আমাদের সময়ের গান
জীবনমুখী গানের ধাক্কায় আমাদের গানের কাছে প্রত্যাশা বদলে গেলো, প্রতি সপ্তাহে নতুন নতুন ব্যান্ড আর তাদের এলবাম প্রকাশ নিয়ে চারু-পার্থ একটা র্যাপ গান করেছিলো , তবে সেটার প্রভাব শ্রোতাদের মানসিকতাকে তেমন পরিবর্তন করে নি সম্ভবত। আমাদের তারুণ্যে বাংলা গানের ধারাবাহিকতা বদলে দিলো সুমন-নচিকেতা-অঞ্জন।
সুমনের 'তোমাকে চাই' এক ধাক্কায় অনেকের ভাবনাকে বলতে গেলে গান নিয়ে কাজ করতে চাওয়া অনেকের ভাবনাকে তীব্র ধাক্কা দিয়েছিলো। ব্যান্ডের গানের বাজারটা সম্পূর্ণ দখল করে ফেললো কোলকাতার জীবনমুখী গান- সোলস-এলআরবি- ফিলিংস- আর্ক এর বাইরে অন্য কোনো ব্যান্ডের বাজার তেমন ছিলো না তখন। চাইমস, প্রমিথিউস, ডিফারেন্ট টাচ, অরবিট, উইনিং তখন প্রকাশিত হয়েছে । নব্বই এর দশকের প্রথম দিকে প্রকাশিত হয়েছিলো পেপার রাইমস, ইন ঢাকা, ওয়ারফেজ থেকে আলাদা হয়ে অর্থহীন ও সুমন একটা মিক্সড এলবামে একটা গানও করেছিলো, এমনটাই মনে পড়ছে এখন। তবে সেসব গান কোনো ভাবেই আলোড়ন তুললো না।
বেনসন এন্ড হ্যাজেস সে সময় ব্যান্ড সার্চ প্রকল্প শুরু করলো- প্রথমবার সবাইকে অবাক করে সেরা ব্যান্ডের পুরস্কার পেলো ভাইকিংস। বন্ধুর সুবাদে পরিচয় হলো সায়মনের জন্য- ভাইকিংসের ড্রামার। পরবর্তীতে ওর সাথে বন্ধুত্ব কিছুটা গাঢ়ও হয়েছিলো, প্রথম দুটো এলবাম প্রকাশের পর ওদেরও গানের ভাবনা বদল হয়েছে- ওরা তেমন ভাবে মিউজিকের সাথে জড়িত না এখন।
সেরা নতুন ব্যান্ডের প্রতিযোগিতায় আরও অনেক অনেক ব্যান্ড নাম লেখাচ্ছে- ডেমো করছে, হেভী মেটাল, মেলোমেটাল ইত্যকার ফাজলামিও শুরু হলো। সেসব ক্ষেত্র বিশেষে জনপ্রিয়ও হলো, তবে সুমনের প্রভাবে আমাদের গানের ভাবনাটা এমন বদলে গেলো যে এইসব ক্ষণিক জনপ্রিয় ধারাকে আর অনুসরণ করা হয় নি।
বাংলাদেশে সুমন কনসার্ট করতে আসলো- সে সময়ে একদিন বিকেলে কার্জন হলের পুকুর পারে আড্ডা দিচ্ছি, হঠাৎ দেখি একটা জটলা মতো এসে থামলো, ওটার মধ্যমনি সুমন চাটুজ্জ্যে, কিঞ্চিৎ অবাক হয়েছিলাম, কিন্তু স্টারস্ট্রাক হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা ছিলো কম, তারুণ্য সব কিছুকেই উপেক্ষা করতে পারে- টুকটাক আড্ডা হচ্ছে এ সময়ে সুমন চাটুজ্জ্যে আক্ষেপ করে বললেন আপনারাই শেষ ভরসা। বাংলা ভাষা টিকিয়ে রাখতে হবে আপনাদেরই। কোলকাতা তো হিন্দির দখলে চলে গেলো, আপনরা আছেন, ভালো লাগে, মনে হয় এখনও বাংলা গানের শ্রোতা আছে।
অনেক অনুরোধের পরও তিনি গান শোনান নি। হয়তো আমাদের প্রজন্মের ভাবনা জানতে চেয়েছিলেন, বিখ্যাত মানুষ যখন স্বশরীরে কোথাও উপস্থিত হন তখন তার ঔজ্জ্বল্য সবকিছু ছাপিয়ে যায়, আমি ঠিক জানি না সুমনের এই আক্ষেপ অনুভব করবার মতো কতিপয় তরুণ-যুবক সেখানে ছিলো কি না। কিংবা তিনি তার প্রত্যাশিত সারা পেয়েছিলেন কি না আড্ডা থেকে।
