তৈরি পোশাক শিল্প খাতে অস্থিরতা নিরসনে সরকার কতটুকু যত্নবান?
তৈরি পোশাক শিল্প জগতে আবার শুরু হয়েছে তোলপাড়। কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে ফের চালু করা হয়েছে। চলছে বিক্ষোভ, রাস্তায় নেমেছে হাজার হাজার শ্রমিক।
এই অস্থিরতা আজকের নয়, দীর্ঘদিনের।
রপ্তানি আয়ের শতকরা ৭৫ ভাগ আসে তৈরি পোশাক শিল্প খাত থেকে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি শ্রম বিনিয়োগ হয় এই খাতে। সবচেয়ে বেশি পরিবার নির্ভরশীল এর ওপর। বাংলাদেশে সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত খাতও এটাই। তবে এই সুবিধার সম্পূর্ণটাই যায় মালিকদের পকেটে। মুনাফারও।
শ্রমিকদের দিক বিবেচনা করলে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি অবহেলিত খাত এই তৈরি পোশাক শিল্প!
বর্তমানে বাংলাদেশের একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের সর্বনিম্ন মজুরি ১ হাজার ৬৬২ দশমিক ৫০ টাকা! যারা ঢাকায় থাকেন এবং যারা থাকেন না, তারা প্রত্যেকেই বোধকরি জানেন যে এই টাকায় একমাস চলা কোনো মানুষের পক্ষেই সম্ভব না। পরিবার নিয়ে তো অসম্ভবের চেয়েও বেশি। পরিসংখ্যান ছাড়াই বলা যায়, ঢাকার একজন ভিক্ষুকের মাসিক আয়ও একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের চেয়ে বেশি!
আজকের কালের কণ্ঠের একটি প্রতিবেদন থেকে একটি পরিসংখ্যান তুলে দেই-
মজুরি বোর্ডের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে তেল মিলের একজন শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি সাত হাজার ৪২০, রি-রোলিং মিলে চার হাজার ৬০০, ঢালাই কারখানায় চার হাজার ২০০, ওষুধ প্রস্তুতকারক কারখানায় তিন হাজার ৬২৫, আয়ুর্বেদিক ওষুধ প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় চার হাজার ৩৫০, জাহাজ ভাঙা শিল্পে চার হাজার ৬২৫, সাবান ও প্রসাধনী শিল্পে তিন হাজার ৩০০, দর্জি কারখানায় দুই হাজার ৩২৫, স'মিলে চার হাজার ১২০ এবং চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে দুই হাজার ৬৪৫ টাকা।
বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানা যায়, তুরস্কে পোশাক শিল্পের একজন শ্রমিক প্রতি ঘণ্টায় ন্যূনতম মজুরি পান ২ দশমিক ৪৪ ডলার, মেক্সিকোতে ২ দশমিক ১৭ ডলার, চীনে ১ দশমিক ৪৪ থেকে ১ দশমিক ৮৮ ডলার, পাকিস্তানে শূন্য দশমিক ৫৬ ডলার, ভারতে শূন্য দশমিক ৫১ ডলার, শ্রীলঙ্কায় শূন্য দশমিক ৪৪ ডলার এবং ভিয়েতনামে শূন্য দশমিক ৪৪ ডলার। বর্তমানে বাংলাদেশে গার্মেন্ট শিল্পে ন্যুনতম মজুরি এক হাজার ৬৬২ দশমিক ৫০ টাকা। দিনে আট ঘণ্টা কর্মদিবস ধরে এবং মাসে চার দিন সাপ্তাহিক ছুটি বাদ দিলে প্রতি ঘণ্টায় ন্যুনতম মজুরি দাঁড়ায় শূন্য দশমিক ১২ ডলারেরও কম। বিশ্বের যেকোনো দেশের পোশাক শিল্প শ্রমিকের তুলনায় এ মজুরি কম। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ধারাবাহিকভাবে শ্রমিক অসন্তোষের মূলে রয়েছে কম মজুরি।
তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের বর্তমান আন্দোলন ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার টাকা করার দাবীতে। গত কিছুদিন আগে মালিকপক্ষ শ্রমিকপক্ষ বৈঠকে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে একমত হয়েও তা সঠিকভাবে নির্ধারণ করা হয়নি, বাস্তবায়ন তো দূরে।
বিজিএমইএ মালিকপক্ষের সংগঠন। সরকারে এবং রাষ্ট্রে এই সংগঠনের প্রভাব অনেক। প্রশাসনকে তারা নিজেদের মতো করে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সবচেয়ে বেশি রপ্তানী আয়ের দাপটে তারা সরকারকে কোনঠাসা করে রাখতে পারে।
কিন্তু এই আয়ের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান যেই শ্রমিকদের, তাদের কোনো শক্তি নেই। ট্রেড ইউনিয়ন নেই। তারা অসহায় এবং অমানবিক জীবন নিয়ে বেঁচে থাকে।
তৈরি পোশাক শিল্পে যখনই অস্থিরতা তৈরি হয়, তখনই মালিকপক্ষ আর সরকার পক্ষ অদৃশ্য কোন শক্তির কাঁধে দোষ চাপিয়ে বাঁচেন। "বিদেশী ষড়যন্ত্র" আর "একটি বিশেষ কুচক্রী মহলের কারসাজি"র ভূত থেকে আমরা রেহাই পাই না।
বিদেশী ষড়যন্ত্র থাকতেই পারে। একটি অর্থকরী সম্ভাবনাময় খাতকে বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে অন্য দেশে নিয়ে যেতে বিদেশী য়ড়যন্ত্রকারীরা উঠে পড়ে লাগতেই পারে। সেক্ষেত্রে এই মহলকে চিহ্নিত করতে হবে। সমাধান করতে হবে। এবং এটা করতে হবে সরকারকেই। "বিদেশী ষড়যন্ত্র" বলে দোষ চাপিয়ে বসে থাকলে চলবে না।
আর যদি দেশের ভেতরের কোনো কুচক্রী মহল সত্যিই এর পেছনে থেকে থাকে, তবে তাদেরকেও চিহ্নিত করা হোক। শাস্তি দেওয়া হোক। রক্ষা করা হোক তৈরি পোশাক শিল্প খাতকে।
বিজিএমইএ- দিনে দিনে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন হয়ে যাচ্ছে কী না সেটাও দেখবার সময় হয়েছে।
সব ষড়যন্ত্রকারীকে সমূলে উৎপাটন করতে পারলেও এই শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি মানবিক পর্যায়ে আনতে না পারলে গার্মেন্টস সেক্টর রক্ষা করা যাবে না। সারাদিন কাজের পর তাদের খাওয়া পরার সন্তান ধারণের নিশ্চয়তা দিতে হবে।
বর্তমান অচলাবস্থা নিরসনের জন্য সরকার সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্যদেরকে (তৌহিদ জং মুরাদ, এ. কে. এম. মোজাম্মেল হক, জাহিদ হোসেন রাসেল, সারাহ বেগম কবরী) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তটি কোনো কার্যকর সমাধান না। সংসদ সদস্যরা কী করবেন? শ্রমিকদের বুঝিয়ে শুনিয়ে শান্ত করবেন? মালিকপক্ষকে বোঝাবেন? কিন্তু তারা তো কেন্দ্রীয় দায়িত্ব পান নি। নিজ নিজ এলাকার কারখানাগুলো শান্ত রাখাই তাদের দায়িত্ব। কিন্তু দাবীটা যে জাতীয়। আইন করেই শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করার দাবী উঠেছে। এই সিদ্ধান্তটা নিতে হবে বিজিএমইএকে, স্থানীয় সংসদ সদস্যরা স্থানীয়ভাবে কী মিমাংসা করবেন? নাকি সরকার আপাতত আগুনটা তুষের নীচে ঢেকে রাখতে চাইছেন!
