ইউজার লগইন

ভ্রমণ বিরিশিরি

সেন্টমার্টিন্স এর গভীর নীল পানি, কিংবা জাফলং এর স্বচ্ছ পানির গল্প তো অনেকই শুনেছি, কিন্তু সবুজ নীলের মিশেলে অদ্ভূত-রঙা হ্রদটার গল্প কি শুনেছেন? না শুনলে আমার লম্বা প্যাচাল শোনার আগে একনজর দেখে নিন।

 

 

নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর বিরিশিরিতে এর অবস্থান। যারা সমাজ পরীক্ষা দিতে দিতে বাংলাদেশের মানচিত্র মুখস্থ-ঠোঁটস্থ করে ফেলেছেন, তারা নিশ্চয়ই জানেন নেত্রকোণা বাংলাদেশের কোন কোণাতে অবস্থিত! যাদের এখনো মানচিত্র মুখস্থ হয়নি, তারা ঝটপট দেখে ফেলুন একবার। কনকনে শীত উপেক্ষা করে ক'দিন আগেই ঘুরে এলাম সেই কোণার জেলা নেত্রকোণার এক কোণায় অবস্থিত দুর্গাপুরের বিরিশিরি।

 

 

শুরুতেই বলে নিই কি করে যেতে হবে বিরিশিরি। ঢাকার মহাখালী থেকে বিরিশিরি কিংবা দুর্গাপুরের বাসে উঠতে হবে। বাস ভাড়া খুব বেশি না, দুই-তিনশত টাকা। বাসের যাত্রাটা নেত্রকোণার পর থেকেই খুব বাজে।  কারণ জানতে চান? একটু কষ্ট করে নিচের ছবিটায় চোখ বুলিয়ে নিন।

 

আমাদের মহান জনপ্রতিনিধিদের কাজ-কারবারের নমুনা ...

 

 

বুঝতেই পারছেন...এ অসমাপ্ত সেতুর কারণেই ওপারে দুর্গাপুরে সড়ক ব্যবস্থায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। সেই দশ কি বারো বছর আগে একবার রাস্তা তৈরি করে দিয়েই হাত গুটিয়ে নিয়েছে সরকার। রাস্তার বর্তমান যে হাল...কোমর ব্যাথা থাকলে ভুলেও ঐদিক যাবেন না, আর ব্যাথা না থাকলে ব্যাথা কোমরে নিয়ে ফিরে আসার জন্য অবশ্যই একবার ঘুরে আসবেন আমাদের মতো।

 

 

বিরিশিরি বাসস্ট্যান্ডই বাসের শেষ গন্তব্য। ঢাকা থেকে সময় প্রায় চার ঘন্টা লাগে। বাসস্ট্যান্ডের কাছেই ওয়াইএমসিএ হোস্টেলে যোগাযোগ করতে পারেন, যদি রাত কাটাতে চান। হাতে একদিন সময় নিয়ে গেলে প্রথম দিন দুর্গাপুর পৌঁছে আমাদের মতো ঘুরে আসতে পারেন বিজয়পুরের সীমান্তেও। পাহাড় আর সবুজে ভ্রম হতে পারে...বান্দরবান কিংবা রাঙ্গামাটি নয়তো?

পাহাড়ে সবুজ

 

 

দূর থেকে ভারতের বিএসএফ ক্যাম্প

 

 

আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা...চলে গেছে ভারতের দিকে
ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত, যদিও ছবি বলছে ভিন্ন কথা ...

 

 

পাহাড় ভ্রমণ শেষে ফিরে আসছি আমরা

 

 

তখন নিস্তেজ সূর্যও হেলে পড়ছিল ধীরে ধীরে

 

 

দুর্গাপুরে সরকারি একটা ডাকবাংলো আছে। যাদের সরকারি ডাকবাংলোতে থাকার সুবিধা আছে, তারা এখানেও থাকতে পারেন। ওয়াইএমসিএ হোস্টেল অপেক্ষা এ ডাকবাংলো বিরিশিরির নিকটবর্তী। ডাকবাংলোর লাগোয়া টেরেসে আবারও আরেক নাম না জানা ফুল! বারবার নাম-না-জানা ফুল বলছি বলে ভাববেন না এ ফুলগুলো খুব দুর্লভ কিসিমের। আসলে আমার ফুলের সম্পর্কে ধারণা শূন্যের সামান্য নিচে।
নাম না জানা ফুল

ফুলের কথা বলতে বলতে মনে পড়লো, পাহাড় থেকে ফেরার পথে গারোদের এক ঘরের সামনে থেকে তোলা আরেকখানা নাম না জানা ফুল! এটা কি পাতাবাহার?

