ইউজার লগইন

ভবিষ্যতের সমাজ কাঠামো

জীবের স্বাভাবিক প্রেষণা নিজের "জেনেটিক কোড" পুনরুৎপাদন, কাঙ্খিত সঙ্গীর সাথে বলিষ্ট পরবর্তী প্রজন্ম পুনরুৎপাদনের নিশ্চয়তায় জীব সহিংস হতে পারে, কৌশলী হতে পারে, নির্মম হতে পারে, বিভিন্ন ছলা-কলায় সঙ্গীকে আকর্ষণ করতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে, ময়ুরের পেখম মেলা, পায়রার গলার পালক ফুলিয়ে বাকবাকুম আর কোকিলের সুমধুর সঙ্গীত সবই সেই পুনরুৎপাদনপ্রক্রিয়ার বিভিন্ন প্রকাশমাত্র।

প্রকৃতির উপরে নিয়ন্ত্রন করতে ব্যর্থ বলেই এখনও প্রাণী সকলের নির্ধারিত ' মেটিং সিজন' বিদ্যমান, শিশুজীব যে প্রাকৃতিক পরিবেশে সবচেয়ে নিরাপদে লালিত-পালিত হতে পারবে, দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় শুধুমাত্র সে সময়েই প্রাণী গর্ভবতী হয়, ডিম পারে কিংবা অন্য যেকোনো পুনরুৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হয়। শিশু প্রাণী যখন জন্ম নেয় তখন তারজন্য ঠিক সে রকম যথাযথ পরিবেশই বিদ্যমান থাকে, দৈবচয়ন এবং জেনেটিক কোডের মিশেলে শুধুমাত্র সেসব প্রাণীই বংশবিস্তার করতে পেরেছে যারা উপযুক্ত সময়ে গর্ভধারণ করতে সক্ষম হয়েছে।

প্রাণীর বাৎসল্যবোধ, শিশুর প্রতি যত্ন এবং মমতা, সবই মূলত স্বার্থপর নিজের জেনেটিক কোড পরবর্তী প্রজন্মে ছড়িয়ে দেওয়ার আকাঙ্খাউদ্ভুত প্রাকৃতিক বিষয়। প্রাণীর এই স্বাভাবিক প্রবণতাটুকু বিবর্তনের ধারাকে বলিষ্ট করেছে। অস্তিত্বের প্রয়োজনে জীব নিজের খাদ্যাভ্যাস, নিজের শরীরের মাপ সবই বদলে ফেলে, একটা পর্যায়ে এই বিবর্তিত প্রজাতি এবং প্রাচীণ প্রজাতির ভেতরে স্বাভাবিক যৌনমিলনে নতুন প্রজন্ম তৈরির সম্ভবনা ক্ষীণ হয়ে আসে, সে পর্যায়ে এরা পৃথক দুটো প্রজাতি হিসেবে বিকশিত হয় এবং বিবর্তন সমাপ্ত হয়। বর্তমানে বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে কাছাকাছি প্রাণীদের ভেতরে নিয়ন্ত্রিত মিলনে গর্ভসঞ্চারের উদ্যোগ সফলতা পেয়েছে, সিংহ, বাঘের ভেতরের মিলনে টাইলন, লাইগার প্রজাতি তৈরি হয়েছে, তবে স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশে এমন উদাহরণ খুব কম।

তেমন স্বাভাবিক বিবর্তনের ধারায় পৃথিবীতে কোনো এক সময়ে মানুষের জন্ম হয়েছিলো, নৃতাত্ত্বিক বিবেচনায় বলা হয় আফ্রিকার কোনো এক অঞ্চলেই আমাদের আদিপুরুষের বসবাস ছিলো, তবে সকল মানুষের পুর্বপুরুষের জন্ম হয়েছে আফ্রিকায় এমন মতবাদের দিকে পাল্লা ভারী হলেও এমনও বলা যায় পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় কাছাকাছি সময়ে হোমো ইরেকটাস গোত্র বিবর্তিত হয়ে মানুষের আদিম পুরুষে পরিণত হয়েছিলো, ইউরোপের ঠান্ডা অঞ্চলে আফ্রিকার মরু অঞ্চলে, কিংবা চীনের বিস্তৃত পাহাড়ী জঙ্গলে কিংবা সুমাত্রা-জাভায়, একই ধাঁচের ফসিল কাঠামো পাওয়া গিয়েছে, তাদের কাঠামোর মাপের পরিবেশউপযোগী ভিন্নতা বিদ্যমান তবে একটা বিষয়ে তাদের শরীরের কাঠামোতে মিল আছে, এরা সবাই দু পায়ে ভর করে সোজা দাঁড়াতে পারতো এবং এরা হাত ব্যবহার করতো।

