চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ি-২
১.
ঢাকায় বাস যদি জ্যামে আটকে থাকার পর ছাড়া পায় আর ড্রাইভার যদি ঠিক মতো আগায় নিতে না পারে তাইলে তার চোদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করে ছাড়ে লোকজন।একদিন সেই অবস্থায় বসে আছি বাসের মধ্যে কিছু লোক ড্রাইভারের গুষ্ঠি উদ্ধার করছে।আমার পাশের জন আরো দুই কাঠি আগায় দিয়ে বলে
''মনে হয়তেছে.......পোলারে লাথি দিয়ে বাস থেকে ফ্যালায় দেই।''
আমি আস্তে কইরা বললাম, ভাই ড্রাইভিং জানেন?
বলে না।
আমি বললাম তাইলে ড্রাইভাররে লাথি দিয়ে ফেললে বাস চালাবে কে?
বেচারা হেসে বলে দেখেন না শালা কতক্ষন জ্যাম ছাড়ছে আর ও চুদুরবুদুর লাগাইছে।
তাই বলি আপনারা আমার উপর বিরক্ত হয়ে আবার লাথি দিয়ে ফেলায় দিয়েন না।
২.
দিনকাল ভয়াবহ খারাপ যাচ্ছে এই কিছুক্ষন আগে সুপারম্যানের বাঁশডলা খেলাম।কাল যেমন এক ডিনার পার্টিতে গিয়ে রামধরা খেলাম।কেমন? তাইলে বলি
গতকাল মিনহোর দেয়া ডিনার পার্টিতে গিয়েছিলাম।মিনহো আমার গত একবছরের গাইড, বন্ধু যাই বলি না কেন ও এখন সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করছে, উইকএন্ডে ওর বাড়ি বুসান এসে আমাদের মানে ওর পুরাতন ল্যাবমেটদের দাওয়াত দিসে। আমার ল্যাবের অন্য সদস্যরা খুবই উতফুল্ল ছিলো গত কয়দিন কি খাবে দাওয়াতে গিয়ে কিন্তু আমি থাকাতে বেচারারা ঠিক করতে পারছিলো না কি খাবে শেষমেশ ঠিক করলো সামুদ্রিক খাবার খাবে আমাকে কোন মতে ঠেলেঠুলে রাজী করালো আমিও সায় দিলাম কারন আমার জন্য মাঝে মাঝে বেচারারা পর্ক খেতে পায় না কোন কোন পার্টিতে।সি-ফুড খাবো খুবই মজাদার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এই নিয়ে কয়েকদিন ধরে জ্ঞানী কথা বার্তা শুনে কান মোটামুটি ঝালা পালা।আমার ল্যাবের নতুন লিডার মোক ট্রায়াল দেয়ার জন্য আমারে আর নতুন ভিয়েতনামীজরে এক হোটেলে গিয়ে খাওয়ায় নিয়ে আসলো। বললো রবিবার যেটা খাবো সেটা এটার চাইতেও মাশিশশ্যায়ো।আমিও ভাবলাম ভালোই আজ যেমন নুডুলস ভাত আর মরিচবাটা দিয়ে খেয়ে শেষ করেছি রবিবারও একই কাজ করবো।
তা যাই হোক গেলাম কালকে খেতে।হোটেলে পাশের টেবিলে এক পরিবারের প্রায় ১০ জন খাওয়া দাওয়া করছে। ভাত আছে ঐ টেবিলে নুডুলসও আছে চিংড়ীও আছে।মনে মনে হাফ ছেড়ে বাচঁলাম।কিন্তু কিছুক্ষন পর যখন আমাদের ডিশ নিয়ে আসলো আমি আসলেই বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম।এক কড়াই শামুক,ঝিনুক আর কিছু মাশরুম। সেটা আবার টেবিলে রাখা চুলায় জ্বাল হতে লাগলো।মনে মনে ঢোক গিলছি আর বলছি আল্লাহ বাঁচাও। কিন্তু চুড়ান্ত শকটা খেলাম যখন একটা তাজা অক্টোপাস এনে ওরমধ্যে ছেড়ে দিলো আর দুইটা বড় ঝিনুক ঊপর দিয়ে ঢেকে দেয়া হলো।
খালি পেটে মানে দুইটা মিষ্টিআলু খেয়ে বাসায় আসলাম।
এসে ভাত,আলু ভর্তা আর ডিম ভাজি করে ভাত খেলাম। মনের দুঃখে স্ট্যাটাস দিলাম ফেসবুকে। আমার কিছু বন্ধু বান্ধব আবার লাইকও দেয় সেই স্ট্যাটাস।মনের দুঃখে বনে যাওয়ার দশা।
৩.
আবার ব্লগে এসেও শান্তি নাই।মীর ধরে বাইন্ধা চুম্মাচাটি দিয়ে দিচ্ছে লীনাদি আর লীনাফা জীনে ধরায় আল্ট্রাসনোগ্রাফী করাচ্ছে কখনো কুত্তার কামড় খাওয়াচ্ছে।আজকে আবার দেখলাম ফেল্টু হিসাবে গণ্য হইছি।দিন দিন মনে হয় আসলেই ফেল্টুস হয়ে যাচ্ছি।
আমার ভাই একটা কনফারেন্সে যোগ দিতে সাউথ কোরিয়া গিয়েছিল। দশটা দিন রোজা রাখার মত করে পার করেছিল। ফিরে এসে উপদেশ দিয়েছে-জীবন থাকতে কোন দিন ওই দেশে যাবি না।
আবার জিবলা দেখান।
ভালো হচ্ছে না কিন্তু লীনা দি।

