ইউজার লগইন

তিন যুদ্ধাপরাধী গ্রেপ্তার, সরকারের বিশেষ কৌশল?

বিশিষ্ট বর্বর যুদ্ধাপরাধী, বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী, '৭১ এর ঘাতক দালাল এবং বর্তমানের জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের তিন নেতা নিজামী, মুজাহিদ আর সাঈদীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গতকাল।

মুহূর্তের মধ্যে এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে সারাবিশ্বে। কিছু কুলাঙ্গার ছাড়া বাকী সবাই আনন্দে মেতে ওঠে। কিন্তু ঘর পোড়া গরুর যেহেতু সিঁদুরে মেঘ দেখলেও ভয়, তাই এই আনন্দ মিলিয়ে যেতেও সময় লাগে না। ভর করতে থাকে সন্দেহ। মামুলী এক জামিনযোগ্য মামলায় এদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যেই জামিন পেয়ে বেরিয়ে যাবে এরা। তারপর তাদের আস্ফালন থামাবে কে?

এই সন্দেহ অমূলক নয়। এর আগে গোলাম আজমকে নিয়ে এরকম প্রহসন হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী ইস্যুতে যখন তাকে গণআদালতে দাঁড়া করানো হচ্ছে তখন নাগরিকত্ব মামলার মাধ্যমে উল্টো তাকে এই দেশে বৈধতা দিয়েছিলো সরকার। দিয়েছিল নাগরিকত্ব।

এবারও কি সেরকমই কিছু ঘটছে? এই তিন কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীকে মামুলী এক মামলায় গ্রেপ্তার করে মূল ফোকাস পয়েন্ট থেকে সরতে চাচ্ছে? অনেকে বলছেন এটা সম্ভবত জামাতীদের কোনও নতুন ষড়যন্ত্রের অংশ। তারা ইচ্ছে করে ধরা দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে মূল আন্দোলনকে ব্যাহত করতে চাচ্ছে।

কিন্তু একবেলার নোটিশে এই তিন প্রভাবশালী নেতাকে গ্রেপ্তার- বিষয়টি নিয়ে ভাবতে সাহায্য করে। এই তিনজনকে গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়া কী হবে তা সরকার অবশ্যই অবগত আছেন। সারাদেশে অরাজক পরিস্থিতি, স্যাবোটাজ ইত্যাদি হতে পারে, এসবও অজানা নয়। তবু এই তরিৎ গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে সরকার প্রস্তুতি নিয়েই কাজটি করেছে।

এই সরকার দেশ পরিচালনায় এসেছিলো প্রধান যে গণদাবীটি মাথায় নিয়ে, তা হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। '৭৫ এর ঘাতকদের বিচারকাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে এই সরকার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। তারপর থেকেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া চলছিলো। যতটা প্রকাশ্যে তারচেয়ে বেশি আড়ালে সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো বিচারকাজ শুরু করার। গত বেশ অনেকদিন হলো সারাদেশের কোথাও জামায়াত শিবির প্রকাশ্যে দাঁড়াতে পারেনি। মিছিল সমাবেশ করতে পারেনি। তারা কোনঠাসা হয়ে গেছে।

আর শুরু থেকেই দাবী ছিলো যুদ্ধাপরাধীদের আগে গ্রেপ্তার করে তারপর বিচারকার্য শুরু হোক। নয়তো এরা বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র করতে পারে কিংবা পালিয়ে যেতে পারে। [ইতিমধ্যে গোলাম আযম লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছে!]

গতকালের গ্রেপ্তার সেই দাবীরই প্রতিফলন বলে মনে করছি। মুজাহিদ আর নিজামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায়, কিন্তু সাঈদীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে পিরোজপুরের ভিন্ন একটি মামলায়। এ থেকেই ধারণা করছি এদেরকে গ্রেপ্তারের বিষয়টা পূর্ব পরিকল্পিত। সরকারের একটা কৌশল বিশেষ।

এখন এদেরকে বের হতে না দিলেই হয়। এখনি শুরু করে দিতে হবে যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে বিচার। এটাই উৎকৃষ্ট সময়। আশা করি সরকার এবার কোনও বোকামীর আশ্রয় নেবে না। যদি নেয়, তাহলে এর দায় শোধ করতে হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকেই।

আবারো স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আমরা এই তিনজন এবং গোলাম আযমসহ অন্য প্রধান যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসী চাই। অন্যথা নয়।

পোস্টটি ৩০ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

নুশেরা's picture


এখনি শুরু করে দিতে হবে যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে বিচার। এটাই উৎকৃষ্ট সময়।