বায়োলজিক্যাল এভিডেন্স বিবেচনায় পৃথিবীতে সকল মানুষ মূলত ৭ থেকে ১৩ জন আদি মাতার গর্ভে জন্ম নিয়েছে, আদম হাওয়ার মতো একক উৎস নেই তাদের, যুগোপযোগী শাররীক পরিবর্তনের বিষয়গুলো তাদের বাহ্যিক ভাবে যতটাই ভিন্ন করুক না কেনো তাদের মাইট্রোকন্ড্রিয়াল উপাদানগুলোর ভেতরে ভীষণ রকম মিল।

মানুষ সময়ের সাথে প্রকৃতির উপরে আধিপত্য বিস্তার করেছে, অতীতে যা কখনও দেখা যায় নি, এই মানুষের প্রজাতিতে সামাজিক বিবর্তনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সামাজিক সাংস্কৃতিক( মূলত খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনজনিত পরিবর্তনের কারণে) প্রভাবিত বিবর্তনে মানুষের শাররীক এবং মানসিক পরিবর্তন ঘটেছে। মানুষের কাছাকাছি বসবাস করা অন্যসব প্রাণীদের জননবিবর্তন ঘটলেও তাদের ভেতরে সামাজিক বিবর্তন প্রক্রিয়ার অনুপস্থিতি মূলত: মানুষের সাংস্কৃতিক অভ্যস্ততাকে সামাজিক বিবর্তনের প্রধানতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে।

সাংস্কৃতিক বিবর্তনের কারণে মানুষ বাৎসল্যবোধের সার্বজনীনতা পেয়েছে, শুধু নিজের সন্তান নয় বরং অন্যান্য মানুষের সন্তানকেও আপন সন্তানের মতো স্নেহ মমতায় লালন-পালন করতে শিখেছে তারা। সামাজিক বিবর্তনের পথে মানুষের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোও বদলেছে, প্রাচীণ গোত্রভিত্তিক সমাজ ( যে সমাজ থেকে মানুষের ভাষা এবং আদিম মাতাদের আগমন) বর্তমানে বহুস্তরের বহুগোত্র-জাতি-রাজনৈতিক আদর্শবিভাজিত সমাজে পরিণত হয়েছে, প্রশাসনিক কাঠামোতে পরিবর্তন এসেছে, মানুষ গোত্র অধীনস্ততা ছেড়ে রাষ্ট্রঅধীনস্ততায় অভ্যস্ত হয়েছে। রাষ্ট্র অর্থনৈতিক-সামরিক ক্ষমতায় অপরাপর দুর্বল রাষ্ট্রকে গ্রাস করছে। জীবনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির সরবরাহ নিশ্চিত করতে আদিম যুদ্ধগুলোর ধাঁচ বদলেছে। এখন শুধুমাত্র অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক প্রয়োজনে রাষ্ট্র তার সামরিক ক্ষমতা ও দক্ষতার প্রকাশ ঘটায়।

মানুষ সাংস্কৃতিক প্রভাবে মানবিক হয়েছে, সমাজ-সভ্যতার সৃজনশীল মানুষের অন্যতম অবদান মানুষের ভেতরে মানবিকতাবোধ জাগ্রত করা। রাষ্ট্র তার সামরিক প্রয়োজনের মানববিধ্বংসী অস্ত্রউৎপাদন ও নির্মাণের প্রক্রিয়ায় যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে তার অতি নগন্য অংশও তারা মানুষের জীবন বাঁচাতে ব্যয় করে না। অমানবিক রাষ্ট্রের মানবিক নাগরিকেরা বাধ্য হয়েই রাষ্ট্রবৈরি হয়েছে। রাষ্ট্র প্রাযুক্তিক উৎকর্ষতায় যুদ্ধের প্রয়োজনে সচল বহুগুণে বিধ্বংসী যুদ্ধবাজ যন্ত্র আবিস্কার করেছে। স্হলচর, জলচল, উভচর খেচর সেসব যন্ত্র খুব নিপূণ ভাবেই মানুষকে হত্যা করতে সক্ষম।

