ইউজার লগইন

শাশ্বত স্বপন'এর ব্লগ

তিলোত্তমায় রবীন্দ্র সাহিত্য

তিলোত্তমায় রবীন্দ্র সাহিত্য
--শাশ্বত স্বপন

‘বহু মানব তাদের বহু দিবসের শ্রম তিলে তিলে দান করে গড়ে তুলেছে এই তিলোত্তমা মূর্তি...।’ আমাকে বিস্মিত করে এমন কিছু দেখলেই রবি ঠাকুরের উক্ত লেখাটি আমার মনে পড়ে। যেমন, মহাস্থানগড়, সোমপুর বিহার অথবা হার্ডিঞ্জ ব্রীজ, যমুনা ব্রীজ...। কোটি কোটি কর্মের ফলে এসব র্কীতি গড়ে উঠেছে। ঠিক তেমনি করে রবীন্দ্রনাথের পূর্ব পুরুষ, একান্নবর্তী পরিবার , তার লেখা এবং তার লেখার উপর বহু মানুষের পরিশ্রমের ফলে রবীন্দ্রনাথকে যে সাহিত্য সভ্যতার মহাতিলোত্তমার আসনে বসানো হয়ে গেছে--তা অনুধাবন করতে পাঠক, লেখক ও তার ভক্তদের খুব একটা বেগ পেতে হয় না বরং প্রতি পদে পদে, প্রতি মুহূর্তে বিস্মিত হতে হয় রবীন্দ্রনাথের একটা একটা লেখা নিয়ে ভাবলে, মনে হয় (অথবা চোখের পর্দায় ভেসে উঠে), রবীন্দ্রনাথ তথা রবীন্দ্র সাহিত্য বহু তিলোত্তমা যোগে গড়া মহাতিলোত্তমার ছায়া রূপে কায়া মূর্তি।

আজ বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায় এর জন্মবার্ষিকী

আজ বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায় এর জন্মবার্ষিকী
--শাশ্বত স্বপন

বাংলা সাহিত্যের প্রথম ও শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায় ১৮৩৮ সালের ২৬ শে জুন (বাংলা ১২৪৫ সালের ১৩ ই আষাঢ়) নৈহাটির কাঁঠালপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম যাদপচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়। তিনি মেদিনীপুরে ডেপুটি কালেক্টর পদে নিযুক্ত ছিলেন। পাঁচ বছর বয়সে বঙ্কিমচন্দ্রের হাতেখড়ি হয় কুল-পুরোহিত বিশ্বম্ভর ভট্রাচার্যের কাছে। পিতার অতি আদরের ৩য় সন্তান বঙ্কিম অসাধারন মেধাবী ছিলেন। তিনি একদিনেই বাংলা বর্ণমালা আয়ত্বে এনেছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র ১৮৪৪ সালে মাত্র ছয় বছর বয়সে পিতার কর্মস্থল মেদিনীপুরের কলেজিয়েট স্কুলে এসে ভর্তি হন।

দুঃখ-বিলাস

ধারাবাহিক উপন্যাসঃ হৃদয়ের এপিঠ-ওপিঠ (পর্ব-১৪)
--শাশ্বত স্বপন

যেমনি তার চেহারা, তেমনি তার কথার স্বর। সবাই তাকে ভালোবাসত। সে ততক্ষণই বাসায় পড়ত যতক্ষণ শিক্ষকরা তার পাশে বসে থাকত। সেই কারণেই তার টিচার এর সংখ্যা সাবজেক্ট এর চেয়ে বেশি ছিল। টিফিন পিরিয়ডে সে টাকা খুব একটা খরচ করতে পারত না। কারণ তার প্রিয় খাবারগুলো বাসা থেকেই সরবরাহ করা হত। আব্বু, আম্মু বা আত্মীয়দের দেওয়া টাকা তার ব্যাগেই থাকত।

ধারাবাহিক উপন্যাসঃ হৃদয়ের এপিঠ-ওপিঠ

ধারাবাহিক উপন্যাসঃ হৃদয়ের এপিঠ-ওপিঠ
--শাশ্বত স্বপন

আমার কিছু কথা

ধারাবাহিক উপন্যাসঃ হৃদয়ের এপিঠ-ওপিঠ (পর্ব-4-12)

