নিউইয়র্কের সামার
বলা যায় নয় মাস শীতের শহর নিউইয়র্ক।হাড় কাঁপানো শীতের পর বসন্তের আমেজ একটু খানি দিয়েই অনেক প্রত্যাশিত গরমের দেখা মিলে জুন মাসে। অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকে এই শহরের মানুষেরা অল্প দিনের এই সামারের জন্য।সামার আসলেই ঝকঝকে রোদের তাপ যেমন বাড়তে থাকে এই শহরের মানুষগুলিও হাসি খুশি আর আনন্দে মেতে উঠে।
পুরো শীতকাল জুড়ে সব গাছ গুলি ন্যাড়া হয়ে কঙ্কালের মত সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকে। রাস্তা ঘাটে প্রয়োজন না হলে মানুষ খুব কম বের হয় , বরফ জমে পিচ্ছিল হয়ে থাকে সব কিছু। অনেক শীতের কাপড়, টুপি, মাফ্লার, মোটা জুতা, মোজা অনেক কিছুর ভিতর নিজেকে লুকাতে হয়, আকাশ হয়ে থাকে প্রায় সময় গোমড়া মুখে। যখন তখন শুরু হয়ে যায় হীম শীতল বাতাস কিংবা বরফ পড়া।এই সময়ে ঠেকায় না পড়লে ঘর থেকে বের হতেই ইচ্ছা করেনা। যদি জীবিকার প্রয়োজন না হত তাহলে আমি এই সময়ে ঠিক দেশে গিয়ে কাটিয়ে আসতাম, কিন্তু উপায় নাই গোলাম হোসেন।
অনেক আকাঙ্খিত সামার এখন আমাদের দোর গোড়ায়। আর তাকে অভ্যর্থনা জানাতে যেনো পুরো শহরবাসি হুমড়ি খেয়ে পড়েছে।পুরো শহর , রাস্তা ঘাট, বাড়ীঘর, গাড়ি ঘোড়া সব পরিস্কার ঝকঝকে তক্ তকে, আর তার আলামত দেখা যায় মানুষের চোখে মুখে ও। হাসি মুখ, হাল্কা কাপড় চোপড় পড়তে পারার আনন্দ, পার্কে বেড়ানোর আনন্দ। ছুটির দিনে দল বেঁধে বার বি কিউ করার আনন্দ, বাগান করার তোড় জোড়, মাছ ধরা, বোট রাইড, অন্য শহরে বেড়াতে যাওয়ার আনন্দে বিভোর থাকে সবাই। সব গাছগুলিতে পাতায় ভরে গিয়ে , ফুলে ফুলে ্রঙ্গিন হয়ে অদ্ভুত আর মোহনীয় রুপ ধারন করে পুরো শহর।
শীতকালে যেমন হাড় কাঁপানো শীত থাকে, গরমকালে তেমনি অসয্য গরম পড়ে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল এত গরমেও কিন্তু দেশের মত শরীরে ঘাম হয়না, আঠালো ভাব ও হয়না।রোদে দাঁড়ালে গা পুড়ে যায় কিন্তু একটু ছায়াতে গেলেই আবার আরাম লাগে। এত গরমে মানুষ হাল্কা কাপড় পড়লেও সাথে একটা পাতলা জ্যাকেট বা সুয়েটার রাখতে ভুল করেনা কারণ বাসে, সাব-ওয়েতে কিংবা কাজের যায়গায় এয়ার কুলার এত ঠান্ডা যে সার্টের উপর কিছু পড়তে হয় নইলে কাঁপুনি ধরে।
এই সময়ে পার্কে হাঁটতে খুব আরাম। সারি সারি গাছের পাশ দিয়ে হাঁটার জন্য আলাদা ট্রেইল আছে, আবাল বৃদ্ধ বনিতা সবাই হাঁটছে, দৌড়াচ্ছে, বাইক চালাচ্ছে,কারো সাথে চোখাচোখি হলে মাথা নুয়ে একটু হাসি দিয়ে আবার যে যার পথে।নেই কোন কথার আওয়াজ, হৈ চৈ, চা ওয়ালা কিংবা কোন খাবারের দোকান। শোনা যায় শুধু পাখির কল কাকলি।শুন সান নিরবতায় এক ধরনের প্রশান্তি আর আবেগ চলে আসে মনে, কিন্তু আবেগ আসলে ও আমার গবেট মাথায় কোন কবিতা আসেনা। নিরস মানুষ আমি। প্রকৃতির সৌন্দর্য কবিতার ভাষায় বর্ণনা করতে পারিনা।
শুধু এইটুকু বলতে পারি, অনেক গরমে অস্থির লাগে, তবুও সেটা সেই কঠিন ঠান্ডার চেয়ে অনেক মধুর। অনেক ভালবাসি এই স্বল্প সময়ের গরমকাল।
ভাল লাগল। অনেক কিছু জানলাম। তাই মনে হল,
অন্ত বিহীন পথ পেড়িয়ে এসে মনে হল,
সকল দেশের সেরা সে যে আমার জন্ম ভূমি। সে যে,
তাই যদি আমি বিশ্বাস করি না, তবু ও বলছি।
আমি যদি আসি ফের এ ধরায়,
তা যেন হয় এ গরীব মায়ের ঘরে, এ বাংলায়।
আহসান হাবীব ভাই, আমার ভুল ভাল গরীবি লেখা কষ্ট করে পড়ার জন্য অনেক খুশি হলাম। ধন্যবাদ !!
উপভোগ করেন!
এ জিনিসটা আমাকে খুব ইরিটেট করে, এতো হাই এসি দিয়ে রাখে, কোন আরাম নেই
মন্তব্য করুন