নাম না জানা লাল ফুল
পাহাড় বাইছে গারো শিশু

আদিবাসীদের ব্যাপারে আমার একটা সাধারণ পর্যবেক্ষণ, তারা  উড়ে-এসে-জুড়ে-বসা এই সেটেলার আমাদের বেশ সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে দেখে। এমনকি শিশুরাও এর বাইরে নয়। ক্যামেরা দেখলেই তাদের নিষ্পাপ মুখে এক ভয়ার্ত ভাব দেখা যায়। এর পেছনেও হয়তো কোনো কারণ আছে। ক্যামেরার পেছনে থাকা মানুষের জন্য এ পরিস্থিতি বেশ অস্বস্তিকর। উল্লেখ্য, উপরের গারো শিশুর ছবিটা আমার বন্ধুর তোলা।

এবার বিরিশিরির যে মূল আকর্ষণ... নীলচে সবুজ হ্রদ, সেখানে যাবার গল্পে আসি। বাসস্ট্যান্ড থেকে ২০০-৩০০ টাকাতে রিকশা ভাড়া করে চলে যেতে পারেন চীনামাটির পাহাড়, যার বুক চিরে জেগে উঠেছে এই নীলচে সবুজ পানির হ্রদ। রিকশাওয়ালাই আপনার গাইড হিসাবে কাজ করবে। মোটর সাইকেলে করেও যেতে পারেন, তাতে সময় কম লাগবে, পয়সা বেশি লাগবে, তবে বেশিক্ষণ ঘুরতে পারবেন না। আর এইসব অভিযানে আমার কেন যেন একটু ধীরে চলতে বেশি ভাল লাগে। সূক্ষ্ণ ডিটেইল নজরে পড়ে বেশি।

যেতে পথে পড়বে সেন্ট যোসেফের গীর্জা। গীর্জাটা বেশ সাজানো গোছানো, নীরব আর খুব সুন্দর।

সেন্ট যোসেফের গীর্জা
ক্রুশবিদ্ধ যীশু

গীর্জার বিভিন্ন জায়গায় অনেক সুন্দর সুন্দর ফুলের চারা লাগানো। তা থেকেই কয়েক স্ন্যাপ!

নাম-জানি-না ফুল
সাদা গোলাপ

গীর্জার কথা বলতে বলতে আবারো অন্য প্রসঙ্গে একটু বলি। বাংলাদেশের বাইরে পা ফেলিনি বলে জানি না অন্য কোন দেশে কোন ধর্মের কি অবস্থা। কিন্তু রাঙ্গামাটি, দুর্গাপুর সহ বিভিন্ন আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার সবখানেই দেখেছি গীর্জার অবস্থান। এটা স্বীকার করতেই হবে আদিবাসীরা বছরের পর বছর ধরে উড়ে-এসে-জুড়ে-বসা এই আমাদের শোষণের শিকার। কিন্তু সেসব জায়গাতেই গীর্জার আনাগোনা দেখে মনে প্রশ্ন জাগে, শোষিতদেরই কি ধর্মের ছায়াতলে আনা সহজ? নাকি এটাও কোন পলিসি? তাই না দেখেও বুঝতে পারি এবং এ ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত, এখনকার বৌদ্ধ, মুসলমান আর খ্রিস্টানদের প্রায় সবারই পূর্বপুরুষ নিম্ন বর্ণের হিন্দু ছিল।

যাক গে, ধর্ম প্রসংগ বাদ দিই। ভ্রমণের কথা বলি। অনেকটা দূর গ্রাম্য পথ পাড়ি দিয়ে রিকশা এসে পৌঁছাবে নদীর চরে।

 বালুচর

চরে কিছুদূর আপনাকেও ঠেলতে হবে রিকশা। নমুনা নিজ চোখে দেখুন!

রিকশা ঠেলছিল বন্ধু

 অবশ্য আমার মত ক্যামেরা হাতে নিয়ে ঘুরলে এ যাত্রা বেঁচে গেলেও যেতে পারেন ;)

জীবিকার খোঁজে
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে...

কবিগুরুর কবিতা মেনে এ নদী চলেনি। শীতে এ নদীতে হাঁটু পানি। চাইলে হেঁটেই পার হতে পারেন। না চাইলে রিকশার সাথে নৌকায় আপনিও সওয়ার হয়ে যান! নদীটা অনেকটাই জাফলং এর নদীর মতো। স্বচ্ছ পানি, তলদেশ স্পষ্ট। পার্থক্য শুধু জাফলং এর পাথর, আর কিছু না।

নৌকায় নদী পাড়ি দিয়ে ওপারে গিয়ে শুরু হবে আরো দীর্ঘ রিকশা ভ্রমণ। মাঝেই মাঝেই কালভার্ট আর ব্রীজ, রিকশা থেকে নেমে কিছুদূর হেঁটে আবার রিকশা...এমনি করে চলতে হবে অনেকটা পথ।

পথের ধারে এ ফুলগুলো বেশ দেখা যায়। শুধু এই ফুলের অনেক অনেক ছবি তুলেছি আমি , বলা যায় আমার প্রিয় ফুল। এক বন্ধু জিজ্ঞেস করেছিল নাম কি, নির্মলেন্দু গূণের কাছ থেকে ধার করে বলেছিলাম,
"আমার প্রিয় দুই ফুল
জুঁই ফুল আর তুই ফুল"

তুই ফুল

নিচের ছবিটা পরিবেশ রক্ষার ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে আশা করি!

