ক্যানবেরা সফর - পর্ব ৩
হলব্রুকে বিশ্রাম নিতে নিতে মামুরে বললাম এইখানে একটা সাবমেরিন মিউজিয়াম আছে। চাইলে ঘুরে আসতে পারবি। আর হ্যাঁ একটা মিনিয়েচার ট্রেন আছে, কিন্তু কপাল খারাপ ঐটায় আজকে চড়তে পারবি না তবে দেখতে পারবি। ততক্ষনে আমি দুইটা কফি আর ফোনে কিছু বাতচিৎ শেষ করি। মামু দৌড় দিয়ে গেলো দেখতে পিছে পিছে মুজা কাকু।
ছবিঃ মিনিয়েচার রেল ষ্টেশন
ছবিঃ মিনিয়েচার রেল
ফোনে কথা বলতে বলতে হঠাৎ খেয়াল করলাম মামুর ফোনে একটা কল আসছে। অন্যের কল ধরাটা ঠিক মনে করলাম না। তবে কল আসার সময় দেখলাম মোবাইলটায় বেশ কিছু সুন্দর সুন্দর ওয়াল পেপার সেট করা। একটু পর পর বদলায়। তবে ৩/৪ টা ছবি যাওয়ার পর মনে হলো বেশ পরিচিত কাউকে দেখলাম। এইবার ইথিকস শিকেয় তুলে গেলাম ওয়াল পেপার সেকশনে। দেখে ভাবলাম লোকজন বাইরে থাকলেও এদের কথা এখনও ভুলে যায়নি। আমি নিজেই তাকে শেষবার বড় পর্দায় দেখেছিলাম ক্লাস ফোর কি ফাইভে থাকতে মহা মিলন ছবিতে।
ছবিঃ মোবাইলের সেই ভদ্র মহিলা
একটু পর দেখি মুজা কাকু হলব্রুকের এক ট্যুর গাইড হাতে আসতে আসতে বলে ধুর বেটা পুরা পট খাইলাম। হেতু জিজ্ঞাসা করতেই জবাব পেলাম সে ট্রেনে চড়তে পারে নাই। বললাম স্যরি বলতে ভুলে গেছিলাম ট্রেন শুধু মাসের সেকেন্ড আর ফোর্থ রবিবার খোলা থাকে। কাকু গজ গজ করে আবার পিছনে যেয়ে বসলো। একটু পরে মামু আসলো। আবার আমরা চলা শুরু করলাম।
কতক্ষন পর মামুরে জিজ্ঞাসা করলাম কিরে বেটা তোর মোবাইলে শাবনূরের ছবি কেন?? তাও আবার ২/১ টা না একেবারে গোটা বিশেক। কাহিনী কি? মামু ঝারা দুই মিনিট চুপ থাকার পর একটা হালকা কাশি দিয়ে বলল আমি তার একজন ভালো ফ্যান। এইটা শুনার পর কাকু তড়াক করে লাফ দিয়ে তার পূর্ব মুখস্তকৃত হলিউডের কিছু নাম আউরাইয়া বলে লোকে এদের ছবি ওয়ালপেপার দেয় আর তুই এইসব দিলি। জনগুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সময় ফাউ কথা বলে আলোচনার ইমেজ নষ্ট করার ব্যপারে কাকুর বেশ কুখ্যাতি আছে। আসল আলোচনা যাতে নষ্ট না হয় তাই মুজা কাকুরে থামানোর জন্য আমি বললাম যাদের নাম বলছেন ঐগুলা বানান করেন তো। যদি না পারেন তাইলে অফ যান, খালি কথার মধ্যে বাম হাত দেয়। কাকু রাগে ঝাটকা দিয়া একটা বেনসন ধরাইয়া কোক খাওয়ায় মন দিলো আর আমি মামুর কাহিনীর আদ্যপান্ত জানার জন্য কথা শুরু করলাম। মামু নাকি সেই কুটিকাল থেকেই শাবনূরের ব্যপক পাংখা। এই পর্যন্ত সে তার কোন ছবি মিস দেয় নাই। এইবার দেশে গেলে তার সাথে দেখা করার ইচ্ছা আছে আর একসাথে ছবি তোলা। মামুর কথা শুনতে শুনতে আমার এক হিন্দী ছবির কথা মনে আসলো, ছবির নামটা ঠিক মনে নাই, উর্মিলা নায়িকা ছিলো, সেখানে এই মামুর মত তার এক ভক্ত ছিলো, শেষে সেই ভক্তের সাথে তার বিয়ে হয়। যাই হোক এখানে এমন কিছুই হবে না। তবে ভাবতেই ভালো লাগছিলো একজন ডাইহার্ড শাবনূর ফ্যান আমার পাশে