প্রবাসী বাঙালনামা
ব্লগ না থাকলে এত পদের মানুষ দেখা হতো না। বাংলা ব্লগ মানুষ এবং মানুষের ভন্ডামী প্রকাশের সবচেয়ে সাবলীল মাধ্যম। মানুষের নিজস্ব সীমাবদ্ধতা আছে, ক্ষুদ্রতা আছে কিন্তু হাতে কিবোর্ড আর ব্লগে লেখার এক্সেস থাকলে এরা সবাই মহাপুরুষের খোলস লাগিয়ে কিবোর্ড হাতায়।
লেখা যে অর্থে চরিত্র নির্মাণ, সুতরাং কিবোর্ড হাতে নিয়ে সবাই নিজের সৎ চরিত্র নির্মাণের বিভিন্ন প্রচেষ্টা করতে থাকে, এবং কয়েকদিন পরে এরা আবশ্যিক ভাবেই ধর্মপ্রচারে লিপ্ত হয়, তাদের ব্যক্তিগত ভালো লাগা মন্দ লাগাকে সামষ্টিক ভালো লাগা মন্দ লাগায় পর্যবসিত না করা পর্যন্ত এর বিরাম নেই।
এটা নোংরা, ওটা খারাপ, এ কামুক ও লোভী ছক করতে করতে যারা নিজের অবসরে মানুষের নোংরামীর গবেষণা করে, তাদের লক্ষ্য করে একজন বলেছিলো এদের দেখে অবাক লাগে, এরা পেটে গু নিয়ে ঘুমায় কিভাবে? এরা কখনও আল্লা হইলে পেট আর পাছা ছাড়া মানুষ তৈরি করতো, সেই মানুষের গলা থাকতো, বুক থাকতো আর দুইটা পা থাকতো। প্রজননের যেমন তীব্রতা তাতে আমার ধারণা এদের আল্লাহর উপরে কারিগরি ফলানোর সুযোগ দিলে এরা প্রত্যেকেই নিজেদের জন্য এক জোড়া ধনের আবদার করতো। কাজে লাগুক আর না লাগুক সুযোগ যখন পেয়েছি বাড়তি একটা রেখে দিতে সমস্যা নেই কোনো।
ইয়্যু মাই রাইটিয়াস মাইটঃ
পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা সম্ভবত বাঙালী জাতির জন্ম, এমন করুণ, নিদারুণ কোনো দুর্ঘটনা অতীতে ঘটে নি, ভবিষ্যতেও ঘটবে না। বাঙালী জাতি যদি কখনও বিলুপ্ত হয় সেটা হবে ডাইনোসর বিলুপ্তির পরের মহাজাগতিক বিস্ময়, এক একজন বাঙালী এক একটি 'পিস', ওয়ান পিস মেড কারিগর ইজ ডেড।
কোনো এক বিচক্ষণ ব্যক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বানী দিয়েছিলেন, যে জাতি যেমন তারা তেমন শাসকই পায়। বাংলাদেশের বর্তমান এবং অতীত প্রজন্মের সবগুলো সম্রাট-সম্রাজ্ঞীই এর জলন্ত উদাহরণ। এক আবুল মাল যা দেখালো তাতে ভবিষ্যত প্রজন্মেও যে খুব ভালো কোনো মাল আসবে এমনটা মনে হয় না।
এদের ভেতরে নির্বাচন, ভোট, গণসংযোগের প্রতি আলাদা মোহ কাজ করে,যে কোনো ইস্যুতেই সাপোর্ট গ্রুপ তৈরিতে এরা সিদ্ধহস্ত । অজস্বভাবের সবাই যে অজ পাড়াগাঁ থেকে এসেছে এমন না, এটা একটা জাতিগত বৈশিষ্ট হিসেবেই গৃহীত হওয়া উচিত।
এরা কোমল স্বভাবের, লোকে বলে এবং বাঙালী সেটা বিশ্বাস করতে চায় যদিও কোমলতা বলে কোনো জিনিষ এদের ভেতরে নেই, এদের শাররীক দুর্বলতা, ক্ষমতাহীনতা এবং কখনও ক্ষমতার আসেপাশে না থাকার স্বভাবে এড়া মোসাহেবী করতে পছন্দ করে এবং যেকোনো তোশামুদে মানুষের মতোই এদেরও তেলানো স্বভাব।
কিন্তু গত ৪০ বছরে এরা ক্ষমতার প্রকৃত স্বাদ পেয়ে যতটা দুরাচারী হতে পেরেছে তাতে অন্তত এখন বিশ্বাস করা যায় এরা ভবিষ্যতে অনাচারের খুব উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখতে পারবে।
