রাজশাহীঃ ক্লান্তির শেষে স্বর্গ ও রাসেল আশরাফ
ঠিক কি কারণে আমি রাজশাহীকে এতো ভালোবাসি তা বলতে পারবনা, কারণ ছাড়া যে ভালোবাসা তা মধুরতম। রাজশাহীর নিজের কোন কিছুতেই পূর্ণতা নেই হয়ত কিন্তু এখানে জন্মে, এর গলি পথে হেঁটে আমার যে পূর্ণতা আছে তার তুলনায় স্বর্গও কিছু কম হয়ে যায় । এখান থেকে আকাশ দেখে চোখ জুড়ায়, পদ্মার খাঁ খাঁ করা বালুতট সংগ্রামী করে, সরু গলি পথ হৃদ স্পন্দন ধরে রাখে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে লিটনের চা আর ভেসে আসা রোড ফুডের সুগন্ধে আমার জীবন যেমন কেটেছে তা আমি আর কখনই ফিরে পাবোনা হয়তো। ফিরে পাবনা এগুলো থেকে পাওয়া আনন্দ আর ঐ খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর আদর।
রশিদের কাঠের দোকানের আড্ডা দিয়ে শুরু হতো বিকেলটা, চারটা থেকে হেলাল ভাইয়ের মন বসত না অফিসে, ঠিক ৫ টায় চলে আসতেন।আড্ডার বিষয় হারিয়ে শেষ হতো রাজনীতিতে গিয়ে। এর পরে আড্ডা চলে যেত নিউমার্কেটে মনিমুল ভাইয়ের দোকানের সামনে টুল পেতে বসে শুরু হতো গ্রামীণ ফোনকে গালা গাল দিয়ে, হেলাল ভাই অসহায় হয়ে যেতেন, এর পরে শুরু হতো পিডিবি কে গালাগাল, ঐ আড্ডায় কেউ বাদ যেতো না মনমহোন থেকে শুরু করে ওবামা পর্যন্ত আমাদের কাছে শিশু তখন।শাহিন বইয়ের দোকান থেকে উকি দিত বার কয়েক আর প্রলুব্ধ করতো চা এর বিনিময়ে। হেলাল ভাই আলু পুরী আনাতেন মুরাদকে দিয়ে । কতো কিছু যে মিস হয়ে যাচ্ছে। ১২ না ৩৩ কে আমাদের ধরে রাখতে পারে ! ১২ হল মনিমুল ভাইয়ের দোকান আর শাহিনের ৩৩।
বিরেনের সিঙ্গারা, রহমানিয়ার ভুনা মাংস, বিদ্যুতের খিচুরি পৃ্থিবীর কোথাও পাওয়া যাবেনা। বর্নালী আর লক্ষীপুর মোড়ের চা, তালাই মারীর বট পরোটা, নবরূপের দই, জোনাকীর ভর্তা মনে হলে বুক শূন্য হয়ে যায়। প্রেস ক্লাবের সামনের ডিমের ডিমান্ড আর মামা হালিমের ভীড় আমি উইকেন্ডে কেএফসি বা ম্যাকডোঃ এ দেখিনি--------------------
যাই হোক রাসেল আশরাফ বাড়ি যাচ্ছেন , সেই রাজশাহীতে যেখানে পদ্মার তীরে অশ্বথ গাছের নিচে এগারো মাসের ক্লান্ত শরীরটা এলিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে পারবেন, মণি মানিক্যের নয় পদ্মার হাঁটু জলের রুপালী ঝলকে জেগে উঠবেন। বাবার সাথে ব্যাগ ভরে শীতের সবজি কিনে বাড়ি ফিরবেন হাসি মুখে। রাজন, কথিকা আর বাবা মিলে বসে যাবেন ক্যারাম খেলতে, তিন জনই পার্টনার হিসেবে নিতে কাড়াকাড়ি করবে , মা পিঠার উনুন জ্বালিয়ে এ কান্ড দেখে হাসবে্ন--------------মনে করতে চাইনা আবার ট্রেন, শাহজালাল, আবার নরক আবার ক্লান্তি-------------------
(দ্রঃ রাসেল আশরাফ বাড়ি যাচ্ছেন তাই এমন পোস্ট না দিয়ে পারলাম না)
কালাই রুটি আর বট পরোটার আবেদন চিরকালীন।
সুন্দর একটা লেখার জন্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ মীর। একবার রাজশাহী যেতে পারেন। আবেদনের প্রশ্নে তৃপ্ত হয়ে ফিরবেন সন্দেহ নেই-----
উল্লেখযোগ্য একটা সময় সেখানে কাটিয়েছি। কোনকিছুই আনকমন নয়।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
(
ঘর হইতে দুইপা ফেলিয়া
আপনা দেশ আর দুনিয়া
তবে দেশে থেকে ব্লগিং করলে হয়তো মাগনায় স্বদেশ ভ্রমন হয়ে যেতো।
পোষ্ট মনকাড়া হয়েছে
মন কাড়া হয়ছে কি না জানিনা তবে মন যে সারা দিন রাজশাহীতে পড়ে থাকে তা বলতে পারি। ভালোলাগে না এই রাজশাহী ছেড়ে---------------------
অসাধারণ!!!!!!!!!!