প্রথম যেবার গানের সুর করার চেষ্টা করলাম প্রথম দুই লাইন শুনে সোহেল বললো তোর ভিতরে এখন সুমন ঢুকে বসে আছে। নিজের মতো সুর কর। আমার সুর সুমনের মতো ওতো চমৎকার ছিলো না, কিন্তু লিরিক্যাল হয়ে উঠবার চেষ্টায় কথাকে গুরুত্ব দেওয়ার একটা প্রবনতা ছিলো- কিংবা বলা যায় অনুকরণের বিষয়টা অজান্তেই চলে আসে- সচেতন অনুসরণ ছিলো না সেটা।
যখন চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলাম আমি সোহেল আর মামুন একটা ব্যান্ড করেই ফেলবো, "অরিয়ন" কিংবা "কালপুরুষ" নাম দিয়ে একটা ব্যান্ড করবো, ওটার গানের ধরণ হবে বটতলার গান। কোনো নির্দিষ্ট ধারাকে অনুসরণ না করে গান করে যাওয়ার একটা লক্ষ্য ছিলো তখন। ততদিনে মামুন ৬টা গান সুর করে ফেলেছে, কিছু কিছু গান অর্ধসমাপ্ত- কিছু গানের মুখ তৈরি অন্তরা নেই- সেসব একটু ঘষে-মেজে ঠিক করতে হবে- তেমনই একটা গান ছিলো টেলিফোনের গান
শুনতে কি পাও তুমি
যদিও আছো দুরে
টেলিফোন ধরে থেকো না
কিছু তো বলো তুমি
কেঁদো না তুমি আর
আজ কথা হবে সারারাত-
এই অর্ধসমাপ্ত গানগুলো আমাদের রত্ন ছিলো। আমরা ধুপখোলা মাঠের ছাদের হাঁটতে হাঁটতে এসবের সুরের পরিকল্পনা করতাম। ১২টা গান জমলেই একটা এলব্যাম করে ফেলতে হবে- এক সেশন মানে ৩হাজার টাকা- কয়েক সেশনেই গান সম্পূর্ণ করতে হবে- আমাদের প্রত্যাশার অন্ত নেই-
একটা বিষয়ে বিতর্ক ছিলো, একটা এলব্যামে কতগুলো ভালো গান দেওয়া হবে- ভালো গান মানে কালজয়ী গান হবে এমন না, কিন্তু আমাদের তখন অন্য রকম আত্মবিশ্বাস- আমরা যা সুর করবো সেটার চেয়ে ভালো গান যে বাংলায় তৈরি হওয়া সম্ভব এমনটা তখন মনে হতো না। সেই আত্মবিশ্বাসে সবকিছু উড়িয়ে দেওয়ার একটা প্রবনতা হয়তো ছিলো আমাদের।
বাংলা গানের ইতিহাসে আগে যা কখনও হয় নি এমন একটা কিছু করে দেখাতে হবে। গানের দর্শণ বদলে দিতে হবে, বিভিন্ন রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে সুর নিয়ে, এভাবেই বাংলা গানের সুরের ধারাটাও বদলে যাবে। একটা গানের ক্ষেত্রে আমরা ঠিক করেছিলাম কোনো ভাবেই ওখানে ড্রামস ব্যবহার করবো না, গানটা আড্ডার গান ছিলো, ওটাতে হাত তালি- চামচের শব্দ, থালা বাসন বাজানোর শব্দ হবে মূল তাল। সাথে একটা গীটার, বেজ থাকবে তবে ততটা প্রমিনেন্ট হবে না। গানটা শুনে যেনো মনে হয় আসলে আড্ডার মধ্যেই বাজছে গানটা।
সব কিছুই সুরে গাইতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই- হঠাৎ বৃষ্টি দেখে যে গানটা সুর করা হয়েছিলো ওটার শেষের কবিতাটা আবৃতি করা হবে, ব্যাকগ্রাউন্ডে গিটার প্লাকিং- আবার হালকা লীড দিয়ে ফিরে আসবো গানে, এমন বিভিন্ন ধরণের পরিকল্পনার ভেতরে প্রধানতম সমস্যা ছিলো ড্রামার নিয়ে।
