টিপটিপ বৃষ্টির গল্প
গেট থেকে বের হয়ে ঘড়ি দেখল টিপটিপ, এমা ! প্রায় সোয়া নটা বাজে, ক্লাশ দশটায়! এই অফিস আওয়ারে রাস্তায় যা জ্যাম, নির্ঘাত আজ ক্লাশে ঢুকতে পারবে না। নিশাত জামান ম্যাডাম যে কড়া, চোখের দিকে তাকালেই ভয়ে গলা বুজে আসে আর কিছু বলার সাহস থাকেনা, কি জানি ক্লাশে ঢুকতে পারবে কি না, এসব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে ছুটে গলি থেকে বের হবার সময় গলির মাঝখানে গিয়ে স্যান্ডেলটা ছিঁড়ে গেল টিপটিপের।
সকাল থেকেই আজ একটার পর একটা অঘটন ঘটে চলেছে, নাস্তা খেতে খেতে পানি ঢালার সময় অনেকখানি পানি পড়ে গেল, সেই পানি গড়িয়ে পড়ল মেঝেতে মা রুটি হাতে বান্নাঘর থেকে বেরতে গিয়ে ওই পানিতে পিছলে পড়ে যাচ্ছিলেন, কোনরকম রক্ষা পেয়েছেন তিনি। এই বয়সে মা পড়ে গেলে কি যে হত, ওহ ! এখন তা আর ভাবতে পারছে না টিপটিপ। স্যান্ডেলটা ছিঁড়ে যাওয়াতে মেজাজটা চটে গেল টিপটিপের এদিকে ক্লাশের সময় প্রায় হয়ে গেছে, স্যান্ডেল ছিঁড়ে যাওয়ায় হাঁটতে পারছেনা সে, টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে, অন্য সময় হলে এই বৃষ্টি খুব এনজয় করতো সে কিন্ত এখন বিরক্ত লাগছে। এম্নিতেই এই গলিতে রিক্সা পাওয়া যায় না, হেঁটে বড় রাস্তায় যেয়ে রিক্সা নিতে হয়, কিনতু এখনত সেটাও সম্ভব নয়, গলির মাঝখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে টিপটিপ কি করবে। মেজাজ খারাপ করে হেঁটে বাড়ির পথ ধরল সে, আজ কলেজে যাওয়া হল না তার, এখন বাড়ী গিয়ে স্যান্ডেলটা পালটে আবার গলি দিয়ে হেঁটে রিক্সা নিয়ে ক্লাশ ধরতে পারবেনা সে। টিপটিপ বৃষ্টিতে বিষন্ন মনে বাড়ী ফিরে যাচ্ছে টিপটিপ।
কলিং বেল টিপতেই মা দরজা খুললেন, অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন
কি রে ফিরে এলি যে?
যাব না মা ক্লাশে
কেন কি হল ! মায়ের উৎকন্ঠা
দেখনা সকাল থেকে একটার পর একটা অঘটন ঘটে যাচ্ছে, স্যান্ডেলটা ছিঁড়ে গেল, এখন ক্লাশের আর আধা ঘন্টা বাকি আর কখন যাব বল? আর এই বৃষ্টিটারও যদি কোন কান্ডজ্ঞান থাকত, সময় নাই অসময় নাই এসে হাজির। আমার সাথেতো বৃষ্টির জন্মের বন্ধুত্ব। আমার জন্মের দিন নাকি সারাদিন টিপটিপ বৃষ্টি ছিল তাই নাকি দাদু আমার নাম রেখেছিলেন টিপটিপ, এর কোন মানে হয় বল মা ! মা টিপটিপের কথা শুনে মুখ টিপে হাসতে হাসতে রান্না ঘরে চলে গেলেন, টিপটিপ চিৎকার করে বললো মা, ইলিশ মাছ ভাজা আর খিচুড়ি রান্না কর।
নিজের ঘরে ঢুকেই গান ছেড়ে নেটে বসে গেল টিপটিপ। ইমেইল চেক করতে যেয়ে দেখে একটা অচেনা আইডি থেকে মেইল এসেছে। ভাইরাস ভেবে ডিলিট করতে যেয়েও করতে পারল না, এত বড় অ্যাটাচমেন্ট, মেইল আইডিটাও বাংলা নাম দিয়ে করা, কি ভেবে মেইলটা ওপেন করতেই দেখল রিফাতের ছবি। এ কেমন ছবি রিফাতের! একি বিশ্বাস করা যায়! রিফাত একটা বিদেশী মেয়ের সাথে বেশ অন্তরঙ্গ ভাবে ছবি তুলেছে। না না এ নিশ্চই কারো চক্রান্ত, টিপটিপের রিফাত এমন কিছু করতেই পারেনা!
