ভ্রমণ বিরিশিরি
সেন্টমার্টিন্স এর গভীর নীল পানি, কিংবা জাফলং এর স্বচ্ছ পানির গল্প তো অনেকই শুনেছি, কিন্তু সবুজ নীলের মিশেলে অদ্ভূত-রঙা হ্রদটার গল্প কি শুনেছেন? না শুনলে আমার লম্বা প্যাচাল শোনার আগে একনজর দেখে নিন।
বুঝতেই পারছেন...এ অসমাপ্ত সেতুর কারণেই ওপারে দুর্গাপুরে সড়ক ব্যবস্থায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। সেই দশ কি বারো বছর আগে একবার রাস্তা তৈরি করে দিয়েই হাত গুটিয়ে নিয়েছে সরকার। রাস্তার বর্তমান যে হাল...কোমর ব্যাথা থাকলে ভুলেও ঐদিক যাবেন না, আর ব্যাথা না থাকলে ব্যাথা কোমরে নিয়ে ফিরে আসার জন্য অবশ্যই একবার ঘুরে আসবেন আমাদের মতো।
বিরিশিরি বাসস্ট্যান্ডই বাসের শেষ গন্তব্য। ঢাকা থেকে সময় প্রায় চার ঘন্টা লাগে। বাসস্ট্যান্ডের কাছেই ওয়াইএমসিএ হোস্টেলে যোগাযোগ করতে পারেন, যদি রাত কাটাতে চান। হাতে একদিন সময় নিয়ে গেলে প্রথম দিন দুর্গাপুর পৌঁছে আমাদের মতো ঘুরে আসতে পারেন বিজয়পুরের সীমান্তেও। পাহাড় আর সবুজে ভ্রম হতে পারে...বান্দরবান কিংবা রাঙ্গামাটি নয়তো?
ফুলের কথা বলতে বলতে মনে পড়লো, পাহাড় থেকে ফেরার পথে গারোদের এক ঘরের সামনে থেকে তোলা আরেকখানা নাম না জানা ফুল! এটা কি পাতাবাহার?
আদিবাসীদের ব্যাপারে আমার একটা সাধারণ পর্যবেক্ষণ, তারা উড়ে-এসে-জুড়ে-বসা এই সেটেলার আমাদের বেশ সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে দেখে। এমনকি শিশুরাও এর বাইরে নয়। ক্যামেরা দেখলেই তাদের নিষ্পাপ মুখে এক ভয়ার্ত ভাব দেখা যায়। এর পেছনেও হয়তো কোনো কারণ আছে। ক্যামেরার পেছনে থাকা মানুষের জন্য এ পরিস্থিতি বেশ অস্বস্তিকর। উল্লেখ্য, উপরের গারো শিশুর ছবিটা আমার বন্ধুর তোলা।
এবার বিরিশিরির যে মূল আকর্ষণ... নীলচে সবুজ হ্রদ, সেখানে যাবার গল্পে আসি। বাসস্ট্যান্ড থেকে ২০০-৩০০ টাকাতে রিকশা ভাড়া করে চলে যেতে পারেন চীনামাটির পাহাড়, যার বুক চিরে জেগে উঠেছে এই নীলচে সবুজ পানির হ্রদ। রিকশাওয়ালাই আপনার গাইড হিসাবে কাজ করবে। মোটর সাইকেলে করেও যেতে পারেন, তাতে সময় কম লাগবে, পয়সা বেশি লাগবে, তবে বেশিক্ষণ ঘুরতে পারবেন না। আর এইসব অভিযানে আমার কেন যেন একটু ধীরে চলতে বেশি ভাল লাগে। সূক্ষ্ণ ডিটেইল নজরে পড়ে বেশি।
যেতে পথে পড়বে সেন্ট যোসেফের গীর্জা। গীর্জাটা বেশ সাজানো গোছানো, নীরব আর খুব সুন্দর।
গীর্জার বিভিন্ন জায়গায় অনেক সুন্দর সুন্দর ফুলের চারা লাগানো। তা থেকেই কয়েক স্ন্যাপ!