সরকারের অবশ্যই উচিত বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে তৈরি পোশাক শিল্প খাতে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে। অর্থকরী এই খাতটি জিইয়ে রাখতে। বিদেশী ষড়যন্ত্রকারী, অভ্যন্তরীণ কুচক্রী মহল, কিংবা স্বাভাবিক শ্রমিক অসন্তোষ যাই হোক না কেন সমাধান করা হোক।
সরকারকে মনে রাখতে হবে এই খাতটি একবার দেশছাড়া হলে যেমন বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার্জন থেমে যাবে, তেমনি লাখ লাখ বেকার মানুষকে ঘাড়ে নিয়ে ঘুরতে হবে রাষ্ট্রকেই।
পাটকলগুলো যেভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো, তৈরি পোশাকের কারখানাগুলোও যেন সেভাবে বন্ধ হয়ে না যায়। সরকারকে অবিলম্বে এই বিষয়ে যত্নবান হতে অনুরোধ করছি।





মুল সমস্যা কেহ বুঝার নাই!
বিদেশী ষড়যন্ত্রকারী, অভ্যন্তরীণ কুচক্রী মহল, কিংবা স্বাভাবিক শ্রমিক অসন্তোষ বলে সবাই পার পেতে চাইছেন!
দেশে নানা সমস্যা, ভাবতেও ইচ্ছে করে না আমাদের ক্ষমতাবানদের!
মতামতের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
বাংলাদেশে গার্মেন্টস কারখানায় শ্রমিকদের বেতনের কথা বিদেশী ক্রেতা বা তাদের দেশী দালাল ( বায়িং হাউস ) গুলো খুব ভালো ভাবেই জানে। এজন্যই তারা এমন দাম হাঁকায় যাতে তাদের পোষায় ( সবচাইতে সস্তায় ও তুলনামূলকভাবে অন্যদের চাইতে কম)। দেশে শ্রমিকদের বেতন বাড়ালে ক্রেতাদেরও দাম বেশী দিতে হবে ( তার পরও কিন্তু তারা অন্য দেশের চাইতে কম দামে কিনতে পারবে ও এতে তারা কিন্তু সমস্যায় পরবে না )। বেতন বাড়ালে সমস্যা হবে " মালিক " দের। এতে তাদের লাভের পরিমান কমে যাবে। এই "মালিক" গুলাই বড় সমস্যা।
গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকে শুরু করে সব গুলো কারখানাতেই আইনগত ভাবে যে পরিবেশ ও ব্যবস্থা ও সুবিধা ( নিরাপত্তা + কাজের পরিবেশ + কাজের শর্ত + স্বাস্থ্য সুবিধা + শ্রমিকের আইন গত অধিকার ইত্যাদি ) থাকে তার কোনোটাই নাই, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি গুলা বড় উদাহরন। সব সুযোগ সুবিধা পাওয়া শ্রমিকদের অধিকার, কিন্তু হাতে গোনা ( তাদের মাঝে ৯৯% ক্রেতাদের দেখানোর জন্য শো পিস কারখানা ) ফ্যাক্টরি ছাড়া এসব পাওয়া যায় না।এ গুলো দিলে মালিকের লাভের পরিমাণ কমে যাবে বা বছরে ২ বা ওমরা করার বাজেটে হালকা টান পড়বে না বিদেশের প্রমোদ ভ্রমনে একটু কম খরচ করতে হবে।
ষড়যন্ত্র তত্ব দেয়া মুল লক্ষ্য থেকে দৃস্টি সড়িয়ে দেবার একটা পুরোনো চেস্টা।
মালিকপক্ষের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েও বসে থাকতে চাই না। তারা তাদের স্বার্থই দেখবেন আসলে। সেটাই স্বাভাবিক। শ্রমিক-বান্ধব মালিক এখনও স্বপ্নের অন্তরালেই বাস করে।
কিন্তু দেশের অন্যতম অর্থকরী খাতকে টিকিয়ে রাখা এবং এর সঠিক ব্যবস্থাপনা সরকারের দায়িত্ব, অবশ্য দায়িত্ব। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এই সঙ্কট নিরসনে সরকারী ভূমিকা অপ্রতুল। যতটুকু ভূমিকা তা বিজিএমইএ নিয়ন্ত্রিত।
এই চেষ্টা সবক্ষেত্রে। সরকার যা কিছুতে ব্যর্থ, সেখানেই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। এই সংস্কৃতি থেকেও আমাদের সরকারকে বের হতে হবে।
ধন্যবাদ আপনাকে
নিম্ন মজুরীই প্রধান সমস্যা। এই অসন্তোষ যতদিন থাকবে তততিন একে নানাভাবে সুযোগও থেকে যাবে।
আর সাংসদদের দায়িত্ব দেওয়া কৌশলগত ভাবে ঠিক আছে। কারণ জুট ব্যবসা থেকে শুরু করে সব কিছুর সাথেই এদের যুক্ততা আছে। ভক্ষককে রক্ষক বানানোর একটা চেষ্টা আরকি।
এবার অন্য প্রসঙ্গ।
কালের কন্ঠ থেকে একটা উদ্ধৃতি দিলেন। এবার আমি একটা দেই....
আমার উদ্ধৃত সংবাদটি ছাপা হয়েছে প্রথম আলোয় গত ৮ জুন
তার মানে প্রথম আলো থেকে হুবহু ছাপিয়ে দিয়েছে কালের কণ্ঠ! তথ্যগুলো নিয়ে নতুন করে লিখলেও তো পারতো। আশ্চর্য!