রিফাতের সাথে টিপটিপের সেই ছোট্ট বেলার বন্ধুত্ব। টানা দশ বছর ব্ন্ধুত্বকে কলেজে এসে তারা প্রেম নাম দিল। কলেজ পাশ করার পর টিপটিপ ভর্তি হল একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে আর রিফাত স্কলারশীপ নিয়ে বিদেশ চলে গেল। নেটে প্রায়ই কথা হয় ওদের, কিন্ত এরকম কোন মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব আছে সেটাতো কোন দিন মুখ ফসকেও বলেনি রিফাত। ছবির পোজ দেখে মনে হচ্ছে মেয়েটি রিফাতের অনেক কাছের কেউ। টিপটিপের ভাবনা হতে লাগল কতটা কাছের বন্ধু মেয়েটি রিফাতের? সেকি টিপটিপের চেয়েও কাছের! রিফাতের চোখ মুখের ভাজগুলিও কি সে টিপটিপের চেয়ে বেশী ভাল করে পড়তে পারে। মেয়েটিকে তেমন সুশ্রী বলেও মনে হল না, টিপটিপ কতটা সুন্দর সেটা সবাই জানে, পাশ থেকে হেঁটে গেলে একটু হলেও সবার চোখ আটকাবে তার দিকে। আর এই ছবিগুলি বা তুলেছেই কে? সে কি ভাবে জানল টিপটিপের মেইল আইডি, ছবি গুলির সাথে একটা ছোট্ট চিরকূট “ভালবাসার অন্য নাম বিশ্বাসঘাতকতা”। নাহ ! আর কিছু ভাবতে চায় না সে মাথাটা কেমন যেন ঘুরছে।
ফ্যানটা ফুল স্পিডে বাড়িয়ে দিয়ে বিছানায় চলে এল টিপটিপ, রাতে তার বেশ ঠান্ডা লাগছিল তাই ফ্যান কমিয়ে দিয়েছিল। এখন মনে হচ্ছে আরো জোরে ফ্যানটা ঘুরলে ভাল লাগত তার । বালিশে মুখ গুঁজে চোখ বন্ধ করে ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেল সে। স্বপ্নে দেখল রিফাত আর সে ছোট্টবেলায়- ক্লাশে দুষ্টুমী করছে, বেথুল বনে কাঁটার আচড় খেয়ে কাঁদছে টিপটিপ, রিফাত কাঁটা ছাড়িয়ে দিচ্ছে। খোলা মাঠে দৌড়াচ্ছে- সেই তেপান্তরের মাঠ, পাখির বাচ্চা পেড়ে দিচ্ছে রিফাত। আবার দেখল একটা বিদেশি মেয়ে রিফাতেকে জড়িয়ে ধরে আছে, রিফাত টিপটিপের হাত থেকে পাখির বাচ্চা নিয়ে সেই মেয়েটিকে পাখির বাচ্চা দিচ্ছে। যন্ত্রণায়, অপমানে ঘুম ভেঙ্গে গেল টিপটিপের, কখন চোখ লেগে এসেছিল সে টেরও পায়নি !