গীর্জার কথা বলতে বলতে আবারো অন্য প্রসঙ্গে একটু বলি। বাংলাদেশের বাইরে পা ফেলিনি বলে জানি না অন্য কোন দেশে কোন ধর্মের কি অবস্থা। কিন্তু রাঙ্গামাটি, দুর্গাপুর সহ বিভিন্ন আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার সবখানেই দেখেছি গীর্জার অবস্থান। এটা স্বীকার করতেই হবে আদিবাসীরা বছরের পর বছর ধরে উড়ে-এসে-জুড়ে-বসা এই আমাদের শোষণের শিকার। কিন্তু সেসব জায়গাতেই গীর্জার আনাগোনা দেখে মনে প্রশ্ন জাগে, শোষিতদেরই কি ধর্মের ছায়াতলে আনা সহজ? নাকি এটাও কোন পলিসি? তাই না দেখেও বুঝতে পারি এবং এ ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত, এখনকার বৌদ্ধ, মুসলমান আর খ্রিস্টানদের প্রায় সবারই পূর্বপুরুষ নিম্ন বর্ণের হিন্দু ছিল।
যাক গে, ধর্ম প্রসংগ বাদ দিই। ভ্রমণের কথা বলি। অনেকটা দূর গ্রাম্য পথ পাড়ি দিয়ে রিকশা এসে পৌঁছাবে নদীর চরে।
চরে কিছুদূর আপনাকেও ঠেলতে হবে রিকশা। নমুনা নিজ চোখে দেখুন!
অবশ্য আমার মত ক্যামেরা হাতে নিয়ে ঘুরলে এ যাত্রা বেঁচে গেলেও যেতে পারেন ;)
কবিগুরুর কবিতা মেনে এ নদী চলেনি। শীতে এ নদীতে হাঁটু পানি। চাইলে হেঁটেই পার হতে পারেন। না চাইলে রিকশার সাথে নৌকায় আপনিও সওয়ার হয়ে যান! নদীটা অনেকটাই জাফলং এর নদীর মতো। স্বচ্ছ পানি, তলদেশ স্পষ্ট। পার্থক্য শুধু জাফলং এর পাথর, আর কিছু না।
নৌকায় নদী পাড়ি দিয়ে ওপারে গিয়ে শুরু হবে আরো দীর্ঘ রিকশা ভ্রমণ। মাঝেই মাঝেই কালভার্ট আর ব্রীজ, রিকশা থেকে নেমে কিছুদূর হেঁটে আবার রিকশা...এমনি করে চলতে হবে অনেকটা পথ।
নিচের ছবিটা পরিবেশ রক্ষার ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে আশা করি!
নেত্রকোণায় কাঠ পাচারের এক মজার উপায় শুনলাম। ভারতের পাহাড় থেকে গাছ কেটে কাঠের গুড়ি পাহাড় থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। ঢাল বেয়ে সে গুড়ি এসে বাংলাদেশে পড়ে। রাতে চোরাকারবারীরা এসে কাঠ নিয়ে যায়।
যাই হোক, রিকশায় চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে গেলে বুঝবেন এসে পড়েছেন হ্রদের কাছে। আমাদের পাহাড় ডিঙ্গোনোর শখ দেখে রিকশাওয়ালারা আমাদের নামিয়ে দিলেন এক পাহাড় আগেই।
বলে রাখি, এ পাহাড়ও চীনামাটির পাহাড়। এই পাহাড়ের উপর থেকে দেখা যায় দূরের ঐ হ্রদ, যার জন্য শত শত কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আমরা এসেছিলাম নেত্রকোণা।
এবার কিছুক্ষণের জন্য বকবক থামালাম। শুধুই হ্রদের ছবি...এখানে কবি(!) নীরব...
হ্রদটা কৃত্তিম মনে হয়েছে আমার কাছে। খুব সম্ভবত চীনেমাটির পাহাড়ের বুকে খনন করে বানানো। সেই কারণেই কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পানির রং এরকম হয়ে গিয়েছে হয়তো। রংটা কিছুটা কপার সালফেটের মতো , পানিতে কিছু পরিমাণ কপার সালফেট মেশানো ছিল বলে আমরা ধারণা করেছিলাম।
সিরামিকের পণ্য তৈরিতে ব্যবহার করা হয় যে চীনামাটি, তার যোগান দিতে দিতে এ অঞ্চলের পাহাড়গুলো আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তবু চীনেমাটি উত্তোলন থামছে না।
ডিএসএলআর এর দুঃখ ভোলার অপচেষ্টা ! !
