ইউজার লগইন

রুম্পা'এর ব্লগ

কক্সবাজারে রোজার মাস - কি খাবি, কি খেতে চাস?

অনেকদিন ধরেই ইচ্ছা ছিল আম্মাকে নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে যাবো। ভদ্রমহিলা জীবনে কোনও দিন  সমুদ্র দেখেন নাই। ভাবলাম এই রোজাতে কাজের চাপ একটু কম! আবার বিভিন্ন হোটেলে / রিসোর্টে রমজানে বেশ ছাড়-টাড় দেয়! এটাও সুযোগ একটা বটে! আবার আবার আম্মার সাথে ভাই ফ্রি! তাই সব বিবেচনা করে দুইবার তারিখ পরিবর্তন করে ৭ এর রাতে রওনা দিলাম কক্স-এর উদ্দেশ্যে। সেন্টমার্টিন ট্রাভেলস এর বাস- এবং সে আরেক ভিন্ন ইতিহাস! তবুও উপরওয়ালার অশেষ কৃপায় সকাল সকাল পৌছে গেলাম যেটা আশাতীত! উঠলাম বেস্ট ওয়েস্টার্ন হেরিটেজ হোটেলে যেটা আমার মতে সাগরের তীর না হয়েও বেস্ট লোকেশন! বারান্দায় দাঁড়ালে সমুদ্র! আর সমুদ্রের গর্জন।

এলেবেলে স্টেটাস-২

১.
স্বীকারোক্তি

আমাকে দিয়ে বিপ্লব হয়নি..
ভাতের মাড়ের দিনগুলোত মনোযোগ ছিল খাবারে..
একটুও যেন উপচে না যায়
একটুও যেন পাতে কম না পড়ে..

বিপ্লবে তখন মন নেই..
মন ছিল খালি থালাটার দিকে..
থলেটার শূণ্যতা ছিল চোখে

আমাকে দিয়ে বিপ্লব হয়নি..
বছর শেষে পরীক্ষার ফিস মিস না করার টেনশনে
যেন টিউশনিটা হাতছাড়া না হয়- আনমনে
যেন সবার সাথে যেতে পারি ক্যান্টিনে

আমাকে দিয়ে বিপ্লব হয়নি..
মাস শেষে পকেটের টান সহ্য হয়নি বলে
দিন শেষে পেটের টান মানতে পারিনি বলে
প্রতি ঘণ্টায় নিজের ধূসর প্রতিবিম্ব সহ্য করিনি বলে

আমাকে দিয়ে বিপ্লব হবে না
মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঘণ্টা কাটাতে পারিনা তাই
বেলাশেষে ফ্যান ফুলস্পিডে দিয়ে গুটিশুঁটি মারতে চাই
অপরিচতর হাত ধরতে শঙ্কায় মরে যাই..

জীবন সংগ্রামে ব্যস্ত মানুষ বিপ্লবী হতে পারে না
জীবন সে সুযোগ দেয়না
আমাকে দিয়েও বিপ্লব হয়নি
আমাকে দিয়ে বিপ্লব হবে না..

জীবন থেকে নেয়া-২

আমার ছেলেবেলার টানা-হ্যাচড়াময় জীবনের সূচনা আগেই করেছি। অতএব এখন আবার বলার হয়তো প্রয়োজন পড়বে না। সূচনা না হয় না থাকুক। গল্পের বাকীটা তো আছেই।

আজকের গল্প আমার জীবনের সেই না খেয়ে থাকা অধ্যায়ের আরেকটি পর্ব নিয়ে।
আমি বড় হয়েছি আজিমপুর কলোনিতে। সরকারি জায়গায় আর কিছু না থাকুক- ব্যক্তিগত তোড়জোড় মানুষের সবসময় ছিল। সরকারি গাছ- নিজের গাছ বা সরকারি মাঠ নিজের বাগান বলে চালিয়ে দেওয়া বড়ই স্বাভাবিক বিষয় ছিল কলোনি বাসীর জন্য। এমনকি পুকুরগুলোতেও দিব্যি জাল ফেল মাছের চাষ চলতো। এখন চলে কি না জানি না। কারণ সেই মাঠ অনেকগুলোই ইমারতের নীচে চাপা পড়েছে আর পুকুরগুলো হারিয়ে গেছে আবাসনের ভীড়ে।