ধারাবাহিক উপন্যাসঃ হৃদয়ের এপিঠ-ওপিঠ (পর্ব-৪)
--শাশ্বত স্বপন
সিঁদুর কেন আমাকে কবিতা দিল? এডভান্স চিন্তা-ভাবনা করে কোন লাভ নেই। কোন ছেলেকে হয়তো সে ভালবাসে অথবা ভালবাসতে চায় এবং তাকে হয়তো কবিতাটা দেবে। আমাকে দিয়ে হয়তো রিহার্সাল করিয়ে নিচ্ছে। মাথাটা কেন জানি ঘুরছে। বিছানায় কিছুক্ষণ শুয়ে রইলাম। যন্ত্রণাটা কমতেই আবার স্মৃতিতে এলো সেই মেয়েটার ছবি। ভাবতে শুরু করেছি, কেন সে এমন হলো? তার নাম কি? কবে এমন হয়েছে?

বাংলা ভাষার উৎসব ২০১৩ ঃ ভাদ্র ভাসান...


বাংলা ভাষার উৎসব ২০১৩ উপলক্ষ্যে জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষা সৈনিক আব্দুল জলিল, ভাষা সৈনিক অধ্যক্ষ তমিজ উদ্দিন, গবেষক ড. সফিউদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী, সাবেক বিচারপতি সিকদার মকবুল হক, ছড়াকার রফিকুল হক দাদু ভাই, কবি রবীন্দ্র গোপ--গুণীজনদের উপস্থিতিতে শাশ্বত স্বপন রচিত গল্পগুচ্ছ ‘ভাদ্র ভাসান’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করছেন কবি মহাদেব সাহা ।

...এ যেন, স্বপ্নের হাত ধরে কৃষ্ণপক্ষের রাত্রির অন্ধকারে অনন্তের পথে চলেছি আমরা

১৯৪৭-এ বিতর্কিত দ্বিজাতি তত্ত্বের আলোকে দেশ ভাগ, ’৫২ এর
স্বাধীনতার আন্দোলন, ’৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯
এর গণ অভ্যুত্থান, ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা লাভ, ’৯০ এ স্বৈরাচার
পতন--এত রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ, আজ কোথায়, কোন অবস্থায় আছে !
কেমন আছে আমার দেশ, দেশের মানুষ, আমার মাতৃভূমি, আমার প্রিয় জন্মভূমি,
আমার স্বাধীনতা? এ ভাষা আন্দোলনের মাসে পরাজিত রাজাকার আর তাদের বংশধররা
কার বা কাদের সহযোগিতায় ’৭১ এর মানবতাবিরোধী, কুখ্যাত রাজাকারদের মুক্তির
জন্য আন্দোলন করে, দেশ ব্যাপী হরতাল করে ? কোথা থেকে তারা এত সাহস পায়?
পৃথিবীর কোন দেশ ধর্মীয় জাতি সত্ত্বার কারণে বিভাজিত হয়নি, শুধু ভারত
ছাড়া; কোন দেশে স্বাধীনতার যুদ্ধে পরাজিতরা মাথা তোলে কোনদিন দাঁড়াতে
পারেনি; শুধু বাংলাদেশ ছাড়া।

বিজ্ঞান ও সভ্যতার চরম উন্নতির এ যুগেও কোন কোন ধর্মীয় রাজনৈতিক
গোষ্ঠী বেহেস্তে যাওয়ার টিকেট বিক্রি করে। তাদের জেলে ঢুকালে বলে আল্লাহ
তাদের ঈমানের পরীক্ষা করছেন আর উকিলের মাধ্যমে জামিন বা মুক্তি পেলে

