ইউজার লগইন

রিপোষ্ট কবিতা শেষ পর্ব

পুনরায় কবিতা রিপোষ্টঃ গত বছরের আগের বছর মনে হইছিলো ডিসেম্বরের আগেই একটা বই বাহির করবার মতো কবিতা লিখে ফেলতে পারবো, যদিও কবিতার বই প্রকাশ করা নিয়া নিজের দ্বিধা আছে, এইসব গড়পরতা কবিতা প্রকাশিত হওয়া এবং না হওয়ায় বাংলা সাহিত্যের তেমন ক্ষতি বৃদ্ধি হবে না, তেমন জটিল কিছু কবিতা না এইগুলা, বরং নিজের সাময়িক অনুভুতি তুলে রাখা, লিখে রাখা, অধিকাংশই লিখা হইছিলো ফেসবুকের স্ট্যাটাসে, সাইজে ছোটো ছোট কারণ ফেসবুক চাইরশ অক্ষরের বেশী লিখতে গেলেই বাগড়া বাধায়,
স্ট্যাটাস কাব্যের বাইরে যা কিছু থাইক্যা গেছে সেইগুলানও তেমন বড় কিছু না, ইদানিং বেশি কিছু কইতে ঝামেলা লাগে, ছোটো হয়ে আসছে পৃথিবী।

বিচ্ছিন্ন অনুভব

০১
তুমি একটা কাঁটার মতো ভেসে আছো আমার রক্তে
সেই অঙ্কুশ রক্তে ভেসে হৃৎপিন্ডে পৌঁছায়
তোমাকে মনে পড়ে
আমার চৈতন্য অবশ হয়ে যায়।

০২
স্রোত পায়ের নীচ থেকে বালি টেনে নিলে
মনে হয় তলিয়ে যাচ্ছি

তোমার সাথে কথা বললে ইদানিং আমার এমনই অনুভব হয়।

০৩
গত রাতে ঘুমোবার আগে আগে প্লেনের শব্দ শুনলাম

মনে হলো রানওয়েতে প্লেন থামলেই
তুমি ঠিকই ছুটে আসবে আমার দিকে

সারাদিন কেটে গেলো অপেক্ষায়
অথচ তোমার সাথে দেখাই হলো না।

নোঙড় ছিড়ে ভেসে যাওয়ার আগে

তোমার আমার দেখা হয়েছিলো অসময়ে
আমরা দু'জনেই তখন শূণ্য,
অনুভুতিহীন অস্তিত্বকে খন্ড খন্ড করে ছড়িয়ে দিয়েছি চারপাশে

খন্ডিত তুমিও

একেক মাপের বাক্সে নিজেকে সাজিয়ে রাখি,
প্রতিটি মানুষই একক এবং অনন্য, সবার সাথেই আমাদের ভিন্ন রকম সম্পর্ক, ভিন্ন রকমের লেনদেন
চাওয়া পাওয়ার গল্পগুলো শেষ হলে, আমাদের বাক্সে রঙীণ দুমড়ানো মোড়কগুলো সাজিয়ে নিয়ে
আমরা ফিরে আসি নিজের ঘরে
আমাদের শূণ্যতাবোধটুকু আমাদের আতংকিত করে ফেলে
গভীর রাতে বিছানায় বালিশ আঁকড়ে ধরে শুয়ে থাকি নির্ঘুম

আহা কত না চমৎকার হতো যদি কোনো এক দিন ঠিক তোমাকে বুক পকেটে পুরে আমি শহর ঘুরতে বেরুতাম
যদি শহরের আমোদ আর উল্লাসের নিভৃতে একাকী আমি বুক পকেটে তোমার গন্ধ লুকিয়ে ঘুরতাম
যদি আমার শার্টের কলার হয়ে যেতো তোমার দুটি হাত অলৌকিক ভাবে, তুমি সারাদিন আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুরতে শহরে
আর আমাদের বিপনন আর বিজ্ঞাপন শেষে আমাদের শূণ্য মোড়কগুলো আমরা রেখে দিতে পারতাম একই বাক্সে

আমাদের যাওয়ার সময় চলে আসছে খুব দ্রুত, যেকোনো সময়েই বাক্সবন্দী হয়ে আমাদেরও চলে যেতে হবে

তুমি বলবে এমনটাই নিয়তি ছিলো, বুঝলে আমাদের দেখা হওয়াটাই ছিলো নিয়তিনির্ধারিত
আমরা এভাবেই আগুণে জ্বলবো বলে মিলেছিলাম পরস্পর
আমি বলবো আমাদের দেখা হয়েছিলো দুঃসময়ে
আমাদের কাছে আসবার যাবতীয় প্রচেষ্টাকে ভন্ডুল করে দিবে বলেই হয়তো অলক্ষ্যে দাবার বোর্ডে ঘুঁটি সাজাচ্ছে কেউ
আমাদের কাছে আসবার আগেই আমাদের ফিরে যাওয়ার সময় হয়ে যাবে