দুর্ভাগ্যক্রমে আমার বেশ কিছু দিন প্রবাসী জীবন কাটাতে হয়েছে, সে সুবাদে প্রবাসী মানসিকতার কিছুটা আমার জানা, সেসব লাভ লোভ লালসার গল্প বাঙালী হিসেবে শুনতে খারাপ লাগে না, বরং পরবর্তীতে তাদের দৃঢ় উচ্চারণ শুনে কিঞ্চিৎ বিব্রত হই এটুকু বলা যায়।
আবহমান কাল ধরেই বাঙালী দুই বিবি নিকাহ করছে , কখনও কখনও তারও বেশী নিকাহ করেছে, ইংরেজ কবিগণ রোমান্টিক আন্দোলন শুরু করবার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকের মধ্যবিত্তদের ভেতরে সে রোমান্টিক আন্দোলনের ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ায় এরা সবাই একগামীতা ভড়ং ধরলো, এদের ভেতরে প্রেমময়তা না থাকলেও রাধাকৃষ্ণ আর বৃন্দাবন লীলাকে নিজের প্রেমময়তার চুড়া ভেবে নিলো। বাঙালী কৃষ্ণ-কার্তিক, কিন্তু আশেপাশের অন্য সব বাঙালীর উপস্থিতিতে লোকলজ্জার ভয়ে এরা বহুগামী মানসকে লুকিয়ে রাখতে পারে।
কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো এরা 'চরিত্র' শব্দটাকে শাররীক বিশুদ্ধতায় পরিমাপ করে। চরিত্রবান মানুষ এদের নির্মিত সংজ্ঞায় 'মিথ্যা' বলতে পারবে, 'চুরি চামাড়ি' করতে পারবে, অন্যের সাথে 'প্রতারণা' করতে পারবে, কিন্তু 'সেক্স' করবে একজনের সাথে। দীর্ঘ দিন একজনের সাথে 'সঙ্গম' করলেই যে জাতির মানুষ চরিত্রবান হয় সে জাতির মানুষ পরস্পরকে বিশ্বাস করবে না এমনটি স্বাভাবিক হওয়ার কথা এবং বাস্তবতা সে রকমই।
আমি বেশ কিছু শপিং মলে গিয়ে উপলব্ধি করলাম এরা 'শপলিফটিং' এড়াতে যে পরিমাণ উদ্যোগ নিয়েছে কাস্টমার সার্ভিস সেক্টরে ততটা মনোযোগী হয় নি, এদের কাছে প্রতিটা কাস্টমার এক একজন সাম্ভাব্য 'শপলিফটার', সুতরাং এইসব চোরের জাতকে বিপণন সেবা দেওয়ার আগ্রহে এদের ঘাটতি আছে। তবে সবচেয়ে মজা পেলাম আজ একটা হাসপাতালে গিয়ে, সে হাসপাতালে '৪২০' ঘরটি নেই, ২২০, ৩২০, ৫২০ কক্ষ থাকলেও ৪২০ নাম্বার কক্ষটি কেউই নিতে রাজী হয় নি। সুতরাং ৪১৮,৪১৯ এবং পরবর্তী কক্ষটি ৪২১।
প্রবাসী বাঙালী স্রষ্টার বিচিত্র খেয়ালঃ
গতকাল একজনের লেখায় পড়লাম বাঙালীর ভদ্রতাবোধ নেই, সেখানে অনেকে নিজের মনের দুঃখ প্রকাশ করেছে, বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে প্রবাসে, সেখানে বাঙালী স্পষ্টতই দু ভাগে বিভক্ত। একদল কামলা শ্রেণীর মানুষ, যারা বৈধ-অবৈধ উপায়ে প্রবাসে গিয়েছে জীবিকার টানে এবং অন্য দল হলো ব্লু কলার শিক্ষিত মানুষ, যাদের উচমন্যতা এবং সহবতজ্ঞানের তুলনা নেই।
এরা কামলা শ্রেণীর মানুষদের করুণার চোখে দেখে, তারা যে স্পষ্টতই এদের অন্ত্যজ এবং নিতান্ত ভাগ্যগুণেই সেখানে অবস্থান করছে এটা মনে করিয়ে দেওয়ার যথেষ্ট চেষ্টা থাকে এদের। শিক্ষিত মানুষেরা বিভিন্ন ডিগ্রী নিয়ে বৈদেশে যায়, এদের বাবা কিংবা দাদার দুই স্ত্রী বর্তমান থাকলেও তারা কিন্তু ভীষণ রোমান্টিক। এইসব আশেকান ছাওয়ালদের কেউ কেউ অশিক্ষিতদের বৌদের সাথে প্রেম করে, প্রেম ঠিক না যৌনতার পাঠ নেয়, বড় বড় দেশে এই সুযোগ আছে, ছোটো খাটো দেশে বাঙালী জনগোষ্ঠী পরিমাণে অল্প বলে সেখানে এইসব আশেকদের খুঁজে পাওয়া যায় না। যারা সে সুযোগ বঞ্চিত তারাও তক্কে তক্কে থাকে কিন্তু ভাষাজড়তায় ঠিকমতো শাররীক কামণার কথা প্রকাশ করতে পারে না। এবং শাররীক কামনার মতো স্বাভাবিক বিষয় নিএও এরা কুণ্ঠিত থাকে, প্রতিষ্ঠিত হয়ে রাতে বিছানায় নিয়ে যাওয়ার মতো একটা মেয়ের কল্পনায় একদা এদের অবসর কাটতো, ব্লগের সুবাদে সে অবসর এখন উচ্চমার্গীয় দেশপ্রেমপ্রকাশে শেষ হয়ে যায়।