কাঠের গুড়ি

নেত্রকোণায় কাঠ পাচারের এক মজার উপায় শুনলাম। ভারতের পাহাড় থেকে গাছ কেটে কাঠের গুড়ি পাহাড় থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। ঢাল বেয়ে সে গুড়ি এসে বাংলাদেশে পড়ে। রাতে চোরাকারবারীরা এসে কাঠ নিয়ে যায়।

যাই হোক, রিকশায় চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে গেলে বুঝবেন এসে পড়েছেন হ্রদের কাছে। আমাদের পাহাড় ডিঙ্গোনোর শখ দেখে রিকশাওয়ালারা আমাদের নামিয়ে দিলেন এক পাহাড় আগেই।

এ পাহাড়ের ওপারেই হ্রদ

বলে রাখি, এ পাহাড়ও চীনামাটির পাহাড়। এই পাহাড়ের উপর থেকে দেখা যায় দূরের ঐ হ্রদ, যার জন্য শত শত কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আমরা এসেছিলাম নেত্রকোণা।

দূরে দেখা যায় নীলচে-সবুজ হ্রদ

এবার কিছুক্ষণের জন্য বকবক থামালাম। শুধুই হ্রদের ছবি...এখানে কবি(!) নীরব...

হ্রদের জলে পাহাড়ের ছায়া
হ্রদ
হ্রদের গা ঘেঁষে আবারও নাম-না-জানা কোন ফুল
হ্রদের ওপারে আমাদের অভিযাত্রী দল

হ্রদটা কৃত্তিম মনে হয়েছে আমার কাছে। খুব সম্ভবত  চীনেমাটির পাহাড়ের বুকে খনন করে বানানো। সেই কারণেই কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পানির রং এরকম হয়ে গিয়েছে হয়তো। রংটা কিছুটা কপার সালফেটের মতো ,  পানিতে কিছু পরিমাণ কপার সালফেট মেশানো ছিল বলে আমরা ধারণা করেছিলাম।

 আমার হাতে চীনেমাটি

সিরামিকের পণ্য তৈরিতে ব্যবহার করা হয় যে চীনামাটি, তার যোগান দিতে দিতে এ অঞ্চলের পাহাড়গুলো আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তবু চীনেমাটি উত্তোলন থামছে না।

চীনামাটি বয়ে নিয়ে যাচ্ছে মজুরেরা
ফিরে যাচ্ছি আমরা...
ফিরে আসার পথে এলোমেলো শাটার টিপে গেলাম। কিছু স্ন্যাপ মনে হলো দেয়ার মতো। দিয়ে দিলাম নিচে।
জীবন যেখানে কঠিন

ডিএসএলআর এর দুঃখ ভোলার অপচেষ্টা ! !

শেষে এসে অনেক কথাই বলার ইচ্ছে ছিল। পাহাড় কেটে সিরামিকের যোগান দিতে চীনেমাটির অবাধ উত্তোলন, ফলে পাহাড়ের বিলীন হয়ে যাওয়া...হ্রদের পানিতে স্থানীয়দের যথেচ্ছাচার...কিংবা পাহাড়ের গায়ে উজবুক অর্ধশিক্ষিতদের হস্তলিপি আর স্বাক্ষর কার্যক্রম... অনেক কিছু নিয়েই অনেক কিছু বলা যেত। তবে আজকাল এসবই ক্লিশে মনে হয়।  কম্পিউটার বিজ্ঞানে অস্ট্রিচ এলগরিদ্ম বা উটপাখি এলগরিদম নামে একটা একগরিদম আছে। উটপাখির নামে এলগরিদমের নামকরণের কারণ হলো, মরু ঝড়ে যখন বাতাস আর বালুর তোপে সব উড়ে যায়, উটপাখি তখন বালুতে মাথা ডুবিয়ে পড়ে থাকে। সহজ ভাষায় এলগরিদমটা এরকম---যখন এমন কোনো সমস্যা আসবে যা সমাধান করা যাবে না...তখন এমন ভাব করো যেন সমস্যাটা চোখেই পড়েনি।

কিছুই হয়নি, কিছুই হবে না...চলুন ঘুরে আসি বিরিশিরি।

পোস্টটি ২১ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

নুশেরা's picture


যেমন ভাঙ্গা পেন্সিলের লেখা, তেমনই নন-ডিএসএলআর ক্যামের ছবি।
অসাধারণ!

শেষটুকু বড় বেশী নাড়া দিয়ে যায়... এটাই ভাঙ্গা-পেন্সিলীয় বৈশিষ্ট্য, আরও চাই এমন লেখা।

==========================================
সুযোগ পেয়ে পণ্ডিতি-
হলদে ফুলটা অ্যালামান্ডা; বাংলা নাম করা হয়েছে অলকানন্দা।
লাল ফুলটা বাগানবিলাস বলেই তো মনে হচ্ছে।
সাদা গোলাপের ঠিক ওপরের ফুলটা মেস্টা/মেস্টক গাছের। এই গাছের ফুল/ফল একটু টকমিষ্টি; চাটনি-সস বানানো হয়।
"তুই ফুল"টা মনে হচ্ছে নিশিন্দা। "নিম তিতা নিশিন্দা তিতা, তিতা পানের খ'র/ তাহার চেয়ে অধিক তিতা দুই সতিনের ঘর" গান আছে একটা।
হ্রদের গা ঘেঁষে থাকা হাল্কা বেগুনী ফুলটা পুকুরপাড়েও প্রচুর হয়, নামটা বিশ্রী- দাঁতরাঙ্গা। আরেকটা নাম আছে ততোধিক বিশ্রী: লুটকি (আমার নিজ জেলায় স্থানীয়ভাবে "কাউয়ার পানিভাত" বলে; সেটা বরং বেটার)।

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


ফুলের নামগুলোর জন্য অনেক ধইন্যা! এডিট করে ঠিক করে দিচ্ছি!