কৌশলগতভাবে যে ঠিক আছে তা বুঝেছি। কিন্তু বলতে চাচ্ছিলাম যে এটা কোনও সমাধান না। আমাদের এখন একটা স্থায়ী সমাধানের পথেই তো হাঁটা উচিত তাই না?
ধন্যবাদ আপনাকে
পোশাক শিল্পে শুভংকরের ফাঁকি আর শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে পিচ্চি গল্প লিখছিলাম একটা অনেক আগে। পূর্ব প্রকাশিত এবিতে দেয়ার নিয়ম নাই, আর নয়তো দিয়ে দিতাম।
মাসুম ভাইয়ের বক্তব্যের সাথে পূর্ণ সহমত জানিয়ে গেলাম।
নিজের পাতায় দেন... আমরা যাইয়া পড়ে আসব
নিজের ব্লগে দিয়ে এখানে লিঙ্ক দিয়ে দেন। আমরা পড়ি।
পাটকলগুলো যেভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো, তৈরি পোশাকের কারখানাগুলোও যেন সেভাবে বন্ধ হয়ে না যায়।
চিন্তার বিষয়,
প্রথম আলো আর কালের কন্ঠের উদ্ধৃতি এক কিভাবে হল
এই প্রশ্ন করে লাভ নেই। এটাও আমাদের পুরনো সংস্কৃতিরই অংশ।
ধন্যবাদ আপনাকে
পাটকলগুলার মতোই অবস্থা হইবো চিন্তা নাই
সরকারের ঘুম ভাঙবে না।
কিন্তু ঘুম তো ভাঙাতে হবে তাই না?
আমার মনে হয় না গার্মেন্ট সেক্টর বন্ধ হয়ে গেলে এদেশের তেমন কোনো অসুবিধা হবে।
৮০'র দশক আর এই একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশক এক কথা নয়। দেশের জিডিপি এখন গড়ে ৬ এর উপরে থাকে। গ্রামে গঞ্জে সরকারি এবং এনজিও পর্যায়ে অনেক উন্নয়ন হচ্ছে, গার্মেন্টে এখন শ্রমিক সংকট প্রবল।
কর্মসংস্থানের নামে শ্রমিক শোষন করে বিদেশীদের ওয়ারড্রোবে স্বস্থা কাপড় ঝুলিয়ে দেয়ার মাধ্যমে যে অর্জন, সেটাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো প্রয়োজন।
আমি তো মনে করি গার্মেন্টের শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি অবশ্যই ৩৫০০ টাকা করে ফেলা উচিত, এতে যে বায়ারের পোষাবে সে কাজ দেবে, যার পোষাবে না সে আরো গরীব দেশে যাবে।
বাংলাদেশের উচিত এখন মাঝারি শিল্পের দিকে যাওয়া, এই শ্রমঘন শিল্পে যদি টাকা না পাওয়া যায়, একে পুষে রেখে কোনো লাভ নেই।
যদ্দূর জানি, ব্যক্তি আরিফ জেবতিক তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তা/মালিকপক্ষের একজন। সে হিসেবে মন্তব্যটি ইন্টারেস্টিং। সবিস্তারে আলাদা পোস্ট আশা করি।
মনে হয় না আরিফ জেবতিক কোন পোষ্ট এ বিষয়ে দেবেন। কারন তার পোষ্টে তাকেও একজন শোষনকারী বলে মনে হতে পারে। তাই নিরবতাই শ্রেয় মনে করতে পারেন।
ভাই, আমারে করা প্রশ্নের উত্তর আমি দেয়ার আগে আপনি যেভাবে এসে একেবারে ধারণা প্রকাশ করে ফেললেন, সেটা বেশ ইন্টারেস্টিং। আপনাকে ধন্যবাদ।
আমার পোস্টে আমাকে একজন শোষনকারী মনে হবে এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করার আগে আপনি আমার কমেন্টটা আরেকবার পড়ুন। আমার তো মনে হয় পোস্ট দেয়ার দরকার নেই, উপরের কমেন্টেই আমাকে যথেষ্ঠ শোষনকারী মনে হচ্ছে, তাই না ?
নুশেরা, এইখানে একটা শুভংকরের ফাঁকি আছে। সব মালিক যে কমপয়সায় কাজ করাতে চায়, এমন নয়। কিন্তু একক ভাবে পয়সা বাড়াতে চাইলেও সম্ভব নয়।
আমি আমার ফ্যাক্টরিতে ৩৫০০ টাকা করলাম, আপনি রাখলেন ১৬০০ টাকা, তাহলে প্রতিযোগিতায় আমি মার খেয়ে ভুত হয়ে যাব।
এখন সরকার যদি সবাইকে ৩৫০০ টাকা করে ফেলে, তাহলে আমি আপনি সমান জায়গায় দাড়িয়ে প্রতিযোগিতা করতে পারি।
তখন সবাই দাম বাড়াতে বাধ্য হবে, ক্রেতারাও বেশি দাম দিয়ে কাপড় না কিনলে যেতে হবে আমাদের চেয়ে গরীব দেশে, কিন্তু সেরকম দেশ কোথায় ?
১২% জিডিপি নিয়ে চায়না বড়জোর আরো ২ বছর এই কাজ করতে পারবে, তারপর ?
আফ্রিকার দেশগুলোর অভিজ্ঞতা আমাদের চেয়ে অনেক কম। সুতরাং বায়ারকে এদেশ থেকেই তাদের কাপড় কিনতে হবে।
আপনার মন্তব্যগুলোর উত্তর একবারে নিচে দিচ্ছি
অংশগ্রহণের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
সেদিন একটা সিনেমা দেখলাম "সিটি অফ গোল্ড"। আপনার লেখাটা আর সিনেমাটা কাছাকাছি খুব।
"সিটি অফ গোল্ড" খুব সুন্দর সিনেমা।
ধন্যবাদ আপনাকে
গার্মেন্টস শিল্পে সৃষ্ট অস্থিরতা।
এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হলে যে সকল মন্তব্য আসে তা হচ্ছে মালিকেরা রক্তচোষা, তারা গার্মেন্টস খুলে শ্রমিকের রক্ত চুষে নিয়ে নিজে সম্পদের পাহাড় গড়ছে। মিনিমাম ওয়েজেস বাড়িয়ে ৫০০০ করা উচিত। কেউ কেউ আরও বেশীও বলে বসেন। মালিকেরা একটা কম লাভ করে বেতন বাড়িয়ে দিলেই হয় এমনটা বলে দেন সহজেই। বলাই বাহুল্য আমরা কোন গার্মেন্টস মালিকের মন্তব্য তেমন একটা পাই না
আরেকটি কথা আসে বিদেশী ষড়যন্ত্র।
পাটের কথা আমরা ভাবতে পারি। পাট শিল্পে একবার এমন অস্থিরতা এসেছিল। শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন, ন্যায্য মজুরী, রেশন, আন্দোলন। পাঠ ছিল তখন দেশের এক নম্বর। এখন পাটের অবস্থান কই? সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন হচ্ছে, পাট শিল্পের সাথে জড়িত শ্রমিক সমাজ এখণ কি করছেন? গলাটিপে পাট শিল্প নষ্ট করে ফেলার পর কত লোক বেকার হয়েছে?