কিছুই হয়নি, কিছুই হবে না...চলুন ঘুরে আসি বিরিশিরি।
যেমন ভাঙ্গা পেন্সিলের লেখা, তেমনই নন-ডিএসএলআর ক্যামের ছবি।
অসাধারণ!
শেষটুকু বড় বেশী নাড়া দিয়ে যায়... এটাই ভাঙ্গা-পেন্সিলীয় বৈশিষ্ট্য, আরও চাই এমন লেখা।
==========================================
সুযোগ পেয়ে পণ্ডিতি-
হলদে ফুলটা অ্যালামান্ডা; বাংলা নাম করা হয়েছে অলকানন্দা।
লাল ফুলটা বাগানবিলাস বলেই তো মনে হচ্ছে।
সাদা গোলাপের ঠিক ওপরের ফুলটা মেস্টা/মেস্টক গাছের। এই গাছের ফুল/ফল একটু টকমিষ্টি; চাটনি-সস বানানো হয়।
"তুই ফুল"টা মনে হচ্ছে নিশিন্দা। "নিম তিতা নিশিন্দা তিতা, তিতা পানের খ'র/ তাহার চেয়ে অধিক তিতা দুই সতিনের ঘর" গান আছে একটা।
হ্রদের গা ঘেঁষে থাকা হাল্কা বেগুনী ফুলটা পুকুরপাড়েও প্রচুর হয়, নামটা বিশ্রী- দাঁতরাঙ্গা। আরেকটা নাম আছে ততোধিক বিশ্রী: লুটকি (আমার নিজ জেলায় স্থানীয়ভাবে "কাউয়ার পানিভাত" বলে; সেটা বরং বেটার)।
ফুলের নামগুলোর জন্য অনেক ধইন্যা! এডিট করে ঠিক করে দিচ্ছি!
সবগুলো ফুলের মধ্যে সবচাইতে ফটোজেনিক ফুল নিশিন্দা, আর মেস্টক ফুলটা সামনাসামনি দেখতে অসম্ভব সুন্দর!
'হা' হইয়া গেলাম, অনেক সুন্দর ছবিগুলা ... এলাকাটাও অনেক সুন্দর ... যাইতে মন চাইতেছে :(
পিলাস +++++++++++++++++++
এলাকাটা আসলেই সুন্দর। হ্রদের খুব বেশি ছবি আসলে নাই, আমি পানির চাইতে পাহাড় আর সবুজ বেশি ভাল পাই

কেবল নীল জলের সরোবর দেখার জন্যও বিরিশিরি যেতে ইচ্ছে করছে। এর আগে হাসান রায়হান ভাই লোভ দেখাইছিল দারুন এক সিরিজ লিখে, এখন ভাঙ্গা পেন্সিলের অসম্ভব সুন্দর ছবিগুলো দেখে আবারো ইচ্ছেটা মাথাচাড়া দিচ্ছে।
এইখানে ফেবারিট করার টুল নাই? এই লেখাটাকে ফেবারিটে তুলতে চাই!
রাঙ্গামাটির ছবিগুলা তো দেই নাই এখানে...ওইখানকার পানি দেখলেও ফিদা হইয়া যাবেন!
যখন এমন কোনো সমস্যা আসবে যা সমাধান করা যাবে না...তখন এমন ভাব করো যেন সমস্যাটা চোখেই পড়েনি।
এই এলগরিদমটা মনে ধরছে... ভাঙ্গা পেন্সিলের লেখা নিয়ে নতুন কিছু বলার নাই :) ... পুরাতন প্রিয় মানুষ :)
স্বাগতম জানাইয়া গেলাম
অনেক ধন্যবাদ! আর অস্ট্রিচ এলগরিদমটা আমারও প্রিয় এলগরিদম
উটপাখির কিন্তু এরকম করার যুক্তি আছে। বালুঝড়ে ঘরবাড়ি সব উড়ে যায়, বালুচাপা পড়ে। উটপাখি তার মাথাটা বালুর মধ্যে ডুবিয়ে রাখে যাতে মাথা অনেকটা নোঙরের কাজ করে। কম্পুওয়ালারা ওইটাকে মিসইন্টারপ্রেট করে ধরে নিল যে সমস্যা হলে বালুতে মুখ ডুবায় থাকতে হবে
চমৎকার লেখা , আর ননডিএসএলআর এর ছবিও দারুন।
আপনার চোখের সাম্নে ঐটা কি ক্যানন এর ইওএস সিরিজ নাকি
"এখনকার বৌদ্ধ, মুসলমান আর খ্রিস্টানদের প্রায় সবারই পূর্বপুরুষ নিম্ন বর্ণের হিন্দু ছিল।"
তাতারারাবুগার নেতৃত্বে একদল মঙ্গোলীয়ান দূর্গম পথ পাড়ি দিয়ে এই অঞ্চলে এসে বন জঙ্গল কেটে, পাহাড় কর্ষণ করে বসতি গড়ে তোলেন। (সঠিক সময়কালটা আমার এই মুহূর্তে মনে নাই, বলতে হলে বই পুস্তক একটু ঘাঁটতে হবে)। গারো পাহাড়ের সেই আদি জনসম্প্রদায়, যাদের জাতনাম মান্দি, তাদেরকে আমরা ভুল নামে গারো আদিবাসী সম্প্রদায় বলে ডাকি। তাদের ছিলো নিজস্ব ধর্মমত এবং ভাষা এবং সংস্কৃতি।
নিম্নবর্ণের হিন্দুরা এদের কাছে গেছে অনেক পরে। আর খ্রিষ্টানরাও। আর মুসলমানরা তো সেদিন মোটে...