এখন যখন বিকেলে মাঝে মাঝে হাটঁতে যাই কলোনিতে সবকিছু অচেনা লাগে। কোন মানুষ চিনি না- নতুন ইমারতগুলোও অচেনা। চেনা শুধু সেই গাছ গুলো- আর ইমারত হবার অযোগ্য ছোট্ট মাঠগুলো।

আমাদের হেলাফেলায় তোমার ছেলেবেলা

আগেই বলেছি আমার ছোটবেলা- বড়বেলার একাংশ পর্যন্ত কেটেছে অসম্ভব অভাবি অবস্থায়। একারণেই চোখের সামনে ঘটে যাওয়া অনেক বৈষম্য এখনও ছবির মতো দৃশ্যমান। গরীব হওয়ার - সুযোগের অভাব থাকার কারণে আত্মীয় স্বজনের কাছে নিগৃহীত হওয়া - একদমই গা-সওয়া ব্যাপার একদম। কিন্তু কখনোই কেন যেন অন্য বাচ্চাদের মাঝে কোন বৈষম্য মনোভাব গড়ে উঠছে দেখলে সহ্য হয় না। মনে হয়- বাবা মকে ডেকে বলি - শিশুদের শিশু হয়েই শিশুকাল পর করতে দিন। এক্ষেত্রে অবধারিত কথা- আপনার বাচ্চা কয়টা। উত্তর- একটাও না। কিন্তু শিশুর মনোবিকাশে সহনশীল এবং সংবেদনশীল হতে নিজের বাচ্চা নয়- কমন সেন্স এবং একটু সচেতনতা প্রয়োজন। আজও আমি আমার পরিবার এককালে ”গরীব” হওয়ার কারণে যা সহ্য করেছে -করছে তা অন্য কোন শিশু করুক এটা একজন সংবেদনশীল মানুষ চাইতে পারে না। কারণ আপনিও জানেন না- আপনার ছুড়ে ফেলা একজন কোমলমতি শিশু যেকোন দিন কঠোর হাতে চেপে ধরতে পারে আপনার ঘাড় ।

জীবন থেকে নেয়া-১

আজকের দিনটি আমার জন্য খুবই আবেগঘণ দিন। মানুষ যে কত ছোট ছোট বিষয়ে খুশি হয়ে যায় এটা হচ্ছে তার প্রমাণ। আবার কত বড় বড় বিষয় আমলেই নেয় না- সেটারও ক্যালাসগিরি ভাবাই যায়।
একারণেই অনেকদিন ধরে ভাবছিলাম ডিজিটাল ডায়েরি লেখা শুরু করবো। টুকটাক করে যে লিখি না তাও না। কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু অদৃশ্য হাত পিছন থেকে টেনে ধরে। কোনটা মুখ খামচে ধরে, কোনটা আবার কলম কেড়ে নেয়। সত্যি ভাবি- এই যে অকপটে জীবনের অনেক সত্য বলি- তাতে আবার কেউ দূবর্লতা খুঁজে পায় নাতো! বা এমন কি ভেবে নিবে না তো যে আজাইরা কথা কয়! ভাবার পরেই মনে হয়- আমি কখনই নিজের অতীত-বতর্মান বা অনাগত ভবিষ্যতের ব্যাপারে লজ্জিত- কুণ্ঠিত বা চিন্তিত নই। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আলহামদুলিল্লাহ জানি যা করেছি- তা আমার পছন্দে, যা বলি- সেটা আমার মর্জিতে আর যা করবো তাও মনের খুশিতে।

অনেকেই আছে যারা অতীত বলতে চান না, আর সারা জীবনের আনপ্রফেশনাল আমি অতীত ভুলতে চাই না। কখনো ভুলতে চাই না মাটি কামড়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম। অনুগ্রহে - অবহেলায় হাসিমুখে "ভালো আছি" বলার দিনগুলো। আমার পা না হয় মাটিতেই থাকুক- বাকীটা যে যার ইচ্ছে..

