বয়েজ ডু ক্রাই টু..
বাসায় মুভি নাইট ছিল আজ।
শুক্রবার দিন, সারাদিনই সবাই ফ্রি। রিল্যাক্স মোডের একটা দিন।
কিছু মুভি জমেছে দেখার মত, মুভিখোর সবাইকে একসাথে পাচ্ছিলাম না - তাই।
সারাদিনেও বেশ কয়েকবার ভেবেছি, সবাইকে নিয়ে দেখতে বসব একটা কিছু।
হয় নাই, সবাই যে যার মত ইজি কাজে বিজি।
ছুটির দিন এলেই একেকজন আমরা সবাই আলিস বালিশ।
বিকেলের দিকে একটু ঘুরাঘুরি আর কয়েক কাপ চা। ব্যাস, দিন শেষ!
রাতের খাবার খেয়ে মামা আর ভাইয়াকে নিয়ে বসলাম মুভি দেখতে।
প্রথমে ছেড়েছিলাম, 'দ্যা বিস্ট অব দ্যা সাউদার্ন ওয়াইল্ড'।
প্রিন্ট মোটামুটি, দেখে ফেলা যায় আর কি। কিন্তু কিছুক্ষণ দেখে মনে হল
একেকজনের যে উচ্চারন - এই মুভি সাবটাইটেল ছাড়া দেখাটা বোকামি হবে!
রেখে দিলেম আরও 'কোন একদিন' এর জন্য।
যাই হোক, কিছুক্ষণ এটা ওটা ঘেঁটে শেষে থিতু হলাম 'অসম্ভব'-এ এসে!
মুভির অরিজিনাল টাইটেল 'ল ইম্পসিবল' , ইংরেজিতে 'দ্যা ইম্পসিবল', এটা ২০১২ সালে ইংরেজি ভাষায় তৈরি একটি স্প্যানিশ ডিজাস্টার ড্রামা।
মুভিটার সবচাইতে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল,
মুভিটা সত্যি ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত!
২০০৪ সালের ডিসেম্বর।
ক্রিসমাসের ছুটিতে বেনেট ফ্যামিলি বেড়াতে যায় থাইল্যান্ড এর খাউ লাক।
বাবা 'হেনরি', মা 'মারিয়া' আর তাদের তিন ছেলে 'লুকাস', 'টমাস' আর 'সাইমন'।
২৬ তারিখ সকালে সমুদ্রতীরের কাছেই হোটেলের সামনের পুলের আশেপাশে চমৎকার সময় কাটছিল বেনেট ফ্যামিলির। হঠাৎ করেই একটুখানি স্তদ্ধ সময়ের পর সমুদ্রতীরের কোরাল রীফ ধ্বংস করে তাদের জীবনের ভয়ঙ্করতম সময় নিয়ে উপস্থিত হল সুনামি। সুবিশাল ঢেউ এর প্রথম ঝাপটাতেই সবকিছু লণ্ডভণ্ড, কে যে কোথায় তার কোন হদিস নেই।
আজকের আগে আসলে ওরকম ভাবে বলতে গেলে সুনামি সম্পর্কে কোন ধারণাই ছিল না, ১১৪ মিনিটের অসাধারণ মুভিটা কিছুটা হলেও সুনামি সম্পর্কে বিশাল একটা ধাক্কা দিয়ে গেল।
সুনামির প্রাথমিক ধাক্কা কেটে যাওয়ার বেশ কিছু সময় পর সুনামি সৃষ্ট বন্যায় ভাসতে ভাসতে সারা শরীরে অজস্র আঘাতপ্রাপ্ত মা মারিয়ার দেখা পায় লুকাস, বাকি পথ টুকু একে অন্যের অন্যতম সহায় হয়ে থাকবে বলে।
অপরদিকে বাবা হেনরি আর বাকি দুই ছেলে টমাস আর সাইমন। এরা আবার একবার দেখা হবার পর আবার আলাদা, বাবা একদিকে - ছেলেরা আরেকদিকে।
আস্তে আস্তে নানা নাটকীয় ঘটনার সাথে পুরো ফ্যামিলি কাছাকাছি আসতে থাকে,
বাকিটা না হয় না-ই বললাম!
আমাদের সমাজে একটা কথা খুব প্রচলিত আছে,
'বয়েজ ডোন্ট ক্রাই' - ছেলেদের কাঁদতে নেই।
আমার মতে 'বয়েজ ডু ক্রাই টু',
হোয়েন দেয়ার আর নো আদার সিঙ্গেল থিং লেফট টু ডু!
