বাণী সমুচ্চয়
সময়টি অস্থিরতার। নানা কারণে মনটা এলোমেলো-তছনছ হয়ে আছে। চারদিকে তাকালে স্বস্তিদায়ক কিছু চোখে পড়ে না! এইরকম অস্থির মন নিয়ে সুস্থির হয়ে বসা আর গুছিয়ে কিছু লেখা কঠিন! এমনিতেও একটানা বেশ কিছুদিন লেখার মধ্যে ছিলাম। একাধিক ঈদসংখ্যার জন্য গল্প-উপন্যাস-গদ্য লিখতে হয়েছে! লিখেছি পত্রপত্রিকার জন্যও। এত লেখার পর একটা অসন্নতাও কাজ করছে লেখালেখি নিয়ে। অথচ কিছু না কিছু লেখার জন্য হাত নিশপিশ করছে। এই লেখাটি আমার বিভিন্ন সময়ের বিক্ষিপ্ত চিন্তার ফসল! চিন্তা তো একমুখী নয়, বিভিন্ন সময়ে নানাদিকে ধাবিত হয়। ফলে এই লেখার বিষয়গুলোও পারম্পর্যহীন, নানাভাবে আমার বিক্ষিপ্ত চিন্তাগুলোকে ধরে রেখেছে!
এটাকে ‘লেখা’ হিসেবে পোস্ট করার কথা ভাবিনি কখনো! হুমায়ুন আজাদের প্রবচনগুচ্ছের পর এই ধরনের লেখা প্রকাশ করা বিপদজনক। যে-কেউ এটাকে প্রবচনগুচ্ছের অনুসরণ-অনুকরণ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন! আসলে তো তা নয়! সবারই কমবেশি এ ধরনের কথাবার্তা মনে হতে পারে, শুনতে যা প্রায় ‘বাণী’র মতো লাগে। ফেসবুকে ‘বাণী-দশা’ শিরোনামে এর কয়েকটি স্ট্যাটাস হিসেবে দিয়েছিলামও। আবার এর কোনো-কোনোটি আমার বিভিন্ন লেখায় ঢুকেও পড়েছে! যাহোক, কিছু একটা লিখতে ইচ্ছে করছে বলে ‘বাণী’গুলোই পেশ করলাম আপনাদের সামনে। মন চাইলে খোলা মনে বিতর্ক করতে পারেন। বিতর্ক করতে করতে যদি মনের অবসন্নতাটুকু কেটে যায়, খারাপ হয় না।
বিষয় : সম্পর্ক
১. মানুষ সম্পর্ক নিয়ে বাঁচে না, বাঁচে সম্পর্কের স্মৃতি নিয়ে...
২. যখন একটি সম্পর্ক ‘নাম’ পায়, তখন সেটি আর সম্পর্ক থাকে না, হয়ে ওঠে অভ্যাস
৩. সম্পর্ক বিবর্তনশীল, পরিবর্তনকামী, নতুন মাত্রা যোগের সম্ভাবনাপূর্ণ, আর অভ্যাস স্থির, পরিবর্তনহীন, একঘেঁয়েমিপূর্ণ
৪. নামহীন সম্পর্কগুলো সম্ভাবনাপূর্ণ আর নামওয়ালা সম্পর্কগুলো স্থির ও বদ্ধ - নতুন কোনো মাত্রা যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাহীন।
৫. অমীমাংসিত সম্পর্কই সুন্দর, যদিও তা বেদনাদায়ক
৬. অসংজ্ঞায়িত সম্পর্কই সম্ভাবনাপূর্ণ, যদিও তা বহন করা কষ্টকর
[ওপরের অংশটি সেইসব তরুণ-তরুণীদের জন্য, যারা সম্পর্ক নিয়ে ভীষণ ঝামেলায় আছেন!]
বিষয় : নারী-পুরুষ
১. নারী পুরুষ হয়তো একই প্রজাতির প্রাণী নয়; প্রজাতি বিভাজনে জীববিজ্ঞানীরা কোথাও একটা ভুল করে ফেলেছেন
২. পুরুষ বোঝে না নারীকে, যেমন নারী বোঝে না পুরুষকে, তারা বাস করে ভিন্ন ভিন্ন জগতে। এই না বোঝার ব্যাপারটি পুরুষরা স্বীকার করে, নারীরা করে না!
