ইউজার লগইন

মেসবাহ য়াযাদ'এর ব্লগ

শাশ্বতরা এমনি করে ভালো থাকুক

কাল শাশ্বত আমার অফিসে আসার কথা ছিল। রাস্তায় জ্যামের কারনে আসতে পারেনি। কারওয়ান বাজারে একুশের টিভির সামনে অপেক্ষা করছিল আমার জন্য। অফিস থেকে ওকে দেখতে গেলাম। ওকে দেখে আমি হতভম্ব। জড়িয়ে ধরলাম বুকে।

এই আমাদের শাশ্বত। যে কীনা এখন দিব্যি হাঁটতে পারছে। একা একা চলে এসছে রাজশাহী থেকে। শরীরে এখনও সমস্যা আছে ওর। আগামী মাসে আবার ভেলরে যাবে ডাক্তার দেখাতে। তারপরও ওর চোখে ঝিলিক দিচ্ছে স্বপ্ন। ও একটা পত্রিকায় কাজ করতে চায়। পড়াশুনাটাও চালিয়ে যাচ্ছে নিয়মিত। আগামী বছরে ওর অনার্স ফাইনাল।

মনে পড়ে গেল রাজশাহীর সেই দিনের কথা। শাশ্বতদের বাড়িতে গেলাম আমরা কজন ব্লগার। ওর চিকিৎসার জন্য মানুষের কাছে হাত পেতে কিছু টাকা তুলেছিলাম আমরা। সে টাকা দিতেই আমাদের রাজশাহী যাওয়া। তখন কী যে অবস্থা ছিল শাশ্বতর। সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকতো আর যন্ত্রণায় কাতরাতো। তারপর কত দিন ওর সাথে কথা হয়েছে আমার। কালকেই ওকে প্রথম দেখলাম। আমার মনটা খুশিতে ভরে উঠলো।

জীবনের যত ইস !

জীবনে খুব ইচ্ছে ছিলো পত্রিকার পাতায় নিজের লেখা ছাপা হোক। সে লক্ষ্যে আবোল-তাবোল লেখা পাঠাতে শুরু করি। তখন ক্লাস এইটে পড়ি। আমার প্রথম লেখা ছাপা হয় ইত্তেফাকের চিঠিপত্র কলামে। তারপর লেখা শুরু করলাম সাপ্তাহিক চিত্রালীতে। এরপর সিনেমা এবং পূর্বানী। নিয়মিত লিখতাম। ছাপাও হত। কত পত্রিকাতেই যে লিখেছি ! ছায়াছন্দ, বিচিত্রা, বিচিন্তা, যায়যায়দিন, মৌচাকে ঢিল, আনন্দ বিচিত্রা। তারপর দৈনিক পত্রিকায় লেখা শুরু। ভোরের কাগজ আর প্রথম আলোতে অনেক লেখা ছাপা হয়েছিলো আমার। সেসময় লেখা ছাপা হলে তা কেটে রেখে দিতাম। এক সময় সে লেখার সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। আমি তখন ঢাকায়। বড় ভাইয়ার সাথে থাকি। ৯৫ সালের ঘটনা। আমি অফিসে। ভাবী বাসার কাগজ বেচতে গিয়ে আমার সারা জীবনের সব লেখাগুলোও বেচে দিলেন হকারের কাছে। অফিস থেকে ফিরে শুনলাম ঘটনাটা। ভাবীর মুখেই। আমি বজ্রাহতের মত ভাবীর দিকে তাকিয়ে রইলাম...

রায় হয়ে গেল। কী রায় ? কী আবার, ফাসি। জয় বাংলা !!!