মুভিটা যখন দেখা শুরু করি সবাই শুয়ে ছিলাম, একটু পরেই আধাবসা।
অর্ধেক পার হতে না হতেই মেরুদণ্ড সোজা হাত পা শক্ত করে বসা।
হার্টের উপর দিয়ে ভালই চাপ গেছে আজ, এটা স্বীকার না করে উপায় নেই।
দুই পাটি দাত চেপে ছিল ঠোঁটের উপর,প্রায় পুরোটা সময়। মনে হয় পানি কম খাওয়া হয়েছিল আজ, ঢোঁক গিলতে সমস্যা হচ্ছিল খুব। আর ঢাকার বাতাসে যা ধুলা বালি, একটু পরপরই চোখ পরিস্কার করতে হয়। একটুতেই আজকাল চোখ লাল হয়ে যায়। একজন আরেকজনের দিকে তাকাতেই পারছিলাম না আজ, ছেলেদের চোখের পানি কাউকে দেখাতে নেই!
বাবা হেনরি চরিত্রে 'ইউয়ান ম্যাকগ্রেগর' এর অভিনয় ছিল সাবলীল। লুকাস চরিত্রে নবাগত 'টম হল্যান্ড' এর কাজ ছিল চোখে পড়ার মত তবে মুভির বেষ্ট অভিনেতা নিঃসন্দেহে মা মারিয়ার চরিত্রে অসাধারণ এক্সপ্রেশন দেওয়া 'নাওমি ওয়াটস' ।
বাচ্চাকাল থেকেই নিয়মিত মুভি দেখতে দেখতে খুব কম মুভি আসলে দেখা হয় নাই। আজকাল যে কোন ইংরেজি মুভি চ্যানেল ধরালে ৮৫ থেকে ৯০ ভাগ সময়ই দেখা যায়, যে মুভি চলছে আর যা নেক্সটে দেখাবে টা আগেই দেখা!
মুভি যে খুব ভাল বুঝি তা বলব না। অনেকের ভাল লাগা মুভিই আমার ভাল লাগে না আবার অনেকের কাছে নাম শোনা অনেক ফাউ মুভি দেখা যায় আমার খুব খুব ভাল লেগে যায়। তবে সত্যিকার অর্থে কোনটা ভাল মুভি এটা অন্তত বুঝি বলেই আমার বিশ্বাস।
আমার লাইফে দেখা সবচাইতে সেরা মুভিগুলার তালিকায় সদ্য নাম লেখানো মুভিটা দেখে উঠে এই ব্লগ লিখতে বসেছি প্রায় ঘণ্টাতিনেক হল। চমৎকার মেকিং, দুর্দান্ত সাউন্ড এফেক্ট আর অসাধারণ সব মুহূর্তের চরিত্রায়নে ভরপুর এই মুভিটা কিভাবে তেমন কোন প্রাইজ না পায়, এটাই এখনও বুঝতে পারছি না!
শেষে এসে আর কি বলব -
ইট ওয়াজ অ্যা মুভি এবাউট ফ্যামিলি,
ইট ওয়াজ অ্যা মুভি এবাউট লাভ।
ইট ওয়াজ অ্যা মুভি এবাউট প্যারেন্ট'স লাভ টু দেয়ার চিলড্রেনস,
ইট ওয়াজ অ্যা মুভি এবাউট চিলড্রেন'স লাভ টাওয়ার্ড দেয়ার প্যারেন্টস।
ইট ওয়াজ অ্যা মুভি এবাউট সারভাইবাল এন্ড
ইট ওয়াজ অ্যা মুভি - অল এবাউট লাইফ।
....
বাসায় মুভি নাইট ছিল আজ,
উই স অ্যা মুভি দ্যাট ডিফাইনস হিউম্যান লাইফ এট ইট'স বেষ্ট!
[অনটপিক/অফটপিকঃ
প্রথমত, বাংলা ব্লগের কোন লেখায় এতটা বেশি পরিমানে ইংরেজি ভাষা ব্যাবহারে আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। মাঝে মাঝে মনের যথার্থ ভাব প্রকাশের জন্য বাংলার চাইতে ইংরেজিটাই সহজ হয়ে ধরা দেয়। আর মুভির সাইড এফেক্ট হিসেবে লেখা বরাবরের চাইতেও বেশি এলোমেলো হল। কিছু করার নাই, ঘোর কাটতেছে না কিছুতেই।
দ্বিতীয়ত, পরশুই একটা হাবিজাবি পোস্ট দিছি। আজকে আবার একটা মুভি পোস্ট। দেশের বর্তমান অবস্থায় আসলে অনেকেই হয়তো এটা পছন্দ করবেন না। ব্যাপারটা মাথায় ঠিকই আছে, কিন্তু মুভিটা নিয়ে একটা কিছু লিখে শেয়ার না করলে স্বস্তি পেতাম না। ব্রেইন বুঝলেও মন যুক্তি মানতে জানে না। আবারও, আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। ]
ভাল থাকুন সবাই, সবসময়। অনেক অনেক ভালোবাসায়।
বাচা গেলো । তৃমি লিখলা দ্যা ইমপসিবল নিয়ে । আমি প্রায় মাসখানেক আগে দেখেছি । মুভিটা আসলেই কান্না আটকে রাখার মত । তুমি ভালো লিখেছ । অামি লিখলে পারতাম না ।
তোমাকে
থ্যান্কুস, জ্যোতিপু।
আরেকটা কথা, দু:খিত কেন ? কঠিন দু:সময়েও মানুষ তো একটু বিনোদন পেলে সময়টা সহজ হবে, তাই না ?