সবগুলো ফুলের মধ্যে সবচাইতে ফটোজেনিক ফুল নিশিন্দা, আর মেস্টক ফুলটা সামনাসামনি দেখতে অসম্ভব সুন্দর!

~স্বপ্নজয়~'s picture


'হা' হইয়া গেলাম, অনেক সুন্দর ছবিগুলা ... এলাকাটাও অনেক সুন্দর ... যাইতে মন চাইতেছে :(

পিলাস +++++++++++++++++++

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


এলাকাটা আসলেই সুন্দর। হ্রদের খুব বেশি ছবি আসলে নাই, আমি পানির চাইতে পাহাড় আর সবুজ বেশি ভাল পাই

নীড় সন্ধানী's picture


কেবল নীল জলের সরোবর দেখার জন্যও বিরিশিরি যেতে ইচ্ছে করছে। এর আগে হাসান রায়হান ভাই লোভ দেখাইছিল দারুন এক সিরিজ লিখে, এখন ভাঙ্গা পেন্সিলের অসম্ভব সুন্দর ছবিগুলো দেখে আবারো ইচ্ছেটা মাথাচাড়া দিচ্ছে।

এইখানে ফেবারিট করার টুল নাই? এই লেখাটাকে ফেবারিটে তুলতে চাই!

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


রাঙ্গামাটির ছবিগুলা তো দেই নাই এখানে...ওইখানকার পানি দেখলেও ফিদা হইয়া যাবেন!

টুটুল's picture


যখন এমন কোনো সমস্যা আসবে যা সমাধান করা যাবে না...তখন এমন ভাব করো যেন সমস্যাটা চোখেই পড়েনি।

এই এলগরিদমটা মনে ধরছে... ভাঙ্গা পেন্সিলের লেখা নিয়ে নতুন কিছু বলার নাই :) ... পুরাতন প্রিয় মানুষ :)

স্বাগতম জানাইয়া গেলাম

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


অনেক ধন্যবাদ! আর অস্ট্রিচ এলগরিদমটা আমারও প্রিয় এলগরিদম

উটপাখির কিন্তু এরকম করার যুক্তি আছে। বালুঝড়ে ঘরবাড়ি সব উড়ে যায়, বালুচাপা পড়ে। উটপাখি তার মাথাটা বালুর মধ্যে ডুবিয়ে রাখে যাতে মাথা অনেকটা নোঙরের কাজ করে। কম্পুওয়ালারা ওইটাকে মিসইন্টারপ্রেট করে ধরে নিল যে সমস্যা হলে বালুতে মুখ ডুবায় থাকতে হবে

হাসান রায়হান's picture


চমৎকার লেখা , আর ননডিএসএলআর এর ছবিও দারুন।

১০

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


আপনার চোখের সাম্নে ঐটা কি ক্যানন এর ইওএস সিরিজ নাকি

১১

নজরুল ইসলাম's picture


"এখনকার বৌদ্ধ, মুসলমান আর খ্রিস্টানদের প্রায় সবারই পূর্বপুরুষ নিম্ন বর্ণের হিন্দু ছিল।"

তাতারারাবুগার নেতৃত্বে একদল মঙ্গোলীয়ান দূর্গম পথ পাড়ি দিয়ে এই অঞ্চলে এসে বন জঙ্গল কেটে, পাহাড় কর্ষণ করে বসতি গড়ে তোলেন। (সঠিক সময়কালটা আমার এই মুহূর্তে মনে নাই, বলতে হলে বই পুস্তক একটু ঘাঁটতে হবে)। গারো পাহাড়ের সেই আদি জনসম্প্রদায়, যাদের জাতনাম মান্দি, তাদেরকে আমরা ভুল নামে গারো আদিবাসী সম্প্রদায় বলে ডাকি। তাদের ছিলো নিজস্ব ধর্মমত এবং ভাষা এবং সংস্কৃতি।
নিম্নবর্ণের হিন্দুরা এদের কাছে গেছে অনেক পরে। আর খ্রিষ্টানরাও। আর মুসলমানরা তো সেদিন মোটে...
বিরিশিরিতে যে গীর্জাটা দেখছেন, সেটা অনেক পুরনো। এই গোটা দেশের ঐতিহ্যবাহী গীর্জাগুলোর একটা।

এখনো বিরিশিরি মধুপুর অঞ্চলে সাংসারেক (যারা কখনোই আদিধর্ম ছেড়ে অন্য ধর্মমত গ্রহণ করেননি) আছে।

"হ্রদটা কৃত্তিম মনে হয়েছে আমার কাছে। খুব সম্ভবত চীনেমাটির পাহাড়ের বুকে খনন করে বানানো। সেই কারণেই কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পানির রং এরকম হয়ে গিয়েছে হয়তো।"

