আজ কালের গল্প
পশের বন্ধুটি গেড গেড করে খাতা ভর্তি করে লিখে যাচ্ছে আর আমি কি করব বুঝতে না পেরে বোকার মত আশে পাশে তাকিয়ে দেখছি কার কত গুলা প্রশ্নের হালুয়া পাকানো হলো। মাস্টার সাহেব বোর্ডে একটার পর একটা প্রশ্ন লিখেই যাচ্ছে যার কিছুই আমি পড়তে পারছিনা। কি জানি এক আজব কারনে লেখা টা দেখতে দুই দিন আগে মরা তেলাপুকার শুকনা ঠ্যাং এর মত লাগছে। এমন না যে আমি ভাষা জানিনা, ৫ বছর ধরে এই ভাষার সাথে কুস্তি খেলে আসছি কিন্তু আজ এই লেখা আমার চোখে অচেনা লাগছে। পাশের বন্ধুকে বললাম " বনডু আমাকে একটু হেলপাও, আমি তো কূল হারা নদী হয়ে গেলাম" আমার কথা শুনে বন্ধু আমার তার খাতা টা আমার দিকে দিয়ে দেখে দেখে লিখতে বললো। আমি বললাম " বনডু একটু লিখে দিবা? " সে তখন আমার খাতাতে সুন্দর করে লিখে দিলো "তোর গায়ে জ্বর!"। আমাদের এইসব মাস্টারসাব দেখে আমাকে জিঙ্গেস করলো " কি হয়েছে ?" আমি বললাম " আমি কিছু পারছিনা " তখন মাস্টার বললো " কেনো ? তোমার বোন তো অনেক ভালো লিখছে" ।
বোন!!!!??
আমার থেকে ঠিক ১০ হাত দূরে দেখি আমার বোন মাথা ঠুকে লিখে যাচ্ছে। আমার বোন কোথা থেকে আসলো আর আমি এ কোন ক্লাসে? পরে মনে পড়লো আমি তো ৬ বছর গ্যাপ দিয়ে আমার বোনের স্কুলে একই ক্লাসে ভর্তি হয়েছি এবং আজি আমার প্রথম দিন স্কুলের। স্কুলটা বেশ বড় এতো বেশী বড় যে এক দিক থেকে আর একদিক দেখা যাচ্ছে না আর দালান গুলা হ্যারি পটারের মুভির হগওয়ার্টস স্কুলের মত লাগছে। স্কুলটার পিছনে একটা বড় প্রাচীর আর প্রাচীরের ঐ পাশে আছে জঙ্গল ।
এরমধ্যে ক্লাস শেষ হয়ে গেছে। ক্লাসের থেকে বোনের সাথে হেটে বের হচ্ছি সবাই দেখি আমার বোনকে চেনে, একে একে সবাই আমার বোনের সুনাম করছে আর আমার কেনো জানি ভালো লাগা বাদ দিয়ে মন খারাপ হচ্ছে। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম আজই প্রথম আজই শেষ। কাল থেকে আর স্কুলে আসবো না। এমন সময় দেখি আমার বোন আমার সাথে নেই ঠিক তখনই কোথা থেকে জানি চিল্লা পাল্লা শুনতে পাচ্ছি।
সামনে এগিয়ে যেতেই শব্দটা আরো পরিষ্কার শুনতে পেলাম। মনে হলো শব্দটা প্রাচীরের ঐ পাশ থেকে আসছে। প্রাচীরের কাছে গিয়ে বুঝলাম সত্যি সত্যি প্রাচীরের ঐ পাশের শব্দ। পাশেই ইট দিয়ে উুচা করা জায়গাটাতে দাড়িয়ে প্রাচীরের ঐ পাশে যা দেখলাম তা দেখে আমার চোখ কপালে উঠে গেলো। দেখলাম প্রাচীরের ঐ পাশের জঙ্গলের মধ্যে দুই টা ছেলে দৌড়া দৌড়ি করছে আর তাদের পিছে তাড়া করছে মোটা তাজা দুইটা ডাইনোসর!! আমাকে দেখে ছেলে দুই টা আমার দিকে দৌড়ে আসতে শুরু করলো আর তার পিছের সাদার মধ্যে হলুদ দাতওয়ালা ডাইনোসর দুইটা। আমি হাত বাড়িয়ে টেনে তুললাম তাদেরকে।