লাজুক বাঙালীঃ বাঙালী বেশ লাজুক, নিজের কিংবা অন্যের বৌয়ের সাথে নিয়মিত শয়ন করলেও সেটা সবাইকে বলতে লজ্জা পায়। সুতরাং প্রবাসে একজন একটা ঘরোয়া আড্ডায় নিজের বৌয়ের পরিচয় দেয়" এইটা আমার ফ্যামিলি"। এই ফ্যামিলির কোনো নাম নেই। ফ্যামিলি হওয়াটাই তার যোগ্যতা বিবেচিত হতে পারে হয়তো। কিন্তু আরও পুরোনো রসিক বাঙালী যখন ফোড়ন কাটে, বলে কেনো বাবা মা ভাই বোন এইসব কি তাহলে আপনার ফ্যামিলি না, তখন তারা ফ্যামিলির নতুন পরিচয় দেয়' এইটা আমার ওয়াইফ।' বৌ, গৃহিনী না, ওয়াইফ শব্দটার প্রতি আলাদা একটা ভালোলাগা আছে প্রবাসী বাঙালীর, কিংবা ইংরেজদের সাথে দীর্ঘ সহবাসে ওয়াইফের প্রতি এদের আলাদা ভালবাসা জন্মেছে।
এরা নিয়মিত বৌয়ের সাথে শুচ্ছে, কখনও কন্ট্রাসেপটিভ নিয়ে, কখনও কন্ট্রাসেপটিভ ছাড়া, এবং পরবর্তীতে বৌ গর্ভবতী হওয়ার পর গর্ভবতী বৌ ' এক্সপেক্টিং' নয় বরং অসুস্থ। আমার ওয়াইফ একটু অসুস্থ শুনলে প্রথম যে প্রশ্নটা মাথায় আসতো, সে কি হাসপাতালে, অবস্থা কি রকম। তখন লাজুক বাঙালী উত্তর দিতো- না সে রকম অসুস্থ না মানে বুঝেনই তো। সুতরাং কোনো বাঙালীর বৌ অসুস্থ মানে সে প্রেগন্যান্ট। গর্ভবতী হওয়াটা বাঙালী মেয়ের একমাত্র অসুস্থতা, যদি কখনও শিক্ষিত বাঙালী নিয়ে কোনো নৃতাত্ত্বিক কোনো গবেষনা করে তাহলে এ উপসংহারে পৌঁছাতে বাধ্য হবে।
এবং সিস্টেম করা বাঙালীঃ
বাঙালী অভদ্র হয়তো না কিন্তু নিশ্চিত ভাবেই অবিবেচক, দেশে বিভিন্ন রকম জটিলতায় বাঙালীকে প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিকল্প ভেবে রাখতে হয়, প্রথম বার প্রবাসে যাওয়া বাঙালীদের অনেকেই অবিবেচকের মতো আচরণ করে, আমার এক বন্ধু যাচ্ছিলো অস্ট্রেলিয়ায়, বৌ নিয়ে, প্রথমবারের মতো, সুতরাং অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী অন্য এক বন্ধুকে বললো আমি তো আসতেছি, তুই আমাকে এয়ারপোর্টে নিতে আয়, আর এসে কোথায় থাকব ঠিক নেই, তুই থাকবার জায়গা পারলে ম্যানেজ করিস।
সুতরাং দিনের কাজ ফেলে সে বন্ধু গেলো এয়ারপোর্ট, এয়ারপোর্টে বন্ধুর সাথে দেখাও হলো, সাথে বৌয়ের ভাই, তার বাসায়ই এদের উঠার কথা, কিন্তু যদি কোনো অদ্ভুত কারণে সেটা সম্ভব না হয় সে কারণে এই বন্ধুকে এয়ারপোর্টে উপস্থিত হতে বলা এবং তাকে দিয়ে বাসা ঠিক করানো। সবচেয়ে বিড়ম্বনার বিষয় হলো তাকে এয়ারপোর্ট পিক আপ করতে লোক থাকবে এবং তারা সেখানেই উঠবে এই তথ্যটুকু জানা থাকলে কামলা ফেলে কেউই এয়ারপোর্টে যেতো না।