আর এখন বাংলাদেশের হারিয়ে ফেলা পাট শিল্প কোথায় শিফট হয়েছে?
গার্মেন্টস এ আজকে যারা শ্রমিক তাদের আগের পেশা কি ছিল? তারা কত আয় করতেন? গার্মেন্টস এ অবারিত চাকরির সুযোগ না থাকলে তাদের অবস্থান কি হত? তাদের গড় আয় কি হত? কর্মসংস্থান কি হত?
গার্মেন্টস এর ওয়েজেস অযৌক্তিক হারে বাড়িয়ে দেয়া আত্মঘাতি। ইমোশনাল হয়ে শোষিতের প্রতি সমবেদনার জন্যে ওয়েজেস বাড়িয়ে দেয়ার পক্ষে কথা বলার আগে সাতপাচ ভেবে নেয়া উচিত। রেসেশনে পড়া উন্নত বিশ্বে দেখা যায়, কেমিকেল কারখানায় কাজের জন্য মানুষের লাইন, তবুও কাজ নেই। বাংলাদেশে তো গার্মেন্টসে গেলেই কাজ। যে কিচ্ছু জানে না গার্মেন্টস এর কাজ সম্পর্কে তাকেই তো মনে হয় মিনিমাম ওয়েজ দেয়া হয়। কিন্তু হাইলাইট এমন ভাবে হচ্ছে যেন ১৬০০ টাকাই সবার বেতন।
বেতন যদি দ্বিগুন বাড়িয়ে দেয়া হয়, তাহলে ৫০০০ শ্রমিকের একটি কারখানায় মোট বেতন বাড়বে কত? ৭৫ লাখ টাকা প্রতি মাস। একটা ৫০০০ শ্রমিকের পোষাক কারখানা প্রতি কোয়ার্টারে কত লাভ করে??? যদি প্রতি কোয়ার্টারে আড়াই কোটি টাকা বাড়তি বেতন এই মুহুর্তে দিতে হয় তাহলে সেই কারখানা কয়দিন টিকবে? আর যদি না টিকে তাহলে পরদিনই ৫০০০ শ্রমিক বেকার। যদি টিকে তাহলে সেই শোষনকারী(!) মালিকের পরবর্তী গার্মেন্টস এ কিন্তু আরও ৫০০০ লোকের কর্মসংস্থান হবে।এভাবেই এই শিল্প এগিয়ে গেছে।
আজকের রেসেশনের বিশ্বে যেখানে আপনার দেশের অবকাঠামোর বারোটা বাজানো, কোন সুবিধা নাই কোথাও, তখন কম মজুরী আপনার অর্থনীতি এগিয়ে নিচ্ছে। একে বাড়িয়ে দিয়ে বাজার হাতছাড়া করে শিল্প হাতছাড়া করে ৫০ লাখ লোক বেকার করা হবে আসলে। পরে পাট শিল্পের মত গার্মেন্টস নিয়েও আমরা হায় হায় করেই যাব। ফাকতালে বিদেশী ষড়যন্ত্রী দেশেরা মজা লুটবে!
এখনও দেশে এটি নতুনশিতল্প। এর মুল ভিত্তিই হচ্ছে কম ওয়েজ। শ্রমিকরা কেউই চাকরি হারাতে চায় না। কিন্তু কম ওয়েজের ধোয়া তুলে আন্দোলন তৈরি করা তৃতীয় পক্ষের পক্ষে সবচেয়ে সহজ একটি কাজ। সেটিই করা হচ্ছে।
সরকারেরউচিত হচ্ছে এ বিষয়ে এখনই সিরিয়াসলি তদন্ত করা। আর এরই সাথে যৌক্তিক মিনিমাম ওয়েজ নিয়ে একটি সিদ্ধান্তে আসা। মালিকদের কথাও শুনতে হবে। তাদের হাতে আলাদীনের প্রদীপ নেই যে রাতারাতি তিনগুন বেমন দিবে। আজকাল ইউরোপ আমেরিকায় পোষাকআষাকের দাম ওত বেশী না কিন্তু!
এই পোষ্টেই আরিফ জেবতিকের কমেন্ট দেখুন। বেচারা গার্মেন্টস মালিক! চাপে পড়ে মজা বুঝতেছেন ! দুর থেকে বলা অনেক সহজ। নিজের ঘাড়ে পড়লে আরিফ জেবতিক হতে হবে কিন্তু।
আপনার কমেন্টে সরকারের পায়ে বল ঠেলে দেয়া ছাড়া অন্য কোনো সমাধান দেবার পথ খুঁজে পাচ্ছি না।
পাট শিল্পের অবনতির পেছনে যে সব কারন এনেছেন সেগুলোর সাথে সেই সময় বিশ্বে পাটজাত পন্যের চাহিদা কমে যাওয়া, পুরোনো পাট কলগুলোকে আধুনিকায়ন না করা, পেশাদারী ব্যবস্থাপনা অভাব, শিল্প মালিকদের কাছ থেকে কারখানাগুলোকে জোর করে নিয়ে রাস্ট্রয়াত্বকরন, কারখানা গুলোতে নানা ভাবে লুটপাট চালানো, ট্রেড ইউনিয়ন গুলোকে দলীয় করন করা ইত্যাদি বিষয়গুলো যোগ করলে পাট শিল্পের অবনতির আসল কারটা বোঝা যেতো। পাট শিল্প কিন্তু আবার জেগে উঠছে। হয়তো সেই বিশালাকায় কারখানা গুলো নেই, উত্তর বংগে ছোট ছোট জুট মিলগুলো দারুন কাজ করছে। বিশ্বে চাহিদা বারছে, কৃষক দাম পাচ্ছে বলে চাষ বাড়াচ্ছে।
আর ট্রেড ইউনিয়ন করা একজন শ্রমিকের আইনগত অধিকার। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলোতে এটা নেই।
মুল যে ব্যপার এসেছে সেখানে শ্রমিকের মজুরি বাড়ানো। শ্রমিকের সুবিধা না দিয়ে , বেতন না দিয়ে শিল্প বাঁচানোর অজুহাতে শোষনকে আরো বাড়ানোর উৎসাহ দেয়া হলো।
আপনার মন্তব্য প্রসঙ্গেও বলার ছিলো, আছেও। কিন্তু এখনই বিশ্বকাপের খেলা শুরু হবে বলে আপাতত বিরতি নিতে হচ্ছে। আশা করছি অচিরেই আপনার মন্তব্য প্রসঙ্গে আমার ভাবনা তুলে ধরতে পারবো। ধন্যবাদ আপনাকে।
সম্পূর্ণ উল্টো একটা কথা বললেন। গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী একটি সংগঠন। তাদের মন্তব্য তারা সর্বদাই হাসি হাসি মুখে বলে থাকেন সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু করে সরকার পর্যন্ত সবখানে। আপনি কোথাও শুনতে পান না!