শৃঙ্খলিত কৈশর এবং ঐশীদের পরিনতি

একটি জোড়া খুন। এক ষোড়শী। তার জীবনযাপন। অনিশ্চয়তা এবং সমাজের সাজানো মূল্যবোধের মুখোশে নির্মম চপেটাঘাত।

ঐশী নামের মেয়েটিকে নিয়ে খবরগুলো পড়লে ঠিক এমনটাই মনে হয় কেন যেন। মনে হয়- ঐশী নামের মেয়েটা আমাদের ঘাড়ে ধরে দেখিয়ে দিচ্ছে আগামি প্রজন্মের জন্য কোন ধরনের সমাজ আমরা তৈরি করে যাচ্ছি। কি শিখাচ্ছি- কি বোঝাচ্ছি। যেখানো শিক্ষক আমরা সবাই- দোষ কিভাবে কেবল ঐশীর হয়!

স্বাভাবিক ভাবেই- বাংলাদেশের পিতামাতারা বলবেন- যার যার নিজের সন্তানের ভালো তারা জানেন। আসলেই জানেন কি না জানি না। কিন্তু এমন কোন কথা নেই যে প্রয়োজনে বাইরের- এমনকি প্রতিবেশীর কোন কথাও তারা কানে তুলবেন না। কেবল তারা অপরিচিত বলে। এই অপরিচিতদের হাত থেকে সন্তানদের বাঁচাতে বাঁচাতে কি করে নিজেরাই সন্তানের কাছে অপরিচিত হয়ে যাচ্ছেন- সেটা বাবা মায়েরা নিজেরাও জানেন না।

ঐশীদের নানা ভাবে বিশেষায়িত করার আগে দেখে নেয়া ভালো ওরা কি করে বড় হচ্ছে। বা ওদের জন্য আমরা কি তৈরি করে রাখছি..

মুন্নিময় মুহুর্ত

কেনো যেন সাংবাদিকদের সাথে আমার বেশ রাশির গড়মিল যাচ্ছে। এক "সাংবাদিক" আমাকে বেশ গালাগাল দিল। কারণ সাভার ট্র্যাজেডি নিয়ে সাংবাদিকদের অনুভূতিহীন রিপোর্টিং করা সম্বন্ধে কড়া একখানা মন্তব্য করেছিলাম। উল্রেখ্য তিনি এও বলেন, অসাংবাদিক কেন সাংবাদিকতা নিয়ে কথা বলবে! সাংবাদিকতা নিয়ে শুধু কথা বলবে সাংবাদিক!! যাই হোক, তিনি নিতান্তই বয়সে বড় বলে আচ্ছাসে ধোলাই করিনি। বলিনি যে, তাহলে রাজনীতি নিয়েও আমাদের কারো কথা বলা বাঞ্ছণীয় হবে না, কারণ আমরা কেউ রাজনীতি করি না। কোন কিছু নিয়েই হয়তো বলা ঠিক হবে না নিজের গণ্ডি ছাড়া।
যাই হোক আজকের আলোচনার বিষয় কিন্তু সাংবাদিকতা না। আমি সাংবাদিকতা ভালোবাসি। পারলে আবার ঐ চিরচেনা পরিসরে ফিরে যাবো। আজকের বিষয় বিশিষ্ট সাংবাদিক। আমাদের সবার প্রিয় মুন্নি সাহা। এখন নানা ধরনের বিষয় সোশ্যাল-ক্রিটিক্যাল-ইলেক্ট্রনিক-ডিজিটাল- এনালগ মিডিয়া মাতিয়ে রেখেছে। সেখানে মুন্নি সাহা কি করে একটি লেখার মূল বিষয়- এটা প্রশ্ন হিসেবে আসতেই পারে। কিন্তু বিগত চার-পাঁচ বছরে আপার রিপোর্টিং যেভাবে নানা বিষয়ের সাথে প্যাচ খেয়ে গেছে- আপাকে সেকারণে ধরতেই হয়।