বিরিশিরিতে যে গীর্জাটা দেখছেন, সেটা অনেক পুরনো। এই গোটা দেশের ঐতিহ্যবাহী গীর্জাগুলোর একটা।
এখনো বিরিশিরি মধুপুর অঞ্চলে সাংসারেক (যারা কখনোই আদিধর্ম ছেড়ে অন্য ধর্মমত গ্রহণ করেননি) আছে।
"হ্রদটা কৃত্তিম মনে হয়েছে আমার কাছে। খুব সম্ভবত চীনেমাটির পাহাড়ের বুকে খনন করে বানানো। সেই কারণেই কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পানির রং এরকম হয়ে গিয়েছে হয়তো।"
চীনেমাটি তুলে তুলেই এই হ্রদের সৃষ্টি।
বিরিশিরি পর্যন্ত যখন গিয়েছিলেন তখন ব্রিটিশ বিরোধী টঙ্ক আন্দোলনের স্মৃতিতে নির্মিত রাশিমনি স্মৃতি স্তম্ভটা একবার ঘুরে এলে পারতেন
নেট স্লো হওয়ায় ছবিগুলো লোড হলো না, দেখতে পারলাম না বলে মন খারাপ। :(
যাহোক, অনেকদিন সেদিকে যাওয়া হয় না। মনটার মধ্যে আকুলি বিকুলি লাগায়ে দিলেন। আমার খুব প্রিয় একটা হারিয়ে যাওয়ার জায়গা।
একসময় বিরিশিরি কালচারাল একাডেমির প্রধান ছিলেন কবি রফিক আজাদ। একাডেমির পেছনেই ছিলো তার বাংলো। আমি একাডেমির বাংলোতেই থাকতাম। সরকারী ভাড়া ছিলো ১০ টাকা, কখনোই আমার দিতে হয়নি।
বদলে রাতের পর রাত কবি রফিক আজাদের সঙ্গে তরলযাপন আর কাব্যযাপন... আহা...
আর আর্ণিশ মান্দা। রফিক আজাদ নাম দিয়েছিলেন অহর্ণিশ মান্দা। নিজে হাতে বানিয়ে হাড়িঁয়া খাওয়াতো... সে স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে...
গেলো মাসেই ওয়ানগালা হলো... কাজের চাপে যেতে পারলাম না, মনটা তিরিবিরি করে দিলেন আপনি আজকে সকালে...
আমি আসলে এখনকার বৌদ্ধ মুসলমান খ্রিস্টান বলতে আদিবাসী গারোদের কথা বুঝাইনি। আমাদের দেশের সাধারণ বৌদ্ধ মুসলমান খ্রিস্টানদের কথা বলেছিলাম। ভারতের অংশ থাকায় আমাদের সবার পূর্বপুরুষই হিন্দু ছিল, আর নিম্নবর্ণের হিন্দুরাই ধর্ম পাল্টে অন্য ধর্ম বরণ করে নিয়েছিল--এটা আমার ধারণা।
রাশিমণি স্মৃতিস্তম্ভটা ঘুরে এসেছি। কিন্তু ছবিতে নেই, কারণ ওইটায় বসে স্থানীয়রা রোদ পোহাচ্ছিল, সামনে গরু ছাগলও চরছিল
আপনার মন্তব্যে অনেক কিছু জানতে পারলাম! অনেক ধন্যবাদ।
ছবিগুলান সুন্দর ।
ছবিগুলো দেখে মন ভরে গেলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
আপনাকেও ধন্যবাদ!