আমরা অভিশপ্ত, আমাদের এমনই পরিণতি হওয়ার কথা ছিলো

আসন্ন বিচ্ছেদের কষ্ট লুকিয়ে আমি নির্ণিমেষ তোমার দিকে তাকিয়ে বলবো

জানো নোঙড় ছিড়ে ভেসে যাওয়ার আগে ডিঙি নৌকা বুঝে যায় তীরের মায়া
আমিও তেমন নোঙড় ছিড়ে ভেসে যাচ্ছি
দুরে কোথাও
আর ফিরে আসতে চাইছি ব্যকুল হয়ে
আমি ফিরে আসতে পারছি না
তোমার বন্দরে ফেরার আগেই আমার পলকা নৌকা ভেঙে খান খান
আমি শতখন্ডে ভেসে যাচ্ছি সময়ের নদীতে
আর আমার সব রক্ত-জল-কান্না তোমাকে লক্ষ্য করে ছুটে যাচ্ছে
তোমাকে ডাকছে

ফিরে এসো
ফিরে এসো
ফিরে এসো

বিচ্ছিন্ন অনুভব -

০১.
ফিরে যাই বললেই ফিরে যাওয়া যায় না
মুখ ফেরানোর আগে
পিছু ডাকে
গভীর সুখের মতো বিষন্ন এক দিন
ভালো থেকো তুমি, দুঃখে অমলিন।

০২.
এই দ্যাখো,
উদ্যত নখর আমি
লুকিয়ে রাখলাম কোমল থাবায়
বদলে গেলাম, বদলে গেছি
তোমার অবাক ভালোবাসায়

আমাকে ঘুমাতে দিও তোমার কাছাকাছি

তোমার আঙ্গুল যেনো ব্লটিং পেপার
আমার দুঃখ শুষে নাও
তোমার স্পর্শ্বে আমার ক্লান্তি মুছে যায়

তোমার ওষ্ঠ চুম্বন করলে আমি ভুলে যাই
জীবনযাপনের গ্লানি
পরিশুদ্ধ মানুষ হয়ে উঠি

আমি হাজরে আসওয়াদ কেনো ছুঁবো?

অনুভবের সর্বশেষ কিস্তি

১.
আমি ক্ষুব্ধ, অস্থির, বেপরোয়া, বিপর্যস্ত বেহিসেবী বেসামাল ভালোবাসায়
এমন প্রেম যেনো কড়া না নাড়ে কোনো দরজায়।
২.
হাদিস এ রাসেল

সারাক্ষণ তোমাকে ছুঁয়ে থাকবার তীব্র ইচ্ছে থেকে নিজেকে বিরত রাখাটাই সর্বোত্তম জিহাদ
যে এই পূণ্য করে নিরন্তর আগুনে পুড়ে

২.
আমি শুধু ঘরে ফিরতে চেয়েছিলাম
চেয়েছিলাম দিন শেষে প্রিয় মানুষের কাছে ফিরতে,
অথচ আমার কোনো ঘর নেই যেখানে ফিরে আসা যায়
আমার কোনো কেন্দ্র নেই যার পরিধিতে জীবনের সৌধ বানানো যায়।
মরিচীকার পেছনে ছুটে গেলো এক জীবন
গোলোকধাঁধায় হারিয়ে আমার ঘরে ফেরাই হলো না।

৪.
আমি তোমার অবসরের ভাবনা
তুমি আমার ভাবনার অবসর।

৫.

তোমাকে এতোটা বিপর্যস্ত মনে হলো টেলিফোনে, মনে হলো অনন্ত শীতে জবুথবু
মনে হলো তোমার কিছুটা জীবনের উষ্ণতা প্রয়োজন, তুমি মৃত্যুর মতো শীতল হয়ে আছো
জানো, যদি কোথাও জীবন কিনতে পাওয়া যেতো
আমার সামর্থ্যে যতটা কুলায় আমি তোমাকে কিনে পাঠাতাম
যদি আমার উত্তাপে সজীব হতো তোমার শীতল প্রাণ
আমি কম্বলের মতো সারাজীবন তোমাকে জড়িয়ে রাখতাম।

পোস্টটি ৬ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

জ্যোতি's picture


আমি শুধু ঘরে ফিরতে চেয়েছিলাম
চেয়েছিলাম দিন শেষে প্রিয় মানুষের কাছে ফিরতে,
অথচ আমার কোনো ঘর নেই যেখানে ফিরে আসা যায়
আমার কোনো কেন্দ্র নেই যার পরিধিতে জীবনের সৌধ বানানো যায়।
মরিচীকার পেছনে ছুটে গেলো এক জীবন
গোলোকধাঁধায় হারিয়ে আমার ঘরে ফেরাই হলো না।

