যদি অনামিকা বড় হয় তাহলে
পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে কোনো বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রণয়ন করতে হলে স্যাম্পলিং এর হার কি রকম হওয়া উচিত, ঠিক কতজনকে নিয়ন্ত্রিত ভাবে ডাটা হিসেবে গ্রহন করলে সেটা প্রতিষ্ঠিত হয়ে উঠবে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসেবে এটার কোনো নির্ধারিত সীমা না থাকায় প্রায় নিয়মিতই বেশ অদ্ভুত অদ্ভুত বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব পত্রিকায় ছাপা হয়। সেসব ফাজলামি প্রশ্রয় দেওয়ার কারণ আমি জানি না কিন্তু যেকোনো কিছুকে বিজ্ঞানসম্মত কওরে তুলবার এই দুর্বুদ্ধি আমার ভেতরে বিব্রতকর অনুভুতির জন্ম দেয়। বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে আমার নিজস্ব ভাবনা আহত হয় ভীষণ ভাবে।
আজকের প্রথম আলোর প্রথম পাতায় এবং ডেইলী স্টার প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণা প্রতিবেদনের সারাংশ " যেসব পুরুষের হাতের অনামিকা তর্জনীর চেয়ে লম্বা, নারীর কাছে তিনি তুলনামূলকভাবে বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারেন।" সংবাদটা পড়ে প্রথমেই মনে পড়লো হাবিব মহাজনের কথা।
হাবিব মহাজন বেশ কয়েক বছর আগে একটা ব্লগ লিখেছিলো যৌনকামনা এবং অসহ্য মাথাব্যথা নিয়ে, সে সময় কোনো একটি মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হাবিব মহাজন লিখেছিলো সে চাইলেই দেশের যেকোনো পত্রিকায় এই প্রতিবেদনটি ছাপাতে পারবে। কথাটা মিথ্যা নয়।
নারীর কাম্য পুরুষ হয়ে উঠতে অনেক রকম কসমেটিক সার্জারি করছে পুরুষ, কেউ কেউ পুরুশাঙ্গের দৈর্ঘ্য নিয়ে অত্যাধিক হীনমন্যতার ভুগে সেখানেও সার্জারি করেছে, ভায়াগ্রা আবিস্কৃত হয়েছে এইসব যৌনমিলনে "ব্যর্থ" পুরুষদের পুরুষত্ব এবং পৌরুষ ধরে রাখতে, শেষ পর্যন্ত পেট আর চেটের বাইরে নতুন কোনো ভাবনা ভাবতে ব্যর্থ হয়েছে মানুষ।
পরিসংখ্যানে অনেক কিছুই পরিমাপ করছে মানুষ, পুরুষের ঘামের গন্ধ মেয়েদের যৌনকামনা বাড়িয়ে দিতে পারে এমন পরিসংখ্যানিক সত্যের পর পুরুষের ঘামের গন্ধসমেত বিশেষ সুগন্ধী বাজারে এসেছে।
কেউ বলেছে যেসব পুরুষের কিংবা যেসব মানুষের চেহারায় ভারসাম্য আছে তারা অধিকতর আকর্ষণীয় বিপরীত লিঙ্গের মানুষের কাছে, কিন্তু যাদের চেহারায় ভারসাম্য নেই তাদের প্রতি আকৃষ্ট সমলিঙ্গের মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে প্রতিদিনই।
মেয়েদের স্তনের আকার ও আকৃতি তাকে যৌনাবেদনময়ী করে তুলতে পারে এমন ধারণায় নিজের যৌনাবেদন বাড়াতে অনেকেই অপারেশন টেবিলে শুচ্ছেন, সিলিকন ইমপ্ল্যান্ট করছেন, এই কসমেটিক সার্জারি শেষ পর্যন্ত নিজের যৌনাবেদন বাড়ানোর একটা পদ্ধতি হিসেবেই অধিকতর গ্রহনযোগ্য হয়েছে।