বিরিশিরিতে একবার ৪ দিন থেকে এসেছিলাম। তারপরও ছবিগুলা দেখে মন ভরে গেলো। আর লেখাও সেরম...
আমরা দুইদিনের জন্যে গিয়েছিলাম। তৈলের জইন্য ধইন্যা
এই বিরিশিরি যে এমন চমৎকার সুন্দর যায়গা, সেডা আগে বুঝিনাই, তাই বছর ২/৩ আগেও ভ্রমন তালিকায় এই জায়গাডা থাকতো না, কিন্তু ইদানীং দেখি বেশ আলোচনা হৈতাছে জায়গাটা নিয়া...
আর আমি যখন প্রথম এইসব ছবি দেখি, তব্দা খাইছিলাম, সত্যি...
আমি প্রথমবার দেখে মনে করছিলাম ফটোশপ এফেক্ট। পরে যখন শুনলাম রিয়েল, তখন থেকেই চান্স খুঁজতাছিলাম! না গেলে আফসোস থেকেই যেত
ছবি - লেখা দুইটাই দুর্দান্ত...আফসুস ! যদি এমন লেকতে পারতাম ?
এমন লেক্তে চান ক্যালা? অন্যরকম লেকেন
আপনার দুটি লেকের ছবি ছবি উইকিম্যাপিয়াতে যোগ করার অনুমতি দেবেন কি? আপনার এই পোষ্টের লিংক দিয়ে দেবো ছবির সাথে।
অবশ্যই দিতে পারেন। আমি নিজেও রাঙ্গামাটির ছবি উইকিমিডিয়াতে দিয়েছিলাম। এগুলাও দিব...আলসেমিতে হচ্ছে না আর কি!
ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে সেই সাথে বর্ননাও।

সাদাগোলাপের উপরের ছবিটা সম্ভবত এক ধরনের পাট গাছ যার আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত সবই টক স্বাদ
যেতে হবে বিরিশিরি, হাটুজলা নদীতে হাটতে চাই
এখন আমার মনে পড়ছে, এরকম একটা ফল ডালে দেয় টক স্বাদের জন্য
ধর্ম আর দারিদ্রতা পাশাপাশি বাস করে। ঐদিকে মন্দিরের উৎপাত আর ঢাকায় মসজিদের। ঢাকার মসজিদ্গুলোও বেশিরভাগই বাইরের পয়সায় বানানো।
ছবিগুলো অপূর্ব। ঢাকা এলে একদিনের জন্য একটা চান্স নেয়া যায় কিনা চেষ্টা কবো।
চরম দরিদ্র মানুষের একমাত্র আশা অলৌকিক কিছু ঘটে তার অবস্থার পরিবর্তন হবে অথবা কোন এক দিন কষ্টের ফল সে পাবে। তাই ধর্মকে আঁকড়ে ধরা অস্বাভাবিক না। তবে ধর্ম আর দারিদ্রের সহাবস্থান মনে হয় ধ্রুব কিছু না। মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি, ইউএই, কাতার, কুয়েতের অধিবাসীরা কি আর্থিক দীনতায় আছে? তাদের দেশে অভিবাসী শ্রমিকরা অবশ্য দরিদ্রই রয়ে যায়।
আরো দুইটা অবজার্ভেশনঃ
সংখ্যালঘুরা তুলনামূলকভাবে বেশি ধার্মিক হয়। মানে হলো গিয়ে ভারতের হিন্দুর চাইতে বাংলাদেশের হিন্দুরা ধর্মকর্ম বেশি করে, একইভাবে ভারতীয় মুসলমানেরা আমাদের চাইতে ধর্মকর্ম বেশি করে।
ধর্ম দরিদ্রের কাছে আশার আলো, আর ধনীদের কাছে স্ট্যাটাসের মুখোশ(কিছুটা জেনারালাইজেশন করলাম, তবে হাতের সব আঙ্গুল সমান না)। ধর্ম বলে কিছু নিশ্চয়ই আছে(আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস), কিন্তু আমরা কেউই তার নাগালে থাকি না।
আমাদের চিরচেনা মধ্য-উচ্চমধ্য ক্লাসটার মধ্যে শোকরানা ডকট্রিনের ব্যাপক প্রভাব দেখি আমি। একটু অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য এলেই ধর্মীয় আচারঅনুষ্ঠানের চর্চা বেড়ে যায়, এমনকি পোশাকে অ্যাকসেসরিজে ছাপ পড়তে শুরু করে। প্রবাসে তো এই চল আরও বেশী! তখন দেশ থেকে নূরানী নামাজ শিক্ষা আর মনিরিয়া তরিকত কমিটির বই আনানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়; প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ঠাকুরঘরের জিনিসপত্রও আসতে শুরু করে।
কেমন আছেন?