রাসেল সুজু মাইরা দেন ... ভাল্লাকপে
সে তো আরেক জিনিস।

১। চুদুরবুদুর করলেও আপনার গাড়ী আপনাকেই চালাতে হবে । এখানে কেউ এগিয়ে এসে লাথি দিয়ে সরিয়ে দিয়ে আপনার জায়গা দখল করবেনা ।
২। মোগলদের সাথে থাকলে মোগলাই খানাতে অভ্যস্ত হওয়ায় বুদ্ধিমানের কাজ ।
৩। আসলেই ব্লগে এসেও শান্তি নেই ।
ব্লগে শান্তি নাই ক্যান হুদা ভাই? খালি ইমেইল আসে?
কই, কেউ তো এ-মেইল করেনা। প্রতিদিন মেইল চেক করি আর হতাশ হই।
ব্লগে শান্তি নাই রাসেল আশরাফের, এই পোস্টের ৩ দ্রঃ । আমি সেটাই রিপিট করে তাকে মনে করাতে চেয়েছি। আমি আছি মহা শান্তিতে।
১।
কথাটা ঠিক বুঝি নাই নাজমুল ভাই।
২।সেই বুদ্ধিমান হতে পারি নাই বলেতো এখনো সেই ক্ষ্যাত, দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট করার প্রতীক হিসাবে আছি।
৩।ব্লগে আপনার আবার কি হলো?আপনি তো ভালোই মান-সুলেমান নিয়ে আছেন।
১। যার যার পোস্ট তাকেই লিখতে হবে। লিখতে জানলেও কেউ কারোর পোস্ট লিখে দেবেনা, লিখে দিতে পারবেনা।
২। আমার কথায় আঘাত দেবার মত কিছু ছিল কী ?
৩। আরে ভাই, আমার কিছু হয় নাই, আপনার হওয়াটাকেই এখানে রিপিট করেছি ।
নাজমুল ভাই@ আপনার কথায় আমি আঘাত পাই নাই।আসলে এখানে কেও কেও এই ধরনের কথা শুনিয়ে বাকীটুকু তারা উপসংহার টানে।তাই বলেছিলাম।
আমি আরো ভাবছিলাম, আজ জিজ্ঞেস করবো যাত্রবাড়ির গাড়ী কেন চলে না।চলতেছে দেখে খুশি হলাম। আপনে মজা করে আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়েছেন বলেই তো লাইক দিলাম। আজব তো!
শামুক খেয়ে দেখতেন কেমন লাগে!
মীরের উপর পরীর আছর। টুটুল বলছে ওরে বড় হুজুরের কাছে নিবে। ডরাইয়েন না।
রাত সাড়ে বারোটায় মজা না.।.।।।
অবশ্য আপনাগো কথা আলাদা জীন নিয়া কাজ কারবার করেন।
আরে আমার কুনু জ্বীন নাই।
রাত বারোটায় ভাত খেলে কি হয়?আলুভর্তা মজা তো। মারামারি ভালু না।ভর্তাতে লবণ ঠিক ছিলো তো!
অক্টোপাস খাইছি ........... খাইতে খারাপ লাগে নাই
আমিও একদিন এক চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ফ্রাই খাইছি সেই ভরসাতে সেদিন রাজী হয়ছিলাম কিন্তু এমন জিনিস দেখবো কল্পনাতেও ছিলো না।
ঝিনুক নাকি খুব সুস্বাদু, খেয়ে দেখতেন
ঝিনুক সুস্বাদু সেটা দেখলেই বুঝা যায় দেখেন না হাঁস কেমনে প্যাক প্যাক করে খায়।

আসলেই নাকি সুস্বাদু। সম্ভবত ফ্রাই-টা
একেই বলে কোপাল। যার নাই, তার রাজবাড়িতেও নাই।
আমি জীবনে অনেক আলতু ফালতু খাবার খেয়েছি। না খেয়ে বেলা পার করা'র অনেক ঘটনাও আছে।
হ কাকা।
সব কোপাল।আর কোপালের নাম গোপাল।
অক্টোপাসের ডিশটা দেখে তো নোলা সকসক করছে।
আয় তোরে খাওয়াই।বান্দর কোহানকার।

