ইউজার লগইন

মীর'এর ব্লগ

গল্প: ফ্রাউ ভের্নার আর ফর্কলিফটের সাথে জড়িয়ে থাকা স্মৃতিটা

১.

কেননা আমি বেঁচে থাকি শেখার মাধ্যমে

I'm sorry, Momma, I never meant to hurt you
I never meant to make you cry
But tonight I'm cleaning out my closet.

Song: Cleaning out my closet
Artist: Eminem

শীত আর বসন্ত পেরিয়ে গ্রীষ্ম প্রায় চলেই এলো। আমার সুষম জীবনে আরও একটি একাকী গ্রীষ্ম। এক সময় বছরের পর বছর একাকীত্বের জন্য হাহাকার করেছি। আমার কথায়, লেখায়, চিন্তায় সে সময় বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে নায়ক আর নায়িকার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার দৃশ্য আর তারপর এক একলা জীবনের গল্প। সে সময় আমি একা ছিলাম না একেবারেই। অথচ এখন যখন একলা জীবন কাটাই তখন মাথায় যেসব চিন্তা ঘোরে তার বেশিরভাগই একটা ছেলে আর একটা মেয়ের এক হয়ে যাওয়ার গল্প।

অসমাপ্ত বাস্তবতা... ১৩

আজকের লেখাটা যে ডার্ক টাইপের হবে খুব বুঝতে পারছি প্রথম থেকেই। তাই ভাবছি লেখাটা কি চালিয়ে যাবো নাকি বন্ধ করে দেবো। ভাবছি এবং লিখছি সমানতালে। আজকাল আমার প্রিয় প্রশ্ন হচ্ছে, কেন মানুষের জীবন এত যন্ত্রণাদায়ক? এই প্রশ্নটা কেউ আমাকে করতে পারলো মানে সে অনেকদূর পর্যন্ত আমার কাছে চলে আসতে পারলো। সাধারণত যেসব প্রশ্ন আমরা একে অপরের সাথে দেখা হলে করি, যেমন কি খবর বা কেমন আছেন বা দেখেছেন খালেদা জিয়া নাকি বলেছে বড় বড় আইনজীবীরা কি করে? এটা একটা নেত্রীর মতো কথা!- ইত্যাদি যাবতীয় প্রশ্ন আমাকে শুধু প্রশ্নকর্তার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। মহীনের ঘোড়াগুলির মতো তুমি আর আমি যাই ক্রমে সরে দূরে।

অসমাপ্ত বাস্তবতা... ১২

(প্রায় দেড় বছর আগের লেখা। আমার পূর্ববর্তী লেখাটির সাথে সাযুজ্য নাও পাওয়া সম্ভব। কেননা তখন সময়টা ছিল একটু অন্যরকম।)

স্ন্যাপচ্যাট নামের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটার খুব একটা ভক্ত ছিলাম না দুই-চার দিন আগ পর্যন্তও। হোয়াটস্অ্যাপ আর ইন্সটাগ্রাম এখনও যোগাযোগের মূল মাধ্যম। ফেসবুক মেসেঞ্জারের মতো ভারী নয় ওগুলো। তবে ইদানীং ভক্তি বাড়ছে স্ন্যাপচ্যাটের ওপর। ওটা এত কুল!

অসমাপ্ত বাস্তবতা... ১১

জার্মান গায়িকা লিয়া'র (Lea) একটা গান আছে নাম লাইজার (Leiser)। গানের প্রথমদিকের কয়েকটা কথা মারাত্মক, যেমন-
তুমি নিজের সম্পর্কে বলেই যাচ্ছো যখন আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছি তখনও। তোমার নিউ ইয়র্কের পার্টি কিংবা প্যারিসের শুটিংয়ের গল্প শেষ হচ্ছে না। আমিও কেমন যেন তোমার কথায় হারিয়ে গিয়েছি।