স্বপ্নের কথা ভাবতে গিয়ে মনে হল তার সেই রিফাত আর এই রিফাত কি এক! আজকাল রিফাত খুব ব্যস্ত আগের মত ফোন করেনা, নেটেও বসেনা মেইল করলে খুব ছোট্ট রিপ্লাই মেইল দেয়। অবশ্য সামনে ওর পরীক্ষা, সময় নেই এটা হতেই পারে, এতদিন এসব নিয়ে তেমন কিছু মনে করেনি টিপটিপ, কিন্ত আজকে বার বার কেন মনে হচ্ছে যে হয়ত এই কারণে রিফাত তাকে এড়িয়ে চলছে। যে দিন টিপটিপ আর রিফাত আবিষ্কার করল যে ওরা একে অপরকে ভালবাসে সেদিন রিফাত বলেছিল “তোকে ছাড়া এই জীবন ভাবতে পারি না, কখন যেন তুই আমার জীবনের একটা অধ্যায় হয়ে গেছিস।।“ আজ় কি তবে রিফাত তার জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেছে ! তবে পুরান অধ্যায়ের কি হবে!
নাহ ! আর ভাবতে ভাল লাগছে না, আসলে হঠাৎ করে এতটা নিতে পারছে না টিপটিপ।
কদিন থেকে মা তাকে একটু বিয়ের ব্যাপারে নাড়া দিচ্ছেন, বড় হয়ে গেছিস, বেশীদিন আর চাইলেও রাখতে পারব না, মেয়েদের একটা বিয়ের বয়স আছে সেটা পার হলে আর ভাল বিয়ে হয় না ইত্যাদী ইত্যাদী। সব শুনেও টিপটিপ একদম না বোঝার ভান করে এড়িয়ে যাচ্ছে। সেদিন বাবার এক বন্ধু তার ছেলে মেয়ে নিয়ে রাতে খেতে এল টিপটিপদের বাসায়। ছুটির দিন সকাল থেকেই মায়ের আয়োজন চলছিল অতিথি আপ্যায়নের। ধোয়ামোছা, রান্নাবান্নায় সবাই ব্যস্ত। বাবার গলা শুনতে পেল টিপটিপ, ফোনে তার বন্ধুকে বাড়ির ঠিকানা বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। বাবার অনেক বন্ধুইতো আসে কিন্ত এত আয়োজন কখনো আগে কখনো হয়নি, কেমন যেন একটু বেশি বেশি লাগছিল টিপটিপের। মা-ও ওকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলছিলেন, নাহ! খুব লজ্জা লাগছে, এত বড়লোক তারা , গুলাশানে নিজেদের বাড়ী, তিনটা গাড়ি অথচ আমাদের বাসার গলিতে গাড়ি ঢোকেনা। কি ভাববে বলত !
