আবার ৩০ এপ্রিল..
১.
বিষয়টি একদিন বিজয় দিবস বা স্বাধীনতা দিবস পালনের মতো নয়..এ অভ্যাস প্রতিদিনের। যেকোন ভালো সময়ে বা খারাপ সময়ে.. না থাকার অভিযোগ..না পাওয়ার কষ্ট ..অথবা কেনো করতে পারা-এই সুক্ষ্ম বোঝা মাথার উপর..অনেক গুলো বছর ধরে..
২.
যখনই মজার কোন খাবার সামনে আসে, তখন কষ্ট হয়..ভদ্রলোক খেতে ভালোবাসতেন। প্রায় বছর তিনেক তিনি খেতে পারেননি। স্বপ্নের মাঝে একবার বলেছিলেন, পিঁয়াজ দিয়া মরিচ দিয়া ডইল্যা আহ!..সেটা নিয়ে আমরা অনেক মজাই করেছি..তখন.. ঝাল বাপের বেশ পছন্দ ছিল। আজো এই খাবারটা আমার বড্ড ঝাল লাগে..খেতে গেলে চোখে পানি চলে আসে।
৩.
যখন গরম থেকে এসে দৌঁড়ে গিয়ে ঠাণ্ডা পানি গায়ে ঢালি..তখন মনে হয বিছানায় লেগে থাকা সময়গুলোতে গায়ে পানি দিতে পারতোনা লোকটি। পা কামড়াতো, কি যেন বলতো আরো..বুঝতামনা। অথচ তাকে আমরা দেখেছি রোজ দুইবেলা করে গোসল করতে। এখন মাঝে মাঝে ভাবি..আমি যদি আর না পারি গরমে গোসল করতে ! ক্যামন লাগবে? তাহলে বাপটা ক্যামন কষ্টটা পেয়ে গ্যাছে..ভাবলে দিনগুলো এলোমেলো মনে হয়..
৪.
হায়রে হাছন রাজার গান..! গানগুলো হলেই আমাদের ত্রিমূর্তীর চোখে পানি আসে.
৫.
আমার ভাইয়ের জমিয়ে রাখা হতাশা টের পাই। বলতে হয়না। বোঝাতে হয়না। বিজ্ঞান যাই বলুক..ইথার আছে..অবশ্যই ইথার আছে..
৬.
বোনটিকে নিয়ে সবচেয়ে চিন্তা এখনো। বাপ ছাড়া আর তাকে ভাবাই যেতোনা। অথচ মেয়েটি কাটিয়ে দিল কতগুলো বছর..বাপকে ছাড়া..
৭.
লোকটির সাথে আমার তেমন দহররম -মহররম ছিলনা কোন কালেই। আমি একটু আলাদা থাকতাম তখন থেকেই। বাপেরো প্রয়োজন হয়নি আমাকে অতটা সময় দেয়ার..কারণ কোথাও না কোথাও জানতো তার কিছু জিনিষ আমার মজ্জাগত..অভিমান..জেদ..রাগ..আবেগ..তাই একবার বলছিল, তোর কপালে দু:খ আছে...কি মনে হয় আব্বা? আমার বিশ্বাস তুমি সবই জানো..
৮.
তারপর অনেক দিন, ১৯৯৭ থেকে ২০১১। বলতো আমরা কেমন আছি?
বেঁচে আছি সত্য। তবে শিড়দাঁড়া আজ্ও শক্ত হয়নি..আর হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। এখনো সহায়-সহায়তাহীন..
৯.
প্রতিবছরের মতো আজো..সকাল থেকে মনটা অস্থির..এখন প্রায় একটা..আব্বা শুয়ে আছে..সামনে...দেখতে পাচ্ছি..
এই ছবিগুলো ভুলতে পারিনা কেনো!
অনেক কষ্টের মাঝে বাপ-মা হারানোর কষ্টটা অন্যরকম।
অনেক বেশি যন্ত্রণাময় সে কষ্ট।
যে বুঝার সে বুঝে, সবাই না।
বাবা-মাকে হারিয়েছি সেই কবে !
তাই বুঝি অন্যের কষ্ট !
তবুও যার যার কষ্ট তার তার...
আর কী বলবো ?
ভাল থাকুন। কষ্ট কমুক...
আহারে। আহা।ভালো থাকুন আপনারা। এই মমতামাখা কষ্টের অনুভুতিটা থাকবেই, থাকুক।
কিছূই বলতে পারলাম না
শুভকামনা থাকলো রুম্পা'পু। আপনাকে অনেকদূর যেতে হবে। নিজেকে প্রস্তুত করুন। আরো শক্ত হোন।
......................
....
বাবাহীন পৃথিবী কেমন হবে? - এইটা ভাবতেই তো ভয় লাগে।
আর কিছুই যে বলার নেই
কিছূই বলতে পারলাম না
আবার ও একবার তোর লিখা আমার ভিতর দাগ কেটে গেল।৩০ তারিখ টা ই কেমন যেন,নতুন একটা অনিশ্চিত মাস আসার ক্ষণ আবার যেমন ভাবেই কেটে যাক আমার জীবনের একটা মাস অতীত কালে নাম লিখাল...অনেক শুভ কামনা রইল ! বাবার আত্মা নিশ্চিত পরম তৃপ্তিতে আসেন তোর এবং অন্যদের মঙ্গল আনন্দ যাত্রায়......।
মন্তব্য করুন