বিপরীতে গার্মেন্ট শ্রমিকদের বলার স্কোপ একেবারেই নেই। ট্রেড ইউনিয়ন নেই। প্রভাব নেই, দুপয়সার শ্রমিক তারা। সংবাদ সম্মেলনটাও করতে পারে না। দেয়ালে পিঠ ঠেকলে যখন রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়, তখনই কেবল তাদের কিছু মন্তব্য আমাদের কানে আসে।
যেহেতু মানুষকে খেয়ে পরে বাঁচতে হয়, সেহেতু বিকল্প কর্মসংস্থানও খুঁজে নিতে হয়। এটাই স্বাভাবিক। যে পাট শিল্পের দক্ষ শ্রমিক ছিলো, সে হয়তো এখন ভিক্ষা করে খায় অথবা মুটেগিরি করে, অথবা রিক্সা চালায়। তার খাওয়া পরার ব্যবস্থা সে করে নিয়েছে। কিন্তু তাই বলে তো পাটশিল্পের বাজার নষ্ট হয়ে যাওয়াটা জায়েজ হয়ে যায় না তাই না?
আর পাট শিল্প কোথায় শিফট হয়েছে কেন শিফট হয়েছে তাও দেখতে পাবেন একটু চোখ কান খোলা রাখলেই। আদমজী বন্ধ হওয়ার বছরই ভারতে নতুন ৪টি পাটকল হয়। এখন ভারতের পাটশিল্প রমরমা।
এগুলো অবান্তর প্রশ্ন। কী হলে কী হতো আর কী হলে কী হতো না, এসব বলার চেয়ে কী হচ্ছে এবং কী হওয়া উচিত তা নিয়ে ভাবুন।
অযৌক্তিক বলছেন কোন বিচারে? ইমোশনাল হয়ে শোষিতের প্রতি সমবেদনা না, দেশের সবচেয়ে বেশি অর্থ উপার্জন যারা করছেন, তাদেরকেই আমরা দিচ্ছি দেশের সবচেয়ে কম মজুরি। এবার দয়া করে আপনি সাতপাঁচ ভাবুন।
কালের কণ্ঠ থেকে নেওয়া উদ্ধৃতি কি আপনি পড়েছেন? দেখেছেন অন্যান্য খাতের শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি? সবগুলোই গার্মেন্টস শ্রমিকদের চেয়ে বেশি।
আর আপনার জ্ঞাতার্থে সম্ভবত জানানো প্রয়োজন যে এদেশে কোনো শ্রমিকই শুরুতে দক্ষ হয়ে জন্মায় না। সবখানেই প্রাথমিক মজুরিটা অদক্ষদের জন্যই বরাদ্দ।
আর ১৬০০ টাকা সবার বেতন হবে কেন? এটা একজন হেল্পারের বেতন। এরপর আসে অপারেটর, তারপর সুপারভাইজার, তারপর লাইনম্যান।
আপনি ভুল ভাবছেন বলে সবাই ভুল ভাবছে তা কেন ভাবছেন?
কর্মসংস্থানের দায় নিয়ে কোনো গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি জন্ম নেয় না। মালিক ফ্যাক্টরি দেয় লাভের জন্য, শ্রমিক কাজ করে পয়সার জন্য। মালিকের যদি ৫০০০ শ্রমিককে পোষার প্রয়োজন থাকে, তাহলে প্রত্যেককেই ন্যায্য মজুরি দিয়েই রাখতে হবে। মালিক যদি ৫০০০ শ্রমিকের জায়গায় ২০০০ শ্রমিক দিয়ে চলতে পারে [অবশ্যই প্রত্যেককে ন্যায্য মজুরি দিয়ে] তাহলে তাকে কেউ বাধা দিতে আসছে না। কর্মসংস্থানের মোরকে ঢেকে শ্রমিক শোষণ বন্ধ করাটা জরুরী।
এত যে সাধের ইউরোপ! ইউরোপের অনেক দেশে কিন্তু এখনও মিনিমাম ওয়েজ ১০০/১৫০ ইউরো। মানে দেশী টাকায় মাসে ৮/১২ হাজার টাকা।
আসলেই এটা নিয়ে অনেক আগেই নজর দেয়ার দরকার ছিল। তবে এখনও কোন ব্যবস্থা না নিলে অবস্থা আরো খারাপ হবে।
মালিকপক্ষের যেরকম শক্তিশালী বিজিএমইএ আছে, তার বিপরীতে শ্রমিকপক্ষের কিছুই নেই। ট্রেড ইউনিয়ন নেই।
মূল সমস্যাটা এখানেই। সরকারের নজর সঠিক জায়গামত যেতে পারে না। মাঝখানে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে।
গার্মেন্টগুলা বন্ধ হয়ে গেলে কতো মানুষ বেকার হয়ে যাবে!