আহা রে ভাই ! তোমার মনে এত দুককহু !!
কুত্তার কামড় তোমারে খাওয়াই নাই ওইটা আরেকটা গ ল্প , আরেকদিন কমুনে
ইসসস একটা পরী থাকলে কি সুন্দর রান্না করে খাওয়াইত 
এইটা হয়ছে লাখটাকার কথা।
কিন্তু পরীর বাপেরা রাজী।

আমাগো দেশী স্টাইলে রান্না করা ঝিনুক খাইছিলাম। জিনিস খারাপ না। কিন্তু আপনার এই ছবি দেখেই বমি আসতেছে। আফসুস
ছবি দেখেই বমি??আর থাকলে কি করতেন?
আসলেই! আমারও
ছবিতে ডিশটা খুবই লোভনীয় লাগছে। শামুক এবং ঝিনুক দুটোই খেতে দারুন। ফ্রেঞ্চ স্টাইলে করলেতো কথাই নাই। আমি নিজে রেঁধেও খাই। আমি দেশে থাকলে নাকি হাঁস মুরগী খাইতে পারতো না। ফ্রাইড অক্টোপাস দারুন টেষ্টি। এমনিতে স্প্যানিশ পাইয়া কিংবা ইটালীয়ান রিসোটোতেও দারুন জমে অক্টোপাসে।
নেটে রেসিপি সার্চ দিয়া রেঁধে খাও, ভুলবা না কোনদিন
কপাল ভালো আপনে দেশে নাই থাকলে হাঁস মুরগীরা অনাহারে মারা যেতো।
হ আমারতো পাগলা কুত্তায় কামড়ায়ছে এই হাবিজাবি বাজার থেকে কিনে আবার রান্না করে খাবো।

খাওনের ছবি দেইখা টাশকি। হাবিয়া দোযখেও এর থিকা ভালো খাওন দিব। আচ্ছা ঐখানে লোকজন কুত্তা কেরম খায়। তুমি খাইছনি দুই১বার?
খারাপ কন নাই রায়হান ভাই।আমি এই জনমে খাওয়ার কষ্ট করলেও পরের জন্মে যে করুম না তা নিশ্চিত।
কুত্তার গল্প আরেকদিন করুম নে।
দ্বিতীয় ছবিটায় কি মিষ্টি আলু? কোরিয়াতেও পাওয়া যায়?
হুম।
মিষ্টি আলু(গগুমা 고구마) এদের খুবই প্রিয়। আমি একবার থ্রি স্টার হোটেলে গিয়ে মিষ্টি আলু দিয়ে লাঞ্চ করেছিলাম। আর প্রথম প্রথম একদিন আমার ল্যাবমেট কয় সে আজ দুপুরে খুবই ডেলিশিয়াস হেলদী এন্ড সায়েন্টিফিক(ওর ভাষায় কোরিয়ান সব খাবার সায়েন্টিফিক) খাবে।আমি জিগাইলাম কি? সে দুইটা মিষ্টি আলু বের করে দেখায় এইটা।বলে তোমাদের দেশে খায়? আমি বললাম হ খুব গরীব যারা তার খায়।ওর মুখটা সেদিন দেখার মতো হয়ছিলো।

মাইনষে তাইলে কী কী খায় না?
ওই সাদা মতোন গরুর ভুড়ি টাইপ ওইটাই কি অক্টোপাস?... ইয়াক! ...

এর চেয়ে মিষ্টি আলু আর লাল-সবুজ সব্জীটাই ভালো লাগছে দেখতে...
খিচুড়ি রান্নার সময় ঝিনুক দিতে পারেন। Paella এর মতো হবে। জটিল টেস্ট।
আর অক্টোপাস ফ্রাই করে তারপর ভুনা করতে পারেন। হেব্বি।
ঝিনুক খাইতে হয় কাঁচা , 'র'। হালকা লেবুর রস দিয়ে সুড়ূৎ একটা টান...... অসাধারন। তবে কাঁচা না খাইতে পারলে বিবিকিউ করেও খাওয়া যায় , তবে স্বাদ বদলে যায়। ফ্রেন্চরা সেদ্ধ করে হালকা পেঁয়াজ ও হার্ব দিয়ে, সেইটাও মন্দ না। ঝিনুকে চিজ দিয়ে হালকা বিবিকিউ করলে সেইটা অন্য রকম। তবে পানি থেকে জ্যান্ত ঝিনুক তুলে সোজা খাওয়ার আমেজ টা অন্য রকম। শামুক খাওয়ার সুযোগ হয় নাই।
অক্টোকাসও ভালো লাগে বিবিকিউ করে। ইচ্ছে করলে আপনি মুরগি মাংস রাঁধার মতোই রান্না করতে পারেন দেশী স্টাইলে। একটু চিউই আর কি। মাঝে সাজে খেতে ভালোই লাগে। সি ফুড নুডুল্স স্যুপে বেবি অক্টোপাসটা অন্যরকম লাগে, সাথে স্কুইড টিউব।
ভিয়েতনামী খাবার আমার দারুন লাগে। ফ্রেশ --- ইয়াম্মি।
মন্তব্য করুন