এবার বুঝলাম প্রাচীরের কারন। তারা কেনো জঙ্গলে গিয়েছিলো তা জানার আগেই আমার কানের পাশ দিয়ে একটা গুলি চলে গেলো। উপরে তাকিয়ে দেখি বাবলা আর তার সাথে চার পাঁছ জন । বুঝতে আর বাকি রইলো না। তিন দিন আগের আগ্নেওগিরি আজ ফুটা শুরু হয়েছে। তিন দিন আগে বাবলার এলাকাতে গিয়ে তারই এক চেণ্গা চামচাকে খুব সুন্দর ভাবে উত্তম মধ্যম এবং অধম দেয়া হয়েছে। তখনই চেঙ্গা ইমু লুলাইতে লুলাইতে বাবলাকে বলে মজা দেখাবে বলে হুমকি দিতে দিতে বাড়ি ফিরে গেছে। পরের দুই দিন কোন আব ভাব না দেখে ভেবেছিলাম মনে হয় বাতাস উপর দিয়ে বয়ে গেসে। এখোন তো দেখি বাতাসের মধ্যে গুলিও বয়ে যাচ্ছে।
চ্রম ( চরম না কিন্তু ) গুলা গুলি শুরু হয়ে গেছে। আমি দৌড়ে গিয়ে এক দেয়ালের পাশে লুকালাম।কাউন্টার-স্ট্রাইক গেম তখন আমার জীবনে ঘটে যাচ্ছে।আমার হাতে KM .45 Tactical (USP) কিন্তু এতে সামনে থেকে আসা আক্রমন বেশিক্ষন আটকে রাখা যাবে না। আমাকে কিছু একটা করতে হবে। মুহু্র্তেই আমি পিস্তল বদলে CV-47 হাতে নিলাম।এই ভাবে চলতে থাকলো, এইপাশ ঐপাশ ! ঠাই! ঠাই! এক সময় সামনে থেকে কোন গুলি আসতে না দেখে ভাবলাম সব মরে চিৎ হয়ে গেছে। কিন্তু না আবার শুরু হয়ে গেলো এবার বাবলাকে দেখতে পাচ্ছি । বাবলার কপাল বরাবর তাক করলাম। ট্রিগারে চাপ দেব এমন সময় কোথা থেকে মরুভূমির ঝড়ো হাওয়া এসে চোখ মুখ বালুতে ঘোলা করে দিলো। কোনরকম ভাবে এক পা দু পা করে এগিয়ে স্কুলের গেটের বাইরে বের হয়ে এলাম। পিছন থেলে আমাকে একজন ডেকে উঠলো। তাকিয়ে দেখি আমার গেদাকালের বন্ধু "এনি" সাথে আমার কলেজের আরেক কাছের বন্ধু " বিবা" সহ কলেজের আরো কিছু বান্ধু। তারা সবাই বাড়ি ফিরছে, আমাকেও তো ফিরতে হবে!!
বিকেলের শেষের দিকে প্রায়। জায়গা টা ঠিক চিনতে পারছিনা আমি। রাস্তার পাশে কিছু ইপিল ইপিল গাছ, এই জায়গাতে এর আগে কবে এসেছি মনে পড়ছে না। প্রায় ২০ মি: পর পর একটা করে বাস যেতে দেখছি। তাকিয়ে দেখি সাথের বান্ধুরা সব কই যে গেলো খুজে পাচ্ছি না। তারা থাকলে না হয় তাদের থেকে বাড়িতে যাবার বাস নাম্বার টা জেনে নিতাম। তাদেরকে বললামও যে আমিও যাবো তাদের সাথে কিন্তু তারা আমাকে রেখেই চলে গেলো। বাকিদের কথা বাদ দিলাম কিন্তু "এনি" কিভাবে পারলো। আজ কাল এনিকে কেমন জানি বদলে যেতে দেখছি। আমাকে আর সে ভালো বন্ধু ভাবে না মনে হয়। হয়তো তার কোন আপন মানুষ হয়েছে তাই আমার মতো গেদা কাল থেকে এক সাথে বেড়ে উঠা বন্ধুকে আর আপন ভাবে না। কিন্তু তারপরও কিভাবে পরলো সে আমাকে একা এই আধা জণ্গলে রেখে যেতে।