তা যেমন সত্যি, তেমনি দেশের অর্থনীতিতেও একটা বড় প্রভাব পড়বে।
শ্রমিককে শুধুই আগামী দিন পর্যন্ত টেকার মাইনেটুকু দিয়ে ব্যবসা পরিচালনার মধ্যযুগীয় নীতি মানি না। বর্তমান সময়ে এ নীতি অধিকাংশ উন্নত দেশে বর্জিত হয়েছে। ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশগুলোতে এখন শ্রমিকেরা চাকুরী করে না, কাজ করে। এই কাজ দায়িত্ব নিয়ে করা কাজ। নয়টা-পাঁচটার সময় পার করা নয়। এর কারণ তারা উন্নতির সূত্রটি ধরতে পেরেছে। শ্রমিকদের বঞ্চিত করে নয়, তাদের এগিয়ে দিয়ে নিজেদের এগিয়ে নেয়া সম্ভব -এটা সরকার, মালিক ও ম্যাংগোপিপল্ কে বুঝতেই হবে।
আর ৮ নং মন্তব্যে শতভাগ সহমত।
যারা ভাবছেন, বেতন বৃদ্ধি পেলে গার্মেন্ট শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে, তারা সঠিক ভাবছেন না।
বেতন বৃদ্ধি হলে কর্মসংস্থান কমবে, কিন্তু বড় গার্মেন্টসগুলোর তেমন ক্ষতি হওয়ার কথা নয়।
এখন শ্রমিক সস্তা বলে গার্মেন্টগুলো উন্নত টেকনলজি ব্যবহার করে না, তখন করতে বাধ্য হবে।
একটি অটোট্রিমার মেশিনের দাম সাধারন মেশিনের তুলনায় ৪ গুন, এখন যেহেতু ওভারটাইম সহ ২৫০০ টাকায় একজন হেল্পার পাওয়া যায়, তাই অটোট্রিমার মেশিন কিনে না। কিন্তু যখন হেল্পার ( অদক্ষ শ্রমিক, যার কাজ মেশিনের সামনে বসে সুইয়ের সুতা কাটা) এর বেতন ৫০০০ টাকা হয়ে যাবে, তখন অটো ট্রিমার মেশিন কেনা লাভজনক হবে।
অটো স্প্রেডিং মেশিন এবং কম্পিউটারাইজড ক্যাড ও মার্কার মেশিন কিনলে যে ফ্যাক্টরির কাটিং বিভাগে এখন ১০০ জনবল আছে, তা ৩৫ জনে নামিয়ে আনা সম্ভব।
সুতরাং বেতন বাড়লে গার্মেন্ট চালাতে খুব অসুবিধা হবে এমন নয়, বরং আমার তো মনে হয় ভালোই হবে।
সেটাই ভেবেই মন্তব্য লিখছিতে বসছিলাম। ছোট ছোট গার্মেন্টস যারা ওই মেশিন গুলা এফোর্ট করতে পারবে না তারা কি করবে? এবং বড়গুলা যারা কিনতে পারবে তাদের থেকে ছাটাই হওয়া ১০০ জনে ৬৫ জন শ্রমিক তখন কি করবে?
তাই আসলে বড় রকমের প্রভাবই পড়বে অর্থনীতিতে। সেটা ওত হার্শলি বলছেন না আপনি আর কি।
বর্তমানে ছোট গার্মেন্টসগুলো এমনিতেই হুমকির সম্মুখিন, বেতন বাড়ান কিংবা না বাড়ান এরা টিকতে পারবে না।
আমরা ইতিমধ্যে আমাদের একটি গার্মেন্ট চালু হওয়ার আগেই বন্ধ করে দিয়েছি, ১টি বন্ধ করব ২০১২ সালে, বাকিগুলোও ২০১৩ সালের দিকে বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
ছোট গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোর সামনে দুইটি সমাধান, হয় ব্যবসা পরিবর্তন করা অথবা বড় ফ্যাক্টরিগুলোর সাবকন্ট্রাক্ট ফ্যাক্টরি হিসেবে টিকে থাকা।তাছাড়া এমনিতেই প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে লোক কমিয়েও মোটামুটি ব্যবসা করা সম্ভব, যখন চাহিদা বাড়বে তখন প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারেরর সাপ্লাই ও বাড়বে। একজন গ্রাজুয়েট ছেলে ৩ মাসের কোর্স করেই প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনে ভালো কাজ করতে পারে, সুতরাং সমস্যা হবে না।
আর শ্রমিক ছাটাই হলে আমার মনে হয় না বড় সমস্যা হবে, দেশে এখন কাজের অভাব নেই। বিশেষ করে ছোট চাকুরি, যেগুলোর বেতন গড় ৫০০০ টাকা বা কম, সেখানে আমাদের লোকের চাহিদা আছে।
এফবিসিসিআই এবার প্রতি ঘরে একটি চাকুরি স্লোগান দিয়ে ১০ হাজার লোক চাকুরি দিতে চেয়েছিল, মাত্র ৯০০ লোক পেয়েছে।
১. মজুরী বাড়াতেই হবে। চীনের কথাই ধরুণ। তাদেরও একসময় মজুরী কম ছিল। কিন্তু চীন সস্তা কাপড় বানানোর কাজে পড়ে থাকেনি, উত্তরণ ঘটিয়েছে। ফলে মজুরী বাড়ানো হচ্ছে। এটাই নিয়ম।
কিন্তু আমাদের মালিকেরা এখনো সেই সস্তা শ্রম ও সস্তা কাপড়ের যুগে পড়ে আছে।
২. আমাদের মালিকেরা ক্রেতার সাথে দরকষাকষিও করতে পারে না। এখন ওয়ালমার্ট বা অন্যরা নানা চাপে থাকে। ফলে দরকষাকষি করলে দাম আরও বাড়ানো সম্ভব।
৩। মজুরী না বাড়ালে অসন্তোষ থেকেই যাবে। ফলে এই অসন্তোষে উসকানি দেওয়াও সম্ভব। সুতরাং আসল সমস্যার সমাধান না করে ষড়যন্ত্র তত্ব খুজলে কোন লাভ হবে না। যেটা ক্রমাগতভাবে করে যাচ্ছে বিজিএমইএ।
৪। পৃথিবীর কোন ব্যবসায় সবাই লাভ করে? তাহলে বাংলাদেশের সব মালিকেরা কেন খালি লাভ করতে চায়? শ্রমিককে ন্যায্য মজুরী না দিলেই কি কেবল লাভ বাড়ে? বিজিএমইএর হিসাব আছে মজুরী তার মোট ব্যয়ের কত টাকা, লাভের কত অংশ। সেই হিসাবটা বিজিএমইএ দেয় না কেন?
৫. গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর বর্তমান নেতৃত্ব ভেঙ্গে দেওয়া জরুরী হয়ে পড়ছে। যে নেতৃত্ব ঈদের দুই দিন আগে সরকারের কাছে ভিক্ষা চেয়ে বলে যে তা না দিলে বেতন দেওয়া যাবে না এবং এক রাতের নোটিশে কারখানা বন্ধ করে তার যোগ্যতা নিয়ে আমার বিরাট প্রশ্ন।
৬। গত মজুরী বোর্ডের একটা কাহিনী বলি। বোর্ডের শ্রমিক নেতারা বলে দিলো ৩ হাজারের নীচে তারা মানবেন না। সকল শ্রমিক সংগঠন থেকে একই দাবি তোলা হলো। তারপর মজুরী বোর্ড সবার কাছ থেকে লিখিত সুপারিশ চাইলো। প্রতিটি সংগঠন থেকে লিখিত সুপারিশ আসলো নিম্নতম মজুরী ১৬শ টাকার কিছু বেশি হলেই চলবে।
এই জন্য বিজিএমএই চাঁদা তুলে এইসব শ্রমিক নেতাদের খুশী করেছে। সুতরাং তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিক ইউনিয়ন করার অনুমতি দিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না।
একমত
এইটা ঠিক না মাসুম ভাই, দুনিয়ার এমন কোনো ব্যবসা নাই যারা লাভ না করার জন্য ব্যবসা করছে। ড.ইউনূসের সামাজিক ব্যবসার তত্ত্ব এখনও হালে পানি পায়নি।
কিন্তু কথা হচ্ছে, শ্রমিকের বেতন না বাড়িয়ে লাভ করার যে পদ্ধতি আমাদের দেশে এটা আসলেই হাস্যকর।
আমি মনে হয় বুঝাতে পারি নাই। আমার বক্তব্য হলো,
পৃথিবীর সব্ ব্যবসাই লাভজনক হবে না। ব্যবস্থাপনার সংকটেও হতে পারে কিংবা অন্য কোনো কারণে। ফলে ব্যবসা থেকে একটা এক্সিটের ব্যবস্থা থাকে, যেটা এখানে নেই।এখন আপনি যদি একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে চান সেটি কি সহজ?