প্রথমবার গানটা যখন শুনছিলাম, মনে হচ্ছিল খুব বোধহয় একটা প্রেমের গান। ভুল ভাঙতে বেশি সময় লাগে নি। পরের প্যারাগুলো থেকেই মনে হচ্ছিল কোথায় যেন একটা ব্যপার আছে, কিন্তু পুরোপুরি ধরতে পারছিলাম না। যাহোক লিরিকটা একটু গুগল দিয়ে অনুবাদ করিয়ে নিতেই বের হলো, কেন অমন মনে হচ্ছিল। কারণ পরের প্যারাতেই গায়িকা গাইছে-
কিন্তু আমার সব বন্ধুরা আমায় বলে আমি আগের চেয়ে অনেক চুপচাপ হয়ে গিয়েছি। আসলেই কি আমি ভাল আছি? তুমি তো আমার সেই কথাগুলোই শুধু শোনো, যেগুলো তোমার ভাল লাগে।

গভীর রাতের ডায়েরী: উচুঁতে চড়ে বসা আলোচনাটা

গভীর রাতে ব্লগ লিখি। আর কোনো করার মতো কাজ না পেয়ে। লাইফটা কি যে হাস্যকর, ভাবি মাঝে মাঝে। কোথায় মানুষজন রাতে সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে প্রিয়জনের মাঝে ফেরা উপভোগ করে শান্তির একটা ঘুম দিবে, তা না জগতের যতো রকমের ঘটনা আছে সেই সব নিয়ে একটার পর একটা পৃষ্ঠা উল্টিয়ে যাচ্ছে। যেন এ পৃথিবীর সবাই হঠাৎ প্রচণ্ড পড়ুয়া একটি জাতি হয়ে উঠেছে। মহাশূন্য থেকে কেউ যদি আমাদের দেখে তাহলে আমাদেরকে ভীষণ অনুসন্ধিৎসু এক প্রকার প্রাণী মনে করবে। যারা সবসময় হাতের তালুতে রাখা একটি ক্ষুদ্রাকায় যন্ত্রের দিকে নিবিষ্ট মনে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে, তাদের চারপাশে কি ঘটছে। পুরানের সেই মায়াবী গোলকের এ যেন এক আধুনিক ভার্সন। ওই গোলক দিয়ে ডাকিনীবিদ্যায় পারদর্শীরা সাধারণত ভুত-বর্তমান-ভবিষ্যত ইত্যাদি দেখে একেকটি বিশেষ ভবিষ্যদ্বানী করতো; আর ইদানীংকালের আমরা মূলত 'মীম' চালাচালি করি।

বাস্তবের দিনলিপি: সিনেমা, গান আর স্বপ্নের কথা

১.
এই লেখাটা শুরু হবে সিনেমা বিষয়ক আলোচনা দিয়ে। তারপর গানের ব্যপারে নিজস্ব ধারণাগুলোকে একটু ঝালাই করে নেয়া হবে। শেষ দিকে কি থাকবে- তা আগেই ঠিক করে দিচ্ছি না। লেখার গতিপথকে সেই স্বাধীনতা দেয়া থাকলো।

সিনেমা বিষয়ক আলোচনার মূল কারণ অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড। যেটি ২০১৬ থেকে বছরের একটি অন্যতম এক্সাইটিং ইভেন্ট হিসেবে জীবনে সংযুক্ত হয়েছে। অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডে আমার অনুমান কতটুকু মিললো আর কতটুকু মিললো না তার হিসেবের মধ্যেই উত্তেজনার বীজগুলো বুনে রাখা হয়েছে। মার্চের ৪ তারিখে সেগুলো ফলবতী হবে। অনুমান এখনই ঘোষণা করছি না অবশ্য। এই পোস্টে শুধু প্রারম্ভিক আলোচনাই হবে। মার্চের কাছাকাছি সময়ে অনুমান তালিকা আকারে ঘোষণা করা হবে। পুরস্কার বিতরণের আগে অবশ্যই।

প্রচুর শোনা হয় ইদানীং যেসব গানগুলো

কামিলা কাবিলো'র 'হাভানা...উম না না না' গানটার নাকি কোনো মানে নেই। গ্যারি আনহিগোরোর মতামত এটা। আমার মনে হয় ভিন্ন কথা। ওটা যেন কারো কোনো এক সাগরপাড়ের ছোট্ট দ্বীপ থেকে ঘুরে এসে সে জায়গাটার সাথে তার গড়ে ওঠা বন্ধুত্বকে খুব তীব্রভাবে অনুভব করার গান। দি চেইনস্মোকার আর কোল্ডপ্লে'র সামথিং জাস্ট লাইক দিস্ গানটা যেমন। সে কোনো সুপারহিরো কিংবা কোনো ফেইরি-টেল থেকে শান্তি নয়, বরং সে চায় এমন কাউকে যাকে সে চুমু দিতে পারে। ইদানীংকার গানগুলোর মধ্যে, কাউকে উদগ্রীবভাবে চাওয়ার প্রকাশগুলো এতো সুন্দর, আর গতিশীল!