এই রাষ্ট্রই যুদ্ধের পদাতিক বাহিনীর প্রয়োজনে যন্ত্রমানব সৃষ্টিতে উৎসাহী হয়েছে, মানুষের অর্থেবিক্রীত মেধা মানুষকে হত্যার নিত্যনতুন কৌশল উদ্ভাবনেই ধ্বংস হচ্ছে। এই অব্যহত অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় মানুষ তার প্রাকৃতিক বংশবিস্তারের প্রেষণা হারিয়েছে। উন্নত বিশ্ব বলে অভিহিত রাষ্ট্রের নাগরিকেরা বংশবিস্তারে অনীহ, তাদের দেশে বসবাসরত অনুন্নত বিশ্বের অসংস্কৃত নাগরিকেরা তাদের হয়ে সে দায়িত্ব পালন করছে প্রাণপণে তবে রাষ্ট্রের অব্যহত চাহিদা পুরণ করতে পারছে না। রাষ্ট্র নিজস্ব প্রয়োজনে মেধাআত্মস্যাৎ করছে। আমাদের মতো অনুন্নত দেশের উন্নত মেধাবী মানুষেরা নিজস্ব জৈবনিক প্রয়োজনে অভিবাসী হচ্ছে সেসব দেশে। তাদেরও জীবিকার লড়াইয়ে লিপ্ত থাকতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

সৃজনশীল,মননশীল মানুষেরা শিশুর বিকাশ ও সুনাগরিক হয়ে উঠবার যেসব প্রাথমিক শর্ত নির্ধারণ করেছেন, উন্নত বিশ্বে অত্যাধিক প্রজননক্ষম দরিদ্র জনগোষ্ঠী সেসব প্রাথমিক শর্ত পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে, এখনও কোনো রাষ্ট্র নিজস্ব প্রয়োজনে নাগরিকের মমত্ববোধ, মাতৃত্ববোধ-পিতৃত্ববোধের উপরে খবরদারি শুরু করে নি। তবে বিশ্বের কর্পোরেটাইজেশনের স্বাভাবিক গতি অব্যহত থাকলে একদিন রাষ্ট্র নাগরিক উৎপাদন প্রক্রিয়াতেও খবরদারি করবে। হয়তো সেদিন বেশী দুরে নয় যখন প্রতিটি শিশু জন্মের পর থেকেই রাষ্ট্রের আওতায় চলে যাবে। সেখানে নির্ধারিত অর্থে মাতৃত্ব এবং পিতৃত্বের বেচাকেনা করবে মমতাময় মানুষেরা। তারা রাষ্ট্রের সুনাগরিক নির্মাণ প্রকল্পে উচ্চমূল্যে নবজাতকদের লালন-পালন করবে, তারা তাদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করবে। তখন ব্যবহারিক মানবপালন বিদ্যা হয়ে উঠবে অন্যতম চাকুরিমুখী ডিপ্লোমা।

আমরা রাষ্ট্রের অর্থে, রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে নিজেদের ডিএনএ প্রোফাইল জমা রেখে গর্ভধারণ করবো, রাষ্ট্র নির্ধারিত সময় পর সে সন্তানকে নিয়ে নিবে নিজেদের জিম্মায়, তারাই নিজেদের প্রয়োজনে এদের শ্রমিক হিসেবে লালন-পালন করবে, আমাদের দরিদ্রদেশগুলো ভাড়াটে গর্ভে সয়লাব হবে, গার্মেন্টস ব্যবসা বাদ দিয়ে আমাদের দেশের বিত্তলোভী মানুষেরা হিউম্যান ব্রিডিং স্টেশন খুলে বসবে, আমরা পুনরায় দাসে পরিণত হবো।

