বখে যাওয়া দিনলিপি
বহু বছর পর আজ বাবুর সাথে কথা হল। ভালই আছে জানলাম। শেষবার যখন দেখা হয়েছিল বড় নড়বড়ে অবস্থার ভিতর দিয়ে যাচ্ছিল ও। চাকরী বাকরি নেই, ওদিকে চৈতীর বাবা-মার বিশাল চাহিদা। শেষ পর্যন্ত এক যুগের সম্পর্কটা ছিন্ন হল। আকণ্ঠ ডুবে যেতে দেখলাম ওকে ….. ক্ষোভ, দুঃখ, নেশার মধ্যে। তখন আমরা বন্ধুরা বিস্তৃত মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছি। দূর থেকে আরও দূরে ক্রমান্বয়ে সরে সরে যাচ্ছি। হাত বাড়ালেও পরস্পরের নাগাল মেলে না। আর তাই ওকে ডুবে যেতে দেখলাম, ডুবে যেতে দিলাম।
ক্ষত চিরস্থায়ী হয় না। গভীরতার মাপকাঠিতে ক্ষতচিহ্নের গুরুত্ব বাড়ে হয়ত, তবে রক্তক্ষরণ চিরদিনই থেমে যায়। এটাই বেঁচে থাকার নিয়ম। ওর ক্ষতটাও শুকিয়ে গেছে জানলাম। কবিতার সাথে ভাব হয়েছে। মাস দুই পর বিয়ে করে ফেলবে। শুনে ভাল লাগলো। আত্মগ্লানি থেকে খানিকটা মুক্তি পেলাম।
বাবু ভাল আছে।
রাসেলের সাথে কথা হল। বাবা মারা যাবার পর উড়নচণ্ডী স্বভাবের বিলাসিতা ওর পোষাত না। একটা সংসারে মা আর তিন বোনের পুরো দায় ওকে হিসেবি করে ফেলেছিল। তবু হিসেব করে সে আমাদের জন্য খানিকটা সময় সব সময়ই বের ফেলতো। সেইটুকু সময়ের ভিতরেও নানান হিসাব নিকাশ। বাজারের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় চট করে এক হালি ডিম কিনে ফেলা অথবা ওষুধের দোকানে ধর্না দেয়া। এত হিসাব নিকাশের পরেও রাসেল একটা অংকে ভুল করে ফেলল। প্রেমে পড়ে গেল ওর এক ক্লাসমেটের। জানা ছিল এই অংকের ফলাফল শূন্য। আর তাই মনের উজানের বিপরীতে ওকে দিনের দাঁড় বেয়ে যেতে দেখলাম, দাঁড় বেয়ে যেতে দিলাম।
তবু ক্ষত চিরস্থায়ী হয় না। রাসেল বিয়ে করেছে, এক সন্তানের বাবা হয়েছে। ওর স্ত্রী পালিশ করা বাংলায় কথা বলে না, নখে নখপালিশ মাখে না, কবিতা লিখে না। তবু রসেল রাসেলের মতো করে ভাল আছে।
রাসেল ভাল আছে।
আমাদের দলটাতে সবচেয়ে সফল জুটি ছিল ফিরোজ আর সুরভী। ছোট মফস্বল শহরটার অন্যতম ধনী ব্যক্তির সন্তান, কোন কিছুর অভাবই ওকে ছুঁতে পারতো না। এমন ছেলেরা আমাদের মত ছাপোষা মধ্যবিত্তের বন্ধু হয় হয়ত কিন্তু প্রাণের বন্ধু হয় না কখনো। তারপরেও ফিরোজ আমাদের প্রাণের বন্ধু হয়েছিল। ওর মিতব্যয়ী সংলাপে কখনো কোন আত্মম্ভরিতার ছায়া পড়ত না।
ফিরোজ আর সুরভী বিয়ে করেছিল। কোথাও কোন কিছু নষ্ট হবার কোন কারণ ছিল না। তবু ফিরোজটা কেন জানি নষ্ট হয়ে গেল। এখন সে দিনরাত ফেন্সিডিলে ডুবে থাকে। সুরভী ওর বাবা-মা’র কাছে চলে গেছে, হয়ত যে কোন দিন ডিভোর্স লেটার পাঠাবে।
ফিরোজ ভাল নেই ….
আহারে ! নেশা মানুষের সব কিছু ধংষ করে ফেলে, কোন ই নিস্তার নাই
হ। সেটাই। আ
দারুন লাগলো!
থ্যাংকু
আহারে! শেষটাতে মন খরাপ লাগলো ।
এমন সুন্দরভাবে নিজের কথাও কিছু বলো !
আমার কথা বলতে গেলে ঘুম চলে আসবে
খুব ভাল লাগলো লেখা, শেষটায় মন খারাপ করে দিলেন।
মন খারাপ করিয়ে দেয়ার জন্য সরি আছি
আপনার লেখার হাত চমৎকার। নির্ভুল বানান। ভাষাও সুন্দর। প্রতিভার অপচয় না করে আরো আরো লিখবেন।
এই প্রথম কেউ আমার বানানের প্রশংসা করল। সবাই বলে আমি নাকি ভুল বানানে লিখি
ঝকঝকে লেখা... মানু... নিয়মিত হও
নিয়মিয় হতে চাচ্ছি। কিন্তু ব্যস্ততা আর ফেসবুক আমাকে দেয়না অবসর
ঝকঝকে তকতকে লেখা।
ঝ্যাংকু ত্যাংকু
এই বালকটি বালিকাদের পিছনে না ছুটিয়া সাহিত্যের পেছনে কিছুটা সময় দিলে বাংলা সাহিত্য আরেক উজ্জ্বল তারকার সন্ধ্যান পাইতো।
মানব জীবনে বালিকা না থাকলে সাহিত্য বাইর হইবোনা যে
নিজের জন্যই সময় হয়ে উঠে না ভাই
চমত্কার।
ধন্যবাদ
মন্তব্য করুন