যদিও আমাদের দেশে কেউ এটা করতে সহজে চায় না। মনে করে রুগ্ন হলেও সরকার তাদের টাকা দেবে।
তাই বললাম, যারা লাভজনক না তারা বন্ধ করে দিক।
আর ৫শ ফ্যাক্টরি বন্ধ হলেও শ্রমিকদের তেমন ক্ষতি হবে বলে আমি মনে করি না। এখনো শ্রমিকের বড় ধরণের চাহিদা আছে। মাইকিং করা হয়েছে শ্রমিকের জন্য এই উদাহরণ তো কিছু দিন আগের।
@ আরিফ জেবতিক
আপনি শুরুই করেছেন গার্মেন্ট সেক্টর বন্ধ হয়ে গেলে এদেশের তেমন কোনো অসুবিধা হবে না বলে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এদেশের অন্যতম অর্থকরী খাতটি বন্ধ হয়ে গেলে অসুবিধা না হয়ে উপায় কী? অন্তত যতক্ষণ পর্যন্ত বিকল্প খাত তৈরি না হচ্ছে?
আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানীর মধ্যেমে যদি বিদেশীদের ওয়ারড্রোব সস্তা কাপড় দিয়ে ভরে যায়, তাতে আমাদের আপত্তি থাকার কারণ কী? শুধু আমাদের বাজারই তাদের পণ্য দিয়ে ভরবে?
কর্মসংস্থানের নামে শ্রমিক শোষন- এটাই আসল কথা। এর বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ। শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা দিয়ে মালিকরা ব্যাবসা করতে পারলে করবে, নয়তো আলু পটলের দোকান খুলবে। কিন্তু বাণিজ্যের নামে শ্রমিক শোষণ অন্যায়।
১০০ ভাগ সহমত। যদিও শ্রমিকদের দাবী ন্যূনতম ৫০০০ টাকা। কিন্তু এক লাফে এত বাড়ানোটাও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। শ্রমিকরাও সম্ভবত দরকষাকষির জায়গা রেখেই দাবী তুলেছে। সেক্ষেত্রে ৩৫০০ ন্যূনতম মজুরি হওয়া উচিত।
সব শিল্পই একসময় শ্রমঘন থাকে। পরবর্তীতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়। এক কম্পিউটার এসেই পৃথিবীর অর্ধেক শ্রম কমিয়ে দিয়েছে।
এমনকি কৃষিকাজেও মানুষ এবং পশু সবারই শ্রম কমিয়ে দিয়েছে প্রযুক্তি।
পোশাক শিল্পেও উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়া আবশ্যক। এখানেই বিজিএমইএ'র ব্যর্থতা। তারা এখনো মান্ধাত্বামলের শ্রমিক শোষন নীতিতে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। আপনার মন্তব্য থেকেই জানলাম উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি আমদানী করলে অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হবে।
হোক। গার্মেন্ট শিল্প শ্রমঘন শিল্প থেকে মাঝারি শিল্পে পরিণত হোক।
কিন্তু তাই বলে দেশ থেকে এত বড় একটা ইন্ডাস্ট্রি উঠিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হবে কেন? আধুনিকায়ন করে এই বাজার ধরে রাখতে অসুবিধা কোথায়?
যদিও কথাটা বলেছেন নুশেরাকে, তবু বলছি- সমস্তটা পোস্টে কোথাও একক মালিককে দায়ী করা হয়নি। দায়ী করা হয়েছে সরকার এবং বিজিএমইএ-কে। বেতন কাঠামো সরকার নির্দিস্ট করে দেবে। যে মালিক তা মানতে পারবে সে করবে, নয়তো অন্য পথ দেখবে।
কিন্তু তাহলে এই চাপ দিয়ে মালিক পক্ষ কেন বায়ারদের কাছ থেকে পণ্যের বেশি দাম আদায় করতে পারছেন না?
তারা যত দ্রুত বাধ্য হবে ততই মঙ্গল
বেতন বাড়ুক, নয়তো উন্নত প্রযুক্তি আসুক। কিন্তু এই অচলাবস্থার অবসান হোক। বিজিএমইএ এখানে কি কোনো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে না?