লা লা ল্যান্ড

১.
আজকের লেখাটাকে মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমে একটা গল্প লেখার আইডিয়া, যেটা জড়িত ২০১৭ সালের অ্যাকাডেমী অ্যাওয়ার্ড আসর মাতানো সিনেমা লা লা ল্যান্ড-এর গল্প বলার স্টাইলের সাথে। স্টাইলটা নতুন না। পুরোনো একাধিক স্টাইলের আধুনিক, যথাযথ ও পরিমিত প্রয়োগ বলা যায়। এ ধরনের সমন্বয় পুরোনো স্টাইলগুলোকেই নানাভাবে নতুনত্ব দেয়।

তারপরে একজন বন্ধুর কথা। যার সাথে পরিচয়ের সূত্রে জীবনের অনেক বিষয়ই ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখতে শিখেছি।

২.
লা লা ল্যান্ড সিনেমায় প্রথমে নায়িকা মিয়ার দৃষ্টিতে একটা গল্প বলা হয়। মিয়া নামটা আমার বেশ পছন্দ। জার্মানরা মীর শব্দটাকে অনেক সময় টেনে মিয়া পর্যন্ত নিয়ে যায়। অবশ্য বাংলাদেশে মিঞা তো বংশপদবী হিসেবে আছেই। আবার আমি প্রথম যে জার্মান মানুষটির সাথে পরিচিত হয়েছিলাম ফ্রাঙ্কফুর্টের নেমে, তার নামও ছিল মিয়া।

খাল ড্রোগো হাইপোথিসিস

১.
গবেষণার সাথে কি মানুষের সাইকোলজিক্যাল যোগাযোগ থাকতে পারে? যেমন, একটা মানুষ হয়তো জানেই না যে সে মূলত গবেষক হয়ে জন্মেছে, কিন্তু কাজেকর্মে নানাসময় গবেষকদের মতো আচরণের প্রমাণ রেখে গেছে। গবেষণা বিষয়টা আসলে কি? কোথায় গবেষণার ধারণা প্রথমবার জন্ম নেয়? এইসব প্রশ্ন মাথায় আজকাল ঘুরপাক খায়। আর প্রথম বরফপাতের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে যেতে জীবনের না পাওয়াগুলো ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে থাকা সিচুয়েশনটার কথা মনে পড়ে।

আসলে বরফপাতের মধ্যেই সমস্যা আছে। বরফের মধ্যে হাঁটতে থাকলে মনের কোন সেন্সরটা যে কোন কারণে অন আর অফ হয়, সেটা বোঝা সহজসাধ্য নয়। যে কারণে মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখাটাও জটিল হয়ে দাঁড়ায়। পিংক ফ্লয়েড শোনার সময়ের মতো উল্টাপাল্টা জিনিস মনে পড়ে। অন্ধকার ঘরে। আর একটা হয়তো মারিয়ুয়ানার সাথে।

২.

কোনো এক ধীরগতির পড়ন্ত অক্টোবরের সকালে

১.
শরীরের ওপর থেকে কম্বলটা সরিয়ে দেয়ার কাজকে সকালের সবচেয়ে কঠিন কাজ মনে হয় আমার। ইদানীং এই প্রবণতা আবার বেড়েছে খানিকটা। বেলা ১১টা-১২টা বেজে যায়, তাও পড়েই থাকি বিছানায়। আজও তেমনি বিছানা ছাড়তে খুব আলসেমি লাগছিল। কি করা যায় ভাবছিলাম। সকালের রুটিন হচ্ছে, এক মগ কফি আর একটা সিগারেট। কফির মগটা লাস্ট বান্ধবী উপহার দিয়েছিল। 'স্টার ওয়ার্স: দি ফোর্স অ্যাওয়েকেন্স'-এর একটা স্যুভেনির মগ। গরম যেকোন কিছু ঢাললে সাথে সাথে মগের রঙ পাল্টে যায়। সাধারণত দুধ গরম করে, আগে থেকে মগের ভেতর দিয়ে রাখা কফির মধ্যে ঢেলে দিই। দ্রুত মগটা কালচে নীল থেকে একটু অফবিটের শাদা রঙ-এ পাল্টে যায়। সকালে ওটা দেখেই মনটা ভাল হতে শুরু করে আস্তে আস্তে।