আখাম্বা আচাভূয়া ইম্বিশ

অনেকদিন পর রাহাত খানের "দিলুর গল্প" পড়তে গিয়ে আবার পেলাম এই বিশেষণটিকে। "আখাম্বা আচাভূয়া ইম্বিশ" মানে এক শব্দে "অদ্ভুদ" ধরে নেয়া যায়। নিজেকে আয়নায় দেখলে আমারও প্রায়ই এটা মনে হয়। এর অনেক গুলো কারণের মধ্যে একটি হলো কপালের কাটা দাগটি। দুই পাখার বদলে চার পাখার প্লেনের আদলে কপালে এঁটে বসা এই চিহ্নটি মোটমুটি জন্ম থেকে লালন করছি। শুনেছিলাম, বয়স বাড়ার সাথে সাথে এসব দাগ নাকি মিটে যায়। কিন্তু না। আমার বেলায় তা ঘটবে কেন!! দিব্যি হাত পা ছড়িয়ে বরং ফরিং প্লেন খানা এখন কার্গো রূপ ধারণ করেছে। তাই সই। হাজারো একই নাম (ফারজানা)-এর ভিড়ে কাটার জন্য নিজের "বিশেষ" নাম পেতে বেগ হয় নি।
কাটা নিয়ে বললাম, আর তার ইতিহাস বলবো না, তা তো হতে পারে না।তখন আমার বয়স সাত। মানে সাতমাস! ভাই এবং বোনের সাথে বয়সের যথেষ্ট পার্থক্য থাকায় আমাকে মেনে নিতে তাদের কষ্ট হয় নি বটে। কিন্তু তারা আমাকে "মানুষ" হিসেবেও মেনে নেয়নি। এই ধরা যাক খেলার পুতুল বা জীবন্ত রোবটটাইপের কিছু ভেবেছিল বলে আমার শক্ত ধারনা। তাই যখনই সময় পেতো তখনই আমাকে নিয়ে খেলা শুরু করতো। যারমাঝে অন্যতম হলো, "ক্যাচ ক্যাচ" খেলা!!

আন্দোলন চলবেই, জয় আসবেই

রাজাকারের দোসররা আরেকটি কূটনৈতিক চালে সফল হবার পথে। রাজাকারের ফাঁসীর দাবী চাওয়া আন্দোলনে তারা প্রথমেই এমন একজনকে শিকার করেছে যিনি নাস্তিক।এবং নানান ধরনের লেখা তার অনলাইনে আছে। সত্যি যেটা, নিহতের লেখা আমি নিজেও পুরোটা পড়তে পারিনি।পড়ার দরকারও মনে করছি না। কারণ তিনি ব্লগ লেখার জন্য খুন হননি। হলে সেটা বহু আগেই হতেন। তিনি খুন হয়েছেন শাহবাগের আন্দোলনের সাথে জড়িত থাকার জন্য।

মাথা ঠাণ্ডা করে বিষয়টি অনুধাবন করা জরুরি। এতোদিন ধরে যারা শাহবাগের আন্দোলনের সাথে জড়িত তাদের কারো আন্দোলন ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। রাজাকারের বিরুদ্ধে। এবং রাজাকারের কোন ধর্ম নেই। রাজাকার গোষ্ঠী এই খুনের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মকে আন্দোলেনর মাঝে এনে আন্দোলনকে প্রতিহত করতে চাইছে। এদের সেই সুযোগ দেয়া চলবে না।

রাজাকারের ফাঁসীর আন্দোলন সকল বাংলাদেশীদের। আমাদের। এখানে ধর্ম মুখ্য নয়।

যারা ভাবছেন, "মুসলমান" রাজীবকে হত্যা করেছে, তাদের অনুরোধ, আপনাদের এটা ভাবাতে সফল হয়েছে রাজাকারবাহিনী। আপনারা এমন ভাববেন না। জবাই-খুন কোন ধর্মের নিয়মে পড়ে না।

শিরোনাম হীন-১

১.
কিছু দিন আগে আমার এক ছোট বোন হঠাৎ মজার একটি বিষয় জানায়। গুগল চাচাকে আমার নাম দিয়ে সার্চ দিলে নাকী আমার লেখার লিংক-টিংক চলে আসে। স্বাভাবিকভাবেই আনন্দিত এবং চিন্তিত হলাম। কারণ ইন্টারনেট জিনিষটা এদেশের অর্ধ শিক্ষিত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের পাল্লায় পড়ে চরিত্রহীণ অবস্থায় আছে! কে কি ছেড়ে দিবে ইন্টারনেটে পরে আমাকেই বিব্রত হতে হবে। ফলে নিজে সতর্কভাবে সার্চ করা শুরু করলাম আমার অপ্রিয় বন্ধুরা কোন মশকরা করেছে কিনা তা দেখার জন্য। সার্চ দিয়ে দেখছি, কোনই ঝামেলা নেই। কিন্তু একটি খবর পেয়ে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। ২০১০ সালে আমারই জন্মদিনে আমারই নামের একটি মেয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছণার শিকার হয়েছে পাবনা এলাকায়। কি অদ্ভুদ একটা খারাপ লাগা। কি যে বাজে অনুভূতি! সেদিন সারাদিন কারো সাথে কথা বলতে পারিনি। যেদিন আনন্দে আমার দিনটি কেটেছে সেদিনই প্রকাশ্যে আমার নামের অন্য একটি মেয়ে কত কষ্ট পেল... হয়তো সারাজীবন মুখোমুখি থাকা কষ্টটা পেল!
২.

