ক্যানবেরা সফর - পর্ব ৪
হলব্রুক ছাড়িয়ে তখন আমরা বেশ দূরে মূরুমবিযি নদীর কূল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা আদিবাসীদের শহর গুন্ডাগাইয়ের পাশ দিয়ে ছুটে চলছি। অষ্ট্রেলীয়ার পুরানো শহর গুলোর মধ্যে অন্যতম এটি। শহরটির গঠন শৈলী অদ্ভুত সুন্দর। নদীর পার ধরে উপরে উঠে যাওয়া শহর কোথাও তিনশত মিটারের কাছাকাছি উঁচু। হাইওয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় পাহাড়ের ঢাল বেয়ে গড়ে ওঠা ঘর বাড়ি আর রাস্তাগুলো দেখলে মনে হয় যেন দেশ থেকে দেখা জাফলংয়ের পাশ থেকে পাহাড়ের ঢালে গড়ে ওঠা ভারতের শহরের মত।
ছবিঃ গুন্ডাগাইয়ের একাংশ (আগের তোলা)
অষ্ট্রেলীয়ার অনেক লোকজ সাহিত্যে আছে এই শহরের কথা। সময় স্বল্পতার জন্য এইবার আর শহরটা দেখা হয় নাই। তবে শহরটায় ঘুরে দেখার মত বেশ কিছু জিনিষ আছে। এর মধ্যে ফ্রাঙ্ক রুস্কোনির ঐতিহাসিক মন্যুমেন্ট ডগ অন দ্যাঁ টাকারবক্স আর মার্বেল মাস্টার পিস।
ছবিঃ ডগ অন দ্যাঁ টাকারবক্স (আগের তোলা)
ছবিঃ ডগ অন দ্যাঁ টাকারবক্স (আগের তোলা)
ছবিঃ মার্বেল মাস্টার পিস (আগের তোলা)
মূরুমবিযি নদীর উপর দিয়ে যাওয়া অষ্ট্রেলীয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সেতু পার হয়ে আমরা গুন্ডাগাইকে বিদায় জানালাম।
ছবিঃ অষ্ট্রেলীয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সেতু (আগের তোলা)
অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই আমরা ইয়াস পৌঁছে গেলাম। সেখানে মুজা কাকুর খুব প্রিয় এক সার্ভোতে গেলাম বিকালের কফি আর নাস্তার জন্য। আবার কাকু চুক্তি অনুসারে আমার খাওয়া স্পন্সর করলেন রুক্ষ মেজাজে। খাওয়া শেষ করে আমরা আবার বের হলাম। কিছু দূর সামনে যাওয়ার পর সারা দিনের সঙ্গী হিউম হাইওয়েকে বিদায় জানিয়ে (নিউ সাউথ ওয়েলসের সবচেয়ে জঘন্য) বার্টন হাইওয়েতে উঠলাম।
ছবিঃ বার্টন হাইওয়ে এক্সিট
ছবিঃ বার্টন হাইওয়ে
ছবিঃ ইয়াস নদী
ছবিঃ বার্টন হাইওয়ে
ছবিঃ বার্টন হাইওয়ে
মারুমব্যাটেম্যান পৌঁছানোর পর মন্জুরের ফোন এত দেরী কেন? বল্লাম দোস্ত আসলে আমরা আসতেছি না সারা দিন বাসায় ছিলাম মাঝে মাঝে তোর সাথে ফোনে মজা করছি আমরা এইখানে আমরা ঐখানে ;)। মন্জুর যথারীতি খেপচুরিয়াস। আরও ক্ষেপানোর জন্য বললাম স্যরি দোস্ত ভুল বুঝিস না। আমরা সামনের সপ্তাহে অবশ্যই আসতেছি। এইবার মন্জুর