অবেশেষে রাজাকার, খুনী, ধর্ষক, মানবতার শত্রু সাঈদীর বিরুদ্ধে রায় দেয়া হলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। দুপুর ১ টা ৪২ মিনিটে এই রায় ঘোষনা করা হলো। কী রায় ? কী আবার, ফাসি। জয় বাংলা !!এটি হলো এই আদালতের দেয়া ৩য় রায়। সর্বস্তরের জনতার বিজয় এটি। জয় হলো সত্যের। জয় মানবতার। জয় জনতার। প্রজন্ম চত্তরের একজন হিসাবে এ আনন্দের ভাগীদার আমিও। আজকের দিনটি আমার জীবনের অন্যতম আনন্দের দিন।

আমাদের প্রজন্ম চত্বর

১৯৭১ সাল। ২/৩ বছরের কোলের শিশু। একাত্তরের কথা মনে নেই আমার। ৯০ এর সৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের কথা মনে আছে। সেসময় আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এরশাদ বিরোধী সেই উত্তাল দিনগুলোতে সরাসরি অংশ নেয়া একজন আমি।

আবার এক আন্দোলন। ২০১৩ সাল। ভাষার মাস। আবারো এক গণজোয়ার। এবারের দাবী- যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি। যুদ্ধাপরাধী, মানবতার শত্রু, খুনি, রাজাকার কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায় হলো। সেই রায়- কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদন্ড! মানিনা সে রায়। কেনো মানবো ? প্রত্যক্ষভাবে মানুষ খুন করা কাদের মোল্লা জেলে যাবে, ভি চিহৃ দেখাবে- আর পত্রিকার পাতায় সে ছবি আমাদের দেখতে হবে ?

মিডিয়ার অনিশ্চয়তা আর অস্থিরতা

আমি একবার কোনো প্রতিষ্ঠান ছেড়ে দিলে সে প্রতিষ্ঠানে আর চাকরী করি না। এটা আমার নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আমি মনে করি কোনও কিছু বা কাউকে বা কারো সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করার আগে ভাবা দরকার। হুট করে সম্পর্ক গড়া যায়, তবে খুব সহজে সম্পর্ক শেষ করা যায় না বা যাওয়া উচিৎ না। স্কয়ার ছাড়লাম। অ্যারোমেটিক ছাড়লাম। ছাড়লাম এসিআই। এরপর ছাড়লাম প্রথম আলো, ছাড়লাম ল্যাবএইড। বেকার জীবন কাটালাম কিছুদিন। তারপরও সাবেক কোম্পানি প্রধান বলা স্বত্তেও জয়েন করিনি। ওই যে বললাম, দ্বিতীয়বার কোনও কোম্পানিতে ফিরে যাওয়া আমার ইথিক্সে নেই।

আজকাল দেখি লোকজন আজ এই কোম্পানিতে তো কাল অন্য কোম্পানিতে। পরশু আবার আগের কোম্পানিতে। মনে হয়, এক কোম্পানির ভিজিটিং কার্ড ছাপা হওয়ার আগেই আরেক কোম্পানিতে বা অফিসে। অস্থির প্রজন্ম। পেশাদারিত্বের চেয়ে টাকা আর পদের গুরুত্ব এদের কাছে বেশি। ফলে অল্প বয়সে টাকা আর পদের ভারে এরা ন্যুজ হয়ে পড়ে। সব কিছুর একটা শেষ আছে। একটা সময় এই সব নন প্রফেশনালরা টাকা আর পদের সমন্বয় করতে পারেন না। ফলে দেখা দেয় হতাশা আর অস্থিরতা।