দামিনী বনাম সাজিয়া- প্রতিবাদ বনাম ভুলে থাকা

ইচ্ছে ছিল সাংবাদিকতা নিয়ে লেখার। যদিও আমি এমন কোন হ্যাডম হয়ে যাইনি যে সাংবাদিকতার মতো সাংঘাতিক বিষয় নিয়ে আলাপ করব। তারপরও চাইছিলাম- কিছু বিষয় পরিষ্কার করে নেয়ার জন্য।
তার আগেই দিল্লীর "আমানত" ঘটনাটি সামনে চলে এলো। দামিনী নামের তারুণ্য ভরা মেয়েটি অসময়ে চলে গেল কতগুলো নরপশুর কারণে। ঘটনাটা সবার জানা। তারপরও ছোট্ট করে বলে নেই।
গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে বাসে করে বাড়ি ফেরত আসার সময় বাসচালক এবং তার পাঁচ সহযোগী ধর্ষক মিলে দামিনী নামের মেয়েটিকে বিভৎসভাবে আক্রমণ করে। সাথে থাকা বন্ধুটিকেও মারতে থাকে। মেয়েটিকে ধর্ষণের পর বন্ধুসহ চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয়া হয়। ভারতে চিকিৎসার পর যখন মেয়েটির অবস্থার অবনতি ঘটে তখন সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালে তাকে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু শারীরিক এবং মানসিকভাবে মারত্মকভাবে শিকার হওয়ার কারণে মেয়েটি অবশেষে শনিবার (২৯ ডিসেম্বর) ভোরে মারা যায়।

একেই কি বলে "অসহায়ের আত্মসমর্পণ"!

১.
আমি ভিষণ আবেগী মানুষ। আমার স্কুল, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, বন্ধু, কিছু প্রিয়মুখ নিয়ে আমি গোঁয়াড়। বড্ড গোঁয়াড়। আমার আবেগের একটা বড় অংশ দেশ নিয়ে। আমি আমার দেশটাকে অত্যন্ত ভালোবাসি। দেশের মানুষকে ভলোবাসি। ধুলাবালি- যানজট-ধমর্ঘট সবই ভালোবাসি। এজন্যই শনিবার রাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সিরিজ জয় হবার পর কত আনন্দ নিয়েই ঘুমাতে গেলাম। পরদিন জার্সি পড়ে অফিস যাবো। আনন্দ- আড্ডা সবই হবে। সেই ইচ্ছাতে অবরোধের মাঝে আমার অসম্ভব অপছন্দের কলেজ "তিতুমীরের" সামনে দিয়ে রওনা দিলাম। "কোনমতে অফিসে পৌছাতে পারলেই কেল্লা ফতে" টাইপ অবস্থা। এখন থেকে অবশ্য বলতে হবে "প্রাণে বেঁচে অফিস পৌছাঁনোই আসল"..'


রবিবারের যা ঘটনা তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। বিশ্বজিৎ নামের মানুষটির মৃত্যু কিছু অমানুষের হাতে। সারাদিন ধরে টিভিতে তার বাঁচার চেষ্টা দেখলাম। রাতে ভিডিওটা দেখলাম বারবার। মিডিয়ার যা অবস্থা, ভাগ্যিস ছেলেটি "বিশ্বজিৎ" ছিল না হলে ঐ খুনীগুলো এই হত্যাকাণ্ডকেও হালাল করে নিতো।

পিছুটানের একটি দিন.. (১৬ নভেম্বর ২০১২)