৩. মানব-সভ্যতার সবচেয়ে ভুল আবিষ্কার - বিয়ে, যা ভিন্ন দুই জগতের দুজন বাসিন্দাকে একসঙ্গে বসবাস করতে বাধ্য করে
৪. পুরুষরা তিন ধরনের : যুক্তিতাড়িত, আবেগতাড়িত ও লিঙ্গতাড়িত
৫. মেয়েরা তিন ধরনের : ক) ভালোবাসতে পারে না কিন্তু মুখে বলে ভালোবাসি। খ)ভালোবাসতে জানে, কিন্তু মুখে বলতে পারে না। গ) ভালোবাসতে জানে না, কিন্তু জানে বলে মনে করে এবং ভালোবাসি ভালোবাসি বলে গলা ফাটিয়ে ফেলে
[ওপরের অংশটি ব্লগের নারী বন্ধুদের সম্মানে কিঞ্চিৎ ভীতিসহযোগে পেশ করলাম!]
বিষয় : রাজনীতি
১. গণতান্ত্রিক সরকারের সমালোচনা করি মানে এই নয় যে আমরা সামরিকতন্ত্র পছন্দ করি
২. ’উৎকৃষ্ট’ সামরিকতন্ত্রের চেয়ে ‘নিকৃষ্ট গণতন্ত্র’ বহুগুণে ভালো!
৩. আমি রাজনীতির পক্ষে, কারণ রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদরা না থাকলে সমাজ ও রাষ্ট্রের অলিগলি রাজপথ দুর্গন্ধে ছেয়ে যেত
৪-ক) রাজনীতিবিদরা ডাস্টবিনের মতো - সমাজের সকল দুর্গন্ধ-উৎপাদী আবর্জনাসমূহ নিজের মধ্যে ধারণ করেন
৪-খ) রাজনীতিবিদরা নিজেরা দুর্গন্ধ ছড়ায়, কিন্তু তারা না থাকলে পুরো সমাজই দুর্গন্ধ ছড়াতো
৫. সুশীল সমাজের সদস্যরা নিশ্চয়ই নিজেদেরকে সুশীল ভাবেন; এবং নিজেদের জন্য এইরকম নামকরণ অনুমোদন করে এবং এইরকম ভাবনায় ভাবিত হয়ে তারা এ-ও বুঝিয়ে দেন - তারা ছাড়া দেশের অন্যসব মানুষ কু-শীল।
৬. সুশীল সমাজ হলো সামরিক শাসনের বাইপ্রোডাক্ট।
৭. আমি সুশীল নই, কিন্তু চারপাশে এত এত সুশীল গিজগিজ করছে যে নিজের কুশীলতার গর্ব হারিয়ে যেতে বসেছে!
৮. সামরিক অফিসারদের প্রিয় গালি - বাস্টার্ড সিভিলিয়ান! গালিটা দেয়ার সময় নিশ্চয়ই তারা তাদের সিভিলিয়ান মা-বাবা-ভাই-বোন-আত্নীয়স্বজনদের কথা মনে রেখেই দেয়!
[ওপরের এই অংশটি রাজনীতিবিমুখদের জন্য]
বিবিধ
১. বয়স কি আর জন্মসাল দিয়ে মাপা যায়, মাপতে হয় অভিজ্ঞতা দিয়ে!
২. জগতের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র হলো জিহ্বা, মানে বাকযন্ত্র
৩. দুই ধরনের মানুষ মনোহর ভঙ্গিতে কথা বলে থাকেন - প্রতারক ও প্রচারক।
[এটুকু সবার জন্য]
হুমায়ুন আজাদের প্রবচনগুচ্ছের আমি পুরো ভক্ত। আপনার উদ্যোগটাও পছন্দ হয়েছে। এধরণের বাণীচিরন্তনী বই থাকা দরকার। এগুলো সহ আরো কিছু যোগ করে একটা বই বের করার অনুরোধ রাখলাম। ফেসবুকে মাঝে মাঝে কঠিন সব বাণী পোষ্ট করেন- মজা লাগে। কমেন্টগুলোও। ব্লগেও তেমন বিতর্ক হলে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট হবে নিঃসন্দেহে।
সম্পর্ক নিয়ে যে বাণী দিলেন সেগুলোতো ডেন্জারাস!