ভাদ্র ভাসান

আমার বই নিয়ে কিছু কথাঃ

ভাদ্র ভাসানঃ

সময়ের লাশ শেষ পর্ব

সন্ধ্যার পর বাবা তার ছাত্র মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহকে নিয়ে বাসায় আসলেন। মাহফুজ ভাই প্রায়ই আমাদের বাসায় আসতেন। তিনি কবিতা, গল্প লিখেন পত্র-পত্রিকায়। আমি সেই বিকাল থেকে কান্নার্ত চোখে শুয়েছিলাম। বিছানা থেকে উঠে দরজায় আসতেই মাহফুজ ভাইয়ের মুখ থেকে ছাত্র হত্যার ঘটনা শুনতে পেলাম। উনি বলতে লাগলেন, “আগের দিন থেকেই একটা আশঙ্কা ছিল--আগামীকাল মারাত্মক কিছু ঘটে যেতে পারে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাষ্ট্র ভাষার দাবীতে কোন মিছিল হলে সরকার কঠিন ব্যবস্থা নিতে পারে। অবশ্য মিছিলের উপর গুলি বর্ষিত হতে পারে এমন আশঙ্কা আমার মনে ছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাই ঘটলো। সংবাদ অফিসে থাকতেই শুনলাম, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের অবস্থা খুবই খারাপ। ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে মিছিল শুরু হয়েছে, যে কোনো সময় মারাত্মক অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। আমি শংকিত চিত্তে আবার আজিমপুরের দিকে যাত্রা শুরু করলাম, সারা পথেই স্থানে স্থানে মানুষের জটলা। সবাই শংকিত, কি ঘটে না ঘটে। আজিমপুরে পৌঁছেই শুনলাম, মেডিকেল কলেজের মোড়ে পুলিশ ছাত্র জনতার উপর গুলি করেছে, বহু মানুষ তাতে মারা গেছে। এই খবর শুনে আমিও অন্যান্য মানুষের সঙ্গে দৌঁড়ে পলাশী ব্যারাকের মোড়ে গেলাম। তখন

প্রিয় ব্লগার ভাই/বোনেরা

প্রিয় ব্লগার ভাই/বোনেরা
ঝরা পাতার শুভেচ্ছা। এ বছর বইমেলায় আমার দুইটি বই--একটি গল্পগুচ্ছ, ভাদ্র ভাসান (১ম মুদ্রণ, জিনিয়াস পাবলিকেসন্স); একটি উপন্যাস, হৃদয়ের এপিঠ-ওপিঠ ( ২য় সংস্করণ, ১ম রোদেলা প্রকাশ) বের হয়েছে। আপনাদের আশীর্বাদ কামনা করছি। সেই সাথে বই মেলার জিনিয়াস পাবলিকেশন্স স্টল নং ৩৬০-৬১, রোদেলা প্রকাশনী স্টল নং ২০১-২ এ আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
--শাশ্বত স্বপন

Vadra vasan2.jpg

`12.jpeg

সময়ের লাশ ৪ র্থ পর্ব

মনে পড়ে, আর একদিনের কথা। সেদিন পুকুরে এক ঘটি জল আনতে গিয়েছিলাম লক্ষ্মী পূজাটা সম্পন্ন করার জন্য। অনেকটা ইচ্ছে করেই গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি ও স্নান করছে। পায়ের কাপড়টুকু উঠিয়ে যেই ঘটিটা পানিতে ডুবিয়েছি অমনি সে বলতে আরম্ভ করল, আমি যাকে ভালোবাসি তার পা আমি কোনদিন দেখিনি। তার বুকে হেঁটেছি, শুয়েছি। একদিন হয়তো তার কোলে ঘুমিয়ে যেতে হবে। আমি বেশ লজ্জা পেয়েছিলাম। কোন কথা না বলেই সেদিনও চলে এলাম। ঘাটের সিঁড়ির চারটি ধাপ পার হতেই ও আমাকে পানি ছিটিয়ে দিল। বলল, ‘তুমি সুন্দর, আমার সেই প্রেমিকার মত--ঠিক প্রেমিকার মত!’ কে ওর প্রেমিকা? সেদিন বুঝতে পারিনি। অনেক পরে বুঝতে পেরেছি। আরেকদিন কোন এক কথা প্রসঙ্গে বাবাকে বলেছিল, ‘জানেন স্যার, এই বাংলার সবাইকে আমার বড় আপন মনে হয়। আমার তো মা-বাবা কেউ নেই। তাই এ দেশ, এই মাটিই আমার মা-বাবা।’ ওর সাথে কখনও কথা বলিনি। কেন? লজ্জা হয়? না, অন্য কিছু--আমি জানি না। আমাদের ব্যাপারটা মা-বাবা-রাম সবাই জেনে গেছে। তাই আমাকে প্রায়ই মায়ের বকা শুনতে হয়। সুমাদকেও একবার বকা শুনতে হয়েছে। একদিন দূর থেকে ওকে দেখেছিলাম। ও কাঁদছে। কেন কাঁদছে? কেন?