ব্যস্ত........... আর ভাল
এই ভাঙ্গা, লেখা কই????????
সুযোগমতো প্রিয় পোস্টে
অপশনটা খিয়ালই করি নাই! দিলো কবে?!
ছবি তো ছবি... বর্ননাতেও পুরা হিংসা লাগানিয়া পোষ্ট... এই লেখাটা পড়ে জায়গাটাতে ঘুরে আসার ইচ্ছে চলে আসে নিঃসন্দেহে!!
আল্লাহ আমারে ঐখানে যাবার তৌফিক দেক...
প্রিয় পোষ্ট!!!
হায় আল্লাহ! এই পোষ্ট আমি দেখি নাই কেনো? এ চোখ আমার এতই বেখেয়ালী?
ছবি দেখে আর বর্ণনা পড়ে চোখ , মন পুরাই মুগ্ধ। আহা যদি যেতে পারতাম!
ভাঙ্গা পেন্সিলের লেখা আর ছবি ভাল লাগলো । জেবীন -জয়িতা টেনে বের করে এটা নজরে আনায় পড়া হল । তাদেরকে ধন্যবাদ । ভাঙ্গা পেন্সিলের কাছে এ জাতীয় আরও লেখা ছবিসহ আশা করছি ।
ভাইয়া আপনার ক্যামেরার মডেল নাম্বার টা কি একটু বলবেন। ছবিগুলা অসাধারণ
মনে আছে আমরা তিন বন্ধু মিলে হঠাত প্ল্যান করে ঘুরতে গেসিলাম বিরিশিরি ,অনেক ঝামেলা ঝক্কি পেরিয়ে যখন পৌছলাম তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল.YMCA একটা ঢু মেরে বুঝলাম এই জায়গা আমাদের থাকার জন্যে না ,থাকলাম পার্শ্ববর্তী একটা হোটেলে ,আর আমরা যে একদিন ছিলাম সেই একদিন আমরা খাইসি কাছাকাছি এক ইতালিয়ান হোটেলে:P ,ভাত মুখে দিলে বালি কিচ কিচ করত .একদিন রাতে সেখানেই খেলাম পার্শ্ববর্তী নদীর বোয়াল মাছ ,নদীর নাম মনে নাই ,স্থানীয় রিকশা-চালকেরা আমাদের আশেপাশের পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখালো(এদের সাথে ভাড়া নিয়ে আগেই বোঝাপড়া করে নিবেন নিলে খবর আছে)ঐদিন পূর্নিমার রাত ছিল ,পাহাড় থেকে ফিরতে ফিরতে (বাংলাদেশ -ইন্ডিয়া বড়দের )সন্ধ্যা ,আমরা পাহাড়ের ঢালে একটা টং এ 'বেলের চা' খেলাম ,এত মজার চা লাইফে এ কমই খাইসি .....এরপর ঐদিন রাতে হোটেলে ফিরে ফ্রেন্ড এর বানানো বিশেষ পানীয় আর ধুয়া খেয়ে (
) বিছানায় লুটে পরলাম ...পরের দিন একটা ঘরের মধ্যে দিয়ে উঠে st .joseph এর গির্জা ,বিজয়পুর সীমান্ত ,চিনা মাটির পাহাড় ঘুরলাম ,মনে আছে,আধো ঘুম আধো জাগ্রত অবস্থায় পাহাড় বাইতেসিলাম আমরা ,অতপর সামনে আসল বহু প্রতিক্ষিত চিনা মাটির পাহাড়ের মাঝে সেই হ্রদ ,যার পানি দেখলেই নামতে ইচ্ছা করে,নেমেও পরলাম কালক্ষেপন না করে,আমার সাতার না জানা ফ্রেন্ডদের বললাম পাড়ে পাড়েই থাকতে কারণ পাড় এর উচু জায়গা টুকুর পরিমান খুবই সামান্য যেখান দাড়ানো যায় ,আমি ২ কদম যেতেই আপাদমস্তক ডুবে গেলাম গভীর পানিতে ....এরপর দিলাম আরাম করে ডুব সাতার ..