দৃশ্য-১:
সবুজ ঢিলেঢালা পোলো টিশার্ট পড়া একজন "লোক"। সাথে দুই "ভদ্রমহিলা"। তাদের দেখে প্রথম দৃষ্টিতে মনে হবে নির্ঘাৎ ব্যাংক বা কর্পোরেটের সেলস-এ চাকরি করেন। কারণ তাদের চোখ-মুখ পাথরের মতো থমথমে..ব্যতিক্রম শুধু গান শুরু হবার পর। ১৬ নভেম্বর ২০১২-তে আর্মি স্টেডিয়ামের কনসার্টের মঞ্চে যখনই ব্যান্ড তারকারা গাইছেন- তখনই তারা মাথা ঝাকিয়ে ঝাকিয়ে গান গাচ্ছেন। এবং পুরোটা গাচ্ছেন। সবগুলো গান গাইছেন। মনে হলো তাদের এভাবে ব্যান্ডের গাইতে দেখলে তাদের কলিগদের নিশ্চয়ই হার্টে এ্যাটাক হতো!!

দৃশ্য-২:

কলি কথা ৪ - মিশন কাশ্মীর

ঝিলের শহর- নৌকার বহর

দীর্ঘ ৯ ঘণ্টার ট্যাক্সিভ্রমণ শেষে এসে পৌঁছালাম ডাললেক...মনের মাঝে কিছু ছবি আছে আঁকা সেই কবে থেকে। গোলাপী রঙের বাড়ি... নৌকা-বাড়ির সারি...টলটলে জল... ফুল বোঝাই শিকারা আরো কত কি! ডাললেকে পৌঁছানোর সাথে সাথে ক্লান্তি ভাব চলে গেল নিমেষে। তখন উৎকণ্ঠা আর কৌতূহল ভর করেছে আমাদের দুজনের মনের উপর। ভাবছি, কি করে পৌছাবো আমাদের নির্ধারিত হাউজবোটে।এখানে এসে কিভাবে কি করবো- এই চিন্তা যেন দুশ্চিন্তায় পরিণত না হয় একারণে আমরা দিল্লী থেকেই হাউজবোট ঠিক করে এসেছি। কারণ মনে আছে তো, কাশ্মীরে নো ফোন- নো সহজ কমিউনিকেশন..!!

কলি কথা ৩ (কলি-কাতা টু ফুলকলি-পাখির কাকলির কাশ্মীরে)

(ধন্যবাদ মেসবাহ ভাইকে...ঝটিকে তার ভ্রমণ সমাধা করার জন্য। আসলে তিনি লেখার এমন দৌড় না দিলে আমারও লেখা হতো না..)

দিল্লী হইতে কাশ্মীর- সারপ্রাইজ হইলো চৌচিড়:

দিল্লী থেকে কাশ্মীরের উদ্দেশ্য যাত্রা শুরুর আগে একটু ফ্ল্যাশব্যাক না বললেই নয়। ভ্রমণের শুরু থেকেই বর বেচারা আমাকে সিমলা- মানালির গল্প বলে আসছে। কিন্তু সে ঠিক করেছে কাশ্মীর ভ্রমণ। সারপ্রাইজ দিবে বলে কিছুই বলেনি। কিন্তু ফাঁপড়ের ফেসবুক কি আর প্রেম বোঝে! একদিন ইনবক্সে দেখলাম মেসেজ এসেছে, তোমরা নাকী কাশ্মীর যাও? আমরাও যাচ্ছি..
বলা বাহুল্য যে বন্ধু দম্পতির সাথে কলিকাতায় আহার সাড়লাম, তাদেরই একজন। কোন সন্দেহ নাই মেসেজ পেয়ে মনে একসাথে হাফডজন লাড্ডু ফুটলো..রিপ্লাই দিলাম, "সারপ্রাইজ খোলাশা করার জন্য ধন্যবাদ".. বন্ধুটি চম্পট..আমিও মুখে তালা দিলাম..
দুইদিন পর অফিসে গেলাম। এক সহকর্মী ভরা মজলিশে ঘোষণা দিলেন, এই তোরা নাকী কাশ্মীর যাস..! কোনমতে পালালাম.. বেচারা বর এতো কষ্ট করছে সারপ্রাইজ দেয়ার.তাকে অন্তত নিজে থেকে বলার সুযোগ দিতে চুপ রইলাম.. দিল্লীতে পৌঁছানোর পর সে না বলা পর্যন্ত কিছুই বললাম না।..
এবার ফিরে আসি ভ্রমণে..