কিন্তু বাঙালী একাকীত্ব চায়ঃ বাঙালী দেশে বাসে গাদাগাদি করে ঝুলতে পারে, বিদেশে গেলে তাদের রুচি বদলে যায়, বিদেশ মানেই সব ভালো, সেখানের মানুষের হাগুতেও শ্যানেল ফাইভের সুগন্ধ থাকবে, সেখানে ভীড় নেই, ঝামেলা নাই, তাদের জন্যই সব সেরা তুলে রাখতে হবে, তারা যেহেতু প্রবাসী এবং সম্ভবত তারা এনআরবি হতে যাচ্ছে সুতরাং তাদের কথা বক্তিমের আলাদা গুরুত্ব থাকবে।
এই সিনড্রোম ব্লগে আছে, বক্তিমের গুরুত্ব বক্তিমের নিজের ভারে থাকতে পারে, প্রবাসী স্বদেশী তকমায় গুরুত্ব থাকতে পারে না। কিন্ত যেহেতু তারা সবাই আমার ' অল রাইটিয়াস মাইট' সুতরাং তাদের প্রতি আমার অপরিসীম ভক্তি।
তাদের অসংখ্য ত্রটি-বিচ্যুতি আছে, ক্ষুদ্রতা নোংরামি আছে, কিন্তু তারা আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় প্রবাসী বাঙালী ভাই, তারা আমাদের বন্ধু, তাদের কোমল হৃদে অনেক দুঃখ, তারা কটু কথা শুনতে পারে না, তারা অন্যের পাছার গন্ধ শুঁকে শুঁকে নিজের পাছা চুলকে ঘার করছে সেটা বললে প্রবাসী কোমল হৃদয় আহত হয়, তারা আমার মতো অভদ্রের সাথে এক ব্লগে থাকলেও তাদের লজ্জা লাগে, আমার নামের সাথে তাদের নামও কম্পিউটার স্ক্রীনে থাকলে তাদের নিজেদের অশুচী মনে হয়, এইসব পেট-পাছাবিহীন প্রবাসী বাঙালীর খুড়ে নমস্কার। এডিওস এন্ড চিয়ার্স
ভাই যত খারাপই হোক আমরা বন্ধু ব্লগে কেউ এই ভাবে ঝগড়া করে না। বাঙ্গালী খুব খারাপ এই বাঙ্গালী হয়ে জন্ম নিয়ে আপনি খুব ভুল করেছেন। তার উপর বাংলা ব্লগ আর ও বাজে যায়গা । দয়া করে আপনি এখন থেকে বাংলা ব্লগের বাইরে অনেক ইংরেজী, ফরাসঈ, হিন্দী, পার্সী, পশতু, জার্মান ইত্যাদি ভাষার ব্লগ আছে সেখানে লেখালেখি করুন আমরা আমাদের ক্যাচাল নিয়ে থাকি। আমাদের ভাল লাগে এই বাঙ্গালী ক্যাচাল আপনি ভাই উচ্চমার্গের লোক আমাদের চেয়ে আপনি আনেক উঁচূ।
আমাদের লজ্জা নাই আমাদের মুখে যা আসে মনে যা আসে তাই লিখি আর নিজেকে লেখক ভাবি। ব্লগে কি ভাবে লিখতে হয় শিখি নাই শিখবও না।
এত্ত কথা লিখতাম না শুধু আপনার পোস্টের ভাষা ও লেখার প্রকাশ ভঙ্গী আমাকে আহত করেছে । এতে আপনার কোন আসুবিধা নেই কারন আমি বাঙ্গালী যে একটা নোংরা জাতীর ধারক।
এইটা ঠিক বুঝছেন যে আমি আপনাদের চেয়ে মানসিকতায় উঁচু , আমার ন্যয় নির্ধারণের জন্য কোরান হাদিস আইন পুলিশ লাগে না, নিজের বিবেচনায় যেইটা ন্যায় সেইটার পাশে দাড়াইতে দ্বিধাও হয় না।
শুনতে ভালো লাগে বইলা কথা কইতে ভালো লাগে না আমার। এইসব জায়গায় আমি আপনার এবং আপনার মতো অনেকের চেয়ে ব্যতিক্রম। সমস্যা হইলো আমি কি করবো এবং কি করবো না, আমার কি করা উচিত আর কি করা উচিত নয় এইসব বিষয় আমি নিজে ঠিক করি, অন্য কারো ভালো লাগা মন্দ লাগাকে গুরুত্ব দিয়া নিজের ভাবনাকে আন্ডারওয়্যার আর হ্যান্ডগ্লোভস পরায়া রাখি না।
আপনি নিজের সম্পর্কে সত্য উদঘাটন করতে পেরেছেন, সেটা জেনে ভালো লাগলো। চেষ্টা চালান, ঠিকমতো কাটতে পারলে কাঁচও হীরার মতো চমক দেয়। আপনিও লেখক হইতে পারবেন, একটু পরিশ্রম করতে হবে এই যা।
এডিওস এন্ড চিয়ার্স
নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভাল .....

