প্রসঙ্গ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার
একবেলার নোটিশেই যখন তিন তিনজন অন্যতম যুদ্ধাপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হলো একটি সাধারণ মামলায়, তখন সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন যে এই মামলায় তো এরা দুয়েকদিনের মধ্যেই জামিনে ছাড়া পেয়ে যাবে। এবং এর ফলে আসলে যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার প্রক্রিয়ার ক্ষতিই করলো সরকার।
কিন্তু আমি তখনই বলেছিলাম এই মামলায় গ্রেপ্তার সরকারের একটি বিশেষ কৌশল বৈ আর কিছু নয়। প্রায় এক সপ্তাহ চলে যাবার পর এখন নিশ্চিত করেই বলতে পারি আমার অনুমান ভুল ছিলো না। জামিনে ছেড়ে দেওয়ার জন্য সরকার এদের গ্রেপ্তার করেনি, এই প্রক্রিয়া যুদ্ধাপরাধ পর্যন্ত গড়াবে, তা নিশ্চিত করেই বলা যাচ্ছে এখন। ইতোমধ্যে আইনমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন সে ব্যাপারে।
এই কৌশলের প্রয়োজন ছিলো, নয়তো অহেতুক নাশকতা হতো। জামাত শিবির চক্র অত্যন্ত চতুর এবং ধূর্ত। তারা প্রস্তুত ছিলো যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেপ্তারের। আকস্মিক এই আক্রমণ তাদের অনেক পরিকল্পনাই নস্যাত করে দিয়েছে। সুপরিকল্পিত এই কৌশলের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ। এই তিন কুচক্রীকে বাইরে রেখে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা সম্ভব ছিলো না। আবারো ধন্যবাদ সরকারকে, সময়োপযোগি সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে পারার জন্য।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সুষ্ঠু বিচার আশা জাগায়, এই বিচার প্রক্রিয়াও সুষ্ঠুই হবে। যদিও আন্তর্জাতিক চাপ, নাশকতা, আর জামাতী-পাকীদের সুক্ষ্ম কৌশল মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে সরকারকে।
আমাদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে এটুকু জানাতে চাই, মনে রাখবেন দেশের আমজনতা আপনাদের সঙ্গে আছে। গুটিকতক মৌলবাদী শক্তির আস্ফালনে ভীত হবেন না।
গোলাম আযমসহ অন্য অন্য শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদেরও গ্রেপ্তার করুন দ্রুত। কোনও সাধারণ আদালত না, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হোক স্পেশাল ট্রাইবুনালে।
অগ্রীম শুভকামনা থাকলো।
বি: দ্র: একই সঙ্গে ফেসবুক নোট আকারে প্রকাশিত





শুরুতে আমি নিজেই এমনটি মনে করেছিলাম ।
গু আজম নাকি ইতিমধ্যে ইউকে ভিসার প্রক্রিয়া শেষ করেছেন পালানোর জন্য (ডাঃ এম এ হাসান ) আইন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন-এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না ! (সুত্রঃ এবিসি রেডিও)
একমত ।
আমিও আপনার মত আশাবাদী হতে চাই যদিও-
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবির আন্দোলনে সাথে ছিলাম , আছি এবং থাকব
যতদিন না এই শুয়রের বাচ্চাদের বিচার না হয় ।
হবে-
যতদিন না এই শুয়রের বাচ্চাদের বিচার হয় ।
ভেবেচিন্তে হোমওয়ার্ক করেছে বলে আমার মনে হয় না। বলা যায় সুযোগটা নিয়েছে।
উপযুক্ত সুযোগ নেওয়াটা তো কৌশলেরই অংশ, পরিকল্পনারও। পুরো ঘটনায় এটাই কি স্পষ্ট নয় যে সরকার এরকম একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলো, এবং সুযোগ পেলেই তা লুফে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলো?
