খেরোখাতা (২)
ঈদের ছুটির ৯ দিন কিভাবে কেটে গেলো টেরই পেলাম না । রবিবার থেকে আবার কাজ শুরু। ভাবতেই একটা বিরক্তি বোধ হয়
। ২০১০ এর পর সবাই চারিদিকে ছড়িয়ে পরার পর প্রায় সব ঈদ ছিলো ছন্ন ছাড়ার মত। এবারের ঈদে একরকম সবাই একসাথে হলাম অনেক দিন পর শুধু একজন বন্ধু ছাড়া। আমাদের কাছে শুনে সেও খোমাখাতায় দুঃখ প্রকাশ করে গেলো। ঈদের পর দিন আবার যে যার জায়গায় ফেরত। আমি একলা বসে বসে ভাবলাম আর এইভাবে হয়ত একসাথে ঈদ করা হবে না। জীবিকা মানুষকে আমৃত্যু তাড়া করে বেড়াবে। হয়ত মাঝে মাঝে এইভাবে ২/৩ জনের সাথে দেখা হবে কথা হবে। সবাই একসাথে সম্ভাবনা খুব কম। এখন মনে হয় ছাত্র জীবন অনেক ভালো ছিলো
। খুব মিস করি।
আজ একজনের সাথে কথা হচ্ছিল। ভদ্র মহিলা ঠিক আমার মায়ের মতই। মায়ের মতই সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি। আমার দ্বিতীয় মা। মায়ের সাথে আজ চাকুরী জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে অনেক কথা হল। কথা শেষে সারমর্ম হল চাকুরী সবখানেই এক রকম। আমি একটা ডিজাইন করলাম ২ মাস রাত জেগে আর জমা দেওয়ার পর এক সাদা একটা স্বাক্ষর দেওয়ার পর নাম হল সাদা কাজ টা করলো। তবে এক শ্রেণীর লোক পেলাম এরা ব্যক্তি জীবন আর চাকুরী জীবন দুটোতেই কমন। এদের আমি বা মা কখনই কোন সমস্যায় পড়তে দেখলাম না। অসম্ভব সব জিনিস পেয়ে যায়। টাকা পয়সার সমস্যা, হাওয়া থেকে হাজির। প্রমোশন সমস্যা, আবার সেই হাওয়া থেকে হাজির। এদের তুলনা এরাই। সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানো বোধহয় একেই বলে ।
শীতকাল, বিকাল হতে না হতেই রাত হয়ে যায়। মেঘের জন্য মাঝ বিকালেই আবছা অন্ধকার হয়ে গেলো। আলফ্রেড ডিকিন বিল্ডিংয়ের পাঁচতলায় দাড়িয়ে এই বৃষ্টি দেখতে দেখতে একটু নস্টালজিক হয়ে গেল বালক। অন্ধকারের মধ্যে ঝিরিঝিরি শব্দের একটানা বয়ে যাওয়া, অন্ধকার আকাশ চিরে বিদ্যুতের খেলে যাওয়া, আর মেঘেদের গুরু গুরু শব্দ। সব মিলিয়ে এক অপার্থিব পরিবেশ। অপার্থিব সেই পরিবেশের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বালকের মনে পড়লো একটি মুখ, স্নিগ্ধ সুন্দর, দেখতে পেলো তার হাসি মাখানো মুখ, তার কালো চোখের গভীরে খেলা করে যাওয়া ভালোলাগা, দেখতে পেলো তার কপালের ছোট্ট লাল টিপ, কোঁকড়ানো চুল গুলো সুন্দর করে বাঁধা । বালকের সামনে দাঁড়িয়ে বালিকা দু’চোখে একরাশ ভালোলাগা ছড়ানোর ভঙ্গি করলো। এরপর চোখ বাঁকিয়ে প্রশ্ন করলো, “আচ্ছা তুমি এখন বৃষ্টিতে ভিজবা? তোমার না সারা বছর ঠান্ডা থাকে। কোন ভাবেই ভেজা চলবে না”। বালকের চিন্তায় ছেদ পড়ল
। ভাবতে শুরু করল সেও কি এইভাবে বৃষ্টি দেখে, এমনি ভাবে বলে।
২০১০ এর বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা চলে তখন। আমাদের মুজা ভাই সেইরকম ডাই হার্ড আর্জেন্টিনা সাপোর্টার। এমন অবস্থা পারলে আর্জেন্টিনার নাগরিকত্ব নিয়ে নেয়। আমি জার্মানী আর আবীর ইংল্যান্ড সাপোর্ট করি। জার্মানী আর্জেন্টিনা খেলার আগে তিন জনের আলোচনা কে জিতবে। মুজা ভাই কহিলেন তার দল ৬ গোল দিবে আর আমরা বড়জোর ২ গোল। আবীর শুধু হাতের চার আঙ্গুল দেখায়ে বলল এইটা রেজাল্ট। যথারীতি রেজাল্ট তাই । খেলার ২ দিন পর মুজা ভাই আমাদের বাসার বারান্দায় বসে বসে বিড়ি ফুকতেছেন। রিজভী আসছে দেখা করতে। আলোচনার টপিক পল দ্য অক্টোপাস। অক্টোপাস নিয়ে মুজা ভাই বিশাল এক লেকচার দিলেন তার উইকি লব্ধ জ্ঞান ভান্ডার থেকে। এর পর রিজভী কথার মাঝে বলল জানেন মুজা ভাই সমুদ্রের নীচে অক্টোপাসরা গরুর ভূরি খেয়ে বাঁচে। শুনে মুজা ভাই বিড়িতে ২ টা কষা টান দিয়ে বললেন ও আচ্ছা তাই নাকি। রিজভী নিষ্পলক উত্তর দিলো হ্যাঁ আমরা ও লেভেলে পড়ছি। শুনার পর আমার আক্কেল গুড়ুম, কয় কি
