আমার সিসিমপুর (৬)
১।
অনেকদিন সিসিমপুর লেখা হয় না। এই পোস্ট কত নাম্বার হবে দেখতে গিয়ে মনে হল বছর খানেক আগে লিখসিলাম। এরপর আর না লিখতে পারার অবশ্য যথেষ্ট কারণ আছে।
মেঘলা এসে ঘুরে গেলো। কোনদিক দিয়ে যে সময় গেল বুঝতেই পারলাম না। আর আরভিন, তাহিয়া এখন অনেকটা বড় হইসে। বড় বলতে বকা খাওয়ার সময় চলতেসে ওদের। বেশীর ভাগ সময় ঝাড়ির উপর রাখতে হয়। নাহলে তেলেসমতি কারবার শুরু করে দেয়। ঝাড়ি বলতে চিৎকার করে ধমক দেয়া না। বরং ওদের ঝাড়ি দিতে হয় মিজান ভাইয়ের সেই চোখের ভাঁজে ভাঁজে কবিতা পড়ার মত।
২।
সেদিন পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য গেলাম আমি, আরভিন আর আরভিনের মা। টাকা জমা দেয়ার জন্য স্লিপ লিখছি এমন সময় সিঁড়িতে বাচ্চাদের চিৎকার। আরভিন উঁকি দিয়ে গিয়ে দেখে আসলো গ্লু নিয়ে ঘুরে যে পিচ্চি গুলা ওদের একজন আর একজনের হাত মুচড়ে ধরসে। এসে চোখ বড় বড় করে বর্ণণা দিল। আমি খুব শান্ত ভাবে বললাম, আননেসেসারি যারা সারাক্ষণ কথা বলে তাদের এভাবেই হাত মুচড়ে ধরতে হয়। এখন থেকে আমিও এমন করবো ঠিক করসি। ভালোই কাজ হইসে। মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভাবে আমরা সেদিন কাজ শেষ করতে পারসি। ফেরার পথে ভালো মানুষের মতই বসে আসে। দুপুর পার হয়ে যাচ্ছে বলে আপুকে বললাম আরভিনকে কিছু খাইয়ে নেই। যেই মাত্র খাওয়ার কথা বললাম, আরভিন বলে উঠল, তাড়াতাড়ি আমাকে কেএফসি নিয়ে চলো, চিকেন দাও নাহলে আমি আর নড়তে পারছি না। আমার পেট গড় গড় করছে।
৩।
তাহিয়ার একদিন কি মনে হইসে হুট করে গিয়ে ওর বাবাকে জিজ্ঞাসা করসে আব্বু, আমার পাসপোর্ট আছে না? তার নম্বরটা বলতো। ভাইয়া খুবই ভালো বাবার মতো আলমারি খুলে পাসপোর্ট বের করে মেয়েকে নম্বর বলল, নম্বর কোথায় লেখা থাকে দেখালো। দেখে শুনে তাহিয়া বলল, নম্বরটা মুখস্থ করে রাখো। আমি যে কোনো সময় আবার জিজ্ঞাসা করতে পারি।
৪।
আর রাজাবেটা যে দিন দিন কি হইতেসে আল্লাহ জানে। ড্রেসিং টেবিলের উপর থেকে নেইলপলিশ নিয়ে কাঁদতে থাকবে দেয়ার জন্য। হাতে পায়ে নেইলপলিশ দিয়ে আবার ছবি তোলার জন্য পোজ দিবে বসে বসে। সারাক্ষণ খুঁজে খুঁজে শুধু মেয়েদের স্যান্ডেল পড়বে।
বেশ কিছু অপমানজনক কাজ কারবারও আছে তার। ধরেন আমি/ যে কেউ কম্পিউটারে বসা। সে সুন্দর মত কাছে এসে হাত ধরে টেনে চেয়ার থেকে উঠাবে তারপর নিজে দৌড় দিয়ে এসে বসে যাবে কম্পিউটারে। এখন পর্যন্ত সে শিখসে এ্য আর তোতা। তার প্রয়োজনীয় সব কথা সে এই দুইটা শব্দ দিয়ে বলে ফেলে।
ইদানিং পেপারে ফেয়ার এন্ড লাভলীর একটা এ্যাড দেয়। একটা মেয়ের অর্ধেক মুখ কালো অর্ধেক সাদা। কি কারণে রাজার কাছে মনে হইসে ঐটা আমি। প্রতিদিন পেপার দিলেই সে আম্মুকে এ্য এ্য করে দেখাবে ঐ ছবি। আম্মু জিজ্ঞাসা করবে রাজাকে স্বর্ণালী কই? সে ছবি দেখাবে আর ছবিতে চুমু দিবে। তারপর সেই ছবি সারাদিন যত্ন করে নিয়ে ঘুরবে। আমি বাসায় ফিরলে আমাকে দেখাবে আর চুমু দিবে।
জীবনে যা-ই ম্যা ম্যা ভ্যা ভ্যা করসি হারমোনিয়াম নিয়ে এখন তাতে নতুন যোগ হইসে দর্শক-শ্রোতা রাজাবেটা। চিৎকার করে হাত ধরে টেনে আনবে প্রথমে হারমোনিয়ামের কাছে। তারপর আমাকে বসাবে গান করতে। আর নিজে অসম্ভব লক্ষী একটা বাচ্চা হয়ে দূরে গিয়ে বসে থাকবে। যতক্ষণ আমি গান করবো সে দূরে বসে হাততালি দিবে, গোল গোল চোখ করে গান শুনবে, নাচবে। সমস্যা হলো, একটা গান শেষ করে এক মূহুর্ত দেরী না করে আর একটা গান শুরু করতে হয়। নাহলে সে নিজে এসে হারমোনিয়ামের উপর উঠে বসে।
কুকুর-বিড়াল রাজার খুব পছন্দ। দেখলেই উউউ উউউ করে গলায় ঝুলতে যায়। বসুন্ধরা সিটি গেসিলাম একটা কাজে। বিকালের দিকে ষন্ডা মার্কা কুকুর গুলাকে বের করে সামনে আনতিসে। আর সে আমার হাত ছেড়ে কুকুরের পিছন পিছন উউউ করতে করতে দৌড়, পারে না যেন উউ এর কোলে উঠে বসে থাকে।
এই তো এইভাবেই চলছে আমার আর সিসিমপুরের দিন-রাত্রি।
ফার্স্ট কমেন্ট!