টিপটিপের মায়ের কথায় একটু মেজাজ খারাপ হল, সে বলল তাহলে তাদের আসারই বা দরকার কি আর তোমরা যদি এতই আনইজি ফিল কর তবে দাওয়াত দিলে কেন? মা বলল তোর বাবা বলছিলেন তার একদম ছোটবেলার বন্ধু। সেদিন নাকি তোর বাবাকে জোর করে বাড়ী নিয়ে গিয়ে অনেক খাইয়েছেন। তারা মানুষ ভাল, এত টাকা পয়সা কিন্ত একটুও দেমাগ নাই। তাদের একটাই ছেলে, বুয়েট থেকে পাশ করে বাপের কন্সট্রাকশন বিজনেস দেখছে, এতই নাকি ভদ্র যে বাবা যা বলবে তাই সে শুনবে। সেই ছেলে নিজে ড্রাইভ করে তোর বাবাকে পৌঁছে দিয়ে গেল। ছেলেটার মা নাকি গত বছর মারা গেছে, বাবুর্চীর হাতের রান্না খায়। বন্ধুর একা জীবন দেখে তোর বাবার খুব খারাপ লাগছে। তোর বাবার বন্ধু নাকি তোকে আর আমাকে খুব দেখতেও চায়, তাই তোর বাবা ওদের দাওয়াত দিয়েছেন, এই এক সাথে সবাই মিলে একটু আড্ডা আর খাওয়া দাওয়া আর কি। আর তোর বাবা বলছিলেন আজ কিন্ত তুই কোথাও যেন বের না হোস। একটা দুইটা গান একটু ঠিক করে রাখিস যেন ওদেরকে গান শোনাতে পারিস, আর পারলে আজকে একটা সুন্দর শাড়ী পড় মা।
টিপটিপের বুঝতে কিছুই বাকি রইল না তবুও সে না বোঝার ভান করে সারাদিন ঘরে শুয়ে থাকল। একটু নেটে গিয়ে রিফাত কে একটা দুষ্টুমী করে মেইল লিখল, “জনাব, বাড়িতে আজকে ঘটা করে আমাকে ছেলে দেখান হচ্ছে, ছেলে বিশাল বড়লোকের একমাত্র ইঞ্জিনিয়ার পুত্র, এ যাত্রা মনে হচ্ছে বিয়ে ঠিক হয়ে যাবে। আপনার কাছে পালিয়ে চলে আসতে পারি যে কোন সময়ে, রেডী থাকবেন।“ আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে এরকম একটা মেইল পেয়েও রিফাতের কোন সাড়া শব্দ নাই। রিফাত কি আজকাল নেটেও বসে না? কি জানি হয়ত পড়শোনার ব্যাস্ততা অনেক তাই বসতে পারেনা। প্রথম প্রথম রিফাত যাওয়ার পর রোজই কম পক্ষে ৮/৯ টা মেইল দিল। সে ছিল অন্য রকমের মজা। সারাদিন দুজনের মেইল চালাচালি চলত। যেমন রিফাত লিখেছে “এখানে এখন রাত দুটা, ঘুম আসছেনা, গান শুনছি আর তোকে ভাবছি এখন ইচ্ছা করছে তোকে জড়িয়ে ধরে রাখতে।“
ক্লাশে বসে টিপ টিপ লিখল “আপাতত ছাড়, স্যার দেখবেন, আমি এখন ক্লাশে।“
সারাদিন এরকম খুনশূটি চলত ওদের। রাত হলে ওয়েব ক্যামে দেখা হত, নেটে চ্যাট হত, টিপটিপের মনে হত যোজন যোজন দূরে থেকেও রিফাত ওর কাছেই সারাদিন থাকে। কিন্ত আস্তে আস্তে মেইল, চ্যাট, ফোন সব কিছু কমে যেতে থাকল। ফোন করা আসলে সম্ভব না অনেক টাকা খরচ হয়, মেইল বা চ্যাটের সময় নাকি পায় না। পনের/বিশ দিন পর একটা মেইল বা ৫ মিনিটের ফোন ব্যাস!
