অসহ্য শূন্যতা!
আজ-কাল প্রায়ই এমন হয়। মনের মাঝে অদ্ভুত এক শূন্যতা কাজ করে। কেন এমন হয় জানিনা। সবই ঠিক আছে, সবাই ভালো আছে, তাও মাঝে মাঝে সব কিছু-ই যেন অর্থহীন মনেহয়। আসলে ইদানিং আমি দিনগুলোকে যেমন করে চাই, তেমন করে একটা দিনও পাইনা। প্রতিটা দিন আমার ইচ্ছা গুলো অপূর্নই রয়ে যায়। মীর এর একটা লেখাতে সেদিন পড়েছিলাম,
মানুষের ভেতর নিজের প্রয়োজনীয়তা তৈরী করতে হবে।
সেখানে বলেছিলাম, "এটাই মনে হয় করতে পারি না আমি"। আসলেই, এটাই করতে পারিনা আমি। সেজন্যই আমার জীবনের দিনগুলো আমার মত করে যাচ্ছে না একদিনও। এমন করতে করতে আজ-কাল আমার ইচ্ছা গুলো প্রকাশ করার ইচ্ছাও হয়না আর।
ঋহান অনেক ভোরে উঠে যায় বলে প্রায় প্রতিদিন রাতেই ওর সাথে সাথে শুয়ে পড়ি। কালও এর ব্যতিক্রম হয়নি। রাত ১১টায় শুয়ে পড়লাম। কিন্তু ঘুম আসছিলো না। আবারো সেই অদ্ভুত শূন্যতা অনুভব করলাম। রাত যখন দেড়টা তখন হঠাৎ ঋহান কেঁদে উঠলো। আমি জেগেই ছিলাম, তাই চট করে উঠে ওকে কোলে নিলাম। কিন্তু সে কোন ভাবেই আমার কাঁধে মাথা ফেললো না। এদিকে সে কেঁদেই যাচ্ছে। শেষে তার বাবা কান্না শুনে ঘুম থেকে উঠে তাকে কোলে নিলো, এইবার সে কাঁধে মাথা ফেললো। এবং সাথে সাথে চুপ করে ঘুমিয়েও গেলো আবার। আমার ভেতরটা হঠাৎ করে মোচড় দিয়ে উঠলো। ঋহান আমার চেয়ে, তার মায়ের চেয়ে অন্য কারো উপর বেশি ডিপেন্ডেবল? হোক, সেটা তার বাবা, তবুও!
ঋহান ঘুমিয়ে গেলো, সাথে তার বাবাও। আমিও আবার শুয়ে পড়লাম। কিন্তু এবার আমার মনের মাঝের শূন্যতার যেন দ্বিগুন হয়ে গেলো। রাত যখন প্রায় তিনটা তখন টের পেলাম, আমার চোখ কাঁদছে। অনেকদিন কাঁদিনা, কাঁদার সময় পাইনা। যাক, তাহলে শেষমেশ আমি সময় পেলাম? আসলে ঐ মূহুর্তে কেবল এইটাই মনে হচ্ছিলো যে, ঋহান তো এখনো স্পষ্ট ভাবে "মা" অথবা "বাবা" বলে ডাকতেই পারে না, তবুও সে যখন আজ আমার চেয়ে অন্য কারো কাঁধে মাথা রেখে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেছে, তখন আমার ভেতরটা শূন্য হয়ে গেলো। আর আমি? আমি না জানি এমন কত শত বার, কত শত ভাবে আমার মা এর ভেতরটা শূন্যতা দিয়ে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছি! আর সেটা কখনো উপলব্ধিও করিনি।
এইসব ভেবে ভেবে হয়তো সাড়ে তিনটা নাগাদ চোখে ঘুম আসলো। ভোর পৌনে পাঁচটায় আমার বোন এর কল পেয়ে ভেতরটা আঁতকে উঠলো! ফোন রিসিভ করলাম। আপু বললো "আব্বা আই.সি.ইউ তে"। আরোও বললো "গত কাল আব্বার হাড়ের ব্যাথা কমানোর জন্য যে ইঞ্জেকশনটা দেয়া হয়েছিলো, সেই ইঞ্জেকশন তার ব্লাড সুগার কে এত্ত হাই করেছে যে সেটা ব্লাড ক্লট তৈরী করে ফেলেছে। আর এই ক্লটের কারনে আব্বার চেস্ট পেইন শুরু হয়েছে। এখন আই.সি.ইউ তে তাকে মেডিসিন দেয়া হচ্ছে যাতে হার্ট এ্যাটাকের চান্স না থাকে। তবে বেশি চিন্তা করিস না, পারলে জলদি চলে আয়"। এবার মনের মাঝের শূন্যতাটাকে অসহ্য মনে হতে লাগলো। কোন রকমে সকাল হলো। ঋহানের সব কিছু গুছিয়ে চলে এলাম আব্বার বাসায়। এখন অপেক্ষা করছি, বিকেল পাঁচটার। পাঁচটায় ভিসিটিং আওয়ার শুরু, তখন আব্বা'কে দেখতে পাবো।
খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন আপনার বাবা। অনেক দোয়া রইল।
আপনার বাবা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক।
চিন্তা করিসনা দোস্ত , দেখিস ইনশাল্লাহ জলদি সুস্থ হয়ে যাবেন আঙ্কেল । দোয়া করি আল্লাহর কাছে ।
বাচ্চাদের এই জিনিসটা খুব অদ্ভুত, মা'কে ছাড়া চলেনা আবার তাকে কষ্টও দেয় বেশি । আমার এক ভাগনের পিছনে তার মা সারাদিন এতো খাটতো, অথচ তার বাবা তাকে ৫ মিনিটও কোলে রাখতে চাইত না । সেই ভাগনের প্রথম কথা বলা ছিল, বাবা । সে আব্বা, বাবা, বাব্বা সব কিছু বল্লেও মা কিছুতেই বলত না ।
দোস্ত মনের ভিতর এতো শূন্যতা কেন? সময়গুলো নিজের জন্য ব্যয় কর দেখবি কষ্ট কম হবে ।
আমার ধারনা শিশুদের ভাল লাগার বিষয়টা একেবারেই তাৎক্ষনিক। ঐ বিশেষ মুহুর্তের ভাল লাগাটাই তার কাছে প্রধান। এ জন্য অবাক হওয়ার কিছু নাই। আমার ছোট ভাইয়ের বাচ্চাদুটো আমাকে পেলে অনেক সময় ওদের মা-বাবাকেও ভুলে যায়। তাতে আমার মনে হয় না ওদের কাছে ওদের মা-বাবার গুরুত্ব কোন অংশেই কমে যায়।
আপনার বাবার অবস্থা কেমন জানাবেন। আশা করি উনি অতি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।
লেখাটা পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল। মা'র অনুভূতি বুঝতে পারা আমার কিংবা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব না। কখনো ভেবে দেখে নি। নিজের মা'কে হয়ত এভাবে কত কষ্ট দিয়েছি কিংবা দেয়।
আপনার বাবা আশা করি সুস্থ হয়ে উঠবেন
নাজের ব্লগ পড়তে ভালো লাগে। এই অনুভূতির মধ্যে দিয়ে কম বেশি সব মেয়েই বুঝি যায়। নিজেকে ফিরে দেখা হয়ে যায় তোমার মাঝে।
আশাকরি আঙ্কেল দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। ভালো থেকো। তারপর দেখবে আজকের এই কষ্ট দুর্ভাবনা একদিন সব গল্প হয়ে যাবে
আব্বা এখন আল্লাহ'র রহমতে আগের চেয়ে একটু সুস্থ আছেন। আজ সব ঠিক থাকলে উনাকে কেবিনে শিফট করবে।
সবাই দোয়া করবেন!
দোয়া করি আপনার বাবা দু'একদিনের মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে উঠুক। বাবা-মাএর কিছু হলে সবচে' বেশি খারাপ লাগে।
আঙ্কেল সুস্থ্ হয়ে উঠুন, শুভকামনা উনার জন্য।
অনেক শুভকামনা থাকলো। আংকেল ভাল হবেই
আংকেল কেমন আছেন এখন? সুস্থ হয়ে যাবেন ইনশাল্লাহ।
অসাধারন বলেছো নাজ। বাবা এতক্ষণে নিশ্চয়ই অনেক ভাল ?
দোয়া করি, আপনার বাবা দ্রুত ভালো হয়ে উঠুন।
আব্বা'কে কাল বিকেলে বাসায় নিয়ে এসেছি। আপাতত আগের চেয়ে ভালোই আছেন। বুধবার আবার চেকআপ। সবাই দোয়া করবেন!
মন্তব্য করুন