দশ এগার বার

আজ অনেক দিন পর ব্লগে বসা। একদমই সময় করতে পারি না। এবি আমাকে ডাকে, আমি আসতে পারি না। বন্ধুরা আড্ডা দেয়, আমার থাকা হয় না। হঠাৎ হঠাৎ উঁকি মারি ব্লগে। একটু স্থির হতে পারি না। নতুন অফিস। কাজ-কর্ম গুছিয়ে উঠতে উঠতে দিন শেষ। প্রতিদিন ভাবি, আজ ব্লগে বসব, বসা কিন্তু হয়ে উঠে না। আমার অফিস টাইমটা বিচিত্র। যদিও সেটা মেনে চলতে পারি না। সকাল ঠিক দশটার মধ্যে আঙ্গুলের ছাপ মেরে অফিসে ঢুকতে হয়। দুপুর বারোটা নাগাদ ফ্রি হয়ে যাই। তারপর বাসায় যেয়ে দুপুরের খাবার টাবার খেয়ে আবার চারটার দিকে অফিসে আসি। রাত আটটা-নয়টা নাগাদ থাকি। যাবার সময় অফিসকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাই মানে আবারও থাম্ব ইম্প্রেশন দিতে হয়। জয়েন করার দিন দশেকের মাথায় একটা বড় ইভেন্ট করতে হল। এক দুদিনের হলে কথা ছিল। পুরো সপ্তাহ জুড়ে। বই মেলা, ছবি আঁকা, লিখন-পঠন কর্মশালা, ছড়া পাঠ, কবিতা পাঠ, পাঠ উন্মোচন... এইসব করতে করতে জান শেষ।

আমার শেকড়- মায়াময়, স্মৃতিময় গ্রাম

সারা বিশ্বের মধ্যে আমার দেশ । আর দেশের মধ্যে আমার গ্রাম। আমার প্রিয় জায়গা। প্রানের জায়গা। এখানেই আমার শেকড়। যদিও বাবার চাকরীর সুবাদে আমার জন্ম হয়েছে রাঙামাটিতে। তাতে কি ? এই গ্রামে আমার পৈত্রিক নিবাস। বাপ-দাদা চৌদ্দ পুরুষের ভিটা বাড়ি এখানে। বছরে একবার অন্তত যাওয়া হয় গ্রামে। বিশেষ ক্ষেত্রে একাধিকবারও যাই। সেটা হাতে গোনা ২/১ দিন। আবার কখনো ৪/৬ ঘন্টার জন্য। দেখা গেলো, বৃহস্পতিবার রাতের বাসে যাই। শুক্রবার দুপুরের পরে আবার ঢাকার পথে। এই যা, আমার গ্রামের নামটাইতো বলা হলোনা। অদ্ভুত একটা নাম আমাদের গ্রামের। 'আটিয়া তলী'। এটি লক্ষীপুর জেলায়। অনেকে আবার লক্ষীপুর বললে চেনেন না। সাবেক নোয়াখালী জেলার নতুন জেলা আমাদের এই লক্ষীপুর।

আমাদের ভারত ভ্রমন- শেষ

ট্রেন স্টেশন থেকে সাতজন উজবুকের মত ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে এলাম। ছোটন একটু দুরত্ব রেখে হাঁটছে আমাদের কাছ থেকে। ওকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে পারলে মনের ঝাল কিছুটা কমতো। ওকে পাত্তা না দিয়ে অঞ্জনের সাথে পরামর্শ করলাম। আমি আর অঞ্জন রেল স্টেশনে রয়ে গেলাম। অন্যদের বললাম, হোটেলে চলে যেতে। স্টেশনের পাশেই হোটেল। হাঁটা পথ। বললাম, সেখানে যেয়ে ৩ টা রুম নিতে। আমরা গেলাম পরের দিনের টিকেট করতে। খুব বেশি ঝামেলা না করেই পরের দিনের রাজধানীর ৭ টা টিকেট পেয়ে গেলাম। টিকেট নিয়ে আমরা প্রথমে খেতে গেলাম। অবেলায় কি খাব ! ফাস্ট ফুড আর দু'গ্লাস টাটকা আমের জুস খেলাম। তারপর আস্তে আস্তে হোটেলের দিকে। হোটেলে ফিরে সবাইকে বলে দিলাম- কালকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত আমাদের কোনো কাজ নাই। যে যার মত ঘুরতে পারে। যখন খুশি খেয়ে নিবে। বাট কাল বিকাল ৪ টায় সবাই হোটেলে থাকবে।