সকাল সকাল মনটাই ভালো হয়ে গেল।
মনভালো করতে পারায় ভালো লাগছে । ধন্যবাদ
লেখাটা মন ছুঁয়ে গেলো।
মন ছোঁয়া লেখার কি আর হাত আছে আমার ? তবে এমন করে বলার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অনুভূতির অসামান্য প্রকাশ। অসামান্য...
ইমশনাল হতে চাই না তাই তেমন করে লিখি্নি। ঐ বিছানা ছেড়ে ঐ ঘর ছেড়ে ঐ দরজা পেরিয়ে ঐ শহর ছেড়ে মনের মধ্যে যে কি হয়ে যায় থেকে থেকে আমি বলে বোঝাতে পারবনা।
ভাইস্তা রাসেল কই.... লিস্টি করলাম
সত্যি চমৎকার আপনার লেখা
ইয়েস স্যার।আমি আরো কিছু যোগ করে দিচ্ছিঃ
১।বাটার মোড়ের জিলাপী।
২। বাটার মোড়ের বারো ভাজা।
৩।শামীম সুইটসের রসগোল্লা।
৪।ইউনির মানিকের দোকানের সিঙ্গাড়া।
পরে মনে পরলে আরো যোগ করে দিমুনে।

ঢাকার আসার সময় এসব নিয়ে আসবেন।এইগুলা হলো আপনার টোকেন, এসব আমাদের হাতে দিবেন তারপর ল্যাবএইডের খিচুড়ী....
টুটুল ভাই ধন্যবাদ আপনাকে।
লোভনীয় অথচ সযত্নে পরিহার্য ! খাদ্যবস্তু বাদে আর কিছু নাই ! উদরের পরিবর্তে মনের খোরাক !
নাজমুল আংকেল, এখনকার পোলাপাইন শুধু খায়-খায় করে, ব্যাসিক নীড বলে কথা-- ধন্যবাদ আপনাকে
আংকেল শব্দটি পছন্দ হয় না ।
আংকেল শব্দটি আমার খুব ভাল লাগে।
বাংলা প্রতিশব্দটি এর চেয়ে অনেক সুন্দর । তবে বন্ধুরা ভ্রাতৃসম, কোন কারণে নাম ধরে ডাকতে দ্বিধা থাকলে নামের সাথে ভাই শব্দটি অনায়াসে যোগ করা যায় । যেমনটি আপনি করে থাকেন ।
কিছু করবার নাই । সত্য কঠিন হলেও তাকে ভালোবাসতে পারা ভালো । আর ভাইপো বয়সিরা তো আংকেল বলবেই।
কথাটা পছন্দ হইলো না মারজুক সাহেব। বন্ধুত্বের মর্যাদাহানী করলেন। এটা চাচা-ভাতিজা ব্লগ না, আমরা বন্ধু ব্লগ..খিয়াল কইরা..।
ধন্যবাদ আরিফ ।
রাজশাহীতে একবার আড়াইদিনের জন্য গিয়েছিলাম, এর মধ্যে একদিন ছিলো হরতাল। তাই বহুল কথিত রসুনের চপ আর পাখির মাংস খাওয়া হয় নি.......। বন্ধু বান্ধবের বাড়ি-কিছু রেস্টুরেন্ট(যেমন: চিলিজ) খাওয়া আর পদ্মার ধারে কাসুন্দি দিয়ে পেয়ারা খাওয়ার মধ্যে দিয়ে সময়গুলো কেটেছে......সাথে রিক্সা করে ঘোরা....... হেতম খাঁ থেকে সারা রাজশাহী আর দিন শেষে জুবেরী হল.......।
ভেবে দেখেন আর দশটা ঘোরা ঘুরির চেয়ে ওটা আলাদা লাগবে ।
-খুবি লোভ লাগতাসে!
আম্মা, ক্ষুদা লাগছে!!
রাজশাহীর কথা মনে করিয়ে দিলেন। আ হা, মনে পড়ছে একটি কথা- মায়াবী টানে ডাকে মতিহার!!!
খুবই ভালো লাগলো পোষ্টটি। মনে হচ্ছে নষ্টালজিয়া হয়ে যাচ্ছি।
এই কমেন্ট পড়ে ঐ একই কথা বলতে হচ্ছে ---------------
মন্তব্য করুন