তবে একই সাথে আমাদের চুড়ান্ত সাংস্কৃতিক অবক্ষয়ও ঘটবে, আমাদের ভেতরে গত কয়েক হাজার বছরের ঐতিহ্য হিসেবে যে মানবিকতাবোধের জন্ম হয়েছিলো, আমাদের অগোচরে সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিবর্তনে আমাদের মানবিকতাবোধের মৃত্যু হবে। আমাদের ভেতরে অনেক সুনাগরিক জন্মাবে কিন্তু তারা প্রাকৃতিক বিবর্তনে অনুপযোগী প্রাণীতে পরিণত হবে। আমাদের ভবিষ্যত নাগরিকদের বংশবিস্তারের আদিম তাড়না থাকলেও স্নেহমমতাবিহীন, বাৎসল্যবোধবিহীল একদল প্রাণী তাদের সন্তানকে নিরাপত্তা দিতে আগ্রহী হয়ে উঠবে না, এভাবেই হয়তো আমাদের এক্সটিংশন ঘটবে। কর্পোরেটাইজেশনের এই অন্ধ লড়াইয়ে যুযুধ্যমাণ সকলেরই কর্তব্য এই অশুভ পরিণতিকে প্রতিহত করা

পোস্টটি ৮ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

এ টি এম কাদের's picture


রাসেল ভাই,
আপনার অনুমান / চিন্তা বাস্তবে রূপ নিতে কত দিন লাগবে ? আমি ততদিন
বাচঁতে চাইনা ! অগ্রসর চিন্তার জন্য ধন্যবাদ !

রাসেল's picture


এই রকম সম্ভবনা বাস্তবে রূপ নিলে সেটা খুবই ভয়ংকর হবে। এটা এক ধরণের বাস্তবতা, ধর্মীয় কারণে স্টেমসেল গবেষণা স্থগিত, অব্যহত থাকলে হয়তো এমন অনেক ধরণের উদ্ভট ভাবনাচিন্তা ক্ষমতাবানদের ভেতরে ঢুকে বাসা বাঁধতে পারে।

সব সময় সচেতন প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়া জরুরী, আমাদের সামষ্টিক অর্জন আমাদের মানবতাবোধ, সেটা আমাদের অন্য সকল জীবিত প্রাণীর চেয়ে আলাদা একটা অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে, সেটা হারিয়ে ফেলা কোনোমতেই কাজের বিষয় হবে না।

নরাধম's picture


বেশ গোছানো চিন্তা এবং ভাল লেগেছে। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে রাষ্ঠ্রকে আপনি কিছুটা স্বকীয় দৃষ্টিভংগী থেকে দেখছেন, মনে হচ্ছে রাষ্ঠ্র তার নিজের কৃত্রিম ব্যক্তিত্ব নিয়ে আলাদাভাবে দেশের সাধারণ জনসাধারণ থেকে আলাদা কিছু, যার নিজের স্বার্থ আছে এবং সে স্বার্থ সাধারণ জনগোষ্ঠীর স্বার্থ থেকে আলাদা, হয়ত সাংঘর্ষিকও। উন্নতবিশ্বের রাষ্ঠ্রর চরিত্র আপনি যেভাবে এঁকেছেন সেটা কিছুটা আমেরিকা এবং চীনের মিলন হলে যে রাষ্ঠ্র হবে সেরকম আর আপনার বাকি আলোচনা বা প্রিডিকশান সেরকম রাষ্ঠ্রকাঠামোর এজামপ্শানের উপর ভিত্তি করে রচিত। আমার পড়াটা ঠিক নাও হতে পারে, হয়ত আপনি ভিন্ন কোন রাষ্ঠ্রকাঠামোকে মাথায় রেখেছিলেন, কিন্তু আমার পড়া ঠিক হলে আপনার এরকম রাষ্ঠ্রকাঠামোর চিন্তার কারন কি? মানবিক রাষ্ঠ্র, যা তার জনগনের স্বার্থ বা চাহিদার বাইরে যায়না বা সাধারণ জনগোষ্ঠীই যার গতিপ্রকৃয়া অনেকাংশে নির্ধারন করে সেরকম রাষ্ঠ্রের উদাহরন তো আছেই।

কিছুটা সম্পর্কিত একটা লেখা অনেকদিন আগে লিখেছিলাম। http://www.amrabondhu.com/naradham/563