ফোন অবশ্য টিপটিপ বেশী করে। আসলে রিফাতকে সে তার নিজের থেকেও বেশি বিশ্বাস করে তাই এসব নিয়ে আগে কখনো ভাবে নি। কিন্ত আজকে সকালের এই ছবিগুলি সেই বিশ্বাসের উপর বিশাল একটা ভুমিকম্প এনে দিল, নাহ! ভুমিকম্প বলাটা ঠিক হল না, এটাকে বলা যায় ফেইথকোয়েক মানে বিশ্বাসকম্প.........। ব্যাপারটা একটু হাল্কা করার জন্য এ সব ভাবা শুরু করল সে।
সেদিন সন্ধ্যায় বাবার সেই বড়লোক বন্ধু তার ছেলে মেয়েকে নিয়ে এসেছিল তাদের বাসায়। বাবার বন্ধুটা আসলেও খুব ভাল মানুষ, খুব অমায়িক আর প্রাণোচ্ছল। তার মেয়েটিও কেমন যেন বড় লোকের পুতুল পুতুল টাইপ মেয়ে- ফর্সা, গোলগাল চেহারা, ভিষণ নম্র ভদ্র, নাম কানিজ। তার ছেলেটাও বেশ ভদ্র, নিরেট গোবেচারা সাদামাটা। ছেলেটার চোখগুলি খুব অদ্ভুত, ইনোসেন্ট একটা লুক আছে। বাবা আর তার বন্ধু খুব আড্ডা জামালেন আর টিপটিপরা সবাই মুগ্ধ শ্রোতা হয়ে তাদের ছোটাবেলা দুষ্টুমী গুলো শুনছিলা, ভালই লাগেছিল তার। বাবার বন্ধু টিপটিপের গান শুনেতো মুগ্ধ, বললেন কি সব ছাই পাশ গান শুনি আজকাল। তোমার কিন্ত মা একটা সি ডি বের করা উচিত। আমার এক পরিচিত রেকর্ডিং কোম্পানী আছে আমি তাদেরকে তোমার সাথে যোগাযোগ করতে বলব, আমার মামনির গানের সিডি বের করাতেই হবে। যাবার সময় কানিজ আর তার ভাই টিপটিপের দিকে তাকিয়ে একটু হাসল, তবে কানিজের ভাইয়ের তাকানোতে অনেক লজ্জা মেশানো ছিল।
রিফাতের ছবিগুলি ঘুরে ফিরে বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। আবার পিসিতে গিয়ে বসল টিপটিপ, খেয়াল করে ছবিগুলি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখল, নাহ ! এটা কম্পিউটার কম্পোজ নয়। একটা পার্কে দুজন মিলে কাটানো কিছু সময়ের ছবি যা পিছন থেকে কেউ তুলেছে। কিন্ত কে সেই শুভাকাঙ্খী যে তার মেইল আইডি জানে, তাদের ভালবাসার কথা জানে! যে মেইলটা পাঠিয়েছে সেকি টিপটিপের শুভাকাঙ্খী না তাদের শত্রু! হয়ত সে চায় না রিফাতের সাথে তার সম্পর্ক থাকুক। কিন্ত কেনই বা সে চাইবে না, তাতে তার কি লাভ? কিচ্ছু ভাবতে পারছে না টিপটিপ। সেকি রিফাতকে ফোনে জিজ্ঞেস করবে ব্যাপারটা, জিজ্ঞেস করলেই কি রিফাত বলবে সত্যি কথাটা !
শরীরটা হঠাত করে কেমন যেন খারাপ লাগছে, ভীষণ ঘাম হচ্ছে টিপটিপের, মাথায় চিনচিনে ব্যাথা, পানি খেতে ইচ্ছে করছে, রুম থেকে বেড়িয়ে ডাইনিং টেবিলের কাছে আসতেই মায়ের গলা পেল টিপটিপ। মা বুয়াকে কি নিয়ে যেন বকাঝকা করছেন। তাড়াতাড়ি পানি খেয়ে রুমে ঢুকে যেতে হবে। মা তার চেহারা দেখে ঠিক বুঝতে পারবেন কিছু একটা হয়েছে। কিছু জিজ্ঞেস করলে কি বলবে সে মাকে? মা বাবা জানেন রিফাত টিপটিপের ছোট বেলার বন্ধু। ওদের ভালবাসার কথা দু একজন বন্ধু বান্ধব ছাড়া কেউ জানে না। রিফাতকে ভাল ছাত্র হিসাবে বাবা মা দুজনে পছন্দ করেন। মা বার বার জিজ্ঞেস করেন টিপটিপের পছন্দের কেউ আছে কিনা, কিন্ত এই মূহুর্তে রিফাতের কথা সে মাকে বলেনি, ভেবেছিল গ্রাজুয়েশন শেষ হলে রিফাত যখন বিয়ের প্রপোজাল দেবে তখন না হ্য় মাকে বলে বাবাকে ম্যানেজ করাবে। কিন্ত এখন কি রিফাতকে আর বিয়ে করা সম্ভব? আর কি কখনও রিফাত আগের মত ভালবাসতে পারবে? না কি সে কাছে এলে ঘৃণায় কুঁকড়ে যাবে কি তার মন? কি করবে টিপটিপ কিছুই ভেবে পাচ্ছেনা। মাথার উপর বনবন করে ফ্যান ঘুরছে, নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে তার। জন্মের সময় যেমন টিপ টিপ বৃষ্টি হচ্ছিল আজ ঠিক তেমনি বৃষ্টি হচ্ছে, তবে কি আজ তার জীবনে শেষ দিন !
