তুমি বিনে অজানাই হৃদি মোর..
পরিবর্তন জিনিসটা অনেক সময়ই সুফল বয়ে আনে জানি। কিন্তু মাঝে মাঝে অপেক্ষার সময়গুলো একটু বেশিই ধিরস্থির মনে হয়। আবহাওয়া বদলাচ্ছে প্রতিনিয়ত, ফলে ঠাণ্ডা জ্বর লেগেই আছে। শরীর সব কিছু সইতে পারে না সবসময়। তবে চারপাশের বিভিন্ন মুখোসের নিচের মুখের ক্রমাগত বদল খুব একটা অবাক করে না আর আজকাল, সয়ে যায় নি যদিও। আসলে ভাবতেও ক্লান্তি লাগে মাঝে মাঝে।
আর কাছের দুরের যত কাছের মানুষগুলো, তাদের মন ভালো না থাকাটাও আসলে বেশ খারাপ জিনিস। আর নিজের এ ব্যাপারে যখন হাত পা বাধা মনে হয়, অস্থির লাগে খুব। হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে, কিন্তু হেরে যেতে নেই বলে পারি না।
সবকিছু মিলিয়েই মন ভালো যাচ্ছে না। একদিন পরেই খুব প্রিয় সময় জানার পরও, খুব প্রিয় কিছু মানুষ অথবা সময়ের অভাব হয়তো কিছুতেই ঘুচবার নয়।
অনেক কেই দেখি মন খারাপের দিন গুলোতে দিব্যি ভালো থাকতে শিখে যায়। অথবা হয়তো মুখোশের ছাপে মুখগুলোও বদলে যায় সময়ে অসময়ে, আমিই বুঝতে পারি না কেবল। অনেকে দেখি বিষাদকালেও ধুমধারাক্কা গান শুনে ফুরফুরে হয়ে যায়, আমি পারি না। চুপচাপ ঠাণ্ডা কিছু গানে ডুবে যেতেই বরং ভালো লাগে, নীল সময়ের আয়নার উদাসি হাওয়ায় ভেসে যেতে মন্দ লাগে না আমার।
কিছুটা কম চলা কিছু গান আর একটা অন্যরকম সুরেই কিছুটা আটকা পড়ে আছি গত কয়েক সপ্তাহ, ঘুরে ফিরে কেবলই ফিরে আসে আনমনা দিন।
প্রথম গানটা অরিজিত আর মধুরা ভটচার্যের গাওয়া 'কেটে গেছে দিন' ।
কথাগুলো এরকম –
‘‘কেটে গেছে দিন জল পেরোতে,
চাইছেনা ঠিক সন্ধ্যে হতে;
ভেসে যাবো তবু দিচ্ছি স্রোতে মন।উঁচু নিচু ঢেউ রাস্তা নিচু,
মিছি মিছি তবু নিচ্ছি পিছু;
হাতে হাত যদি রাখো কিছুক্ষন।যেখানে বল দিন সূর্য রাখি,
যেখানে বল রাত চাই জোনাকি;
সাজাবো সব তোমার মতন।হেটে যাওয়া সেই মন শহরে রাস্তা অচেনা,
ডাকনামে তাকে ডাকলে পাবে; নয়তো পাবে না।যেখানে বল চুপ – নীরবতা,
যেখানে বল সব – অনেক কথা;
সাজাবো সব তোমার মতন।তুমি বলে দিলে রাস্তা পাবো
পৌঁছে যাব দূর,
সহসিয়া চোখ ফের হারাবো
নেশায় ডুবে চুর।যেখানে বল মেঘ উড়ায় ধুলো,
যেখানে বল শীত কার্পাস তুলো;
সাজাবো সব তোমার মতন।’’
এর পরের গান কুশল এর গাওয়া 'কে বাড়াবে হাত' ।
কিছু লাইন এরকম -
‘‘কে বাড়াবে হাত আর কে শোনাবে কথা,
ফিরবার পথে শুধু জমে নীরবতা।
কে দেখাবে ছায়াপথ কে উড়াবে ছাই,
নিহত আতশবাজি পোড়া দেশলাই।চলো মন, চলো মন; চলো মন -
ডুবে যেতে যেতে আজ ফের ভেসে যাই।’’
এরপর অনুপমের গলায় 'শেষ বার ডুবতে ডুবতে' ।
কিছু কথা এরকম –
‘‘শেষ বার ডুবতে ডুবতে,
গভীর চোরাবালি।
আমিও হাত বাড়িয়ে ছিলাম,
তুমিও কাছে ছিলে;
তবু ধরোনি এই হাত।শেষ বার ডুবতে ডুবতে..
কতটা উঠলে কতটা নামা হয়,
সিঁড়ি ভাঙ্গা এক অঙ্ক কষা হয়।
সাপের মুখে তুমি আমি সব্বাই,
বিষে বিষে নীল অমৃত খুঁজে যাই।শেষ বার ডুবতে ডুবতে..’’
এর পর আছে অরিজিতের আরেকখানা বাংলা হিন্দি হাইব্রিড গান, 'ও ফকিরা..' ।
কিছু কথা –
‘‘এই তো সেদিন রাত জাগিয়ে ঘুম কেড়েছে যে,
আজকে জানে কেন হঠাৎ হাত ছেড়েছে সে।
ফিরতি পথের নেই ঠিকানা দিক হারানো মন,
স্মৃতি দিয়ে তৈরি পাড়ায় বাঁচবে কতোক্ষন।একলা একা খুঁজবো কত এভাবে নিজেকে বাঁচানোর বাহানা..