ভালিটোভা নদীর তীরে

রাত এগারোটার সময় গাড়ির মালিক যখন আমায় জিজকভ টেলিভিশন টাওয়ারের নিচের নামিয়ে দিয়ে চলে গেল, তখন আশপাশে একটা খোলা দোকান কিংবা মানুষ কোনোকিছুই ছিল না। চারদিকে ভিনদেশি ভাষায় লেখা সাইনবোর্ড দেখে ঠিক কোথায় এসেছি ঠাহর করা যাচ্ছিল না। শুধু জিজকভ-এর লোগোটা পড়া যাচ্ছিল। আগেই জানতাম ওখান থেকে কাছেই আমার দুইদিনের প্রাগ সফরে থাকার জায়গা।

এই উইন্টারে যারা জার্মানিতে পড়তে আসছেন

এটি একটি উপদেশমূলক লেখা। অক্টোবরের ১ তারিখ থেকে জার্মানিতে উইন্টার সেমিস্টার শুরু হচ্ছে। এখানে উইন্টার সেমিস্টারে সামারের চেয়ে বেশি সংখ্যক আন্তর্জাতিক ছাত্র-ছাত্রী নেয়া হয়। তাই এই সময়টাতে ছাত্র-ছাত্রীদের জার্মানির পানে ভিড়ও থাকে বেশি। যে বা যারা দুই-একদিনের মধ্যে প্রথমবারের মতো জার্মানির উদ্দেশ্যে দেশের বাইরে পা বাড়াচ্ছেন, তারা এই লেখা থেকে উপকৃত হলেও হতে পারেন।

আজ থেকে ঠিক তিন বছর আগে এই দিনটাতে আমি মনে মনে ভাবছিলাম, এখন হাতের কড় গুণে হিসেব করে ফেলা যায় কয় ঘন্টা পর আমার ফ্লাইট; কয় ঘন্টা পর আমি এমন একটা জায়গায় থাকবো, যেখানকার কোনোকিছুর সাথে আমার পরিচয় নেই; কয় ঘন্টা পর আমি প্রিয় পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব, এবং আমার স্বদেশ থেকে হাজার মাইল দূরে চলে যাবো। হিসেব করে ফেলা যাচ্ছিল সবকিছুই। কঠিন ছিল সময়টা, স্বীকার করতেই হবে।

অসমাপ্ত বাস্তবতা... ১১

১.
'যদি আকাশের গায়ে কান না পাতি তোমার কথা শুনতে পাবো না'। এটা একটা গানের লাইন। ইদানীং খুব শুনছি গানটা। যদিও লুপে আটকা পড়াটা ঠেকিয়ে রেখেছি ইচ্ছে করে। আমি জানি, আমি খুব সহজে লুপে আটকা পড়ে যেতে পারি। ভালবেসে ফেলতে পারি চোখের পলকে। মন দিয়ে নিজেকে খুন করে ফেলতে মুহূর্ত কাল সময় লাগে না। সুযোগটা নেয় নি এমন মানুষের সংখ্যা খুবই নগণ্য। তাই আজকাল নিজেকে বন্ধ করে রাখি সন্তপর্নে।

অসমাপ্ত বাস্তবতা... ১০

রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ে এ ক'দিনে অসংখ্য লেখা পড়া হলো। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে অনেক খবরই দেখলাম। বিচার-বিশ্লেষণে যেতে চাচ্ছি না, কিন্তু বিষয়টিকে আর পাঁচ-দশটা স্বাভাবিক ইস্যূর মতোই নিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। কোনো কোনো দিন রোহিঙ্গা গণহত্যার খবর বিবিসির লিড হচ্ছে, আবার খানিক পরেই ওটা নেমে যাচ্ছে। উঠে আসছে ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা অন্য কোনো খবর। সিএনএন, আল-জাজিরারও একই অবস্থা। মানুষের প্রাণের মূল্য কতোটা কমে গেলে গণহত্যার মতো একটা বিষয়কে পাশে সরিয়ে রেখে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সংবাদ নিয়ে অধিক মাতামাতি হতে পারে?