2 (1).jpg
2 (2).jpg

আমাদের ভারত ভ্রমন- ৪

সকাল ৬ টার মধ্যে সবাই রেডি। বাইরে ঝিরঝির বৃষ্টি। সে বৃষ্টির নিকুচি করি। ঝড়-বাদল যাই হোক আমরা আজ তাজমহল দেখতে যাবই। তাজমহল দেখে আবার আজ বিকাল ৫ টার মধ্যে দিল্লী পৌঁছতে হবে। তারপর রাজধানী এক্সপ্রেসে চেপে যাব কোলকাতায়। নিচে নেমে এলাম সবাই। সাত জনের জায়গায় ৫ জন। দুই জন ঘুমাচ্ছে। শত ডাকাডাকিতেও উঠলো না। একজন কোলকাতার বন্ধু ছোটন। অন্যজন অঞ্জন। ঘুম ঘুম চোখে ওরা দুজন বললো, ওরা নাকী অনেকবার তাজমহল দেখেছে- আর দেখার ইচ্ছে নাই। আসলে বৃষ্টিভেজা এই সকালে ক্লান্ত ওরা ঘুম থেকে উঠতে চাচ্ছিলো না... । জীবনে প্রথমবার তাজমহল দেখার উত্তেজনা আর উন্মাদনা নিয়ে নিচে নেমে দেখলাম, আগের রাতের একজন অটো ড্রাইভার এসে বসে আছে। অন্য অটো ড্রাইভার মানে 'কিশোর বাবু' (যিনি ভালো বংলা জানেন) তখনও এসে পৌঁছায় নাই। তাকে ফোন করা হলো। বললো, আসছি... এই 'আসছি' চলতে থাকলো বেলা ৮ টা পর্যন্ত...

আমাদের ভারত ভ্রমন- ৩

সকালে হোটেল কোহিনুর থেকে বেরিয়ে সবাই মিলে নাস্তা করে নিলাম পাশের এক দোকানে। যেখানে গত রাতে আমরা খাবার খেয়েছিলাম। পরোটা, লুচি, আলুরদম, জয়পুরের মিষ্টি আর চা। ভরপেট খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম সবাই। একজন গিয়ে একটা গাড়ি ঠিক করে আনলো। ৪ টা জায়গা ঘুরিয়ে আনবে আমাদের। ভাড়া ঠিক হলো ১২০০ রুপি। প্রথমে গেলাম যন্তর মন্তর দেখতে। যেখানকার টিকেট ভারতীয়দের জন্য ২০ রুপি আর আমাদের জন্য ৫০। কোলকাতার বন্ধুর কারনে ২০ রুপি করেই টিকেট কেটে আমরা ভেতরে গেলাম। জয়পুরের এত্ত এত্ত হেরিটেজ...। প্রতিটির গায়ে লেখা রয়েছে বিস্তারিত। আমরা মুগ্ধ হয়ে দেখলাম সেগুলো। ছবি তুললাম শয়ে শয়ে। প্রচুর বিদেশি লোকজনের দেখা পেলাম। আমাদের মত না ওরা। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রতিটি জিনিস দেখছে। ঘন্টা খানেক ঘুরে বেরিয়ে পড়লাম। বাইরে এক সাপুড়ে বীণ বাজিয়ে সাপের নাচন দেখাচ্ছে। যে যত খুশি ছবি তুলছে। তবে নিরাপদ দুরত্ব থেকে। সাপুড়ে যতই বলে, ভয় নেই। আমরা সবাই ততই ভয়ে দুরে সরে যাই। এই বার আমাদের গন্তব্য হাওয়া মহল।