১. বিষয়টা হচ্ছে, গার্মেন্ট মালিকরা এরকম একটা ভাব করে আছে, যে তারাই এই দেশকে উদ্ধার করে দিচ্ছে। এটা হয়তো আজ থেকে ১০ বছর আগেও কিছুটা সত্যি ছিল, কিন্তু এখন আর নয়।
বৈদেশিক মুদ্রার যে হিসাব খাতায়পত্রে আছে, তার মাঝে গ্যাঞ্জাম আছে। ৭০% টাকা ব্যাকটুব্যাক এলসির মাঝ দিয়ে চলে যায়, বাকি ৩০% এর মাঝেও বিভিন্ন কমিশন টমিশন আছে, টেকনলজির বিনিয়োগ আছে। একটা অর্থকরী খাত বন্ধ হলে অবশ্যই অর্থনীতিতে তার মন্দ প্রভাব পড়বে, কিন্তু বাংলাদেশ একেবারে ডুবে যাবে, এই ধারণা ঠিক নয়।
এর চাইতে অনেক বেশি টাকা নিয়ে আসে মধ্যপ্রাচ্যের আমাদের প্রবাসী শ্রমিকরা, তারা বিজিএমইএ করে হুমকি ধামকি দেয় না।
২. আমি বিদেশীদের ওয়ারড্রোবে কাপড় তুলে দিতে চাই, কিন্তু একারনে আমার শ্রমিকের মুখে রক্ত তুলে নয়। আমার কথা হচ্ছে তারা নায্য দাম দিয়ে কাপড় কিনবে। এখন যেটি হচ্ছে, আমরা নিজেরা প্রতিযোগিতা করতে করতে এমন অবস্থায় পৌঁছে গেছি, বায়াররা তার সুযোগ পাচ্ছে। যে কাজের জন্য আগে একজন ৫ ডলার পেতো, এখন অন্য গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি গিয়ে সেটাকে ৩ ডলার অফার করে। এই যে দাম কমানো, এর জন্য সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হয় শ্রমিক, প্রথমেই হাত পড়ে তাদের বেতনে। বিশেষ করে ওভারটাইমে। তাছাড়া খরচ কমানোর জন্য নানা কৌশলে ছুটিছাটা কমানো হয়। এই নোংরা প্রতিযোগিতা করে যে দাম কমানো হচ্ছে, তার সুফল এদেশ পাচ্ছে না, পাচ্ছে বিদেশের ক্রেতারা। আমার আপত্তিটা এখানেই। আমেরিকায় আগে যে শর্টস ২০ ডলারে কিনতে পেরেছে, সেই শর্টস এখন ৮ ডলারে কিনতে পারে, কারন আমাদের শ্রমকে নিংড়ে নিয়ে আমরা সেই দাম কমিয়েছি।
৩. শ্রমঘন শিল্প আসলে যে পরিমান মূল্য সংযোজন করে, সে তুলনায় পরবর্তী পর্যায়ে উত্তরনটাই প্রত্যাশিত। পিতামহ হালচাষ করতেন, আমিও যদি হালচাষ করি, তাহলে অর্জন কোথায়? তিনি হালচাষ করে আমার বাপকে এসএসসি পর্যন্ত পড়াবেন, আমার বাপ ক্ষুদ্র ব্যবসা কিংবা ছোট চাকুরি করে আমাকে গ্রাজুয়েট করবেন, আমি একটু বড় চাকুরি করে আমার সন্তানকে একজন ডাক্তার কিংবা উকিল বানাবো, এভাবেই তো উত্তরন প্রয়োজন। গার্মেন্ট বন্ধ করে দিতে তো বলছি না, আমি বলছি এসব বেতন বৃদ্ধিটৃদ্ধিতে গার্মেন্ট বন্ধ হবে না। ২০০৫ সালে কোটা উঠে গেলে দেশে গার্মেন্ট বন্ধ হয়ে যাবে বলে জিগির উঠেছিল, আদৌ কোনোটি কি হয়েছে ? সংরক্ষনবাদিতা থেকে এই ৩০ বছরের পুরোনো শিল্পকে বেরিয়ে আসতে হবে, এখন আর কোলে বসিয়ে দুদু খাওয়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই।
আমার পুরো কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে বাধ্য করতে হবে সবগুলো গার্মেন্টকে, তারপর যারা টিকবে তারা টিকবে, যারা ঝরবে তারা ঝরে যাবে। সারভাইভেল অব দ্য ফিটেস্ট।
৪. আমি বুঝতে পারছি যে একক মালিককে বলা হয়নি, আমিও উদাহরনটা টানলাম। দেশে অনেক ভালো মালিক আছে, তারা খারাপদের চাপে পড়ে কিছু করতে পারে না, এটা এরকমই একটা উদাহরন। কিন্তু ঢালাও বাবে খারাপদের কারনে ভালো মালিকরাও এখন রক্তচোষা তকমা পেয়েছে। এটা দুঃখজনক এবং তার চাইতে বড় দুঃখটা হচ্ছে এজন্য কিন্তু আসলে মালিকরাই দায়ী।
৫. গার্মেন্ট মালিকরা চাপ দিয়ে দাম বাড়িয়ে নিতে পারে না, কারন এখন প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। কিছু গার্মেন্ট মালিক তাদের ক্যাপাসিটি বাড়িয়ে এমন পর্যায়ে নিয়েছে যে তারা যেনতেন প্রকারে কাজ চায়।
উদাহরন দেই। আপনার ১০০টি প্রোডাকশন লাইন আছে, আপনি সেখান থেকে ৮০টি লাইনে লাভ করবেন আগামী মাসে। এখন বাকি ২০ লাইনে যদি কাজ না থাকে, তাহলে তো খরচটা ঐ ৮০ লাইন থেকেই এখানে ভর্তুকি দিতে হবে। তখন আপনি জিরো লাভে বাকি ২০ লাইনের জন্য কাজ নিয়ে নিলেন, যাতে ঐ লাইনগুলোর খরচটা শুধু উঠে আসে। এতে করে অন্য কারখানা যারা ছোটো, যাদের গড় লাইন সংখ্যা ৪টি , এরকম ৫টি ফ্যাক্টরি প্রতিযোগিতায় মার খেলো। কারন তারা তো ৪ লাইন থেকেই তাদের লাভ বের করবে, এখন আপনি তো জিরো প্রফিটে ঐ কাজ নিয়ে গেছেন, তারা টিকবে কিভাবে ? এটা হচ্ছে বর্তমান ট্রেন্ড, ছোট ফ্যাক্টরিগুলো তাই টিকে থাকতে পারছে না।
৬. বিজিএমইএ যারা চালায় তাদের আসলে এই খাত থেকে নতুন করে পাওয়ার কিছু নেই। এরা এখন সামাজিক স্ট্যাটাসের জন্য এই প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে। ৩০ বছরের অর্জন হচ্ছে একটা অবৈধ ভবন, এই লজ্জা কার!
ধন্যবাদ আরিফ জেবতিক
আপনার সম্পূর্ণ মন্তব্যর সঙ্গেই সহমত।
এটাই চাওয়া। বিজিএমই'র দেশ উদ্ধার করে দেওয়ার মানসিকতা নিন্দনীয়।
কিছুই বলার নেই আসলে।
সবার আগে যখন তথন সরকারের কাছে হাত পাতার অভ্যাসটা ছাড়তে হবে বিজিএমইকে।
এইটা আসলে পুরাই বিরক্তিকর
সরকারের নগদ সহায়তা ছাড়া ঈদের সময় শ্রমিকদের বেতনবোনাস দিতে পারতেছিনা এই গীত গেয়ে দলবেঁধে ওমরাহ পালনের জন্য প্লেনে উঠার নজির উনাদের পক্ষেই দেখানো সম্ভব। বিদেশী মুদ্রা খরচ করে বালি সাগুর গান অথবা শেফালির (কাঁটালাগা নর্তকী) নাচের প্রদর্শনী আয়োজনে তাদের (বিকেএম্ইএসহ) ভূমিকা হতাশাব্যঞ্জক। বিপরীতে দেখি বিদেশী ব্যাঙ্ক ও বহুজাতিক কোম্পানি দেশীয় সঙ্গীতের আসর এবং শিল্পীদের স্পন্সর করে।
মন্তব্য করুন