রাসেল's picture


রাষ্ট্র নৈর্ব্যক্তিক, নির্লিপ্ত একটি কাঠামো, এর চরিত্র নির্ধারণ করে যারা এই রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালনার কাজে নিয়োজিত। রাষ্ট্র অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তা থেকে উদ্ভুত একটি বিষয়,সেখানে সীমান্ত, প্রহরী, সম্পদের পরিচালনা, সবই সেইসব অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তার সূত্রে নির্ধারিত হয়।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রে যদি গত বছর রাষ্ট্র পরিচালকেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ওএমএসের চালের ট্রাক বিপণনে না নামাতেন তাহলেও বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার কয়েক কোটি মানুষকে অনাহারে মৃত্যুমুখে পতিত হতে দেখে বিব্রত, অনুশোচনাগ্রস্ত কিংবা বিচলিত হতো না।

রাষ্ট্র কর্পোরেটাইজেশনের খপ্পরে পরেছে এই উপলব্ধি অকুপাই ওয়ালস্ট্রীটের মানুষেরা করেছে, সেখানে কয়েকজন মানুষের লোভের কাছে সামষ্টিক মানুষের জীবন জিম্মি হয়ে পরেছে। কর্পোরেটের খেয়াল এমনই তারা ব্যবসায়িক লাভক্ষতি বিবেচনা করে এখনই সুপেয় পানীর হ্রদের জলসত্ত্ব কিনেছে, পানি ছাড়া মানুষ বাঁচে আর কতদিন, বাঁচতে হলে তাকে পানি পান করতেই হবে, সেই পানি যার আইনি অধিকারে থাকবে সেই ভবিষ্যতের বিজনেস টাইকুন। এই যে নির্লিপ্ত লোভী চরিত্র, রাষ্ট্র তার আইনী কাঠামোতে কর্পোরেটের লোভী চরিত্রকে আশকারা দিয়েছে।

অনুন্নত বিশ্বে কর্পোরেটের সেবা করে ক্ষমতাবানেরা, তারাও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের অংশীভুক্ত হয়। যারা জনকল্যানমুখী রাষ্ট্র পরিচালনা করছে তারাও কর্পোরেটের লভ্যাংশে নিজের নাগরিকদের বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা স্বল্পমূল্যে প্রদান করছে। তারা এই বিলাসিতা করতে পারছে কারণ তাদের করদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো অন্য কোনো অনুন্নত দেশের নাগরিকদের জিম্মি করে রেখেছে।

রায়েহাত শুভ's picture


শেষের অংশটা পইড়া আমার কেন জানি পিঁপড়ার কলোনীর কথা মনে হইলো...

রাসেল's picture


পিঁপড়ার কলোনীতে শ্রমিকের প্রয়োজনটুকু তাদের প্রাকৃতিক প্রেষণাকে লুপ্ত করে দেয় নি। সামাজিক বিবর্তনের ধারাটুকু পিঁপড়ের নেই। তারা রিপ্রোডাকশন ইমপালস অন্য কোনো ভাবে দমন করে না। মানুষ শরীর থেকে অনুভুতিতে পৃথক করতে পারে নি কিন্তু উপলব্ধিকে শরীর বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে।

রায়েহাত শুভ's picture


উপলব্ধিকে শরীর বিচ্ছিন্ন করে ফেলছে এইটা কি সরাসরি বলা যায়? নাকি এইভাবে বলা উচিত যে মানুষ উপলব্ধিকে শরীর এবং মন থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়া যাইতেছে। ভবিষ্যতে এইটা কোন দিকে মোড় লইবো সেইটা কি নির্দিষ্ট কইরা বলা আদৌ যায়?

তানবীরা's picture


এমন যদি হয় ------পোষ্টের নাম এ ধরনের হওয়া উচিত ছিল।

আগের কোন জন্মে এক কালে যখন ইস্কুলে গিয়েছিলাম বলে স্মৃতিতে ভাসে, পড়েছিলাম, বৈজ্ঞানিক আবিস্কারের প্রথম পদক্ষেপ নাকি যৌক্তিক অনুমান Smile

শওকত মাসুম's picture


কর্পোরেটাইজেশনের এই অন্ধ লড়াইয়ে যুযুধ্যমাণ সকলেরই কর্তব্য এই অশুভ পরিণতিকে প্রতিহত করা

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.