দেশে আইলাম
ফ্লাইট ছিল দুপুর সোয়া দুইটাই। বেলা এগারোটায় চারটা কর্নফ্লেক্স মুখে দিয়া এয়ারপোর্টে দৌড় দেওয়ার প্রাক্কালে খিয়াল হইল ব্যাগের ওজন বেশি হইতে পারে। চাচাতরে ঘুম হইতে তুলে কানমলা দিয়া সাথে নিয়া গেলাম। এয়ারপোর্টে লাগেজ মাপতে গিয়া দেখি যা ভাবছিলাম তাই, ওজন মোটামুটি আট কেজি বেশি হয়। কাউন্টারে বসা ভদ্রলোক কেলায়িত দন্তে এবং লোলায়িত নেত্রে জানান দিল দুইশত পাউন্ড অতিরিক্ত দিলে অতিরিক্ত ঐই ওজন পরিবহনে তার কোন সমস্যা নাই। আমি জানান দিলাম আমার সমস্যা আছে। সাইডে গিয়া ব্যাগ খুলতেই চাচাতর বদনে সূর্যোদয়। যাবতীয় চকলেটের সমুদয় প্যাকেট পকেটস্থ করে সে গান ধরল, এক ব্যাগ চকলেট নিয়ে ভাইয়া তুমি কেন একা বয়ে বেড়াও ... আমায় যদি তুমি ভাইয়া ভাব কিছু চকলেট আমায় দাও ...। মনটা ব্যাজার হইলেও মুখটা মলিন হইতে দিলাম না। চকলেটের অর্ধেকটা এয়ারপোর্টে শেষ করে দিয়ে এসছি।
চেকইন টেকইন শেষে এয়ারপোর্টে ঢুকতেই দেখি সমস্ত ডিউটি ফ্রী শপ আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকিতেছে। ফাঁদে পা দেওয়ার আগেই আমার বহুদিনের নেট বান্ধবী এবং বর্তমানের ফোন বান্ধবীরে একটা ফোন দিলাম। মাশাল্লাহ ওয়েটং-এর দুই ঘন্টা নিমেষেই খতম। কথপোকথন আর এইখনে দিলাম না। জনগণ রোমান্টিক বাণীর আশায় পড়তে বসে শেষটাই আশাহত হইবে।
সহিসালামতে উড়োজাহাজ উড়াল দেওয়ার পর বুঝলাম স্কুল হলিডের সময় ছুটি নিয়া কি ভুলটাই না করছি। চারিদিকে শিশু-কিশোরের কলরব-কান্দনে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। মড়ার উপ্রে খাঁড়ার ঘা, দুবাই নামার ঠিক পূর্বমুহূর্তে শুরু হইল ঝড় বঙ্গদেশের মুড়িরটিনের মতো আমাদের মুড়িসম ঝাঁকুনি দিতে দিতে প্লেন দুবাইয়ের আকাশে ঘন্টা খানিক প্যাঁচ খাইলো তবু ল্যান্ডিং পারমিট পায় না। ঐদিকে আসে পাশের মহিলা এবং পুরুষ সকল গর্ভবতীদের মতো সগর্বে বমি শুরু করে দিছে। বমির গন্ধে পৃথিবী গদ্যময়। ঝড়ের কবলে পড়ে আল্লাহরে ডাকি নাই কিন্তু এইবার বমির কবলে পড়ে আল্লাহরে ডাকা শুরু করলাম, ইয়া রাব্বুল আলামিন, আমারে এই বিপদ হইতে রক্ষা করো মাআবুদ।
দুবাইতে কানেক্টিং ফ্লাইট ছিল। মনে বড় আশা ছিল ট্রানজিটের দুই ঘন্টা ডিউটি ফ্রীতে চক্কর মারবো। কিন্তুক হাতে সময় ছিল মাত্র তিরিশ মিনিট। দৌড় দিয়া প্লেনে উঠলাম। দুবাই হইতে ঢাকা তেমন কোন সমস্যা হয় নাই। শুধু কিছুক্ষণের জন্য শ্রমিক নেতা হইছিলাম। গোটা দশেক ফর্ম ফিলাপ করে দিতে হইছে