হু..এটা ভেবেই তো লেখা পোস্ট করা হল।
ভালোইতো!
দেইখা ফেলেন, আরও ভাল লাগবে।
সুন্দর পোস্ট। সুলিখিত। যদিও আমি সিনেমার দর্শক না, কিন্তু ভালো পোস্ট পড়লে সিনেমাগুলো দেখে ফেলতে ইচ্ছে করে।
ধন্যবাদ, লীনাপা। আমার পোস্টে আপনাকে দেখে খুব খুব ভাল লাগলো।
দেখে ফেলেন, এরকম কিছু মুভি প্রত্যেকটা মানুষেরই দেখা উচিৎ।
সিনেমা দেখা হয় না তেমন, আপনার পোষ্ট পড়ে মনে হচ্ছে ছবিটা খুব শীঘ্রই ডাউনলোড করতে হবে!
পড়া ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
দেখে ফেলেন একদিন সময় করে, ভাল লাগবেই - বলে রাখলাম।
ভাল থাকুন।
আমি বড় পরদায় দেখেছি এটা। দুলাল এর মেকিং ভাল লাগে নাই। ও বললো গলপ বলে গেছে শুধু সিনেমা হয় নাই এটা আর মেঘ বললো, ইনটারেষটিং না
(
কিছু বলার নাই।
বি. বা.
চলমান দেশের উপর আপনার লেখা চাই । আমরা যারা বিদেশে পড়ে আছি তাদের কথা দয়া করে একটু ভাবুন । আপনাদের পোষ্টের জন্যইতো হা পিত্তেস করে বসে থাকি ।
ধন্যবাদ !
আমার আগের লেখাটা বোধহয় আপনার চোখে পড়ে নি। আবোল তাবোল ১৫।
একটু কষ্ট করে দেখে নিতে পারেন।
আর শান্ত ভাই ও মীর ভাই এর নিয়মিত পোস্ট গুলো তো আছেই।
আপনার লেখা আমি পড়িনি এমনটা ভাবতে পারলেন ? অবশ্যই পড়েছি, তবে মন্তব্য ড্রাফ্ট করেও দিইনি, চ্যান্চুরির জন্য অভিনন্দনও দে'য়া হয়নি । নিজগুণে ক্ষমা করবেন । কি করবো ! এ ক'দিন মনটা বিষিয়ে উঠেছে । অকারণ প্রাণ ঝড়ছে ! সরকার, কর্ত্রীপক্ষ আছে কি নাই বুঝা যাচ্ছেনা । বিরোধীদল আগুনে ঘি ডালছে নিত্যদিন । হিসাব মিলাতে পারছিনে। গুলিয়ে উঠছে ঘিলু । যে মূল লক্ষ্য নিয়ে শাহাবাগ গর্জে উঠেছিল, মনে হয় সেখান থেকে ক্রমাগত তার বিচ্যূতি ঘটছে । শাহাবাগ '৭১ এর মহান নেতার প্যারালাল কেউ হয়ে উঠছে । অথচ সে অধিকার তার নাই, সে যোগ্যতাও কোনদিন হবেনা কারো । শাহাবাগ এখন ডিক্টেড করছে, নিজেকে সরকার থেকে বলবান ভাবছে.... এটা দেশ-জাতি কারো জন্য শুভ নয় ।
ভাল থাকবেন ।
আপনিও ভাল থাকুন। শুভকামনা রইল।
মুভি দেখার টাইম নাই

নতুন কিছু গান নিয়ে একটা পোস্ট দাও। তোমার বরাতে ভালো ভালো গান শোনা যায়
ভালো গান পাইতাছি না ইদানিং।
তবে কাল অবশ্য মণিকা রশিদ আপুর প্রথম এলবাম আসার কথা,
এর অপেক্ষাতেই আছি।
আবোল তাবোল ১৫ একটু দেখে নিও,
২টা ইংরেজি গান আছে -
ভালো লাগার কথা।
বিষন্ন বদনে কেন বসে আছো? কিছু পোস্ট দাও। পড়ালেখা নাই সারাদিন কর কি?
সিলেট আসলাম রিল্যাক্স করতে!
মন্তব্য করুন