মেসবাহ য়াযাদ's picture


ভালো বলেছেন বস। এখন সরকারকে প্রতিটা পদক্ষেপ নিতে হবে অত্যন্ত ভেবে চিন্তে। সুদূরপ্রসারী ভাবনার কোনো কালচার আমাদের দেশে নেই। ধর তক্তা, মারো পেরেক নীতিতে চলতে অভ্যস্ত আমরা, আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থা, সবাই।
সময় এসেছে, আমাদের অনেক ভেবে চিন্তে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে এইসব
কুলাঙ্গার, যুদ্ধাপরাধী, ঘৃণিত মানুষগুলোর ব্যাপারে...

নাহীদ Hossain's picture


আশা করি সরকার এবার কোনও বোকামীর আশ্রয় নেবে না। যদি নেয়, তাহলে এর দায় শোধ
করতে হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকেই ............
                              তবে খুব বেশী আশাবাদিও হইতে পারতেছি না।

জ্যোতি's picture


আমরা এই তিনজন এবং গোলাম আযমসহ অন্য প্রধান যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসী চাই।

শওকত মাসুম's picture


কাহিনী বুঝতাছি না। কি হচ্ছে?

ভাস্কর's picture


মামলাটার প্রকৃতি দেখলেই বুঝন যায় ঘটনা কই যাইবো। রফিকুল ইসলাম নামের যেই নেতা বা কর্মী নিজামীর রাজনৈতিক সংগ্রামরে মুহাম্মদের ধর্ম প্রচারের সংগ্রামের লগে মিলাইয়া বক্তব্য দিছে সে এখন কই? বা মামলাটা কি তার বিরুদ্ধেও করা হইছে কীনা এই বিষয়টা কিন্তু কোন জায়গাতেই লেখা হয় নাই। বিষয়টা য্যান এইরম, আমি মদ-গাঞ্জা-হেরোইন খাইয়া মহল্লায় মাস্তানি করি...জনগণ অতীষ্ঠ আমার অত্যাচারে। তো এলাকাবাসী মামলা করলো, অভিভাবকেরা ক্যান আমারে নিবৃত্ত করে না এই অভিযোগে। পুলিশ আইসা আমার বাপ-মা'রে ধরলো। এখন আমার বাপ-মায়ের কী বিচার করবো আদালত?

এই যে ফাইজলামির রাজনীতি, এইটার কারণ কি? আওয়ামিরা কেবল প্রতিহিংসার বশেও এইটা করতে পারে...হরতালের মধ্য দিয়া চারদলীয় যেই সংহতি তৈরী হইতে শুরু করলো সেইটার একটু লাড়া দিতেও এইটা করতে পারে সরকার। মাঝখান দিয়া জামায়াতিরা তাগো তিন নেতারে হিরো হিসাবে উপস্থাপণ করতে শুরু করবো এখন জনগণের কাছে।

আওয়ামি ফাইজলামির সাথে আমি আমার মূল্যবান আবেগরে যূক্ত করতে চাই না।

সাঈদ's picture


সরকার কি পর্যাপ্ত ভাবে সংগঠিত, বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী আদালতের কাজে ? প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা কি ঠিক হয়েছে ? খুব শীঘ্রই কি কাজ শুরু হবে বিশেষ আদালতের ? প্রস্তুতি কি শেষ সরকারের?

আর না হলে এরকম মামলা-গ্রেফতার বুমেরাং হবার চান্স বেশী।

তানবীরা's picture


আমার মনে হয় আই ওয়াশ। পরের বারের নির্বাচনী প্রচারের সময় বলবে, আমরা কথা রেখেছি, গ্রেফতার করেছিলাম, এবার ক্ষমতায় আসলে বিচার করবো। বোকা ম্যাঙ্গো পাব্লিক ভুলে যাবে কি মামলায় গ্রেফতার করেছিল কিংবা সেটা আদৌও খতিয়েই দেখবে না। নির্লজ্জ বেহায়ারা আর এক ধাপ এগিয়ে মিথ্যাচার করবে।

১০

স্বপ্নের ফেরীওয়ালা's picture


আম্লীগের উপর আমার কোনই ভরসা নাই...তবুও আমি সব চেয়ে খুশী হমু এই ৩ জনরে ক্রস্ফায়ারে দিলে...

~

১১

হাসিব's picture


কোথায় গেলেন ভাইসব?
জাতির বিবেকদের হাই তোলার অপেক্ষায় বাংলাদেশ Sad(

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

সাম্প্রতিক মন্তব্য