আপনার দিক থেকে এই পোস্টটা আশা করি নাই... এইটা একটা ভুয়া পোস্ট হইছে...
আমিও অনেক কিছুই আশা করি নাই, এই যেমন আমি কি লিখবো, কিভাবে লিখবো, এইসব নিয়া মোরাল লেকচারিং আশা করি নাই। আমার লেখা কেউ কেউ লজ্জায় শেয়ার করতে পারতেছে না কইয়া আমারে ভাষা নিয়া কেউ বাসায় আইসা পরামর্শ দিবো এবং সেইটা যে তার অনধিকার চর্চা এইটা কওনের জন্য আবার কেউ আইসা আমার সভ্যতার সবক দিবো, এইসব আশা করি নাই।
বিষয়টা লেখার ভাষার না, বিষয় লেখার স্বাধীনতার, সেইটা যা মনে আসবে, যেভাবে উপস্থাপন করতে ইচ্ছা হবে সে স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন, সেইখানে কেউ মোরাল পুলিশিং করবে সেটা কোনো মোড়কেই আমি মানি নাই, গত ৫ বছর ধরে এই এক নীতিতে চলতেছি, এইটা ভাষাব্যবহারের স্বাধীনতা এবং আত্মসম্মানের প্রশ্ন,এইসব কারণে মানুষ অনেক কিছু করে, নিজের মোরাল পুলিশিং প্রতিষ্ঠার জন্য নোংরামি না করতে শেখাটাও একটা শিক্ষা, যে অপশিক্ষাটা ভালমানুষীর মোড়কে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে সেইটা মাইনা না নিতে পারাটা আমার ব্যর্থতা।
লেখাটা ভালো লাগে নাই, অহেতুক চুলকানী মার্কা ।
ধন্যবাদ, ভালো লাগলেই বিষয়টা অস্বাভাবিক হইতো
ব্লগার - বাংলা ব্লগার নিেয় যা লিখলেন, আপনিও এর বাইরের কেউনা ।। অযথা এই খোঁচাখুচি মার্কা পোষ্ট দিয়া নিজেরেই নিজের কাছে ছোট করলেন
মজাটা হলো ব্লগার হওয়ার আগেও প্রবাসী বাঙালী ছিলো, এবং কম্যুনিটি ব্লগের ধারা ভেঙে যাওয়ার পরও প্রবাসী বাঙালী থাকবে। ফেসবুক কানেকটিভি শুরু হওয়ার আগেও মানুষের সামাজিক যোগাযোগ বন্ধ ছিলো না, সকল প্রযুক্তি এইসব যোগাযোগের নতুন মাত্রা তৈরি করে কিন্তু প্রবাসী বাঙালী এইসব দোষত্রুটি নিয়ে বহাল তবিয়তে বেচে থাকবে।
কে কাকে ফেভার করলো, কে কার ফেভার নিয়েও পালটা ফেভার দিলো না, কে ওজনে কারচুপি করলো, কার বাসা থেকে কে একটা টি শার্ট, দুটো বাড়তি সোয়েটার আনলো না এইসব নিয়ে ব্যাকবাইটিং চলবে।
মিসেস অমুক এবং মিসেস তমুকের বাসার ঘরোয়া আড্ডায় কিংবা ঘরের বাইরে সিগারেট টানতে টানতে এর ওর পাছায় আঙুল দেওয়াও চলতে থাকবে। আগে ফোনে এসব যোগাযোগের বাড়তি যোগাযোগ হতো, জানেন না ভাবী ও কি করছে , এসবের বিহিত হওয়া দরকার, এইসব সামাজিক কারণ নিয়ে আলোচনা কি অতীতে থেমে ছিলো?