ঢাকায় নামার পর দেখি আমার গুণধর ভাই আমারে নিতে আসে নাই। ফোন দিলাম, সে ঢাকার বিখ্যাত ট্রাফিক জামের অজুহাত দিল। তারে দুইটা ঝাড়ি দিয়া যেখানে আছে ওখানেই থাকতে বলে নিজেই ভাড়া গাড়িতে ভর্তি হবার পর বুঝলাম কাহিনী সত্য। গাড়ির ড্রাইভারের সাথে এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মত বিনিময় করলাম আমি। ভাইরে উদ্ধার করতে গিয়া দেখি সে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মনের সুখে বিড়ি টানতেছে। আমাকে দেখেই বিড়ি লুকাইল। নিজেকে বেশ বড় ভাই বড় ভাই মনে হল তখন।
তারপর আর কি মেলা ত্যাগ তিতিক্ষার পর অবশেষে বিকাল তিনটা নাগাদ বাড়ি পৌঁছালাম। অতঃপর বৈদেশে যা করি এইখানেও তাই শুরু করেছি। নেটে গেঁজানো।
ভাইজান কি জামাই-ষষ্ঠীতে অংশগ্রহনের জন্য আসছেন?
ভাই কিরাম আছেন? আপনেরে দেখে ভালো লাগলো। যেহেতু দেশে এসেও নেটবাজি করছেন, সো স্বর্গে গিয়েও তাই করবেন। বোঝা যায়। সেই হিসেবে আপনি ঢেঁকি গোত্রীয় মানুষ। অতি উত্তম।
জামাই ষষ্ঠী কবে? @ রাসেল ভাই
তা দিয়ে তোমার কি দরকার ?
বিশেষ কোনো দর্কার নাই। জানি না তাই
আমি নিজেও জানি না।

দেশের পোলা দেশে আইছে, তারে তো আর 'স্বাগতম' বইলা সম্ভাষণ জানানো যায় না!
ভাই কিরাম আছেন? আপনেরে দেখে ভালো লাগলো। যেহেতু দেশে এসেও নেটবাজি করছেন, সো স্বর্গে গিয়েও তাই করবেন। বোঝা যায়। সেই হিসেবে আপনি ঢেঁকি গোত্রীয় মানুষ। অতি উত্তম
ভাই কিরাম আছেন? আপনেরে দেখে ভালো লাগলো। ঢাকাবাসী আপনার পথ চেয়ে আছে।
আপনেরে দেখনের অনেক খায়েশ আমার।
যদিও বৈদেশ থাকা প্রায় সবতেরে দেইখ্যা এবং
তাগো কার্যকলাপের কারনে শত করা ৯৯ ভাগ হতাশ আমি।
আশা করছি আপনেরে দেখা, গ্যাজানো (যদি সুযোগ হয়)
এবং চা-বিড়ি খাওনের পর আমার ধারনা পাল্টাইবো...
কবে, কখন আর কোথায় এট্টু জানাইয়েন।
ভাল থাইকেন।
এই ভাবে অপমান!!!!! জুতাপেটা করতেন সেদিন তাও ভালো ছিলো।তাইবলে এই ভাবে অপমান।কষ্ট পাইলাম দাদাভাই। কষ্ট পেলাম।

এই পোস্ট পৈড়া আম্রা বোজ্লাম ...
১। মানু আমাগোরে কোন চকলেট খাওয়াইপে না
২। সে ডিউটিফ্রি সপ থেকে আমাগো লাইগ্গা কিছু আন্তে পারে নাই
৩। এই পোস্ট বান্ধবিগো দেখাইয়া কইবো যে, তার করুন হিস্টোরি
মানু কেএপ্সি আছে না? তারাতারি ঢাকায় আসো
রায়হান ভাই কুথায়?
এমিরেটসে গেছো মনে হয়।
লাইনটা দারুন লাগলো। কর্ণফ্লেক্স মুখে না দিলেও চলতো, ফ্লাইটেতো কিছু দিবেই
আইছেন-ই যখন, তাইলে ওয়েলকাম
মন্তব্য করুন