1_0.jpg

আমাদের ভারত ভ্রমন-২

রাতে ঘুমাতে যাবার আগে ধুম আড্ডা আর মাস্তি। তিন রুমের সবাই আমাদের রুমে। যতই বলি, ভোরে ট্রেন, এবার সবাই ঘুমাতে যাও- কে শোনে কার কথা ! আরে বাপু, এক রুমেই যদি রাত কাটাবি, তাহলে তিনটে রুম ভাড়া নেবার কী দরকার ছিলো ? আমাদের সফরসঙ্গী ২/১ জন আবার অতিরিক্ত পরিমানে ভাল্লুক সেবনের কারনে উলোট পালোট কথা বলা শুরু করলো। যা হজম করতে পারেনা, তা কেনো যে মানুষ খায় ! তবে অতিরিক্ত ভাল্লুক সেবনের কারনে আমাদের মিনারেল ওয়াটার কেনার টাকা বেঁচে গেছে। মধ্যরাতে এক বন্ধুর শখ হলো- তাস খেলবে। এর মধ্যে আরো দুজন রাজী হলো। বাধ্য হয়ে আমাকেও বসতে হলো ওদের সাথে। অল্প কার্ডের খেলা। মানে তিন তাসের খেলা। যথারীতি খেলা শেষে আমার ৭০০ বিদেশি টাকা লস...। মনের দুঃখে ঘুমাতে গেলাম। ঘড়িতে ভোর তিনটা। হাতে সময় আছে দুই ঘন্টার সামান্য বেশি। সাড়ে পাঁচটা নাগাদ স্টেশনে যেতে হবে। ৬ টায় আমাদের ট্রেন। শতাব্দী এক্সপ্রেস। গন্তব্য দিল্লী টু আজমীর।

7.jpg
8.jpg

আমাদের ভারত ভ্রমন -১

এই বার ঈদে লম্বা ছুটি। তাই স্বপন, অঞ্জন, মুসা আর কোলকাতার বন্ধু ছোটনের পীড়াপীড়িতে ভারতে যাবার একটা পরিকল্পনা করলাম। ৬/৭ দিনের জন্য। এর আগেও ভারত গেছি। তবে সেটা শুধু কোলকাতা, শিলিগুড়ি আর দার্জিলিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো। এই বারের পরিকল্পনা দিল্লী, আগ্রা, আজমীর আর জয়পুর। সেই কারনেই ভিসার জন্য আবেদন করা। তিনবার যখন আমাকে ফিরিয়ে দিলো, তখন ভাবলাম- যাবোনা এই ট্যুরে। শুধুমাত্র অঞ্জনের জন্যই আরেকবার আবেদন করলাম। ও সোজা বলে দিলো, আমি না গেলে সে যাবেনা। বাকী বন্ধুরা সবাই রভিসা পেলো। অঞ্জনের ছিলো মাল্টিপল ভিসা। শুধু আমারটাই বাকী। অবশেষে চতুর্থবারের মত ভিসার জন্য আবেন করলাম গুলশান অফিসে। এইবার আবেদন পত্র নিলো ওরা। পাসপোর্ট দেবার তারিখ দিলো ১৯ আগস্ট। মানে ঈদের আগের দিন। আর যদি সেদিন ঈদ হয় তাহলে ২০ তারিখ। এদিকে আমাদের বাসের টিকেট করা ২০ তারিখ রাতে। আবার ২২ তারিখ করা আছে কোলকাতা টু দিল্লী বিমানের টিকেট।