বাংলা ব্লগ ভেন্টিলেশনের খানিকটা সুযোগ করে দিয়েছে, ফলে এইসব মাঝে মাঝে চোখে বালির মতো পরে এই যা।
আর বিষয়বস্তু প্রবাসী বাঙালী, বাঙালী ব্লগার নয়। অনেকেই আমার মতো আছে আমি জানি, কিন্তু এইসব আবালবাঙালী নোংরামি থেকে আমি সব সময়ই দূরে ছিলাম, এখনও আছি, এত দিনেও যখন নোংরামি শুরু করতে পারি নি আশা করি ভবিষ্যতেও এই আবর্জনায় মাথা ঢুকাবো না।
হা হা হা ।
মজা হইলো আপনের লেখার ভিতরে আসা দোষগুলা এক বা একাধিক সংখ্যায় গড়পড়তা সব প্রবাসী বাঙালির মধ্যেই আছে । কিন্তু একা ইনডিভিজ্যুয়ালের মধ্যে সবগুলা নাই । এইজন্য যে-ই পড়তেছে সে-ই ভাবতেছে, আরে আমার মধ্যেতো এইটা আর ঐটা নাই । সুতরাং হিট ১০০ টা হইলেও মিস ১ টা পাইলেই মিথ্যা অভিযোগের দায়ে আপনেরে দোষী সাব্যস্ত কইরা পরমানন্দ লাভ করবে সবাই ।
ভিক্টোরিয়ান রোমান্টিকতা প্রজনন হারের জন্য ভালো । ইভ্যুলুশনারি ভায়াবল । এইটা এত সহজে যাবে না । যেখান থেকে গেছে বলে মনে হইতেছে এখন সেখানেই আবার ফিরে আসবে বিপুল বিক্রমে ।
আপনার লিখাটা জটিল হইসে ভাইজান। শুধু প্রবাসী না আমরাও দেশি বাঙালি হিসাবে এই দোষ এ দুষ্ট। প্রবাসী বইলাই যে আমরা এই দোষ মুক্ত হইয়া যাব এইটা আশা করা ঠিক না। তবে আমরা যারা প্রবাসী না দেশে থাকি তাদের সবার কি অবস্থা জানি না আমি খুব কষ্ট পাই যখন দেখি লন্ডন বা আমেরিকা তে প্রবাসী বাঙ্গালি রা তাদের নেতা নেত্রি রে দেখার জন্য ২০০-৪০০ না হাজার মাইল দূর থাইকা চলে আসে। কেন? যেখানে আমরা পলটন মইদান জাইনা আমাদের কাজ ফেলে। তাদের কিসের এত ঠেকা হাজার মাইল দূরে যাইয়া এইসব নেতা নেত্রী রে তেল দেয়া। শুধু তাই না ওইসব প্রোগ্রাম এ তারা চেয়ার টেবিল ছুরাসুরি কইরা এলাহি কাণ্ড ঘটান এবং দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেন তখন কি তাদের একটুও লজ্জা করে না।
আমিও হাহাহা।
"এইটা ঠিক বুঝছেন যে আমি আপনাদের চেয়ে মানসিকতায় উঁচু , আমার ন্যয় নির্ধারণের জন্য কোরান হাদিস আইন পুলিশ লাগে না, নিজের বিবেচনায় যেইটা ন্যায় সেইটার পাশে দাড়াইতে দ্বিধাও হয় না।"
-এই যে 'আমি' ও 'আপনারা' বলে আজাইরা একটা বাইনারি তৈরী করলেন, যেটা পুরা লেখায় প্রবলভাবে বর্তমান, এটা একটা বিখ্যাত রোমান্টিক ভাইস(রুশো পড়ে দেখেন), আর এটা কেবল বিভেদ বাড়ায়, কাজে লাগেনা। রোমান্টিকদের প্রধান সমস্যা হল, তারা ভাবে, আমি খুব ভাল, সব সমস্যা সমাজে, অন্যদের মধ্যে।পুরো লেখাটার বিষয়বস্তু কি তাই নয়?
