ভাবমুর্তি
ছোটবেলায় কারো বাসায় বেড়াতে যাওয়ার আগে আম্মার কাছ থেকে কিছু শিক্ষামূলক হুমকি শুনতাম সেগুলো হচ্ছে
১। বেশি দুষ্টামি করা যাবে না
২। সেই বাসার কোনকিছু ধরা যাবে না বিশেষ করে তাদের বাচ্চাদের খেলনা বা শো-পিস
৩। কিছু খেতে দিলে দেয়ার সাথে সাথে পিরিচের উপর হামলে পড়া যাবে না এবং সবটুকু শেষ করা যাবে না কিছুটা রেখে দিতে হবে।
ভদ্রবালকের মতো মাথা ঝুকিয়ে হুঁ বলে আম্মার হাত ধরে বেড়াতে যেতাম কিন্তু শৈশবের সেই দুরন্তপনাতে কোন উপদেশই ঠিকমতো মনে থাকতো না বিশেষ করে খাওয়ার সময়। দেখা যেতো পিরিচে্র সব বিস্কুট, মিষ্টি বা চানাচুর শেষ করে দিয়েছি আম্মা দুই তিনবার চোখ কটমট করে তাকিয়েছে কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে। বাড়ির চাচী যখন চা আনতে রান্নাঘরে গেছে সেই সময় আম্মা আস্তে করে বললো ''বাপজন্মে কিছু খাও নাই? আজ বাসায় চলো খাওয়াবো নি'' দুরুদুরু বুকে বাসায় আসার পর দেখা যেতো আম্মা কোন কারনে সেই ঘটনা ভুলে গেছে আমার ও আর খাওয়া হয় নাই।
ইউনি ক্যাম্পাসে আমাদের আট বন্ধু'র একটা গ্রুপ ছিলো তারমধ্যে আমরা চারজন লোকাল আর বাকীরা হলে থাকতো।ওদের সাথে শৈশবের এই গল্প শেয়ার করে দেখেছি সবারই একই ধরনের অভিজ্ঞতা একই স্মৃতি। আমরা খাওয়ার শেষে পিরিচে রেখে দেয়া বিস্কুট বা মিষ্টির নাম দিলাম ''ভাবমুর্তি''। বন্ধুবান্ধবেরা যখন আমার বাসায় আসতো খেতে দেয়ার সময় বলে দিতাম ''ভাবমুর্তি'' রাখতে হবে না ওটাও খেয়ে ফেল। ইমনের বাসায় যাওয়া হতো স্যার আর ওর আম্মা খুলনা গেলে।আর তখন আমরাই রাজা ছিলাম তাই ওখানে ভাবমুর্তির কোন বালাই ছিলো না। রিয়াদের বাসাতেও ভাবমুর্তির কেয়ার করতাম না আর লুথারের বাসাতে গেলে মনে হতো ও ওদের বাসার মেহমান আমাদের সাথে পাল্লা দিয়ে খেতো যদিও ওদের বাসায় খুব কম যাওয়া হয়েছে তারপরেও খাওয়ার ভাবমুর্তি রেখে আসা হতো না।
যে ''ভাবমুর্তি'' ছোটবেলা থেকেই খেয়ে ফেলার অভ্যাস, ''ভাবমুর্তি'' কখনো রাখতে পারি নাই।আর এখনকার ফেসবুক ব্লগের দুনিয়াতে তো আরো দুষ্কর। ইদানিং খুব আতংকে থাকি কখন যে কার কোথায় ভাবমুর্তি বিনষ্ট করে ফেলি। অবশ্য আমার বন্ধুরা এখন অনেক বুদ্ধিমান হয়েছে তারা এক ক্লিকেই তাদের ভাবমুর্তি সমুন্নত রাখে। মাঝে মাঝে নিজেরও ভাবমুর্তি উজ্জ্বল করতে ইচ্ছা করে কিন্তু কেন জানি পারি না।
১. ছোটবেলায় মানুষের বাসার খাওয়া খাদ্যের যে স্বাদ, সেটা যদি আম্মা-রা বুঝত
!! আমার ছোটভাই তো আরো এককাঠি সরেস ছিল, সে যদি রাস্তাঘাটে কাউরে দেখত মিষ্টি বা বিস্কুট হাতে যাচ্ছে, পিছন পিছন সেই বাসায় গিয়ে হাজির.. তারপরে কি হইতো সেটা সকলেই জানে
( ..
২. সবাই সবকিছু পারেনা.. ইহা চিরন্তন সত্য ..
অ.ট: ভাইজানের সুপারম্যান কেমন রাখছে আজকাল আপনারে ?
আম্মা-রা সবসময়ের জন্য পাষাণই হয়
আমার চারবছর বয়েসী ভাগনে যখন খুব দুষ্টামির জন্য মাইর খায় তখন মোনাজাতে বসে আল্লাহর সাথে রাগারাগি করে কেন তাকে একজন জালিম মহিলার কাছে পাঠানো হয়েছে? 