ও ফকিরা মান যা না,
দিল কে পিড়া জানেজানা।
তেরে দার পে আব কে সার হ্যায়
আপনি জান রাখ দিয়া,
দিল কি দারগা তেরে দার হ্যায়
ইয়ে জাহান রাখ দিয়া।বলছে লোকে কত কথাই যে বলে বলুক,
মাঝরাতে রোজ দিচ্ছে টোকা ভুলতে চাওয়া সুখ।
ধরতে গেলে যাচ্ছে সরে আলগা মুঠো রাজ,
ফিরতে গেলে ফুটছে পায়ে আয়না ভাঙ্গা কাঁচ।একলা একা খুঁজবো কত এভাবে নিজেকে বাঁচানোর বাহানা..’’
গানটার ফাঁকে ফাঁকে অরিজিতের ট্রেডমার্ক গলায় একটু আধটু আলাপের জন্যই হয়তো গানটা একটু বেশিই ভালো লেগেছে।
শেষে এসে যে গানটার কথা বলবো এই গানটা না শুনলে আরও অনেক না লেখা লেখার মতন এই লেখাটুকুও হয়তো লেখা হয়ে উঠতো না। কিছু গান না শুনলেই নয়, কিছু কিছু গান না শোনালেই নয়। একবার কোথায় যেন শুনেছিলাম বা পড়েছিলাম যে, সংগীতই একমাত্র শক্তি যা দেশ, কাল, জাতির যে কোন সীমারেখা অতিক্রম করে যেতে পারে নিমিষেই। এটা এমন একটা গান।
এ আর রহমানের সুরের সাথে আর্জেন্টাইন শিল্পী সোলেঞ্জ মেরডিনিয়ান‘র অদ্ভুত মায়াভরা বিষাদছোঁয়া গলার ফিউশন, অতুলনীয়। রহমানের গলায় কিছু কথা বাদে আর কিছুই বুঝতে পারি নি, তাতেও দিব্যি আগপাশতলা সুরের জাদুতে তলিয়ে যেতে সমস্যা হয় নি বিন্দুমাত্র।
গানটা একটা হলিউড মুভিতে ব্যাবহৃত হয়েছিল গত বছর,
টাইটেল – 'মাই মাইন্ড ইজ এ স্ট্রেঞ্জার উইদাউট ইউ' ।
ফরাসি তো কিছুই পারি না,
রহমান’জির ভোকাল অংশটুকু এরকম –
‘‘সাজনা,
সাজনা –ও ইয়াদনা..
বিন তেরে যো জিয়েন,
কিয়া জিয়েন –
সান্স হি যো লিয়েন,
না লিয়েন..বিন তেরে..
তেরে বিনা,
সাজনা..
দিল ভি পারায়া লাগে রে,
কোই পারোসি লাগে রে..তেরে বিনা,
সাজনা..’’
আর নেট খুঁজে মনে হচ্ছে ফরাসী কথাগুলোর মানে অনেকটা এরকম –
‘‘তুমি এক শব্দ,
আমারই জন্য তুমি।
তুমি রঙধনু; হৃদয়ে আমার,
প্রতি মুহুর্তে সূর্যোদয়।’’
আর কি, আমার কথা আপাতত এটুকুই। গানগুলো আমার মত করে আর কারও ভালো লাগলে আর টা জানতে পারলে হয়তে আরও ভালো লাগবে।
ভালো হোক সক্কলের। অনেক ভালো, সবসময়।।
[উক্ত হাবিজাবি ফাঁকিবাজি পোস্ট খানি তানবীরা’পু-কে গিফটিত হইল! ]
তানবীরা আপুকে আমি এই পোষ্টের প্রথম কমেন্ট উৎসর্গ করিলাম!
সাব্বাস!
আপনার পোষ্টের কল্যানে কিছু গান শোনা হল। ঠ্যাঙ্কু
আপ্নেরেও থ্যাঙ্কু, আমার লেখা পড়ে যাওয়ার জইন্য।
ফিরা আসছেন তো বেশ কয়েকদিন হইয়া গেলো,
নতুন একটা লেখা দেন না..
কুবি কইছেন-
লেখার কোন শেষ নাই,
না লেখাই ভালো তাই
কইছে আপ্নেরে!
বলার কথার শেষ নাই,
লেখা চালাই যাওন চাই!
ভালো লাগলো
জেনে আমারও ভালো লাগলো।
হা হা হা চালাকী
মনখারাপ নিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা একটি অনুশীলনের ব্যাপার। জীবন যখন উপর্যুপরি
বাঁশ দিবে তখন এটা সাধারণ ডাল ভাত হয়ে যাবে। বরং মন ভাল থাকলেই মনে হবে, আমার এমন এমন লাগে ক্যারে, ফইন্নির ঘরের ফইন্নি . আমার কী অইছে .।।।
হিঃ হিঃ
জীবন একখানা বাঁশবাগান,
ইহা আদর্শলিপির সমাপনী পাঠ হওয়া অত্যাবশ্যক!
নতুন কিছু পেলাম
পড়া ও চমৎকার মন্তব্যের জন্য
আহারে!!!!
গানগুলো এখনি শুনতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু শুনতে পারছি না ।
তানবীরা'পুর গিফটি আমারই অনেক পছন্দ হয়ে গেছে
এই হাবিজাবি যারই ভাল্লাগবো তার জন্যই শেয়ারড গিফট!
আপ্নের পুচকিটা কেমন আছে? উনার কান্ডকারখানা নিয়া একটা লেখা পোস্টান না..প্লিজ..
কী হাবিজাবি অবস্থা চারদিকে। মন খারাপের মৌসুম পড়ে গেছে! সমস্যা নাই, সামনে বসন্ত কাল আসছে। হাওয়া বদল হবে (।)
দেখা যাক..
আপনার জন্যেও শুভকামনা।
মন্তব্য করুন