। মুজা ভাই অনেক্ষন চিন্তা করার পর বলে ঐ ফাইজলামী কর, সমুদ্রের নীচে গরুর ভূড়ি কই পাবো, যত্তোসব। ঐ সময় বদন মুবারক দেখার মত ছিলো। আজ মুজা ভাইয়ের শুভ বিবাহ
।
আমার ধারণা আমরা প্রতিটা শ্বাস - প্রশ্বাসে কথা বলি....... আমি যে কখনও একেবারে একলা ছিলাম না তার কারণ সম্ভবত সবখানে তোমার ষ্পর্শ। আমি এখনও ঠিক হবহু একই রকম ভাবে চিন্তা করার চেষ্টা করি অনুভব করার চেষ্টা করি, তুমি কিভাবে কথা বল, কি কথা বল, একলা অবস্থায় কি করতে, তুমি যেভাবে এই পৃথিবীকে দেখ, এর রং কে অনুভব করা এর শব্দকে শোন। অনুভব করলাম তুমি যা স্বপ্ন দেখছ আমিও তাই দেখছি তুমি যা ভাবছ আমিও তাই ভাবছি.... আর পরক্ষনেই মনে হল আমি আসলেই শুধু তোমাকেই ভালোবাসি। ঠিক প্রথমবার দেখা কথা বলায় ভালোবেসেছি কিনা জানি না... দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ পঞ্চমবার হতে পারে। তবে প্রথম কথা বলার সময় মনে হচ্ছিল কোন জাদুকরের মন্ত্রে বাকি দুনিয়া হাওয়া হয়ে গিয়েছিলো আর ছিলাম শুধু তুমি আর আমি।
সেরাম কনফিউজড!
কি বুঝসি না বুঝসি
তার কিছুই বুঝিনাই!
প্রেমে পড়ছেন? বৃষ্টিতে ভিজতে মন্চায়?
প্রেমে কেডা পড়ল? এই ঠান্ডায় বৃষ্টিতে ভিজলে নিউমোনিয়া হইব শিওর
প্রেমে পড়ার উষ্ণতা নিওমোনিয়া কাটিয়ে দিবে
আপার মেলা অভিজ্ঞতা
এই কথাটা আমি কইতে গেস্লাম
এই অভিজ্ঞতাটাও থাকবে না! আমি কখনোই নিজেকে এতটা আনরোমান্টিক হিসাবে পাই নাই।
পাক্কা ৩৬৫X২+২৩ দিন পর খেরোখাতার ২য় পত্র আসলো। অভিনন্দন...
থ্যাংকু
এইডা শাতিল তো?
আমিও কনফিউজড!
~
হ্যাঁ আমি
দাওয়াত কি এখনো চলছে? তা সেই সম্প্রদান কারক স্টাইলের দাওয়াতের কাহিনি দিলে না যে?
আলফ্রেড ডিকিন বিল্ডিংয়ের পাঁচতলায় দাড়িয়ে বৃষ্টি দেখার বর্ননাটা কি সুন্দর একটা আমেজ আনলো, ভালো লাগছে এই অংশটা।
ঐটা পরে কোন এক সময় দিব
ইউনিতে পড়ার সময় আলফ্রেড বিল্ডিংয়ে একটা ল্যাব ক্লাস হইত। এর জন্য প্রায় যাইতাম ঐদিকে।
লেখা পইড়া আবার নতুন কইরা শাতিল'রে চিনলাম
লেখা ভালো হইছে
ধইন্যা সুমন ভাই। বিবাহের দাওয়াত পাইলাম না
ৈবদেশিগো দাওয়াত দিয়া নিয়া আসনের টেকা নাই
আর অনুষ্ঠান অহনো হয়নাইক্কা, দেরী আছে
কাম সারিয়া ফেলিয়াছেন নাকি?
অনুষ্ঠান কবে??
দেশে থাকলে আসমু ইনশাআল্লাহ
শাতিল ভাই, শাতিল ভাই,
বিয়া কবে আপনার?
ঘটবে কবে ঘটনা?
যা শুনি তার কতখানি ঠিক
কতখানি মিছে রটনা?
মীর ভাই মীর ভাই
বিবাহ কবে তা এখনও শিওর না
আশা করি তারাতারি।
দুআ রাইখেন
যা শুনছেন সবই রটনা নাই কোন ঘটনা
ঈদের ছুটি আসলেই কেম্নে যে গেলো!!
অক্টোপাসের খাবার নিয়া তো দেখা যায় বিশাল চাপাবাজি!
ছুটিইইইইই............
(
উনারে নিয়া আরও অনেক কাহিনী আছে। কেউ কিছু বললে উনি সেইটা গুগলে যাচাই করেন। এর জন্য চান্সে সবাই এক হাত নেয়
ঈদের ছুটি শেষ হয়ে গেল। এখন মন খারাপ লাগতেসে।
বিদেশে ৯ দিন ছুটি পাইসেন কেম্নে? ঢাকার মানুষও তো এত্ত ছুটি পায়নাই শুধু টুটুল বাই ছাড়া!
আরে বেটা বার্ষিক ছুটি থেইকা নিছি। চৌধুরী সাব বড় ম্যানেজার তাই লম্বা ছুটি
ওহ, আইচ্ছা! নেহ, এইটা তোর জন্য কাতিল!
ঈদ মুবারক ।
শ্যাষ প্যারাটা ভালু লাগছে। পুলাতো পুরাই হাবুডুবু খাইতেছে
আপু হাবুডুবু কই খাইলাম
খেরো খাতা ভালু হইছে।
সাথে আছি।
মন্তব্য করুন