নিজেরে উপরের কোনটায় খুঁজে পেলাম না তাই মেয়েরা 'তিন ধরনের' এইটা মানলাম না
রাজনীতি নিয়ে করা বাণীগুলো চমৎকার। বিবিধ ও।
বাণীচিরন্তনী বই!! হা হা হা... সেইরকম কিছু করার ইচ্ছা নাই। মাঝে মাঝে আচমকা দু-একটা লাইন চলে আসে, পারম্পর্যর্হীন, সেগুলোই টুকে রাখা আর কি! প্রবচনগুচ্ছ টাইপ বই করারও ইচ্ছা নাই। ওটাতে হুমায়ুন আজাদই ইউনিক।
-------------
হ্যাঁ, ফেসবুকে এর দু-তিনটে স্ট্যাটাস হিসেবে দিয়েছিলাম, চমৎকার সব কমেন্ট আর বিতর্ক জমে উঠেছিল! পুরুষরা তিন ধরনের - এই স্ট্যাটাসে সব মিলিয়ে কমেন্ট ১২৬-টা!!!! ব্লগে সেরকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা দেখি না। লোকজন এখন ফেসবুকেই বেশি অ্যাক্টিভ। রোজা-ঈদ-জ্যাম-দুর্মূল্যের বাজার - এইসব নিয়ে ব্লগাররা বোধহয় খানিকটা ক্লান্তও। আলসেমিতে পেয়েছে সবাইকে। আমিও তো অলস টাইপেরই মানুষ!
অথবা এই পোস্ট সবার কাছে আজাইরা মনে হইছে - এইটাও হইতে পারে!
--------------
মেয়েদের তিন ধরনের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পেলেন না!
তাইলে আপ্নে কোন ধরনের বইলা গেলেই পারতেন! ধরন না হয় আরেকটা বাড়াইতাম!
আমি কোন ধরনের তা বলে ধরা খেতে চাই না। এইটা সিক্রেট
এইটাকে বলে পিছলানি! আপ্নে নিশ্চয়ই ওই তিন ধরনের কোনো একটাতে পড়েন, কিন্তু স্বীকার করতে চান না বইলা পিছলাইলেন!
আসলে এতে বিতর্কের কিছু নেই। এগুলো হচ্ছে বিষয়ভেদে ব্যক্তির নিজস্ব উপলব্ধির সারাংশ। ব্যক্তিভেদে তা ভিন্ন হতেই পারে। বরং অনেক বড় লেখার চাইতে এই ছোট্ট ছোট্ট উপলব্ধিগুলো অনেক বেশি ভাবনা বিস্তারের ক্ষমতা রাখে। এরকম একটা গভীরতম বাক্যের মুখোমুখি হওয়ামাত্র পাঠক থমকে যায়। কারণ তাঁকে তখন নিজের সাথেই নিজের বোঝাপড়াটা শুরু করে দিতে হয়।
এই যেমন আমিও তো 'উৎবচন' নাম দিয়ে বেশ আগে থেকেই অনিয়মিতভাবে একটা সিরিজ করি কেবল এ জন্যেই। যদিও আপনার মতো এমন বিষয়ভিত্তিক গোছালো নয়, এলোমেলো। এবং মন্তব্যের মধ্য দিয়ে পাঠকের চিন্তাসূত্রটাও আবিষ্কার করা যায়, সামঞ্জস্য অসামঞ্জস্য বিবেচনা করার সুযোগ তৈরি হয়।
অনেক অনেক অভিনন্দন। এটাকে সিরিজ হিসেবে চালিয়ে যেতে পারেন। এর যথেষ্ট আউটপুট রয়েছে বলে আমার ধারণা।
আপনার সাথে আমি একমত, কিন্তু বিতর্ক তো হতেই পারে রণদা। এবং বিতর্ক হলে অনেক নতুন কথা বেরিয়ে আসে। সুস্থ বিতর্ক তো খুবই চমৎকার ব্যাপার। বিতর্ক না হলেও এসব কথাবার্তা নিয়ে অন্তত মজা তো করা যায়!