জিয়ারা তখনও শিরোণামহীন করে, বেনসন এন্ড হ্যাজেসে অংশগ্রহন করে কেউকেটা হয়ে উঠে নি। ওরা তখন কেবলমাত্র বাংলা গানে হেভী মেটাল করে ফাটিয়ে ফেলতে হবে ভাবনা থেকে নিজেদের বিচ্যুত করে জীবনমুখী গান করার চেষ্টা করছে- বুলবুল ভাই জুয়েল জিয়া একসাথে প্রাক্টিস করছে জিয়াদের বাসার ছাদে। তার কিছু আগে জিয়াদের ড্রামার ছিলো আনান- সোহেল বললো বাংলাদেশে ড্রামারদের ভেতরে ঐ সেরা, আর ওর ভিতরে অন্য রকমের কিছু গান করার তাগিদ আছে- আমরা গেন্ডারিয়া থেকে রিকশা নিয়ে রওনা দিলাম রূপনগর, আনানের সাথে কথা বলতে হবে, ওকে বুঝাতে হবে আমরা কি করতে চাচ্ছি-
সেদিন আনানের সাথে দেখা হয় নি, আনানের সাথে আমার দেখা অবশ্য হয়েছিলো পরে- রূপনগরেই- ওরা একটা ব্যান্ড করেছে কার্নিশে ম্যাগপাই কিংবা এমন নামের কিছু- যেহেতু আনানের সাথে দেখা হলো না, জিয়াদের বাসায় রাত কাটালাম- সারারাত গান হলো, ওরা তখন একটু আলাদা ধরণের গান করছে- সেই রাতে গাওয়া একটা গান মনে পড়ছে এখন
সূর্য চুমু খেলো আকাশের গায়
সন্ধ্যা ঘনালো বুঝি পাড়ায় পাড়ায়
ঠিক তক্ষুনি বলে উঠে আলো
সময় হয়েছে মা দেশলাই জ্বালো
কেউ একজন পরে আমাকে বলেছে এ গানটা না কি বুলবুল ভাইকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে- জিয়ারা সেই সেট আপ নিয়ে চারুকলায় দুইটা প্রোগ্রাম করলো। সুমনের গানের কোলকাতাকে ঢাকা করে একটা গান করেছিলো সে সময়ে।
অনেক ধরনের পরিবর্তন ঘটে গেলো জীবনে- সোহেল হুট করে চলে যাওয়ায় অনানুষ্ঠানিক গানের দলের উদ্যোগটা মরে গেলো, পরবর্তীতে অবশ্য যখন জিপসীর সাথে গান সুর করছি আর সোহেলের সাথে টেলিফোনে গান নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তখনও ইচ্ছা ছিলো ও দেশে ফিরলে কিংবা কোনো না কোনোভাবে এক হয়ে একটা এলব্যাম করবো- সোহেল অবশ্য বললো এখন প্রযুক্তি যেখানে পৌঁছেছে ব্যান্ডের লোকজনদের এক সাথে না থাকলেও হয়- ও ওর ট্রাক রেকর্ড করে মাস্টারিং এর জন্য পাঠিয়ে দিবে- সেসব রোমান্টিক কল্পনা অবশ্য অবসরের আনন্দ কল্পনা হয়েই থাকলো-
আমরা ঠিক করেছিলাম প্রথম এলবামটা প্রকাশিত হওয়ার পর আমরা অন্য একটা এক্সপেরিমেন্টাল এলবাম করবো, আমাদের বেড়ে ওঠার গল্প- আমরা খুব অদ্ভুত একটা সময়ে বেড়ে উঠেছি, বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির সবচেয়ে সফল মুহূর্ত এবং আমাদের আদর্শিক বিচ্যুতির ভেতর দিয়ে আমাদের বেড়ে ওঠা। সে সময়ে যখন আমরা লালনের গানে মগ্ন- গীটারে একতারার সুর তোলার চেষ্টা করছি সে সময়েই কোলকাতায় হয়তো বুনো-আনুশেহ-অর্নব বাংলা লোকগান নিয়ে কাজ করার কথা ভাবছে। বাংলা ব্যান্ডের জনপ্রিয়তার পর লোকগীতি পরলোকগমন করেছে। এখন কেউ কিছু না পারলে লালন হাসনরাজা আব্দুল করিম রাধারমণকে ইলেক্ট্রিক গীটার দিয়ে তুলোধুনা করে। পোস্ট মর্ডানিজম এক অর্থে পুনরায় শেকড়ে ফিরে আসা, যেহেতু শেষ পর্যন্ত শিল্প একটা পণ্য- লোকগীতির গ্রহনযোগ্য ক্রেতা বাজারে কয়েক কোটি, শহুরে কয়েকজন মানুষের জন্য ধুমধারাক্কা ব্যান্ড সঙ্গীত না করে নতুন সুরে লোক গীতি গাইলে লোকগীতির বাজারটা ধরা যাবে-
আমি নিশ্চিত জানি যারা এখন এই ধারায় কাজ করছে তারা এমন কি এই বাজারের ধারণাটাও স্পষ্ট জানে না। এখন সেটাই ট্রেন্ড বলে তারা এই কাজ করছে।