বসা। এইবার একটু ক্ষেপানোর চিন্তা আসলো মাথায়। বললাম মামু সে তো চরম মোটা একেবারে ময়দা আলু চাইলের মিক্সড বস্তা। তুই পাশে দাড়াইলে দেখা যাবে না। মামু শীতল চোখে জবাব দিলো বেটা অষ্ট্রেলীয়ান গুলা দেখস না এক একজন একেবারে বীয়ারের কেগ। সেই তুলনায় শাবনূর মোটা না বলতে পারিস একটু চাবী। শেষবারের মত ক্ষেপানোর চেষ্টা করলাম, মামু জানিস তো শাবনূরের এক বোন সীডনী থাকে। রাজভিয়া না কি জানি নাম, সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড মানে তোদের ইউনিতেই পড়ত। চল কালকে সীডনী যাই, তাহলে আরও ভালো ইনফো পাবি। মামুর কোন ভাবান্তর নাই দেখে আমি অফ গেলাম। কাকু পিছন থেকে বলে নামটা কি জানি বলছো আর কই থাকে? আমি না শুনার ভান করে গানের ভলিউম বাড়িয়ে দিলাম, আমার অনেক প্রিয় গান,
My life is brilliant. My love is pure.
I saw an angel. Of that I'm sure.
She smiled at me on the subway.
She was with another man.
But I won't lose no sleep on that,
'Cause I've got a plan.
You're beautiful. You're beautiful.
You're beautiful, it's true.
I saw your face in a crowded place,
And I don't know what to do,
'Cause I'll never be with you.
এই ছবি গুলো হলব্রুকের পরে একটা রেস্ট এরিয়াতে তোলা।
ছবিঃ থামার পর কাকু শোয়া থেকে উঠলেন
ছবিঃ কাকুর হাত থেকে কোকের বোতল পড়ার মুহুর্তে
ছবিঃ পড়ার পর পুরা বোতল ফেনায় ভর্তি। কাকুর মেজাজ খারাপ
ছবিঃ দ্যাঁ থ্রী মাস্কেটিয়ার্স
ছবিঃ দুই পায়ে চড়িয়া কাকু গেলো হাটিয়া হাত মুখ ধুইতে
ছবিঃ আমার তোলা। তোলার আগে মামুরে বলা হইছে এগুলা শাবনূরের জন্য। হাসি খুশি মুখে মামু পোজ দিছে।
ছবিঃ এইটাও
ক্রমশ...........
আগের পর্বের লিংকঃ
ক্যানবেরা সফর - পর্ব ১
ক্যানবেরা সফর - পর্ব ২
চলুক...
উর্মিলার নায়কের নাম সম্ভবত আফতাব শিবদাসানী... সিনেমার নাম 'মাস্ত'।
আপনের দেখি মনে আছে। চলবে
ইনফর্মেশন মনে আছে। সিনেমা কিন্তু আমি দেখি নাই
ব্যাপক মজা পাইলাম। ফটু+ লেখা।লাইক করছি্।
থ্যাংকু আপু
ভালো সিরিজ
আগের পোস্টের লিংকু যোগ করে দেও
দিলাম
এইরম অলমেন ট্যুরেও যে মজা হইছে সেইটা টের পাইতেছি লেখায়।
শাবনূরের ডাইহার্ড ফ্যান
হাসো ক্যান! আমি একটা কেইস দেখছি ১৩/১৪ বছরের ছেলে, সাইকিয়াট্রিস্ট দেখাইতে হইছে তার ভয়াবহ শাবনূরপ্রীতির জন্য... শেষ চিকিৎসা হিসাবে শাবনূরের সাথে দেখা করানোর জন্য পরিচালক বাদল খোন্দকারের সাথে কথা বলা হলো, উনি বললেন "ইনশাল্লাহ সামনাসামনি দেখা হইলেই এই রোগ সাইরা যাইবো"। কথা অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণিত হইছিলো
ছেলেপেলে নিজেদের ছবি তুলেই কুল পাচ্ছে না
আপু আমার ছবি কিন্তু অতি নগন্য পরিমানে আসছে
শাবনূর মামুকে অভিনন্দন
ট্রেন টা খুব পছন্দ হইছে...আসার সময় আমার জন্য নিয়া আইসো
~
মন্তব্য করুন