আপনি তো নিজেই বললেন -
------------
সিরিজ হয়তো করা হবে না! মন চাইলো বলে এটুকু লিখেছি। সিরিজ লেখার মতো ধৈর্য নাই।
ধর্মের অনেক কিছু যেমন লক্ষ্যচ্যুত হয়ে অনিষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে (যেমন, রোজায় সংযম চর্চা মূল বিষয় হলেও খাবারের ব্যাপারে চলতে থাকে বিকৃতি) তেমনি বিয়ের বিষয়টিও লক্ষ্যচ্যুত হয়ে নির্যাতনের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। বিয়ের মূল উদ্দেশ্য যদি থাকে পারষ্পরিক আশ্রয়, এখন তা হয়েছে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের আয়োজন। পোষাক কারখানার মেয়েদের এবং বাসার গৃহকর্মীদের বেলায় এটা ভয়ংকরভাবে দেখা যাচ্ছে। এরা জান পানি করা উপার্জন স্বামী বা শ্বাশুড়ীর হাতে তুলে না দিলে মৃত্যুভয়ে ভুগতে থাকে। পালানোর পথ নেই তাদের। যদিও উত্ত্যক্ততা বা নির্যাতন থেকে বাচঁতে খুব অল্প বয়সে এদেরকে বিয়ের শেকল পরিয়ে দিচ্ছে মা-বাবা।
যোগ্যতাবিহীন নর-নারীর জন্য বিয়ের অধিকার নিষিদ্ধ হোক। মানবতা মুক্তি পাক।
একমত। তবে ব্যতিক্রম নিশ্চয়ই আছে।
বিয়ের ব্যাপারটিকে আমার সার্বিক অর্থেই ভুল মনে হয় শাহাদাত ভাই। প্রকৃতিপ্রদত্ত কিছু সম্পর্ক আছে, যেমন মা-বাবা-ভাই-বোন-আত্নীয়স্বজন-দেশ-সমাজ-সময় - এগুলো আমাদের জীবনের অনিবার্য অংশ। চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত কেউ অস্বীকার করতে পারে না এই সম্পর্কগুলো। এর বাইরে বিয়েই একমাত্র সম্পর্ক যা মানুষকে একসঙ্গে জীবন-যাপনে বাধ্য করে! একজন মানুষকে আরেকজনের মানুষের সঙ্গে থাকতে বাধ্য করার ব্যাপারটাকে ঠিক নৈতিক কাজ বলে মনে হয় না আমার। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিয়ে-বিচ্ছেদ হলেও এর ক্ষত বয়ে বেড়ায় ভূক্তভোগীরা।
--------
আর হ্যাঁ, ব্যতিক্রম তো আছেই; নইলে তো আর কথা বলারই সুযোগ থাকে না!
অনেক ধন্যবাদ শাহাদাত ভাই, পড়ে কমেন্ট করার জন্য...
ধন্যবাদ কামাল ভাই, আরেকটু ভেঙে বলার জন্য। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, একটা সময়ে ধর্ম 'যাদুঘরে' ঠাঁই পাবে। বিয়ের ব্যাপারটাও বিলুপ্ত হবে খুব তাড়াতাড়ি। পরিশীলিত লিভ-টুগেদারই সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।
আপনাকেও ধন্যবাদ শাহাদাত ভাই। তবে আমার কখনো মনে হয় না - 'একটা সময়ে ধর্ম যাদুঘরে ঠাঁই পাবে।' বরং ধর্ম তার রূপ পাল্টাবে, ধরন পাল্টাবে। ইতিমধ্যেই অনেকখানি পাল্টে ফেলেছেও! উদ্ভবকালের ধর্মের সঙ্গে এখনকার ধর্মের অনেক পার্থক্য। এটা শুধু ইসলাম ধর্ম নয়, সব ধর্মের ক্ষেত্রেই ঘটেছে! মানুষ খুবই দুর্বল ও অসহায় প্রাণী, ধর্মের কাছে তারা আশ্রয় পায়। আর সেজন্যই, নিজেদের প্রয়োজনেই, মানুষ ধর্ম আবিষ্কার করেছে!
বিয়েপ্রথাও বিলুপ্ত হবার কোনো সম্ভাবনা দেখি না! বিয়ের কনসেপ্টটা ব্যক্তিগত মালিকানার বোধ থেকে উৎসারিত, এত সহজে মানুষ এই বোধ থেকে বেরুতে পারবে না। তবে বিয়ে যে রকম আজীবন-বন্ধন হিসেবে গণ্য গতো তেমনটি আর হবে না। বিয়ে-বিচ্ছেদের সংখ্যা বাড়বে, বাড়বে লিভ-টুগেদার, এবং বহুগামিতার ঘটনাও। এসবই ঘটবে বিয়ের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবার আকাঙ্ক্ষায়। তবে বিশেষ লাভ হবে না তাতে।
শান্তি পাবে না কেউ... পাবে না পাবে না পাবে না (শহীদ কাদরীকে মনে পড়ে গেল)।
সম্পর্ক বিষয়ক ২নংটা খুবই সত্য একটা উপলব্ধি...
বুঝলাম। ইতিমধ্যেই এই অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে আপনার!
আশপাশের মানুষ গুলোকে খুব ভালোভাবে অবজার্ভ করি, এটা আমার একটা বদভ্যাস
তার মানে নিজের জীবনে এইরকম ঘটে নাই বলতে চান?!?