বৈদেশ যামু, না যামুনা- ২

আগের পর্ব http://www.amrabondhu.com/aajad/5168
রাইতে ঘুমাইতে ঘুমাইতে ১ টা বাজে কমপক্ষে। শোয়ার পরে লাইট নিভাইতে গেলে ছোট পোলায় চিৎকার দেয়, আর লাইট না নিভাইলে বড় পোলায় চিৎকার দেয়। রাইত মোটামুটি ১ টা বাজলে ছোট পোলায় ঘুমাইতে যায়। প্রথমে শুইয়া মোবাইলের সব ছবি দেখবো। তারপর গান শুনবো। তারপর হঠাৎ তার মনে হৈবো সে 'সি' করবো। আবার উঠতে হয়। তারে 'সি' করাইতে হয়। এরপর শুইবো। বানাইয়া বানাইয়া তারে গল্প শুনাইতে হয়। কারন প্রত্যেকদিন গল্প পাইবো কৈ ? নতুন গল্প না হৈলে আবার সে শুনবো না। গল্প শুনা শেষ কৈরা তার চোখে যখন ঘুম আইবো আইবো করতাছে- হঠাৎ তার মনে হৈবো- পানিতো খাই নাই ! তারপর কৈবো- বাবা/মা, মাম থাবো...। এই ভাবে চলতে চলতে মোটামুটি ঘুমায় সে। আমার ঘুমাতে ঘুমাতে আরো ২০/৩০ মিনিট। ঘুম গেলাম কী গেলাম না, মোবইলে অ্যালার্ম বাজা শুরু করে। ৩ টা ১৫ বাজে। সেহেরি খাইতে উঠি। তারপর সেহেরি খাওনের পর নামাজটা পড়ি। মোটামুটি ৪ টা ৩০ বেজে যায় । আবার ঘুমাইতে যাই ৫ টায়। উঠি ১০ টায়। অফিস টাইম ১১ টায়। এই ভাবেই দিন যাইতেছে...

জয়তু বন্ধুতা !

সামুয়েল ইকবাল। ডাক নাম গগন। আমার বন্ধু। রংপুর মুন্সি পাড়ার ছেলে। ওর বৌ শাপলা। সামুয়েলদের রংপুরের বাসায়ও গিয়েছিলাম। সেটা ৯৮ বা ৯৯ সালের গল্প। হঠাৎ একদিন শুনি সে বন্ধুটি দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। সাথে তার বৌ। যেদিন তাদের ফ্লাইট- তার ৪/৫ দিন আগে ঢাকায় চলে আসলো ওরা। নবাবপুরের একটা হোটেলে উঠলো। সেখান থেকে ফোন করে জানালো আমায়। হোটেলে উঠায় একটু অভিমানই হয়েছিলো আমার। তারপরও তার সাথে দেখা করতে হোটেলে যাই। সেখানেই পরিচয় তার বৌ শাপলার সাথে। নতুন বৌকে নিয়ে বাসায় আসতে বলি। পরদিন আসে। সারাদিন বাসায় থেকে রাতে আবার হোটেলে ফিরে যায়। সেই সামুয়েল ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দেশ ছেড়ে ইংল্যান্ডের পথে উড়াল মারে। তার সাথে যোগাযোগটা নিয়মিতই রয়ে যায়। এখনও আছে। প্রায়ই ফোনে বলে, চলে আসবে দেশে। আবার বলে- এসে এখানে কী করবে ? গত বছর তাদের একটা কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। এই ছেলেটাকে আমি খুব মিস করি...

বৈদেশ যামু, না যামুনা- ১

বৈদেশ যাইনা অনেকদিন। গরীবের বৈদেশ মানেতো হৈলো ভারত, নেপাল, থাইল্যান্ড বা মালয়েশিয়া। সেই ২০০৯ সালে একবার মালয়েশিয়া গেছিলাম। তারপর দেশের এই মাথা থেকে সেই মাথা, পাহাড় থেইকা নদী, হাওড় থেইকা গাং সবখানে গেছি। খালি বৈদেশ যাই নাই। এইটা একটা বিরাট দুঃখ। আরো দুঃখ আছে। আমার অনেক হলুদ জিনিস আছে। এই যেমন- মোটর সাইকেল, রেনকোট, কলম, সেন্ডেল, শার্ট, টি-শার্ট, ফতুয়া, লাইটার, সানগ্লাস... এইসব কথাবার্তা কৈয়া একটা স্ট্যাটাস দেওনের একদিন পরে আমার প্রিয় মানুষটা মৈরা গেল। তাঁরে লৈয়া তাঁর কন্যাসম স্ত্রী শাওন যা কর্মকান্ড করলো ! রাগে-দুঃখে আর শরমে আমার জান যায়... এই দিকে শাওন বেটির একের পর এক মিথ্যার বেসাতি ...