চীনেমাটি তুলে তুলেই এই হ্রদের সৃষ্টি।

বিরিশিরি পর্যন্ত যখন গিয়েছিলেন তখন ব্রিটিশ বিরোধী টঙ্ক আন্দোলনের স্মৃতিতে নির্মিত রাশিমনি স্মৃতি স্তম্ভটা একবার ঘুরে এলে পারতেন

নেট স্লো হওয়ায় ছবিগুলো লোড হলো না, দেখতে পারলাম না বলে মন খারাপ। :(

যাহোক, অনেকদিন সেদিকে যাওয়া হয় না। মনটার মধ্যে আকুলি বিকুলি লাগায়ে দিলেন। আমার খুব প্রিয় একটা হারিয়ে যাওয়ার জায়গা।

একসময় বিরিশিরি কালচারাল একাডেমির প্রধান ছিলেন কবি রফিক আজাদ। একাডেমির পেছনেই ছিলো তার বাংলো। আমি একাডেমির বাংলোতেই থাকতাম। সরকারী ভাড়া ছিলো ১০ টাকা, কখনোই আমার দিতে হয়নি।
বদলে রাতের পর রাত কবি রফিক আজাদের সঙ্গে তরলযাপন আর কাব্যযাপন... আহা...
আর আর্ণিশ মান্দা। রফিক আজাদ নাম দিয়েছিলেন অহর্ণিশ মান্দা। নিজে হাতে বানিয়ে হাড়িঁয়া খাওয়াতো... সে স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে...

গেলো মাসেই ওয়ানগালা হলো... কাজের চাপে যেতে পারলাম না, মনটা তিরিবিরি করে দিলেন আপনি আজকে সকালে...

১২

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


আমি আসলে এখনকার বৌদ্ধ মুসলমান খ্রিস্টান বলতে আদিবাসী গারোদের কথা বুঝাইনি। আমাদের দেশের সাধারণ বৌদ্ধ মুসলমান খ্রিস্টানদের কথা বলেছিলাম। ভারতের অংশ থাকায় আমাদের সবার পূর্বপুরুষই হিন্দু ছিল, আর নিম্নবর্ণের হিন্দুরাই ধর্ম পাল্টে অন্য ধর্ম বরণ করে নিয়েছিল--এটা আমার ধারণা।

রাশিমণি স্মৃতিস্তম্ভটা ঘুরে এসেছি। কিন্তু ছবিতে নেই, কারণ ওইটায় বসে স্থানীয়রা রোদ পোহাচ্ছিল, সামনে গরু ছাগলও চরছিল

আপনার মন্তব্যে অনেক কিছু জানতে পারলাম! অনেক ধন্যবাদ।

১৩

সাঈদ's picture


ছবিগুলান সুন্দর ।

১৪

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


১৫

লোকেন বোস's picture


ছবিগুলো দেখে মন ভরে গেলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

১৬

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


আপনাকেও ধন্যবাদ!

১৭

শওকত মাসুম's picture


বিরিশিরিতে একবার ৪ দিন থেকে এসেছিলাম। তারপরও ছবিগুলা দেখে মন ভরে গেলো। আর লেখাও সেরম...

১৮

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


আমরা দুইদিনের জন্যে গিয়েছিলাম। তৈলের জইন্য ধইন্যা

১৯

শাওন৩৫০৪'s picture


এই বিরিশিরি যে এমন চমৎকার সুন্দর যায়গা, সেডা আগে বুঝিনাই, তাই বছর ২/৩ আগেও ভ্রমন তালিকায় এই জায়গাডা থাকতো না, কিন্তু ইদানীং দেখি বেশ আলোচনা হৈতাছে জায়গাটা নিয়া...

আর আমি যখন প্রথম এইসব ছবি দেখি, তব্দা খাইছিলাম, সত্যি...

২০

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


আমি প্রথমবার দেখে মনে করছিলাম ফটোশপ এফেক্ট। পরে যখন শুনলাম রিয়েল, তখন থেকেই চান্স খুঁজতাছিলাম! না গেলে আফসোস থেকেই যেত

২১

মেসবাহ য়াযাদ's picture


ছবি - লেখা দুইটাই দুর্দান্ত...আফসুস ! যদি এমন লেকতে পারতাম ?

২২

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


এমন লেক্তে চান ক্যালা? অন্যরকম লেকেন

২৩

নীড় সন্ধানী's picture


আপনার দুটি লেকের ছবি ছবি উইকিম্যাপিয়াতে যোগ করার অনুমতি দেবেন কি? আপনার এই পোষ্টের লিংক দিয়ে দেবো ছবির সাথে।

২৪

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


অবশ্যই দিতে পারেন। আমি নিজেও রাঙ্গামাটির ছবি উইকিমিডিয়াতে দিয়েছিলাম। এগুলাও দিব...আলসেমিতে হচ্ছে না আর কি!