তবে এটা ঠিক, এখন এগুতে হবে খুব সাবধানে। ভুল করার কোনও অবকাশ নেই
এই প্রক্রিয়া এখনো যুদ্ধাপরাধের দিকে যাইবো কি না সেই ব্যাপারে এক সপ্তাহেই নিশ্চিত হইয়া যাওনটা মনে হয় না ঠিক হইছে আপনের। নতুন মামলা হইছে নিজামীর নামে ১০ ট্রাক অস্ত্রের মামলা। এইসব মামলাই খুব ভালনারেবল মামলা। মামলা দিয়া পৃথিবীতে খুব কিছু হয় নাই...আমি এখনো মনে করি সরকার যদি আপনের কথা মতোন কৌশলেও থাকে তাইলে সেইটা খুব কার্যকরী কৌশল হওনের কথা না। কারণ আন্দোলন দানা বাঁধতে দিলে ঐটা মানবতা বিরোধী মামলারে ক্ষতি করনের সম্ভাবনাই বেশি। কারণ আগে আন্দোলন করতে হইতো সরাসরি তাগো ১৯৭১-এর ভূমিকা নিয়া, আর এখন বিষয়টা বরং সরকার আপনের ভাষ্য অনুযায়ী সহজ কইরা দিতেছে। তারা এখন আওয়ামি সরকারের বিরুদ্ধে হ্যারাসমেন্টের অভিযোগ আনতেছে। এই যে রাজনৈতিক হয়রানি এইটার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি...
নিজামীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মামলা, রা.বি.তে ছাত্র হত্যার মামলারে বিশ্বাসযোগ্য করতেই তো টাইম লাগে। ১০ ট্রাক অস্ত্রের বিষয়টাও খুব একটা জুইতের মনে হয় না। ৭১এর ভূমিকা আর ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বাদ দিলে এইগুলিরে আমার নিজের কাছেই রাজনৈতিক হয়রানি মনে হইতেছে...এর চাইতে অধিক কার্যকরী বিশ্বাসযোগ্য মামলা মানবতা বিরোধী ইস্যূতে। যেইটা সামনে আনলে আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম দূর্বল হইতো।
সম্ভবত সরকার এদের আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্পেশাল ট্রাইবুনালে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত। এই চেষ্টাটা সফল হবে বলেই ধারণা করছি।
এরা যে সহসাই মুক্তি পাচ্ছে না, যুদ্ধাপরাধ মামলায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত, এটুকু নিশ্চিত করা যাচ্ছে। বাকীটুকু সময়ই বলে দেবে
আপনে আমার জায়গাটাই ধরেন নাই অথবা ধরতে চাইলেন না। যখন হয়রানিমূলক মামলাতে গ্রেফতার দেখানো হইবো তখন সেইটা বরং ঝামেলার। কারণ তার বিরুদ্ধে বরং আন্দোলন যৌক্তিক হয়...আর এই ধরনের মামলা বিষয়টারে বরং হালকা করে। যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক কোন মামলা সরকার করতেছেনা বা করার প্ল্যানও নাই, তাগো মামলা স্পষ্টতঃই মানবতা বিরোধী আইনে।
কোন পর্যন্ত আটকাইয়া রাখনের কথা বলতে চাইতেছেন? যেই পর্যন্ত মামলা দায়ের না হয়? নাকি যেই পর্যন্ত রায় না হয়? আমি আপনের এই জায়গাটাও বুঝি নাই...এখন সারাদেশে মিছিল মিটিং শুরু হইছে...কিন্তু মানবতা বিরোধী মামলায় যদি গ্রেফতার করা হইতো তাইলে কি জামায়াতিরা এই আন্দোলনের দিকে আগাইতে পারতো এতো সহজে? আমার তো তা মনে হইতেছে না একেবারেই...