---------------
সুপারম্যানরে ইদানিং আমি দৌড়ের উপর রাখছি। কালে ভদ্রে দেখা হয়।
ভাবমুর্তি'র সমস্যা এখন আর সাধারন মানুষের সমস্যা না; এইডা এখন রাজনীতি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী কিংবা এম পি দের সমস্যা।

আজকের আমজনতাই তো কালকের এমপি মন্ত্রী
আমজনতা কই দেখেন?

সংসদে নাকি ৮০% নাকি ব্যবসায়ী!!
হেরাও ম্যাঙ্গো?
প্রথমে বেশ মজায় চলতেছিল লেখাটা,
শেষে এসে অন্য সুরের মাজেজা কি?
মাজেজা কিছু নাই। এমনি।
ভাবমূর্তি খাব
খাও মানা করে কে??
ভাব ও নাই তাই মূর্তিও নাই!
মুর্তি একটা বানায় নাও ছোট ভাই
আরে !!! এই ভাবমূর্তি নিয়া আমার নিজেরই একটা মজার অভিজ্ঞতা আছে। এইটা নিয়া একটা পোস্ট দিমুনি
আপনার লেখালেখি শেষ হলে লিখবেন আশা করি

ভালই লাগল
ধন্যবাদ
আমি আবার চুজি মূর্তি আছিলাম। পছন্দ না হলে বিস্কিট চানাচুর খেতাম না
আমাকে ১০ পয়সার ডলি বা বাটা বিস্কুট দিলেও খেতাম
এখনকার পোলাপাইনরে এইসব ভাবমুর্তির কতা কৈতে হয়না... হেরা বহুত চুজি... পছন্দসই খাবার না হৈলে সাধলেও খায়না... আহারে ভাবমুর্তি... পুরানো দিনের কতা মনে পৈড়া গেলো
আপনার লেখা আমি খুব ভালা পাই
তোমার লেখা আমি বুঝি না
ভাবমূর্তি অনেক বড় মানুষের ব্যাপার, আমরা (আম-জনতা) ছুড লোক, আমগো কুন ভাবমূর্তি নাইক্কা।
লেখা ভাল লাগলো।
রাসেল ভাই,
কেমন আছেন?
অনেক দিন কোন লেখা দেন না।
ভাল আছেন তো?
গাড়ি কি আর যাত্রাবাড়ি যায় না?!
আছি মোটামুটি।
মাথায় লেখার মতো কিছু আসছে না। আর ব্লগে লগ-ইন করলে কেন জানি মিনিট দশেকের মধ্য লগ-আউট হয়ে যাই যে কারননে বার বার লগ ইন হতে ভাল লাগে না।
ব্রাউজার চেঞ্জ বা আপডেট করে দেখতে পারেন।
বিয়ে কবে?
হবু ভাবি কে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে একটা ব্লগ লিখে ফেলেন।
এই যে ভাবমূর্তিধারী যুবক, মূর্তির মতো ঠায় দাঁড়িয়ে না থেকে আমার সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করলেও তো পারেন। সেই সন্ধ্যে থেকে দেকচি মহল্লার মোড়ে ফসফরাসের বাতি হয়ে জ্বলে আছেন। ঘটনা কি?
না তিনি শক্ত ভাবে ভাবমূর্তি ধারণ করে দাঁড়িয়েই কেবল থাকবেন, যতদূর বুঝলাম।
রোযা-রমজানের দিন, বেশি কিছু করাও যাচ্ছে না।
কারে যে কমু এই মনের দুঃখের কথা কেন যে খালি খাড়ায় থাকি
কেন থাকেন রাসেল ভাই, কেউ কি ভালোবাসে না?
সে এক বিরাট ইতিহাস।
লেখাটা বেশ ভাল লাগল। ধন্যবাদ
মন্তব্য করুন