আমরা আমাদের বড় হওয়ার সময়ের ভাঙচুড়, শহর হিসেবে ঢাকার মেট্রোপলিটন হয়ে ওঠা এবং একই সাথে সে শহরের মেট্রোপলিটন অপমৃত্যু- আমাদের চেনা পুরোনো শহরের গলি ঘুপচি আড্ডা আর বন্ধুত্ব নিয়ে গান করবো ভেবেছিলাম। যারা যারা আমাদের অনুপ্রণিত করেছে, হ্যাপি আখন্দ, লালন,ফিরোজ সাঁই, আজম খান, নকিব কিংবা বাচ্চু বিশেষত তাদেরই কভার করবো, তবে সেসব কভার হবে আমাদের সুরে- আমরা যেভাবে তাদের উপস্থাপন করতে চাই নতুন সময়ে- এর পাশাপাশি আমাদের শৈশব -কৈশোর আর তারুণ্য মিশে থাকবে- একটা অসমাপ্ত গল্পের মতো- যা আমাদের সময়ের সুরালো দলিল হয়ে থাকবো। তা হয় নি, গত ১ যুগে আমাদের ভাবনাও অনেক বদলে গেছে, এ মুহূর্তে হয়তো অন্য রকম ভাবে আমরা আমাদের বেড়ে ওঠাটাকে চিহ্নিত করবো- কিংবা ধ্যুৎ এইসব আজ্জিব কাজকারবারের কোনো প্রয়োজন নেই বলে উপেক্ষা করে চলে যাবো।
বন্ধুরা ভালো থাকুক -
চারু পার্থর এ্যলবামটার নাম ছিলো - ত্রিরত্নের ক্ষ্যাপা
আমরা তো হেভি মেটালের জোশে ফাটাইয়া গান করছি ৪/৫ বছর। ধুমায়া আন্ডারগ্রাউন্ড কনসার্ট করতাম তখন। ব্ল্যাক-আর্টসেল-ক্রিপটিক ফেইট এগোর প্রাথমিক পর্যায়ে।
অনেক অনেক বছর পরে ২০০৫ এর দিকে গুলশানে এক আন্ডারগ্রাউন্ড কনসার্টে গেছি দল বাইন্ধা। সেইখানে অনেক ক্ষেপাটে হেভি মেটাল ব্যান্ডের ভীড়ে একটা ব্যান্ড উঠলো নাম 'আজব' তারা সেই আন্ডারগ্রাউন্ড শোতে লালনের গান করলো সনাতন সুরে-গায়কিতে। সেই হলের 'ইয়ো' জেনারেশন কিন্তু খুব স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছিলো আজব কে..... সেটা দেখে বেশ ভাল লেগেছিলো।
আজব শম্পা রেজার ছেলের ব্যান্ড। ওদের এলবামটা আমার কাছে জটিল লাগছে। কানাডার কয়েকটা ছেলে একটা ব্যান্ড করছিলো, ওদের গানও ভালো লাগছিলো, যদিও ওরা বাংলাদেশে আর কোনো এলবাম বের করলো না।
তাই নাকি !!! সেটা জানতাম না , পরে তো এরা একটা এ্যলবামও বের করছিলো। এ্যলবামটা আছে আমার কাছে।
বলা যায় পোলাটা মায়ের চেয়ে অনেক ভালো গান গায়। আমি শম্পা রেজাকে অনেক দিন পর সিসিমপুরের একটা পর্বে গান গাইতে দেখলাম। সেম অল্ড সেম- গানের সাথে অভিনয়ও করছে, সেইটা আরও মারাত্মক ঋণাত্মক অভিঘাত তৈরি করছে।
উত্তরায় হেরল্ড রশিদের পাশেই আমার দোস্তের বাড়ি। প্রায়ই বিকালে সেই ভদ্রলোক তার বাড়ির পিছনের লনে দোলনায় বসে ফ্লেমিংগো-স্প্যানিস বাজাইতো। ভদ্রলোকের মিউজিকের প্রতি ফ্যাসিনেশন দারুন।
আপনের গান নিয়ে কথকতার আমি ভক্ত হইয়া যাইতেছি।
কিন্তু,
আপনের একটা গানও কি শুনাইবেন না ভাই?!
রাসেল ভাই শুধু গানের কথা লিখেই যাবেন?
আমাদেরকে কী দুই একটা গান শুনাবেন না?
গান অনেক শুনি, কিন্ত পরিচিত কার গান শুনলে ভাল লাগে।
লেখা ভালো লেগেছে।
হায় সর্বনাশ! আপনি তো পুরাই গানের লোক! অনেক ভেতরের খবর জানা হলো!
এমন পোস্ট দেয়া ছাড়বেন না!
জানলাম অনেক কিছু!
জানলাম অনেক কিছু!
মন্তব্য করুন