কেন মরে যাবে সে, কেন হেরে যাবে একটা বিশ্বাসঘাতকের কাছে? নাকি বাবার ওই বন্ধুর ছেলেকে চট করে বিয়ে করে প্রতিশোধ নেবে সে। হঠাৎ করে বিয়ের কার্ড হাতে পেয়ে রিফাত কি করবে ভাবছে টিপটিপ। “রিফাত এই ছবিগুলি যদি সত্যি হয় তোমায় একহাত দেখিয়ে দেব আমি,” মনে মনে ভাবল টিপটিপ। ছোটবেলা থেকে খুব অভিমানি আর জ়েদি মেয়ে সে। রিফাত তাকে ফেলে অন্য কারো কাছে যাবে এটা কোন ভাবেই নিতে পারবেনা । মানুষের মনকে যদি কোন ভাবে পরিমাপ করা যেত তবে বোঝা যেত এই বার বছরে তার ভালবাসার শেকড় মনের কতটা গভীরে ছড়িয়ে গেছে, চাইলেই মুছেফেলা বা উপড়ে ফেলা যাবে না। বাবার বন্ধুর ছেলে বা অন্য কাউকে বিয়ে করে সে কি সুখী হতে পারবে ! পারবেনা না, সে ভাল করে জানে সেটা।
তবে কেন ওদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা! কিন্ত কাউকে না কাউকে আঁকড়ে ধরে রিফাতের এই অপমানের প্রতিশোধ নিতে হবে তাকে, নাকি ফ্যানের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে নিরবে রিফাতের এই অপমানের প্রতিশোধ নেবে। নিরবে নিভৃতে কেন জ়ীবন শেষ করবে সে? রিফাতকে চিৎকার করে বলবে, “বারটা বছরের তিল তিল করে জমানো শৈশব কৈশরের আবেগ আর ভালবাসাকে এভাবে গলা টিপে মেরে ফেলার কোন অধিকার নাই রিফাতের, এত সহজে ছেড়ে দেবে টিপটিপ ! নাহ ! ছেড়ে দেবার পাত্রী সে নয়।"
কখন যেন নিজের অজান্তে টিপটিপের চোখে টিপটিপ করে বৃষ্টি শুরু হল। চোখের বৃষ্টি মুছে ফেলতে বারান্দায় টিপটিপ বৃষ্টিতে নেমে এল সে। কানের কাছে শক্ত মুঠিতে ধরা মুঠো ফোনে ডায়াল করল রিফাতের নাম্বার... ক্রিং ক্রিং ক্রিং... বেজে যাচ্ছে ফোন,
একটা মেয়ে ফোন ধরে বলল “ This is Refat’s Residance, May I help You...।।
হঠাৎ কেমন যেন শ্যাওলার গন্ধ নাকে এল টিপটিপের, মনে হল ওর নিজের শরীর থেকেই শ্যাওলা গন্ধটা আসছে।
তোমার গদ্যের হাত নিয়ে নতুন আর কি বলবো?