চুড়ান্ত চেঁচামেচি শুরু করল। মন্জুরকে শান্ত করার জন্য বললাম দোস্ত আমরা তোর বাসা থেকে পঞ্চাশ কিমি মত দূরে আছি। সিটিতে জ্যাম না থাকলে এক ঘন্টার মধ্যে দেখা হবে। দশ পনের মিনিট পর আমরা সাইনবোর্ড পেলাম ঝোপঝারের রাজধানীতে আপনাদেরকে স্বাগতম। বার্টন হাইওয়ে শেষ হয়ে আমরা নর্থবোর্ণ এ্যাভেনিউ ধরে এগিয়ে গেলাম। শনিবার রাতে মৃতপ্রায় ক্যানবেরা সিটি সেন্টার। এই শহরটায় আসলে কেন জানি মনে হয় কোন অঁজ পাড়াগায়ে আসলাম। একটু পর পর স্পীড ক্যামেরা। লোকজন গাড়ি চালানোর ধরণ একেবারেই গৃহপালিত রকমের। বিরক্তির চরম সীমায় সিটি পার হয়ে পার্লামেন্ট ঘুরে ক্যানবেরা এ্যাভেনিউয়ে উঠলাম। মামুকে বললাম এখানেই মাহবুব সুমন ভাইয়ের বাসা, কালকে রাতে আসতেছি। ক্যানবেরা এ্যাভেনিউ পার হয়ে আবার সেই ঐতিহাসিক মোনারো হাইওয়ে ধরলাম। এরপর দশ মিনিটের মধ্যে মন্জুরের বাসা। বাসার সামনে গিয়ে ফোন দিলাম, দরজা খোল। দরজা খুলে মন্জুরের সেই বিখ্যাত হাসি, কোলাকুলি করলাম। পাকা নয় বছর পর দুই বন্ধুর দেখা। ফ্রেশ হয়ে আমরা ডিনারের জন্য বের হলাম। এর মধ্যে মাহবুব সুমন ভাইয়ের ফোন। অনেক্ষন কথা বললাম, বেশ হাসি ঠাট্টা করলাম। খাওয়া শেষে এবার ঘুমানোর সময়। রবিবারের প্লান ঠিক করে সবাই ঘুমের দুনিয়ায়।
ছবিঃ মন্জুর আর আমি। ঘুমানোর আগে জরুরী ফোন আর এস.এম.এস সারা হইতেছে আর চামে চামে মামু তার বাইচলামি দেখাইতেছিলো।
ক্রমশ.........
আগের পর্বের লিংকঃ
ক্যানবেরা সফর - পর্ব ১
ক্যানবেরা সফর - পর্ব ২
ক্যানবেরা সফর - পর্ব ৩
খাড়ান, আমি বড় হয়া একদিন অস্ট্রেলিয়া যামু... সেদিন আমিও এইরকম ঘুইরা বেড়ামু... হ...
বড় হইয়া গেলে তো কাজে কর্মে ব্যস্ত হইয়া যাবেন। আগেই ঘুইরা যান
বৈদেশ যাইতে মঞ্চায় ...
আইস্যা পরেন
অষ্ট্রেলিয়া যাইতে মনচায়।
অফিসে কন অষ্ট্রেলিয়ান ইকোনমি নিয়া লেখবেন

পাঠাইয়া দিবো
রাস্তাঘাট দেইখা মনে হয় হরতাল চলতাছে
ঘটনা কি?
লুকজন নাই তাই
অস্ট্রেলিয়া যাইতে মঞ্চায়। আপ-ডাউন টিকেটের দাম কত ?
১৪০০-১৫০০ অষ্ট্রেলীয়ান ডলার রিটার্ন মনে হয়
বৈদেশ যাইতে মঞ্চায় ...
আইস্যা পরেন
আমি তো চিনি না। কেমনে যাইতাম? রিক্সাওয়ালারে কইলে লইয়া যাইতে পারবো? ঠিকানাডা বুঝায়া দিয়েন।
মার ডালা কিসিমের ফটুক সব। আমি ছুটু থাকতেই আসপোনে অজি ঘুরতে, দুয়া রাইখেন বস
আইস্যা পরেন আপু
দারুণ!
মন্তব্য করুন