থেকে বলতে হবে। নচেত তার প্রিয় কার্টুন চরিত্রগুলো নিয়ে বলতে হবে। যেমনঃ মারমেইড, ডোরা, কিম্বা (কিম্বা দ্যা হোয়াইট লায়নের), টম…।। ইদানিং উল্টোটা ঘটছে। মেয়েকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে নিজেই ঘুমিয়ে পড়ি, কারন আমি গল্প বলা শুরু করার কিছুক্ষন পরেই মেয়ে গল্প বলার দায়িত্বটা নিজে নিয়ে নেয়। আমি যা যা আগে বলেছি আগে, সব মিলিয়ে সে গল্প বলতে থাকবে…… শুনতে শুনতে আমি ঘুম…।। এরপর বউয়ের ঝাড়ি………।
চোখের সামনে একটা মানুষকে বড় হতে দেখছি, দেখছি একটা স্বত্বার গড়ে উঠা। প্রতিদিন সে নতুন কিছু শিখছে, যা দেখছে তাই শিখছে। তাই ভয়েও থাকি, ভুল বা খারাপ কিছুনা আবার শিখে ফেলে……।।





মামনির প্রতি অনেক ভালোবাসা, আদর।
থ্যানকি সাইদ ভাই
চমৎকার লাগলো আপনার মেয়ের বেড়ে ওঠা... তার কথোপকথন.. বাচ্চাদের কথাবার্তা এত্ত সুইট .. বলার অপেক্ষা রাখে না
মামনিটাকে অনেক আদর
আপানদেরও তো দিন সামনে আসতেছে....। দেখবেন কত্ত আনন্দ....।
আরে কি কন?
ছোট বেলায় বাপ/মার কাছে যত্ত পিটানি খাইছি.. এইগুলার উশিল করতে হপে না?
হা হা হা। মাইরও ভালোবাসার প্রকাশ।
"মাইর দেয়া তারই সাজে, আদর করে যে গো"....
খুব ভাল লাগলো লেখাটা রাফি ভাই। আমার মেয়ের বয়স এখনও মাত্র পাঁচ মাস। কিন্তু ভিষন মিস করি এই ব্যাপারটা। ওরা মা মেয়েকে এখনও প্রবাসে আনতে পারিনি।
আমি মেয়ের ছয়মাস বয়সে বাইরে চলে আসি, ওকে ছাড়া ছিলাম ৮ মাস। তাই আপনার কষ্ঠটা বুঝি। কামনা করি মামনি যেনো দ্রুতই আপনার কাছে চলে যায়।
কিউট একটা লেখা! পোলাপান একটা জিনিস!
)
থ্যান্কি ভাই।
আহা!কত আদর নিয়ে লেথা! মন ভরে গেলো। মামনিটার জন্য অনেক আদর।
থ্যান্কস, আদর পৌছে দেবো।
মেয়ের প্রশ্নমালার মধুর অত্যাচারে অতিষ্ট আমিও! জুমানারে আমার আদর দিয়েন
মাঝে মাঝে মধুর থাকে না নীড়দা। এত প্রশ্ন করে বুড়ি যে মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে যাই
আমার পোলা এখনো এলিয়েন ভাষায় কথা বলে ;)। ঢরে আছি কবে শুরু করে বকবকানী
শুরু হৈলে বুঝবেন মাইট....।
মেয়ে না থাকলে বাবা হওয়ার মজাই নাই।
১০০% খাটি কথা......
ছবি দিলেন না কেন?
নামটাও একদম ঠিক হৈছে পোষ্টের, মেয়ের জন্য মায়াটা পুরোপুরি পেলাম এইখানেও-------
অনেক সুন্দর লেখা, মেয়ের জন্য অনেক আদর।
থ্যানকি, আদর পৌছায়া দেয়া হৈপে।
কী চুইট!