এই বিষয়ে ভাস্করদার সাথে আমি একমত।
আন্তর্জাতিক চাপটাই আসল। সৌদী-আরব (খালেদা জিয়ার একটা ফোনেই সৌদী মসনদ নড়ে উঠবে) লবিং করলে এবং এর সঙ্গে সব আরবদেশ একসাথ হলে সরকার চাপে পড়ে যাবে।
আমার ধারণা বিষয়টা এখন পুলসেরাতে আছে। গ্রেপ্তারের এই কৌশলটা আমার পছন্দ হইছে। বেহুদা কিছু ক্যাচাল এড়ানো গেছে। এখন বাকীগুলারে গ্রেপ্তার করতে হবে। আর প্রতিটা পদক্ষেপ নিতে হইবো খুব খিয়াল কইরা। একটা সামান্য ভুল করলেই পুরা ব্যাপারটা ক্যাচায়া যাইতে পারে। জামাতীরা যে কোনখান থেকা কোপ মারবো আল্লায় জানে। হুশ করে আগাতে হবে।
আমি আশাবাদী।
ফেসবুকে করা মন্তব্যটাই আবার দিলাম
এটার একটা সুরাহ হয়ে যাওয়া দেশের জন্য প্রয়োজন।
আর সময় নস্ট চলবে না।
লোকেনদা, ফেসবুকের মন্তব্যই আবার করছি। আশাবাদী হতে চাই, আপনার আশাই যেনো সত্যি হয়। মরার আগে তাদের বিচার দেখে যেতে চাই। সোনার বাংলা যদি নাও হয় লিষ্ট গোল্ড প্লেটেড বাংলা যেনো দেখে যেতে পারি
@ভাস্কর
আপনি মনে এখনো মনে করছেন এই তিন যুদ্ধাপরাধীকে গ্রেপ্তার করে কিছু ভালনারেবল মামলার তদন্ত এবং বিচার হবে কেবল, আমাদের মূল যে দাবী এদের ৭১ এর ভূমিকার তদন্ত এবং বিচার, তা হবে না। কিন্তু আলামত বিবেচনায় আমি মনে করছি মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এরা ছাড়া পাবে না।
দুটোই ধারণা, তর্ক উপযুক্ত না। সময়ই বলে দেবে কোনটা ঠিক।
আপনাকে ধন্যবাদ।
লোকেন বোস সাহেব,
আমি মনে হয় নিজের কথা বুঝাইতে পারি না মানুষরে আজকাল, এর লেইগা মাঝে মাঝে ব্লগিং ছাইড়া দেওনের ইচ্ছা হয়। আপনে যেইটা বুঝছেন আমি আদৌ সেই ধারণা করি নাই দাদা। আমি যা কইতে চাইছি সেইটা হইলো এইরম হুদাই হয়রানিমূলক মামলা জামায়াত শিবিররে দেশব্যাপী আন্দোলন-সংগ্রাম গইড়া তুলতে সহযোগিতা করবো। ডিজিএফআইয়ের কড়া নজরদারীর পরেও পত্রিকায় তার ছিটেফোঁটা নিউজ দেখবেন আছে। আমি এই প্রতিক্রিয়া নির্ভর রাজনীতির সম্ভাবনা নিয়া কথা কইছিলাম। যদি তাগো কোন জোরদার মামলায় গ্রেফতার করা হইতো তাইলে এই ধরনের আন্দোলনে তারা বিএনপিরে পাইতো না, সেইটা যুদ্ধাপরাধ নিয়া বিএনপি'র আগের প্রতিক্রিয়াতেই বুঝা গেছে। জনগণের সহানুভূতি পাইতেও ঝামেলাই হইতো। কারণ যুদ্ধাপরাধের বা একাত্তরে মানবতা বিরোধের মামলায় তাগো অবস্থান জাতির কাছে দিবালোকের মতোই পরিষ্কার।
এইবারো যদি আমি আপনেরে না বুঝাইতে পারি তাইলে আসলেই লেখালেখি ছাইড়া দিতে হইবো আমার...
@ভাস্কর
আমি বুঝতে পারিনি, তার দায় নিয়ে আপনি কেন লেখালেখি ছেড়ে দেবেন? বার বার যদি বুঝতে ব্যর্থ হই, আমিই নাহয় আপনার লেখা পড়া ছেড়ে দেবো।
মানবতা বিরোধী মামলায় গ্রেপ্তার করা হলে বিএনপি এবং জামায়াত ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিবাদ করতো না বলছেন? আন্দোলন করতো না! এমনি এমনি ছেড়ে দিতো?
আপনার মনে হতে পারে, কিন্তু আমার মনে হচ্ছে না।
আমার মনে হচ্ছে এখন যতটুকু হচ্ছে তারচেয়ে অনেক বেশিই হতো।
জাতির কাছে দিবালোকের মতো পরিষ্কার থাকার পরেও তাদের আস্ফালনের কোনও কমতি কি ছিলো?