নৃতত্বে রেসের ধারনা অনেক আগেই গত হয়ে গেছে। তারপরও ধরে নেন, একটা নিদৃষ্ট জায়গার মানুষ এক ধরনের আচরন করে(যদিও কোন পরীক্ষাই এটা প্রমান করতে পারেনি)। তো, আপনি এটা থেকে বের হলেন কিভাবে? আপনি(নাকি এখানে কাব্বলা টাইপের কোন ইনগ্রুপ আছে?) সত্যের দেখা পেলেন কেমনে? রফিক আজাদ মনে পড়ে," তুই একা বেঁচে গেলি, বিভিষন আমাকে ছুঁলো"।
আমাদের সবার একটা ব্যক্তিগত চেহারা আছে, একটা সামাজিক চেহারা আছে। আমাদের ভিতর অনেক আকাংখা আছে, পতন আছে, ভাংচুর আছে। আমাদের সামাজিক চেহারা নির্মানে এসব আসে, এটার মধ্যে ক্রেডিটও নাই। চরিত্র আমরা 'নির্মান'ই করি, ব্যক্তিত্বের কোন অংশ আমরা সর্গ থেকে নিয়ে আসি না। আপনি সমাজ, পড়ালেখা, সাহিত্য, ছবি সবকিছু থেকে যা ভাল লাগছে, নিচ্ছেন। এগুলোর যোগফলই আপনার চরিত্র।
এখন আপনার চরিত্র নির্মান একটু দেখি:
১।"অনেকেই আমার মতো আছে আমি জানি, কিন্তু এইসব আবালবাঙালী নোংরামি থেকে আমি সব সময়ই দূরে ছিলাম, এখনও আছি, এত দিনেও যখন নোংরামি শুরু করতে পারি নি আশা করি ভবিষ্যতেও এই আবর্জনায় মাথা ঢুকাবো না।"
২। "শুনতে ভালো লাগে বইলা কথা কইতে ভালো লাগে না আমার। এইসব জায়গায় আমি আপনার এবং আপনার মতো অনেকের চেয়ে ব্যতিক্রম।"
৩।"এইটা ঠিক বুঝছেন যে আমি আপনাদের চেয়ে মানসিকতায় উঁচু , আমার ন্যয় নির্ধারণের জন্য কোরান হাদিস আইন পুলিশ লাগে না, নিজের বিবেচনায় যেইটা ন্যায় সেইটার পাশে দাড়াইতে দ্বিধাও হয় না।"
৪। নিজের মোরাল পুলিশিং প্রতিষ্ঠার জন্য নোংরামি না করতে শেখাটাও একটা শিক্ষা, যে অপশিক্ষাটা ভালমানুষীর মোড়কে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে সেইটা মাইনা না নিতে পারাটা আমার ব্যর্থতা।
-ভাই, আপনি তো মহাপুরুষ!!!!!
"কে কাকে ফেভার করলো, কে কার ফেভার নিয়েও পালটা ফেভার দিলো না, কে ওজনে কারচুপি করলো, কার বাসা থেকে কে একটা টি শার্ট, দুটো বাড়তি সোয়েটার আনলো না এইসব নিয়ে ব্যাকবাইটিং চলবে।
মিসেস অমুক এবং মিসেস তমুকের বাসার ঘরোয়া আড্ডায় কিংবা ঘরের বাইরে সিগারেট টানতে টানতে এর ওর পাছায় আঙুল দেওয়াও চলতে থাকবে। আগে ফোনে এসব যোগাযোগের বাড়তি যোগাযোগ হতো, জানেন না ভাবী ও কি করছে , এসবের বিহিত হওয়া দরকার, এইসব সামাজিক কারণ নিয়ে আলোচনা কি অতীতে থেমে ছিলো?"
-ব্লগে কি নিয়ে কথা বলা যাবে, কি নিয়ে বলা যাবে না, এটা বলতে আসা কি 'পুলিশিং' এর পর্যায়ে পড়ে না?