২৫

সোহেল কাজী's picture


ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে সেই সাথে বর্ননাও।

সাদাগোলাপের উপরের ছবিটা সম্ভবত এক ধরনের পাট গাছ যার আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত সবই টক স্বাদ
যেতে হবে বিরিশিরি, হাটুজলা নদীতে হাটতে চাই

২৬

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


এখন আমার মনে পড়ছে, এরকম একটা ফল ডালে দেয় টক স্বাদের জন্য

২৭

তানবীরা's picture


ধর্ম আর দারিদ্রতা পাশাপাশি বাস করে। ঐদিকে মন্দিরের উৎপাত আর ঢাকায় মসজিদের। ঢাকার মসজিদ্গুলোও বেশিরভাগই বাইরের পয়সায় বানানো।

ছবিগুলো অপূর্ব। ঢাকা এলে একদিনের জন্য একটা চান্স নেয়া যায় কিনা চেষ্টা কবো।

২৮

নুশেরা's picture


চরম দরিদ্র মানুষের একমাত্র আশা অলৌকিক কিছু ঘটে তার অবস্থার পরিবর্তন হবে অথবা কোন এক দিন কষ্টের ফল সে পাবে। তাই ধর্মকে আঁকড়ে ধরা অস্বাভাবিক না। তবে ধর্ম আর দারিদ্রের সহাবস্থান মনে হয় ধ্রুব কিছু না। মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি, ইউএই, কাতার, কুয়েতের অধিবাসীরা কি আর্থিক দীনতায় আছে? তাদের দেশে অভিবাসী শ্রমিকরা অবশ্য দরিদ্রই রয়ে যায়।

২৯

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


আরো দুইটা অবজার্ভেশনঃ

সংখ্যালঘুরা তুলনামূলকভাবে বেশি ধার্মিক হয়। মানে হলো গিয়ে ভারতের হিন্দুর চাইতে বাংলাদেশের হিন্দুরা ধর্মকর্ম বেশি করে, একইভাবে ভারতীয় মুসলমানেরা আমাদের চাইতে ধর্মকর্ম বেশি করে।

ধর্ম দরিদ্রের কাছে আশার আলো, আর ধনীদের কাছে স্ট্যাটাসের মুখোশ(কিছুটা জেনারালাইজেশন করলাম, তবে হাতের সব আঙ্গুল সমান না)। ধর্ম বলে কিছু নিশ্চয়ই আছে(আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস), কিন্তু আমরা কেউই তার নাগালে থাকি না।

৩০

নুশেরা's picture


আমাদের চিরচেনা মধ্য-উচ্চমধ্য ক্লাসটার মধ্যে শোকরানা ডকট্রিনের ব্যাপক প্রভাব দেখি আমি। একটু অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য এলেই ধর্মীয় আচারঅনুষ্ঠানের চর্চা বেড়ে যায়, এমনকি পোশাকে অ্যাকসেসরিজে ছাপ পড়তে শুরু করে। প্রবাসে তো এই চল আরও বেশী! তখন দেশ থেকে নূরানী নামাজ শিক্ষা আর মনিরিয়া তরিকত কমিটির বই আনানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়; প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ঠাকুরঘরের জিনিসপত্রও আসতে শুরু করে।

৩১

কাঁকন's picture


কেমন আছেন?

 

 

৩২

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


ব্যস্ত........... আর ভাল

৩৩

নুশেরা's picture


এই ভাঙ্গা, লেখা কই????????

৩৪

নুশেরা's picture


সুযোগমতো প্রিয় পোস্টে

৩৫

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


অপশনটা খিয়ালই করি নাই! দিলো কবে?!

৩৬

জেবীন's picture


ছবি তো ছবি...  বর্ননাতেও পুরা হিংসা লাগানিয়া পোষ্ট...    এই লেখাটা পড়ে জায়গাটাতে ঘুরে আসার ইচ্ছে চলে আসে নিঃসন্দেহে!!
আল্লাহ আমারে ঐখানে যাবার তৌফিক দেক... 

প্রিয় পোষ্ট!!! 

৩৭

জ্যোতি's picture


হায় আল্লাহ! এই পোষ্ট আমি দেখি নাই কেনো? এ চোখ আমার এতই বেখেয়ালী? Sad
ছবি দেখে আর বর্ণনা পড়ে চোখ , মন পুরাই মুগ্ধ। আহা যদি যেতে পারতাম!

৩৮

নাজমুল হুদা's picture


ভাঙ্গা পেন্সিলের লেখা আর ছবি ভাল লাগলো । জেবীন -জয়িতা টেনে বের করে এটা নজরে আনায় পড়া হল । তাদেরকে ধন্যবাদ । ভাঙ্গা পেন্সিলের কাছে এ জাতীয় আরও লেখা ছবিসহ আশা করছি ।