চালিয়ে যাও বন্ধু........পরের বইমেলায় তাহলে তোমার গল্পের বই পাচ্ছি
হাসাইয়ো না বন্ধু কে যে কারে কি কয়, তোমার এই সব ভূয়া কথা শুইনা লোকজন মুখ টিপা হাসতেছে
অ।
আচ্ছা আমি অফ গেলাম আর পোস্ট পর্যবেক্ষণে রাখলাম
হাসো কেন রাসেল???????
আপনাদের দুইজনেরই নাম লীনা আবার দুইজনে একসাথে বিনয় কুমারী হয়ছেন তাই হাসি গো আফা।
আমার নাম লীনা আর ওইটার নাম বিনয় কুমারী
ওইটা শুধু শুধু বেশী বিনয় করে
আমি খালি কনফ্যুজ খাইয়া যাই কে কোনজন
একজন দিলরুবা আরেকজন ফেরদৌস কনফুজের কি আছে
আফা কি পর্যুবিক্ষণে হারাইয়া গেলেন? !!!!!!!!!!
ফেইথ কোয়েক।
শ্যাওলা ছড়িয়ে পড়ছে দ্রত কোথাও।
ভালো লাগল।
শ্যাওলা ছড়িয়ে না পড়াই ভাল।
অনেক ধইন্যা , ভাল থাকবেন
আপনারা বিদেশে থাকা ছেলেদের পিছনে এই ভাবে লাগছেন কেন?
তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
================
আহারে আমার যদি একটা এইরকম টিপটিপ থাকতো
আর বুয়েটিয়ানদের গোবেচারা সাদামাটা কইলো হেইডা দেখলেন না?
সবই যদি আমি দেখবো তাইলে আপনারা আছেন ক্যান??
রাসেলের জন্য একজন টিপ টিপ আবশ্যক।
লম্বা, ফরসা, স্লিম আর
সুন্দরী, গুনবতী
শিক্ষিতা, ধার্মিক, নম্রভদ্র
বিনয়ী, বুদ্ধিমতী ।
পাত্রী/অভিভাবক সরাসারি যোগাযোগ করবেন ঘটক লীনা আপার সাথে
সব বুয়েটিয়ান গোবেচারা সাদামাটা না গো ভাইজান
বিদেশে থাকা ছেলেদের পিছনে এই ভাবে লাগছি?
কি কও ভাইডি বিদেশে থাকা ছেলে আজকাল কেউ চায় না, ওদের কিচ্ছা সবাই জানে
আহা রাসেলের যদি একটা এইরকম টিপটিপ থাকতো
ই-বুকের খবর কি?
আপনারা তিলরে তরমুজ বানায় লিখবেন তো লোকজনতো বিদেশি পোলাদের চাইবেই না।
দশচক্রে ভগবান ভূত।এমন দশা হয়ছে বিদেশী পোলাদের।
তিলতো শুধু শুধু তরমুজ হয় না কিছু কাহিনীতো অবশ্যই থাকে
কাহিনীতো সেই তিলের সমান সেইটারে তরমুজ বানায়তেছেন।তাইতো কইলাম।
তোমাদের কাছে এই কাহিনীতো তিলের সমান লাগে কিন্তু একটা মেয়ের কাছে সেটা তরমুজের মত কষ্টকর
ই-বুকের খবর কি? আসল কথা কও
ই-বুক ভালো আছে।
ডাক্তর মহাশয়েরা(মানে সম্পাদকবৃন্দ) কাজ শুরু করে দিসে।প্রচ্ছদও শেষের পথে।গানওয়ালা ধুমায় গান ঠিক করতেছে। পহেলা আষাঢ় বৃষ্টি হোক আর নাই হোক কদম ফুটুক আর নাই ফুটুক এবির বৃষ্টি বিষয়ক ই-বুক আসবেই।
এখন শুধুই অপেক্ষা।
এখন শুধুই অপেক্ষা। ( ( (
অনেকদিন পর পোষ্ট দিলেন লীনাপু। ভালো লাগলো গল্প। কেমন আছেন? মাধূর্য কেমন আছে?