ফার্স্ট কি নিবা বলো ধইন্যা নাকি কোক?
ধইন্যা দেখতে সুন্দর আছে!
কুক ভালু পাই,
পারলে সাথে এক স্লাইস লেবুও দিও!
লেবু নাই। মডুরে বইলো লেবুর ব্যবস্থা করতে
কিপটা মডু!
কত্তদিন হৈছে নতুন কুনু কিছু দেয় না!
ভালোই চলছে তোমার সিমিপুর নিয়ে দিনযাপন।পড়তে ভালো লাগে। বহুকাল পরে পোস্ট দিলা। নিয়মিতই লিখো।:)
আমার চেয়ে ভালো পোস্ট দিতে পারবে রাজাবেটা আপু। ওর জন্য পিসিতে বসা মুশকিল। আর মোবাইলে আমি এত এক্সপার্ট না। আমার মোবাইল আমি আনলক করা শিখসি রাজার কাছ থেকে।
মডুর কাছে আবেদন করতে হবে রাজারে একটা এ্যকাউন্ট খুলে দিতে
বরাবরের মতই মজারু।
পিচ্চিকাচ্চাদের বড় হতে দেখার মত চমত্কার জিনিস দুনিয়াতে কম আছে।
আমার একটা কাজিন আছে তাহিয়া হুমায়রা তিয়ানা।
কয়দিন আগেও হামাগুড়ি দিয়ে এসে পা বেয়ে বেয়ে ঝুলতে ঝুলতে কোলে উঠে যেত,
এখন এই পিচ্চি ক্লাস নাইনে পড়ে
কয়দিন পরে টেনে উঠে যাবে!
কি যে অদ্ভুত লাগে মাঝে মাঝে!
রাজাবেটাও এমন করে। মাঝে মাঝে তো আমি ওরে কোলে নিয়ে নিজের কাজ করি। ও দুইহাতে গলা ধরে ঝুলে থাকে
ইশ! কি কিউট!
খুব ভালো পোষ্ট!
বেশ কিউট!
থ্যাঙ্কু
আমার ধারণা, এই সিরিজটার জন্য এবি'র সবাই'ই মনে মনে অপেক্ষা করে। আমি সোয়া ১২টা বা সাড়ে ১২টার দিকে এটা দেখেছিলাম। দেখে যখুনি লগিন করবো একটা কমেন্ট করার জন্য, ঠিক তখুনি বস্ এসে একটা স্লাগ ধরিয়ে দিয়ে গেলো। সেটাকে মানুষ করতে করতেই দেখি- টাইম আপ। অফিসের নেট কেবিপিএস-এ চলে গেছে। শুধু সার্ভার পিসিতে কানেকশন ঠিক আছে। সেখানে গেলাম কমেন্ট করতে। গিয়ে দেখি সেখানে এপি, তাস আর বিডি'র মতো পিকিউলিয়ার কয়েকটা সাইট ছাড়া আর সবকিছু লক করা। চরম বিঘ্নিত মনে ১৪ কিলোমিটার সাইকেল চালায়ে বাসায় এসে, তারপর কমেন্ট করতেসি। বুঝেন কি অবস্থা!
লেখা সম্পর্কে কি আর বলবো? আপনে নিজেও জানেন এই লেখাটা কত মারাত্মক কিউট হইসে। ব্লগে এই মাত্রার ক্লিয়ার সেন্স অব হিউমার আমি আর একজনের মধ্যেই দেখেছি কেবল। তিনি হলেন মাসুম ভাই।
চেষ্টা করলাম পুরো লেখায় কোথাও না হাসার। খুব করে চেষ্টা করলাম। কিন্তু-
এই লাইনে এসে হার মানতেই হলো
ভালো কথা, স্বর্ণালীটা কে? চিনলাম্না তো।
লেখা আমার কিউট হইসে কি না জানি না মীর তবে আপনার কমেন্ট মারাত্নক কিউট হইসে নিঃসন্দেহে। সত্যি লজ্জা পেলাম :
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত্ত আগ্রহ নিয়ে পোস্ট পড়া আর কমেন্ট করার জন্য।
আর স্বর্ণালীটাও আমিই। অনেক নাম আমার
ঐ মায়ামতী কইন্যা আমার চান্দা ?
ভাই বহুদিন পর আসছি। আপনে এতদিন কি কি চান্দাবাজি করলেন আগে তার ভাগ দেন আমারে
অনেকদিন পর সিসিমপুর ভাল লাগল।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপু
আহ্ চমৎকার
আপনাকেও পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ
পোষ্ট দেখি সুপার হিট। কলকাতার চ্যানেল গুলার ভাষায় বলতে গেলে রমরমিয়ে চলছে!
চলতে আর দিলেন কই আগেই তো নজর লাগায়া দিলেন
আপুউউউউ...কেমনাছো?মিসড ইয়ু..
ভালো আছি। তোমার কি খবর?
ভালো না।
২ তারিখ থেকে এক্সাম।
আর এখন ঠান্ডা,মাথাব্যাথা, জর,টনসিল আর দাতব্যাথা!
মন্তব্য করুন