৩৯

সাখাওয়াত's picture


Smile

৪০

সাখাওয়াত's picture


ভাইয়া আপনার ক্যামেরার মডেল নাম্বার টা কি একটু বলবেন। ছবিগুলা অসাধারণ

৪১

অতিথি's picture


মনে আছে আমরা তিন বন্ধু মিলে হঠাত প্ল্যান করে ঘুরতে গেসিলাম বিরিশিরি ,অনেক ঝামেলা ঝক্কি পেরিয়ে যখন পৌছলাম তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল.YMCA একটা ঢু মেরে বুঝলাম এই জায়গা আমাদের থাকার জন্যে না ,থাকলাম পার্শ্ববর্তী একটা হোটেলে ,আর আমরা যে একদিন ছিলাম সেই একদিন আমরা খাইসি কাছাকাছি এক ইতালিয়ান হোটেলে:P ,ভাত মুখে দিলে বালি কিচ কিচ করত .একদিন রাতে সেখানেই খেলাম পার্শ্ববর্তী নদীর বোয়াল মাছ ,নদীর নাম মনে নাই ,স্থানীয় রিকশা-চালকেরা আমাদের আশেপাশের পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখালো(এদের সাথে ভাড়া নিয়ে আগেই বোঝাপড়া করে নিবেন নিলে খবর আছে)ঐদিন পূর্নিমার রাত ছিল ,পাহাড় থেকে ফিরতে ফিরতে (বাংলাদেশ -ইন্ডিয়া বড়দের )সন্ধ্যা ,আমরা পাহাড়ের ঢালে একটা টং এ 'বেলের চা' খেলাম ,এত মজার চা লাইফে এ কমই খাইসি .....এরপর ঐদিন রাতে হোটেলে ফিরে ফ্রেন্ড এর বানানো বিশেষ পানীয় আর ধুয়া খেয়ে (Laughing out loud) বিছানায় লুটে পরলাম ...পরের দিন একটা ঘরের মধ্যে দিয়ে উঠে st .joseph এর গির্জা ,বিজয়পুর সীমান্ত ,চিনা মাটির পাহাড় ঘুরলাম ,মনে আছে,আধো ঘুম আধো জাগ্রত অবস্থায় পাহাড় বাইতেসিলাম আমরা ,অতপর সামনে আসল বহু প্রতিক্ষিত চিনা মাটির পাহাড়ের মাঝে সেই হ্রদ ,যার পানি দেখলেই নামতে ইচ্ছা করে,নেমেও পরলাম কালক্ষেপন না করে,আমার সাতার না জানা ফ্রেন্ডদের বললাম পাড়ে পাড়েই থাকতে কারণ পাড় এর উচু জায়গা টুকুর পরিমান খুবই সামান্য যেখান দাড়ানো যায় ,আমি ২ কদম যেতেই আপাদমস্তক ডুবে গেলাম গভীর পানিতে ....এরপর দিলাম আরাম করে ডুব সাতার ..Laughing out loud...যাই হোক ,লোক মুখে শুনা যায় হ্রদ তা বেশ গভীর কিন্তু কেউই সঠিক আইডিয়া দিতে পাড়ে না ...কেউ বলে ৭০-৮০ ফিট, কেউ বলে ১০০-২০০ ফিট ...যাই হোক ...ওই প্রথম আমার কোনো গভীর জলাশয়ে নামা ,তাই কিসুটা রোমাঞ্চিত হচ্ছিলাম Laughing out loud.আমার ধারণা পানিতে copper sulphate না ,বরং অনেক বেশি পরিমানে Calcium Carbonate আসে ,বা সোজা বাংলায় যাকে বলে চুনা পানি ,এর মধ্যে আকাশের নীল রং প্রতিফলিত হয়ে এরকম দেখায়, পানি বেশ খার ,আমরা যখন পানি থেকে উঠসি আমাদের গায়ের চামড়া জলতেসিল....যাই হোক ,ভাবসিলাম বিরিশিরি নিয়ে কিছু লিখব, আজকে তার সুযোগ হলো ,বিরিশিরিতে ঘুরে আমার মনে হইসে ওই এলাকায় মুসলমানদের সংখ্যাই বরং কম .....মনে পরে যায় পাহাড়ে বসে থাকা সেই শত-বর্ষি বৃদ্ধের কথা যাকে ওই আদিবাসীরা অনেক সম্মান করে,এবং যে গল্প শুনাতে খুব উদগ্রীব,বিনিময়ে চায় কিছু টাকা,আমদের হাতে সময় ছিল না বলে আমরা তার গল্প শুনতে না পারলেও কিছু টাকা দিয়ে আসছিলাম তাতে সে অনেক খুশি হইসিলো,তার একটা ডায়ালগ মনে পরে,ঢাকা শহর থেকে আইসো,তোমাদের থেইকা আমি ঢাকা ভালো চিনি,শান্তিনগর,ভুতের গলি,রমনা,রায়েরবাজার সব জায়াগায় থাকসি...Smile....ওহ হা ,নদীর নাম মনে পরসে ...যদি বিস্মৃত অ হই তবে 'সোমেশ্বরী' ছিল তার নাম......ওই নদীতে একটা নৌকা নিয়ে তার উপর রিকশা চেপে সুসং দুর্গাপুর থেকে যেতে হয় বিরিশিরি ...Smile....আমার জীবনে অনেক ভালো স্মৃতিগুলার একটা এই বিরিশিরি ঝটিকা সফর.....অনেকদিন পর্যন্ত এর কথা আমার মনে থাকবে....