এই কদিন অনেক দৌড়ের উপর ছিলাম। তাই ব্লগে তেমন আসিনি।।।।।।.।আজকে মনটা কেন যেন ভাল না জ়য়িতা, কন কারণও খুঁজে পাচ্ছি না, তাই ব্লগে আসলাম। মাধূর্য্যর দুষ্টামী অনেক বেড়েছে
তুমি ভাল আছতো?
মাধূর্যের জন্য এক বস্তা আদর। মিস করি পরীটাকে।
তমাকেও মাধূর্যের পক্ষ থেকে এক বস্তা আদর। মিস করলে মিস কল দিও ।
ভালো লাগলো
কেমন আছ নাসরিন???
গল্প ভালো লাগছে। ফেইথকোয়েক বেশি জটিল হইছে
গল্প ভালো লাগছে শুনে ভাল লাগল, ফেইথকোয়েক ব্যাপারটা আসলেও জটিল, কারো যেন ফেইথকোয়েক না হয় সেই দোয়া করি। ভাল থাকবেন ভাই।
হাহাহাহাহা লীনা দারুন গল্পতো। যাকে বলে অসাধারণ। ফেইথকোয়েকটা জট্টিল
যা লজ্জা দিলা তানবীরা !!!
তোমাদের মত ভাল লেখকরা কেউ দারুন বললে সত্যি অস্বস্তি লাগে, মনে হয় এরা কত বিনয়ী! এরা যখন কষ্ট করে পড়ে অন্তত এদের জন্য লেখার মান আরোও ভাল করা উচিত।
ভাল থেক
ইডা কিয়ের সাইন!!! ব্যানের সাইন নাতো!!!!! (
টিপসই দিয়া কাজ চালাইতেছে, উনারে রহমত ভাইয়ের কাছে পাঠানি লাগবো নামদস্তখত শেখানির জন্যে!
রহমত ভাইয়ের কাছে পাঠাও নামদস্তখত শেখানির জন্যে কিন্তু আমি কি ব্যান নাকি !!!!!!!!!!!
জট্টিল গল্প । ভালো লাগলো
জট্টিল কমেন্ট । ভালো লাগলো
শ্যাওলার ব্যাপারটা অন্যরকম লাগলো! আর ফেইথকোয়েকটা তো দারুন!
গল্প বেশ ভাল্লাগছে!
ধইন্যা বইন। ভালাবাসাহীন জীবন শ্যাওলার মতই
শ্যাওলাও না পানির ভালবাসা পেয়েই তরতাজা থেকে সজীব হয়ে থাকে? স্যাতঁস্যাতে হাল সরিয়ে দেন শ্যাওলাও মরে যায়!
ভাল বাসাটা কি রে !! বুঝিনা !!
ভাল্লাগছে
আমারো ভাল্লাগছে তুমি আসছ তাই
চুপচাপ পড়ে গেলাম
বেশিরভাগ বৈদেশিগুলান ইরামই
বৈদেশি সে না আখিয়া চুরানা.।.।। বৈদেশিগুলান আসলেও এমনই
অন্য ধবনের গল্প অন্য আমেজের গল্প খুব ভাল লাগলো। সময়টা সুন্দর এক আবেশে চিন্তায় কেটে গেল।
আপনার কমেন্টটাও একটু্ অন্য ধবনের আমার খুব ভাল লাগলো।
লিখে চলুন। শুভ কামনা।
কেমন আছ শামান? এখানে তোমাকে দেখে খুব ভাল লাগছে, তোমাকেও জানাই অনেক অনেক শুভ কামনা
আমরা দেশের ছেলেরা ভাল।
হ ভাল। ঠিক আপনের মতো
মন্তব্য করুন