আরো অনেক আপত্তি আছে। সেসব পরে।
লেখার বিষয়বস্তু সামাজিক সমস্যা হয়তো তবে সমাজের সবাই খারাপ এমন রোমান্টিক কোনো আইডিয়া এখানে পাচার করা হয় নি, বিষয়টা বিব্রতকর, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি যদি স্ত্রীর নাম দিয়ে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় আশেপাশের মানুষ কেমন কেমন করে তাকায়, আর যখন অসমাপ্ত পরিচিতি সমাপ্ত করতে আমার বৌ জাতীয় শব্দ ব্যবহার করা হয় তখন তারা এমন ভঙ্গিতে তাকান যে নিজেকে টুটসি মনে হয়।
মোরাল পুলিশিং করে কখনও "কে কি লিখবে, কিভাবে লিখবে" এমন নীতিনির্ধারণী কোনো সিদ্ধান্ত পয়দা করেছি বলে মনে পড়ছে না। কারো অবর্তমানে তার সমালোচনা করা কিংবা তার কোনো ত্রুটি নিয়ে আলোচনা করাটা পরচর্চা, এতে অভিযুক্ত-অভিযুক্তার চরিত্র পরিবর্তিত হওয়ার কিছু থাকে না, তাদের যেসব ত্রুটি নিয়ে এত বিতর্ক চলছে সেটা তারা না জানলে সংশোধিত হবে না, কিংবা সংশোধনের একটা সম্ভবনা তৈরি হয় যদি আলোচ্য ব্যক্তিকে সেটা জানানো যায়, তা না করে অন্য কারো কাছে সেটার বিচার চাওয়া, অভিযোগ উত্থাপন অর্থহীন কর্মকান্ড মনে হয় আমার, সেসব আমার মন্তব্যগুলোও " আমার ধারণা", আমি মনে করি" এমন ধরণের পারসোনালাইজড বিশেষণ দিয়েই চিহ্নিত রাখতে চেষ্টা করি, সমাজের সামগ্রীক শুভ-অশুভ বোধের ঠিকদারি নেওয়ার স্বভাবটা আমার নেই, আমার অনুভব আছে, আমার কিছু বক্তব্য আছে, সেসব " আমার" হিসেবেই উল্লেখ করার প্রচেষ্টাটাও স্পষ্ট থাকে।
মাত্রা ও পরিমিতিবোধবিহীন পরামর্শ সব সময়ই যন্ত্রনাদায়ক, সেটা সুগারকোটেড হলেও যন্ত্রনাদায়ক। কিছু কিছু অনধিকার চর্চাকে অগ্রহনযোগ্য বলে ফেললে সেটা গ্রহনযোগ্য করবার নিদান আমার জানা নেই, আমরা সবাই একই ধরণের নীতি ও নৈতিকতার পুস্তক পড়েছি, গল্প উপন্যাস পড়েছি, সেইসব উপন্যাসের ভালোলাগা মন্দ লাগা নিজের ভেতরে ধারণ করেছি, নিজেকে সংস্কৃত করেছি, এবং আমার ধারণা পরিমিতি বোধটুকুর ধারাবাহিক চর্চায় অন্তত মানুষ উপলব্ধি করতে পারে কোনটা অধিকারবোধের দাবি আর কোনটা অনধিকার চর্চা। এই মাত্রাগত পার্থক্য যে করতে পারছে না তাকে বাড়তি সম্মান কিংবা গুরুত্ব দেওয়াটা অপ্রয়োজনীয় মনে করি আমি।
মোটাদাগে পোস্টের বিষয়বস্তুর সাথে একমত, তবে আপনি আবার নিজেকে "এই প্রবাসী বা দেশবাসী" থেকে আলাদা ভাবছেন সেটা একটা সিনড্রোম বটে, সব শিক্ষিত প্রবাসীরাও এইটেই ভাবে নিজেদের নিয়ে।
এটাও এক ধরণের বাস্তবতা, কম্যুনিটি থেকে নিজেকে বিচ্যুত রাখতে পারাটা একটা সমাধান,
বিচ্যুত রাখাটা তো পলায়নপর মানসিকতা, সেটা কোন সমাধা হতে পারেনা।
এখানে পলায়নবাদী মানসিকতার কিছু নেই, মানসিক বিচ্যুতি সামাজিক যোগাযোগহীনতা নয়, বরং একটু সচেতন হয়ে শব্দ বাছাই ও মতামত প্রকাশের বাধ্যবাধকতা আরোপের বিষয়।
যদি কেউ নিজের সম্পর্কে সৎমন্তব্য শুনতে চায়, তাকে সেটা জানানো আর যখন অন্য কারো সম্পর্কে কোনো বক্তব্য উপস্থাপন করবে এবং সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য চাইবে সে মন্তব্য না করা, এই বিচ্যুতিটুকু মেনে নিলে ঝামেলা কমে। মানুষ যখন অন্য কারো সম্পর্কে বিষেদাগার করে কিংবা নিজের আক্ষেপ জানায় তখন সে নিজে একটা সাপোর্ট গ্রুপ খুঁজে, সে সাপোর্ট গ্রুপের অংশীদার হতে চাওয়া এবং না চাওয়ার ভেতরে বিচ্যুতি ও যোগাযোগ হীনতা থাকে।
অসম্ভব ভালো লিখেছেন। বহুদিন পরে একটা ভালো লেখা পড়লাম। রবীন্দ্রপরবর্তী যুগে উত্তরাধুনিক ভাবধারায় এই লেখনী বাংলার ভাবাকাশে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও সময়ঊপযোগী লেখা। একেবারে সমস্যার মূলে হাত দিয়েছেন। লেখকের বক্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত। লেখাটিকে স্টিকি করা হোক।
সেইরকম বিশ্লেষন। কিপিটাপ।
মন্তব্য করুন