পাশ দিয়ে শো শো করে অনেক্ষন পর পর বাস যাচ্ছে কিন্তু আমি বুঝছিনা কোন বাসে উঠবো। পিচঢালা রাস্তা দিয়ে হেটেই যাচ্ছি সামনের দিকে, ক্ষুধাও পেয়েছে। আশে পাশে কোন দোকান বা কারো বাড়ি কিছুই দেখছি না। কিছুদূর যেতেই কথা আর হাসি তামাসার শুনতে পেলাম। একটা ঝোপ পার করে দেখি একটা বাজার। বাজারে একটা খাবার রেস্টুরেন্টে দেখতে পেলাম এনি সহ সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে ।আমার ঐ খানে হাজির হওয়া দেখে বিবা বাদে সবাই কেমন জানি বিরক্ত ভাব করলো তাদের চেহারাতে। আমি বুঝতে পেরে শুধু বিবা কে বাড়ি যাবার বাস নাম্বার টা জিঙ্গেস করে জেনে নিলাম । তারপর ক্ষুধা পেটেই ঐখান থেকে রাস্তার দিকে চলা শুরু করলাম। তার কিছুক্ষন পরে বিবাও আমার পিছু পিছু আমার পাশে হাটা শুরু করলো। মনখারাপ টা কিছু হলেও বিবাকে আমার পাশে আসা দেখে ভালো লাগলো।
আমরা দুই জন রাস্তার পাশে দাড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষ্যা করছি এমন সময় দুরে দেখলাম এক মশলাওয়ালা দাড়িয়ে হলুদ মরিচের গুড়া মশলা বিক্রি করছে। আম্মু সেইদিন বলছিলো মরিচের গুড়া কিনতে হবে তাও আবার কাশমেরি মরিচের গুড়া। বিবা কে দাড়িয়ে থাকতে বলে মরিচের গুড়া কিনতে গেলাম।দেখতে ঠিক চটপটির দোকানের মত, মরিচের গুড়া কিনতে গিয়ে দেখি ভুনা খিচুড়ি আর গরুর মাংস ভুনাও বিক্রি করছে। আমি দুই প্যাকট নিলাম আর নিলাম মরিচের গুড়া। পেছনে ফিরে ধাক্কা খেলাম এক লোকের সাথে। উপরে তাকিয়ে দেখি একি এইটা তো কলিকাতার না্যক জিৎ!!! আর তার পিছে কয়েক টা মেয়ে পিছ লেগে আছে। আমার কি করা উচিৎ বুঝে উঠার আগেই দেখি আমি কলিকাতার নায়িকা কয়েল হেয়ে গেছি আর জিৎ আমার পিছে গান গেয়ে গেয়ে নাচ করছে। হঠাৎ দেখি যে না আমি তো বাসাতে কিন্তু একি এই টা তো আমি টিভি তে দেখছি আমার বাসার সোফাতে বসে। হায়! হায়! আমি নায়িকা হয়েও হতে পারলাম না। এইটা কি হইলো!!!!
একটা শক খাইলাম আর শখটা এতো বেশি খাইলাম যে সপ্ন ভেঙ্গে গেলো। আর আমি আমাকে আমার বিছানাতে আবিষ্কার করলাম !!!
তাইতো কই কী সব লিখছে এন্টেনার উপর দিয়ে যাইতেছে কেন।পরে বুঝলাম সপন দেক্তেছেন
....এন্টেনা ভেঙ্গে পড়েনি এই ভালো....পড়ে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
লাস্ট লাইন্টা পর্লেই চল্তো
তয় ব্যাপক ঘুম দিছো দেখি
হ!
আর কি কি স্বপ্ন দেখেন , আমাদের কে জানায়েন ।
ঠিক আছে
ধন্যবাদ আপনাকে
নীতিমালা ভংগের কারণে পোস্টটি প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে আপনার নিজের পাতায় রেখে দেয়া হলো। ভবিষ্যতে এই বিষয়ে সতর্ক হবেন।
লে বাবা ! আইতে নাআইতেই কাহিনি শুরু !
সেইরাম একখান পোস্ট!
অনেক মজা পাইলাম পইড়া, প্রিয়তে নিয়া নিলাম।
আপনের পেরথম লেখা এতদিনে পরছি ভাইবা খারাপ লাগতাছে।
নিওয়ে, আরেকটা বকেয়া কাজ কইরা ফেলি!
এবি তে সুস্বাগত!!
আরে বাপরে ইতিহাস পইড়া ফেলছেন দেখি
ধন্যবাদ আপনাকে
মন্তব্য করুন