আসলেও চুইট।
বাচ্চাগুলো দেখতে দেখতেই বড় হয়ে যায়।
দোয়াগো মা'মনি
কাজী সাবরে ধৈন্যা।
দারুন শুরু করেছেন। একদিন জুমানা যখন বড় হবে এই সব লেখা দেখে তার কেমন ভাল লাগবে ভাবছি। আমি কয়েকমাস ধরে রিমঝিমেকে নিয়ে লেখার প্ল্যান করছি। শুরু করতে পারছিনা।
লেখা অন্যরকম ভালো লাগল।
আমিও প্রায় ভাবি ওশিনকে নিয়ে লিখবো কিছু। কিন্তু কত আর লেখা যায়। মাথার ভেতরে সব ঘুরপাক খায় তার থেকে যায় ভেতরেই। কন্যার বাবা সমিতি করার কথা ছিল না একটা? কইরা ফালান
"কন্যার বাবা সমিতি" বাহ্ দারুণ আইডিয়াতো! কইরা ফেলান ভাই। আমিও আছি সাথে।
হ! সমিতি কৈরা ফালান। আমি আছি।
এইভাবে তো ভাবি নাই হাসান ভাই। ভালৈ হৈলো তাইলে। একটা অনলাইন ডাইরী হয়ে যাচ্ছে। আপনিও শুরু করেন।
ফেইসবকে একটা "কন্যার বাবা সমিতি" খুইলাই ফেললাম। ক্রেডিট গোওস টু অচিনদা। স্পিশ্যাল থ্যাংকস টু নীড়ুদা।
কন্যার বাবা সমিতি
দারুন। আমি প্রথম সদস্য ।
রাফি ভাইরেও ব্যাপক থ্যাংকস তার পোষ্টের মাধ্যমে একটা গ্রুপ তার যাত্রা শুরু করল। এ ব্লগের বাপ-মেয়ে বিষয়ক পোষ্টগুলান সহ নতুন নতুন পোষ্ট "কন্যার বাবা সমিতি" তে পোষ্টানোর অনুরোধ রইল।
মেয়েরে কেমন মিস করেন এই গ্রুপ করা দেইখাই বুঝলাম। আম্মো মেম্বর হইলাম।
আমার মেয়েটার প্রশ্ন এর উত্তর দিতে দিতে জান শেষ,তার পাকনামি র মুরুব্বীয়ানাতে তার বাপ আর আমি সোজা হয়ে থাকি।
হাহাহা, একেবারে মিলে গেছে.।.।.। মায়েরা মনে হয় এমনই।্্্
ভীষণ ভালো লাগা জানাই!!!
থ্যাঙ্কি.।.। ঃ)
খুব্বি কিউট আপনার মেয়েটা, অনেক অনেক আদর ওর জন্য ....
অনেক ধন্যবাদ.।.।।। ঃ)
কী সুইট আপনার মেয়েটা
অনেক আদর
থ্যাঙ্কি থ্যাঙ্কি.।.।।।
ভীষণ মজায় আছেনতো
... দারুণ লিখেছেন... অত্যঢিক আলাপ না কইরা সোজা প্রিয়তে নিয়ে গেলাম 
আর আপনার মেয়েটা কিন্তু ভুল গায়নি... মলম বাংলাদেশই ... দেশের বাইরে থাকলে বেচে থাকার জন্য এর থেকে ভালো মলম আর হয়না
থ্যাঙ্কি থ্যাঙ্কি.।.।।। ঃ)
মেয়ের গানের বহরে আরো কয়েক্টা যোগ হইছে.।।
জীবনের একমাত্র সার্থকতা কিংবা আনন্দ আমার হলো মা হওয়া। আপনার মেয়েটিকে আমার ভালোবাসা জানাবেন
থ্যাঙ্কি। আপনার সন্তানকেও আমার পক্ষ শুভকামনা।
ভালো লাগলো
থ্যাঙ্কি।
ভালো লাগলো।
জুমানাকে অনেক আদর ও শুভ কামনা।
অনেক থ্যাঙ্কি ভাইডি। আদর ও শুভকামনা পৌছায়া দেয়া হৈবেক।
মন্তব্য করুন