...যাই হোক ,লোক মুখে শুনা যায় হ্রদ তা বেশ গভীর কিন্তু কেউই সঠিক আইডিয়া দিতে পাড়ে না ...কেউ বলে ৭০-৮০ ফিট, কেউ বলে ১০০-২০০ ফিট ...যাই হোক ...ওই প্রথম আমার কোনো গভীর জলাশয়ে নামা ,তাই কিসুটা রোমাঞ্চিত হচ্ছিলাম
.আমার ধারণা পানিতে copper sulphate না ,বরং অনেক বেশি পরিমানে Calcium Carbonate আসে ,বা সোজা বাংলায় যাকে বলে চুনা পানি ,এর মধ্যে আকাশের নীল রং প্রতিফলিত হয়ে এরকম দেখায়, পানি বেশ খার ,আমরা যখন পানি থেকে উঠসি আমাদের গায়ের চামড়া জলতেসিল....যাই হোক ,ভাবসিলাম বিরিশিরি নিয়ে কিছু লিখব, আজকে তার সুযোগ হলো ,বিরিশিরিতে ঘুরে আমার মনে হইসে ওই এলাকায় মুসলমানদের সংখ্যাই বরং কম .....মনে পরে যায় পাহাড়ে বসে থাকা সেই শত-বর্ষি বৃদ্ধের কথা যাকে ওই আদিবাসীরা অনেক সম্মান করে,এবং যে গল্প শুনাতে খুব উদগ্রীব,বিনিময়ে চায় কিছু টাকা,আমদের হাতে সময় ছিল না বলে আমরা তার গল্প শুনতে না পারলেও কিছু টাকা দিয়ে আসছিলাম তাতে সে অনেক খুশি হইসিলো,তার একটা ডায়ালগ মনে পরে,ঢাকা শহর থেকে আইসো,তোমাদের থেইকা আমি ঢাকা ভালো চিনি,শান্তিনগর,ভুতের গলি,রমনা,রায়েরবাজার সব জায়াগায় থাকসি...
....ওহ হা ,নদীর নাম মনে পরসে ...যদি বিস্মৃত অ হই তবে 'সোমেশ্বরী' ছিল তার নাম......ওই নদীতে একটা নৌকা নিয়ে তার উপর রিকশা চেপে সুসং দুর্গাপুর থেকে যেতে হয় বিরিশিরি ...
....আমার জীবনে অনেক ভালো স্মৃতিগুলার একটা এই বিরিশিরি ঝটিকা সফর.....অনেকদিন পর্যন্ত এর কথা আমার মনে থাকবে....
মনে আছে আমরা তিন বন্ধু মিলে হঠাত প্ল্যান করে ঘুরতে গেসিলাম বিরিশিরি ,অনেক ঝামেলা ঝক্কি পেরিয়ে যখন পৌছলাম তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল.YMCA একটা ঢু মেরে বুঝলাম এই জায়গা আমাদের থাকার জন্যে না ,থাকলাম পার্শ্ববর্তী একটা হোটেলে ,আর আমরা যে একদিন ছিলাম সেই একদিন আমরা খাইসি কাছাকাছি এক ইতালিয়ান হোটেলে:P ,ভাত মুখে দিলে বালি কিচ কিচ করত .একদিন রাতে সেখানেই খেলাম পার্শ্ববর্তী নদীর বোয়াল মাছ ,নদীর নাম মনে নাই ,স্থানীয় রিকশা চালকেরা আমাদের আশেপাশের পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখালো(এদের সাথে ভাড়া নিয়ে আগেই বোঝাপড়া করে নিবেন নিলে খবর আছে)ঐদিন পূর্নিমার রাত ছিল ,পাহাড় থেকে ফিরতে ফিরতে (বাংলাদেশ -ইন্ডিয়া বড়দের )সন্ধ্যা ,আমরা পাহাড়ের ঢালে একটা টং এ 'বেলের চা' খেলাম ,এত মজার চা লাইফে এ কমই খাইসি....পরের দিন একটা ঘরের মধ্যে দিয়ে উঠে st .joseph এর গির্জা ,বিজয়পুর সীমান্ত ,চিনা মাটির পাহাড় ঘুরলাম ,মনে আছে,আধো ঘুম আধো জাগ্রত অবস্থায় পাহাড় বাইতেসিলাম আমরা ,অতপর সামনে আসল বহু প্রতিক্ষিত চিনা মাটির পাহাড়ের মাঝে সেই হ্রদ ,যার পানি দেখলেই নামতে ইচ্ছা করে,নেমেও পরলাম কালক্ষেপন না করে,আমার সাতার না জানা ফ্রেন্ডদের বললাম পাড়ে পাড়েই থাকতে কারণ পাড় এর উচু জায়গা টুকুর পরিমান খুবই সামান্য যেখান দাড়ানো যায় ,আমি ২ কদম যেতেই আপাদমস্তক ডুবে গেলাম গভীর পানিতে ....এরপর দিলাম আরাম করে ডুব সাতার ..