বিয়ের আবিষ্কারে ভুল নাই, ভুল হইছে যৌনাঙ্গ-কেন্দ্রিক ভিক্টোরিয়ান নৈতিকতার আবিষ্কারে বিয়ের স্বাভাবিক বিবর্তন বন্ধ করে দেয়াতে ।
'বিয়ের আবিষ্কারে ভুল নাই' বলছেন!! আদিম সমাজে যখন বিয়ে প্রথা ছিলো না, তখনও যৌনতা ছিলো, ছিলো সন্তান জন্মের ব্যাপারও, নইলে তো প্রজাতি রক্ষা হতো না! কিন্তু ওই সময় নারী-পুরুষ পরস্পরকে নিজেদের নমগরল বলে মনে করতো না, এমনকি শিশুরাও বড়ো হয়ে উঠতো কমিউনিটির একজন হিসেবে - নির্দিষ্ট দুজন মানুষের সন্তান হিসবে নয়! বিয়ের কনসেপ্টটা ব্যক্তিগত মালিকানার বোধ থেকে উৎসারিত - এই মানুষটি আমার, এই সন্তানটি আমার, আমি যে সম্পদ অর্জন করেছি সেটা ভোগ করার অধিকার শুধুমাত্র আমার সন্তানের ইত্যাদি! কমিউনিটির একজন হিসেবে দায়িত্ব পালন বাদ দিয়ে এই ধরনের আত্নকেন্দ্রিক চিন্তা থেকে উদ্ভুত যে প্রথা - বিয়ে - তাকে আপনার ভুল বলে মনে হয় না!!!
'যৌনাঙ্গ-কেন্দ্রিক ভিক্টোরিয়ান নৈতিকতার আবিষ্কারে বিয়ের স্বাভাবিক বিবর্তন বন্ধ করে দেয়া’ তো অনেক পরের ব্যাপার। মানুষের আদিম স্বভাবটা নিয়ে একটু ভাবতে হবে তো!
আমার মন্তব্যে একটা ভুল চোখে পড়লো।
ওই সময় নারী-পুরুষ পরস্পরকে নিজেদের নমগরল বলে মনে করতো না = ওই সময় নারী-পুরুষ পরস্পরকে নিজেদের সম্পদ বলে মনে করতো না
কামাল ভাইর প্রতিমন্তব্য ভালো লাগছে। পাখির পয়েন্টটাও।
দুরের পাখি তো সামুতে 'যুক্তির ফ্যালাসি' নিয়ে দারুণ একটা পর্ব চালাইছেন, সেটার ধারাবাহিকতা কী এখানে রক্ষা করা যায়?
আমিও যুক্তির ফ্যালাসি সিরিজের ভক্ত ছিলাম একেবারে শুরু থেকে - দূরের পাখি যখন এইটা 'ফারুক আহসান' নিক থেকে পোস্ট করেছিলেন! সেইসব দিনের কথা বোধহয় পাখির মনেও নাই!
বিবিধ জোশ
থ্যাংকস জনাব।
কামাল ভাইয়ের কষ্টে চউক্ষে পানি আইসা পড়ল। (
হাহাহাহা... দুষ্টুমিরে দুষ্টুমি হিসাবেই নিলাম রায়হান ভাই।
কিন্তু ব্যাপারটাকে ব্যক্তিগত বলে ভাবার সুযোগ নাই। সামগ্রিকভাবে মানব-সভ্যতার বিবর্তনে বিয়ে ব্যাপারটাকে আমার ভুল বলে মনে হয়। ওপরে শাহাদাত ভাই আর দূরের পাখিকে দেয়া আমার মন্তব্য দুটো (বিয়ে সংক্রান্ত) একটু কষ্ট করে পড়ে নিয়েন!
লেখা এবং মন্তব্য সমূহ উভয়ই চমৎকার।লেখককে ধন্যবাদ। ।।
পাঠ-পরবর্তী অনুভূতি জানানোর জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
ভালো লাগল। বেশ ভালো।
থ্যাংকস...
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম
পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা!!! তাহলে তো অনন্তকাল অপেক্ষা করতে হবে!
সিরিজ হোক
সিরিজ চাই। করতে হবে
বিষয় : নারী-পুরুষ
ক আর গ এর মধ্যের পার্থক্য ধরতে পারলাম না
বিবিধ জোস।
সম্পর্ক নিয়ে কথাগুলোতে একমত।মনে ধরছে।
মেয়েরা তিন ধরনের : ক) ভালোবাসতে পারে না কিন্তু মুখে বলে ভালোবাসি। খ)ভালোবাসতে জানে, কিন্তু মুখে বলতে পারে না। গ) ভালোবাসতে জানে না, কিন্তু জানে বলে মনে করে এবং ভালোবাসি ভালোবাসি বলে গলা ফাটিয়ে ফেলে
এর কোনটার মধ্যেই আমি নাই। যারা ভালোবাসতে জানে এবং মুখে বলতেও পারে তারা কই?
মন্তব্য করুন