ঘুরে এলাম বগালেক-কেওকাড়াডং-তাজিংডং-নাফাকুম

সময়ের লাশ 3য় পর্ব

দু’জনেই চলে গেল। বাবা অবশ্য আদর করে বলেছিল, ‘এগুলো কিছু না, মা। কালই আমি সুমাদকে নিয়ে আসব।’ স্বপ্নের কথা বললেও চিঠির কথা গোপন রেখেছিলাম। আবার ঘুমিয়ে ভাবতে লাগলাম আর মনে মনে বলতে লাগলাম--আমি কে?--না, আমি দিলীপ দাসের মেয়ে কল্যাণী। আমার বয়স চৌদ্দ। বাবা-মা আমার জন্য বর দেখছে। আমি শিক্ষিতা, সুন্দরী (সবাই বলে)--আমার হবু স্বামী নিশ্চয়ই খুব সচ্ছল হবে। তবে সুমাদ একি বলছে, আমি একটা মানচিত্র! রাত তিনটা বাজে। আমি আবার চিঠি পড়তে শুরু করলাম। ‘তোমার সারা দেহের লোমে লোমে ছড়িয়ে আছে আ- ই- ক- ম...। ওরা তোমাকে দলিত মথিত করে তোমার লোমগুলি একটি একটি করে তুলে নকল উর্দু অক্ষরযুক্ত লোম লাগিয়ে দেবে। তুমি অপসংস্কৃতি আর পরাধীনতার শৃংখলে আটকে যাবে। তোমার ভাষা হবে দেহের সাথে সম্পর্কহীন। তোমার কথা এত মধুর শুনাবে না। বুঝতে পারনি?

সময়ের লাশ ২য় পর্ব

দাদুর কাছে পড়তে গেলে আগে দু’একদিন বন্ধ দিতাম। এখন পারলে দিনে দু’বার যাই। কারণ যখনই পড়তে যাই, তখনই ওকে দেখি। হয়, মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছে; নয়তো, অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। দু’মাস বয়ে গেছে শুধু দেখা-দেখি। আমাদের বাসা থেকে খানিক দূরে দাদুর বাসা। দাদু, দীননাথ চক্রবর্তী আমার বাবারও শিক্ষক, তাই মায়ের কথামত দাদু বলি। আজ মা দাদুর জন্য পিঠা দিয়েছে। আমি পিঠা নিয়ে যাচ্ছি। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ বুকটা কেঁপে উঠল। যাকে দূর থেকে আড়চোখে দেখতাম, সে আজ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কি করছে? ভয়ে ভয়ে এগোতে লাগলাম। দেখি, একটা কাগজ ইট দ্বারা চাপা দিয়ে ও সরে গেল। বুঝতে আমার বাকী রইল না। হেঁটে সোজা দাদুর বাসায় চলে গেলাম। চিঠির দিকে ভ্রুক্ষেপও নেই আমার। পরের দিনও দেখি চিঠি একই অবস্থায় ইটে চাপা পড়ে আছে। কিছুক্ষণ কাগজটির দিকে তাকিয়ে রইলাম। হঠাৎ কি যেন অনুভূতি জাগল মনে। ভয়ে ভয়ে কাগজটি উঠায়ে চারদিকে তাকালাম। না, কোথাও কেউ নেই। বেশ পাকা হাতে বুকের ভিতর কাগজটা লুকিয়ে রাখলাম। যেন, কেউ না দেখে।

’৫২ সালের সময়ের উপর ভিত্তি করে ধারাবাহিক গল্পঃ সময়ের লাশ ১ম পর্ব

স্বপ্নের হাত ধরে কৃষ্ণপক্ষের রাত্রির অন্ধকারে অনন্তের পথে ছুটে চলা স্মৃতিগুলো প্রত্যেক মানুষের জীবনে জোনাকীর মত জ্বলে আর নিভে। ‘সময়ের লাশ’--গল্পে বৃদ্ধ বয়সে উত্তম পুরুষের বাচন শৈলীতে নায়িকা নায়কের সাথে তার প্রেমের কাহিনী এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পটভুমির কিয়দংশ বর্ণনা করেছেন। এখানে নায়ক ’৫২ সালের সময়ের ধারক, নায়িকা মাতৃভূমির ধারক অর্থাৎ গল্পটি যেন, ’৫২ এর সময়ের সাথে লাজুক মাতৃভূমির ভালোবাসা-লুকোচুরি-মিছিল-আন্দোলন-যুদ্ধ-মৃত্যুর খেলা।

সময়ের লাশ
--শাশ্বত স্বপন