অনেক আগে মানুষের ধারণা ছিলো অপ্রাপ্ত বয়স্ক অনাঘ্রাতা বালক বালিকার সাথে সঙ্গম করলে পুরুষের যৌনদুর্বলতা এবং অন্য সব যৌনব্যধি সেরে যায়, ইউরোপ আমেরিকা থেকে হাজার হাজার মানুষ এসেছে দরিদ্র দেশগুলোতে সেক্স ট্যুর করেছে, পর্যটন ফুলে ফেঁপে উঠেছে, সেসব দেশের বার্ষিক আয় বেড়েছে কিন্তু একই সাথে এইডস আর মানসিক অবসাদগ্রস্ত কিশোর কিশোরী এবং পতিতার সংখ্যা বেড়েছে সেসব দেশে। রাষ্ট্রকে আইন করে শিশু নির্যাতন বন্ধ করতে হয়েছে।
পরিসংখ্যান এবং এই হাস্যকর পরিসংখ্যান যখন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় সেটার ভিত্তিতে মানুষের ভাবনা বদলে যায়, একই সাথে সেটা নতুন ধরণের উন্মাদনের জন্ম দেয়। আপাতত অনামিকার দৈর্ঘ্য এবং আকর্ষনী ক্ষমতার এই যোগসাজেশের সংবাদ পড়ে মনে হলো মানুষ এরপর ধনের দৈর্ঘ্য বাড়ানোর সাথে সাথে অনামিকার দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে মেয়ে পটানোর চেষ্টা করবে। হয়তো অনামিকা এবং তর্জনীর দৈর্ঘ্যের অনুপাত লিখে কেউ পত্রিকায় প্রেমিকা চেয়ে বিজ্ঞাপন দিবে, পরবর্তীতে কোনো রাষ্ট্রনেতা অনামিকা উঁচিয়ে রাষ্ট্রবদলানোর শ্লোগান ঝাড়বে, হয়তো এভাবেই দেশের অর্ধেক নারীর ভোট পেয়ে যাবে সে।
যারা সাধারণ মানুষ তারা তর্জনী আর অনামিকা দেখবে আর নিজের মাথাব্যাথার কথা লজ্জায় অন্য কাউকে জানাতে পারবে না।
এইচআইভি কন্সপিরেসী নিয়াও কিন্তু ভালোই আলোচনা শুরু হইছে পশ্চিমে...
পোস্টটারে অনেক প্রয়োজনীয় মনে হইলো।
আমার অনামিকা তো তর্জনীর চেয়ে লম্বা। আমার তো লাভও হলো না, love-ও হলো না।
আনিস ভাই কিভাবে বুঝলেন,
কথা বলার সময় হাতের আংগুল না দেখাইলে মেয়েরা বুঝবে কিভাবে
কথা বলার স্টাইল বদলানোর কথা ভাবেন এখন
আজকে থেকে আমি আমার অনামিকার স্থান বদলাইয়া দিলাম। আমার মধ্যমা এখন থেকে অনামিকা। দেখি কি হয়
সরি, মধ্যমা না, তর্জনি হবে। ভাল কথা, কোনটা অনামিকা আর কোনটা তর্জনি, তাই তো জানি না।
তর্জনি কোনটা জানিনা, তয় অনামিকা হৈলো সেই মাইয়া যার লাগে আমার বিয়া হৈলেও হৈতে পারতো
মেসবাহ ভাই এখন কি অফিসে আছেন, তাইলে অফিসেই থাকেন, বাসায় গেলে ঢুকতে পারবেন বইলা মনে হইতেছে না।
মাসুম ভাই
তর্জনী হইলো বৃদ্ধাঙ্গুলির পাশে যেইটা, যা উচিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা ভাষণ দেয়, আর অনামিকা হইলো এনগেজমেন্ট রিং পরে যেই আঙ্গুলে।
মধ্যমা কোনটা?
এইবার বুঝছি মাইয়ারা পাত্তা দেয়না কেন, যাই সার্জারী করাইয়া আসি!
গুড, এখন থেইকা মেজারমেন্ট টেইপ পকেটে নিয়া ঘুরুম। কারো সাথে পরিচয় হইলে প্রথমেই তার অনামিকার মাপ নিবো, তারপর ঠিক করব সে আমার কাছে আকর্ষনীয় কিনা।
স্মার্ট লেখা। পর্যবেক্ষণে থাকলো
স্মার্ট কমেন্ট, মনে থাকলো
এইখানে একখান ঘুষণা দিয়া রাখি আমি আমার আঙ্গুল গুলার ভিত্রে সেন্টারের আঙ্গুলটারেই অনামিকা বলি
ঘুষণা দিয়া কুনো লাভ হৈছে
এখন পর্যন্ত কুনু আওয়াজ পাইনাই
অফিস থেকে আসার সাথে সাথে আমার উনির অনামিকার দৈর্ঘ্য দেখলাম। কি পাইলাম তা বলবো না----
ঐ মেজারমেন্ট টেইপ'টা কই রে?