...যাই হোক ,লোক মুখে শুনা যায় হ্রদ তা বেশ গভীর কিন্তু কেউই সঠিক আইডিয়া দিতে পাড়ে না ...কেউ বলে ৭০-৮০ ফিট, কেউ বলে ১০০-২০০ ফিট ...যাই হোক ...ওই প্রথম আমার কোনো গভীর জলাশয়ে নামা ,তাই কিসুটা রোমাঞ্চিত হচ্ছিলাম
.আমার ধারণা পানিতে copper sulphate না ,বরং অনেক বেশি পরিমানে Calcium Carbonate আসে ,বা সোজা বাংলায় যাকে বলে চুনা পানি ,এর মধ্যে আকাশের নীল রং প্রতিফলিত হয়ে এরকম দেখায়, পানি বেশ খার ,আমরা যখন পানি থেকে উঠসি আমাদের গায়ের চামড়া জলতেসিল....যাই হোক ,ভাবসিলাম বিরিশিরি নিয়ে কিছু লিখব, আজকে তার সুযোগ হলো ,বিরিশিরিতে ঘুরে আমার মনে হইসে ওই এলাকায় মুসলমানদের সংখ্যাই বরং কম .....মনে পরে যায় পাহাড়ে বসে থাকা সেই শত-বর্ষি বৃদ্ধের কথা যাকে ওই আদিবাসীরা অনেক সম্মান করে,এবং যে গল্প শুনাতে খুব উদগ্রীব,বিনিময়ে চায় কিছু টাকা,আমদের হাতে সময় ছিল না বলে আমরা তার গল্প শুনতে না পারলেও কিছু টাকা দিয়ে আসছিলাম তাতে সে অনেক খুশি হইসিলো,তার একটা ডায়ালগ মনে পরে,ঢাকা শহর থেকে আইসো,তোমাদের থেইকা আমি ঢাকা ভালো চিনি,শান্তিনগর,ভুতের গলি,রমনা,রায়েরবাজার সব জায়াগায় থাকসি...
....ওহ হা ,নদীর নাম মনে পরসে ...যদি বিস্মৃত না হই তবে 'সোমেশ্বরী' ছিল তার নাম......ওই নদীতে একটা নৌকা নিয়ে তার উপর রিকশা চেপে সুসং দুর্গাপুর থেকে যেতে হয় বিরিশিরি ...
....আমার জীবনে অনেক ভালো স্মৃতিগুলার একটা এই বিরিশিরি ঝটিকা সফর.....অনেকদিন পর্যন্ত এর কথা আমার মনে থাকবে....
আপনারা যারা চীনামাটির পাহাড়, গারো পাহাড়, নীল পানির লেক বা সোমেশ্বরী নদী বলতে বিরিশিরি বোঝেন তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, বিরিশিরি দুর্গাপুর উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এবং একটি ইউনিয়ন। চীনামাটির পাহাড়, রানীখং, ভারত-সীমান্ত, সোমেশ্বরী নদী আরও যা দেখবেন সবই দুর্গাপুর উপজেলার অন্তর্গত এবং অন্যান্য ইউনিয়ন এ ।
মন্তব্য করুন