অসাধারণ।
প্রত্যেকটা কবিতাই অসাধারণ। আরো কবিতা দেন।

লীনা দিলরুবা's picture


একদম শেষেরটা দারুণ লাগলো।

যদি আমার উত্তাপে সজীব হতো তোমার শীতল প্রাণ
আমি কম্বলের মতো সারাজীবন তোমাকে জড়িয়ে রাখতাম।

এই লাইনদুটোর জন্য আপনার কবিতার বই বেরুনো উচিত।
বান্ধায় রাখার মত পঙতি।

রাসেল's picture


আমার নিজের বিবেচনায় ঐ কবিতার সবচেয়ে দুর্বল অংশ হলো সমাপ্তিটুকু, ওটা অন্য যেকোনো ভাবে সমাপ্ত হলে ভালো লাগতো আমার, কিন্তু এভাবে কম্বল পানি নিয়ে আসবার বিষয়টার ভিতরে একটা মরিয়া দুর্বলতা আছে। সেটা বেশ কয়েক বার পড়লে কানে এসে লাগবে।

রাসেল আশরাফ's picture


রাসেল ভাই@কিছু মনে করবেন না ব্লগের নিয়ম অনুযায়ী কোন পুরাতন লেখা প্রথম পাতায় রি-পোস্ট করতে পারবেন না এই নিয়ম মেনে কিছুদিন আগে লীনাদি তার বাবার ডায়রী এই ব্লগে দিয়েছেন কিন্তু লেখাটি পুরাতন হওয়ায় উনি প্রথম পাতায় দেন নি।আপনিও সে কাজটি করতে পারেন।

কারন এই ব্লগে কেও নতুন এসে এইধরনের কাজ করলে আমরা সবাই সোচ্চার হই কিন্তু আমরা যদি সেই কালচার ফলো করা শুরু করি তাইলে পরে এই ঘটনা নিয়ে কথা উঠবে।

ভালো থাকুন।

সাহাদাত উদরাজী's picture


ধন্যবাদ কাকা, প্রথম পাতায় রাসেল ভাইয়ের তিনটা পোষ্ট। সময় ব্যবধান কম। ভয়ে আমরা অনেক কথা বলি না। আবার বলে বেয়াদপ হয়ে যাই যদি। কাকা, আপনাকে সত্য সবার আগে বলার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

আশাকরি রাসেল ভাই ব্যাপারটা বুঝবেন এবং একজন পুরাতন ব্লগার হিসাবে আমার উপরো মনে কিছু নিবেন না (আমি আপনার লেখার ভক্ত)। অনেক নূতন ব্লগার এসে নানা কথা শুনে বিদায় হয়ে গেছেন। সামান্য কিছুর লিংক (বার বার) দিয়েও কথা শুনতে দেখেছি।

মডারেটর ভাই বোনদের আমি আরো কঠোর (নিয়মনীতি) হতে আহবান জানাই। আপনাদের নীতিমালা আপনারা না দেখলে কে দেখবে? আমাদের বলার আগে আপনারা এগিয়ে এলে আমরা এ জাতীয় লজ্জা, চক্ষুশুল ও সম্পর্ক ভাঙ্গা থেকে বেঁচে যাই। বোবা হয়ে থাকা অনেক সময় কষ্টের কারন হয়ে দাঁড়ায়।

আমরা বন্ধুর ভালবাসা চিরজীবি হউক।

তানবীরা's picture


আপনার কবিতা অসোম।

আমি তোমার অবসরের ভাবনা
তুমি আমার ভাবনার অবসর।

ভালো লেগেছে অসংখ্য লাইন অন্যরা বাকিগুলো লিখলো তাই আমি এদুটো

মডারেটর's picture


নীতিমালার "গ" ধারা অনুযায়ী পোস্ট প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে দেয়া হলো। আপনার ব্লগে পোস্টটি যথারীতি প্রদর্শিত হবে।

গ. "আমরা বন্ধু" তে শুধু নতুন লেখাই প্রকাশিত হবে। পুরনো লেখা রিপোস্ট করা যাবে না। অন্য কোনো কম্যুনিটি ব্লগে প্রকাশিত লেখা এবিতে প্রকাশ নিষিদ্ধ। এবিতে প্রকাশিত কোন লেখা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে অন্য কোনো কমিউনিটি ব্লগে প্রকাশ করা যাবে না। ব্যক্তিগত ব্লগ এবং পত্রিকা এই নিয়মের আওতার বাইরে।

আপনার নতুন নতুন লেখায় এবি সমৃদ্ধ হোক।

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.