অবশ্য মাপমাপির কি দরকার? আমি নিশ্চিত আমার জামাই'র অনামিকা তর্জনীর চেয়ে লম্বা। তা না হলে, এত মাইয়া'র লগে ঘুরার চান্স পায় কেম্নে
অনামিকা হৈলো তমালিকার ছুডু বইন ।
আমার ক্ষেত্রে ঘটে নাই। কারো ক্ষেত্রেও ঘটতে দেখি নাই। স্মার্ট পোস্ট
১. আঙ্গুল গুনছি- বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ, তর্জনি, মধ্যমা, অনামিকা, কনিষ্ঠা। আমার তর্জনির চেয়ে অনামিকা বড়।
২.
এই কথা আপনি কেমনে বললেন বস? এগুলোর তো নির্ধারিত নিয়মকানুন আছে? পরিসংখ্যানের কাউকে জিজ্ঞাসা করলেই পেয়ে যাবেন। কেউ সেটা প্রয়োগ না করলে তা ভিন্ন ব্যাপার। আপনার কাছ থেকে এই লাইনটা আশা করি নাই।
এই গবেষণায় অংশ নিয়েছে একশর কম ছাত্রী, তারা সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, এটা যখন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তখন স্যাম্পলিং রেট নিয়া প্রশ্ন তৈরী হয়, সিলেক্টিভ স্যাম্পলিং, লোকাল স্যাম্পলিং, এইসব জিনিষের কোনটা কোনটা একশ জনের নীচে নিয়া প্রতিনিধিত্বশীল হইতে পারে আমার জানা নাই।
সেইটা তো অন্য প্রশ্ন। ৩০ জন নিয়াও রিপ্রেজেন্টেটিভ হৈতে পারে, আবার ৭০০০ জনেও রিপ্রেজেন্টেটিভ নাও হতে পারে। কিন্তু আপনি যেভাবে বলসেন এইখানে, তাতে স্যাম্পলিং ফ্রেম ঢালাওভাবে প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়। আমি আপত্তি কর্সি সেই জায়গাটাতে।
*
আর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে যদি বলি, গবেষক কাজ করে একটা, এটার ইন্টারপ্রিটেশন হয় অন্যভাবে- যার দোষ পরে গবেষকের উপরে গিয়ে পড়ে। এখানেও সেরকম কিছু হলো কিনা ভাবছি।
কেউ একটু আমার আঙুল মাইপা দিবে?
আমি নিশ্চিত (কেমনে নিশ্চিত তা নিজূণে বুইঝা লন ) চাইলে ঐ একই স্যম্পল ডাটা ব্যাভার কইরা প্রুভ করা যাইব যে যাগো ফার্স্ট নেম ''পি'' দিয়া শুরু হয় তাগোরে মেয়েরা বেশী পছন্দ করে!! কিংবা চাইলে এইটাও প্রুভ করা যাইবো যে যাগো জন্ম নভেম্বরে তাগো মেয়েরা বেশী লাইক করে .. কিংবা চাইলে প্রুভ করা যাইবো... কিংবা... কিংবা... সবই ঐ একই স্যম্পল ডাটা দিয়া
থ্যংকিউ পোস্টের জন্য...
মানুষের চেহারায় ভারসাম্য আছে তারা অধিকতর আকর্ষণীয় - কথাটায় মনে পড়লো, কই জানি পড়ছিলাম যে, এই মাপকাঠিতে গায়িকা শানায়া টোয়েন নাকি পারফেক্ট ফেইস!!...
লেখা ভালো লাগছে...
গবেষণার বিষয় খুঁজে পাইতেছে না লুকজন, তাই এইসব নিয়া কইরাকাইটা খাইতেছে! তাগো ভাত মারার কি দরকার রে ভাই!?
মন্তব্য করুন