৪২

অতিথি's picture


মনে আছে আমরা তিন বন্ধু মিলে হঠাত প্ল্যান করে ঘুরতে গেসিলাম বিরিশিরি ,অনেক ঝামেলা ঝক্কি পেরিয়ে যখন পৌছলাম তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল.YMCA একটা ঢু মেরে বুঝলাম এই জায়গা আমাদের থাকার জন্যে না ,থাকলাম পার্শ্ববর্তী একটা হোটেলে ,আর আমরা যে একদিন ছিলাম সেই একদিন আমরা খাইসি কাছাকাছি এক ইতালিয়ান হোটেলে:P ,ভাত মুখে দিলে বালি কিচ কিচ করত .একদিন রাতে সেখানেই খেলাম পার্শ্ববর্তী নদীর বোয়াল মাছ ,নদীর নাম মনে নাই ,স্থানীয় রিকশা চালকেরা আমাদের আশেপাশের পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখালো(এদের সাথে ভাড়া নিয়ে আগেই বোঝাপড়া করে নিবেন নিলে খবর আছে)ঐদিন পূর্নিমার রাত ছিল ,পাহাড় থেকে ফিরতে ফিরতে (বাংলাদেশ -ইন্ডিয়া বড়দের )সন্ধ্যা ,আমরা পাহাড়ের ঢালে একটা টং এ 'বেলের চা' খেলাম ,এত মজার চা লাইফে এ কমই খাইসি....পরের দিন একটা ঘরের মধ্যে দিয়ে উঠে st .joseph এর গির্জা ,বিজয়পুর সীমান্ত ,চিনা মাটির পাহাড় ঘুরলাম ,মনে আছে,আধো ঘুম আধো জাগ্রত অবস্থায় পাহাড় বাইতেসিলাম আমরা ,অতপর সামনে আসল বহু প্রতিক্ষিত চিনা মাটির পাহাড়ের মাঝে সেই হ্রদ ,যার পানি দেখলেই নামতে ইচ্ছা করে,নেমেও পরলাম কালক্ষেপন না করে,আমার সাতার না জানা ফ্রেন্ডদের বললাম পাড়ে পাড়েই থাকতে কারণ পাড় এর উচু জায়গা টুকুর পরিমান খুবই সামান্য যেখান দাড়ানো যায় ,আমি ২ কদম যেতেই আপাদমস্তক ডুবে গেলাম গভীর পানিতে ....এরপর দিলাম আরাম করে ডুব সাতার ..Laughing out loud...যাই হোক ,লোক মুখে শুনা যায় হ্রদ তা বেশ গভীর কিন্তু কেউই সঠিক আইডিয়া দিতে পাড়ে না ...কেউ বলে ৭০-৮০ ফিট, কেউ বলে ১০০-২০০ ফিট ...যাই হোক ...ওই প্রথম আমার কোনো গভীর জলাশয়ে নামা ,তাই কিসুটা রোমাঞ্চিত হচ্ছিলাম Laughing out loud.আমার ধারণা পানিতে copper sulphate না ,বরং অনেক বেশি পরিমানে Calcium Carbonate আসে ,বা সোজা বাংলায় যাকে বলে চুনা পানি ,এর মধ্যে আকাশের নীল রং প্রতিফলিত হয়ে এরকম দেখায়, পানি বেশ খার ,আমরা যখন পানি থেকে উঠসি আমাদের গায়ের চামড়া জলতেসিল....যাই হোক ,ভাবসিলাম বিরিশিরি নিয়ে কিছু লিখব, আজকে তার সুযোগ হলো ,বিরিশিরিতে ঘুরে আমার মনে হইসে ওই এলাকায় মুসলমানদের সংখ্যাই বরং কম .....মনে পরে যায় পাহাড়ে বসে থাকা সেই শত-বর্ষি বৃদ্ধের কথা যাকে ওই আদিবাসীরা অনেক সম্মান করে,এবং যে গল্প শুনাতে খুব উদগ্রীব,বিনিময়ে চায় কিছু টাকা,আমদের হাতে সময় ছিল না বলে আমরা তার গল্প শুনতে না পারলেও কিছু টাকা দিয়ে আসছিলাম তাতে সে অনেক খুশি হইসিলো,তার একটা ডায়ালগ মনে পরে,ঢাকা শহর থেকে আইসো,তোমাদের থেইকা আমি ঢাকা ভালো চিনি,শান্তিনগর,ভুতের গলি,রমনা,রায়েরবাজার সব জায়াগায় থাকসি...Smile....ওহ হা ,নদীর নাম মনে পরসে ...যদি বিস্মৃত না হই তবে 'সোমেশ্বরী' ছিল তার নাম......ওই নদীতে একটা নৌকা নিয়ে তার উপর রিকশা চেপে সুসং দুর্গাপুর থেকে যেতে হয় বিরিশিরি ...Smile....আমার জীবনে অনেক ভালো স্মৃতিগুলার একটা এই বিরিশিরি ঝটিকা সফর.....অনেকদিন পর্যন্ত এর কথা আমার মনে থাকবে....

৪৩

অতিথি's picture


আপনারা যারা চীনামাটির পাহাড়, গারো পাহাড়, নীল পানির লেক বা সোমেশ্বরী নদী বলতে বিরিশিরি বোঝেন তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, বিরিশিরি দুর্গাপুর উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এবং একটি ইউনিয়ন। চীনামাটির পাহাড়, রানীখং, ভারত-সীমান্ত, সোমেশ্বরী নদী আরও যা দেখবেন সবই দুর্গাপুর উপজেলার অন্তর্গত এবং অন্যান্য ইউনিয়ন এ ।

৪৪

আগব মানষ's picture


Love বউ নিয়া যামু....। সমস্যা হইব না তো ?

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.