দুঃখিত, আমি আপনার সঙ্গে একমত হতে পারছি না।
আপনে বাংলাদেশে থাকেন কীনা আমার জানা নাই, কিন্তু জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের প্রক্রিয়ার পর জামায়াতি নেতাদের উপর নজরদারী করতেছিলো সরকার, এই খবর দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনেই বলছেন। সেই প্রচারণার সময় বিএনপি পত্রিকায় দলীয় বক্তব্য দিছে যে তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে কোনো অবস্থান তারা নিবো না। কিন্তু হয়রানিমূলক মামলার বিরুদ্ধে তারা এখন রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য জামায়াতি আন্দোলনে যূগপৎ না হইলেও সমর্থনসূচক আন্দোলনের কথা বলতে পারতেছে...এই খবরগুলি পত্রপত্রিকায় আসছে। আপনে বিদেশে থাকলেও জানার কথা। কিন্তু দেশে থাকলে টের পাইতেন আগে জামায়াতিরা পাল্টা কামড় দেওনের জায়গায় চইলা গেছিলো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রহত্যার ঘটনাটা তার প্রমাণ। দেয়ালে পিঠ ঠেকলেই খালি জামায়াতে ইসলামীর মতোন কৌশলী দল ঐ ধরণের পদক্ষেপে যাইতে পারে। ঐ ঘটনার কারনে সংগঠন সেইসময় কেরম ক্ষতিগ্রস্ত হইছিলো সেইটা নিশ্চয়ই পত্র-পত্রিকা মারফত জানেন।
অন্য দিকে হয়রানিমূলক মূলক মামলায় যেই অনৈতিকতা থাকে তার লেইগা সবসময় প্রতিপক্ষের ইন্টিগ্রিটি বাড়ে। যেই ছাত্র আগে শিবিরের হঠকারীতায় দল ছাড়ছে, এইরম পরিস্থিতিতে সে কি করতো? এইটা ধারণা হইলেও ইতিহাসে প্রমাণিত পরিনতি যে, এতে সে মিছিল মিটিঙে ভাংচূড়ে সক্রিয় হইবো।
যূক্তিবাক্যে মনে হওয়া বা না হওয়ার গল্প বলাটা আমার কাছে খুবি অস্বস্তিকর মনে হয়। আপনি আপনার বক্তব্যে মনে করা বা না করা নিয়া কথা না বইলা পুরো যূক্তির বাক্যটা বলেন। উদাহরণ দেন। তাইলে কথা বলা যাইবো...নাইলে কেবল কূটতর্কই হইবো আমি একটা ঘটনার উল্লেখ বা য়ুক্তির পরম্পরায় কিছু কমু, আর আপনে কইবেন আপনি তা মনে করেন না। আপনেরে আমার মতো মনে করতে বলতেছিনা আমি, যেই য়ুক্তিবাক্য বা ঘটনার পরম্পরা তুইলা ধরতেছি সেই বিষয়ে আপনের অভিমত চাইতেছি। আপনি মনের সুখে নিজের মনে করাটা কইরা যান আমি কেনো আপনেরে বাধা দিমু...
নজরুল ভাইয়ের কথা ধরে বলি, জামাতীরা যে কোনখান থেকা কোপ মারবো আল্লায় জানে। হুশ করে আগাতে হবে। সহমত। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নাই। আশা আর বিশ্বাস নিয়ে আছি আওয়ামী লীগ এ তিনজনকে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কৃত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি করবে। যদি না করতে পারে? আমার ব্যক্তিগত মতামত দিই, তাতে কিছুই যায় আসে না। ওদের তিনজনকে এই বাংলার মানুষ এমনিতেও ঘৃণা করে, অমনিতেও করবে। পুরো জামায়াতী সেন্টিমেন্টটাকে এদেশের আপামর অপ্রতিক্রিয়াশীলেরা ঘৃণা করে। ওদেরকে দেখলে আমরা ঘৃণায় মুখ ভরে থুথু ফেলি, ওদের কথা উঠলে যত গালি জানি সব উজার করে দিই, ওদের কোন কাজ দেখলে মুখ ফিরিয়ে থাকি মানে ওদের কোনকিছুই তো মানি না, শুনি না, পাত্তা দিই না। প্রচলিত বাংলায় একটা প্রশ্ন, আমাদের দেশে জামায়াত-শিবির-রাজাকারদের কি কোনো বেইল আছে?
মন্তব্য করুন